নবম দশম শ্রেণির ৫ম অধ্যায়ের জীববিজ্ঞানের জ্ঞান ও অনুধাবন মূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। BMR কী?

উত্তর : BMR হলাে বেসাল মেটাবলিক রেট যা পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় মানব শরীরে ব্যবহৃত শক্তির পরিমাণ নির্দেশ করে।

প্রশ্ন ২। ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট কী?

উত্তর : উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান বেশি পরিমাণে দরকার হয় সেগুলােকে ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট বলে।

প্রশ্ন ৩। গলগণ্ড কী?

উত্তর : গলগণ্ড থাইরয়েড গ্রন্থির একটি রােগ। খাবারে আয়ােডিনের অভাব থাকলে থাইরয়েড গ্রন্থির আয়তন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়ে গলগণ্ডের সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন ৪। মৌল বিপাক কী?

উত্তর : বিশ্রাম অবস্থায় আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গাণুগুলাে ক্রিয়ারত থাকে এবং এর জন্য কিছু শক্তি ব্যয় হয়। একে মৌল বিপাক বলে ।

প্রশ্ন ৫। BMI কী?

উত্তর : BMI হলাে– Body Mass Index, এটি মানব দেহের গড়ন ও চর্বির একটি সূচক নির্দেশ করে।

প্রশ্ন ৬। উদ্ভিদ পুষ্টি কী?

উত্তর : উদ্ভিদ মাটি ও পরিবেশ থেকে স্বাভাবিক বৃদ্ধি, শারীরবৃত্তীয় কাজ ও প্রজননের জন্য যেসব উপাদান গ্রহণ করে তাই উদ্ভিদ পুষ্টি।

প্রশ্ন ৭। খনিজ পুষ্টি কী?

উত্তর : উদ্ভিদ মাটি ও পরিবেশ থেকে তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, শারীরবৃত্তীয় কাজ এবং প্রজননের জন্য যেসব পুষ্টি উপাদান-গ্রহণ করে তাই উদ্ভিদ পুষ্টি। এ সকল পুষ্টি উপাদানের অধিকাংশই উদ্ভিদ মাটি থেকে সংগ্রহ করে বলে এদেরকে খনিজ পুষ্টি বলা হয়।

প্রশ্ন ৮। ATP এর পূর্ণরূপ লিখ।

উত্তর : ATP এর পূর্ণরূপ হলাে— Adenosine Triphosphate.

প্রশ্ন ৯। রাফেজ কী?

উত্তর : ফল, শাকসবজি, শস্যদানা ইত্যাদিতে আঁশ বা তন্তুর ন্যায় অপাচ্য অংশই রাফেজ।

প্রশ্ন ১০। ক্যালরি কী?

উত্তর : এক কিলােগ্রাম পানির উষ্ণতা ১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি করতে যে তাপের প্রয়ােজন তাকে কিলােক্যালরি বলে। কিন্তু পুষ্টিবিদগণ একে সাধারণভাবে ক্যালরি বলে থাকেন।

প্রশ্ন ১১। ক্লোরােসিস কী?

উত্তর : উদ্ভিদের পাতা নাইট্রোজেনের অভাবে হলুদ হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াই ক্লোরােসিস।

প্রশ্ন ১২। গলগণ্ড কী?

উত্তর : গলগণ্ড হলাে থাইরয়েড গ্রন্থির একটি রােগ।

প্রশ্ন ১৩। কোষ্ঠকাঠিন্য কী?

উত্তর : কোষ্ঠকাঠিন্য বিশেষ কোনাে রােগ নয়। যখন কারাে শক্ত পায়খানা হয় অথবা দুই বা তারও বেশী দিন পায়খানা হয় না এ অবস্থাই কোষ্ঠকাঠিন্য।

প্রশ্ন ১৪। ল্যাকটিয়াল কী?

উত্তর : ল্যাকটিয়াল হলাে এক প্রকার লসিকা জালক যা রক্তের কৈশিক নালি দ্বারা পরিবেষ্টিত অবস্থায় ক্ষুদ্রান্ত্রের অন্ত্র প্রাচীরে ভিলাসের মধ্যে অবস্থান করে।

প্রশ্ন ১৫। আদর্শ খাদ্য পিরামিড কী?

উত্তর : যে খাদ্য তালিকায় শর্করার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি শর্করাকে নিচু স্তরে রেখে পর্যায়ক্রমে পরিমাণগত দিক বিবেচনা করে শাকসবজি, ফলমূল, আমিষ, স্নেহ ও চর্বিজাতীয় খাদ্যকে সাজালে যে কাল্পনিক যে পিরামিড তৈরি হয়, সেটিই আদর্শ খাদ্য পিরামিড।

প্রশ্ন ১৬। ইনসুলিন নিঃসৃত হয় কোন গ্রন্থি থেকে?

উত্তর : অগ্ন্যাশয় গ্রন্থি থেকে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়।

প্রশ্ন ১৭। ছেলেদের Basal Metabolic Rate নির্ণয়ের সূত্রটি লিখ।

উত্তর : ছেলেদের Basal Metabolic Rate নির্ণয়ের সূত্রটি হলাে : ৬৬ + (১৩.৭ X ওজন কেজি) + (৫ X উচ্চতা সেমি) – (৬.৮ X বয়স বছর)

প্রশ্ন ১৮। দন্তমজ্জা কী?

উত্তর : ডেন্টিনের ভিতরের ফাপা নরম অংশই দন্তমজ্জা।

প্রশ্ন ১৯। জেরপথ্যালমিয়া রােগ কী?

উত্তর : ভিটামিন A-এর অভাব দীর্ঘস্থায়ী হলে চোখের কর্নিয়ায় আলসার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থাকে জেরপথ্যালমিয়া রােগ বলে।

প্রশ্ন ২০। ডেন্টাল সংকেত কী?

উত্তর : মানব দাঁতের সংখ্যা যে সংকেতের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তাই ডেন্টাল সংকেত।

প্রশ্ন ২১। পরিপাক কী?

উত্তর : যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় মানুষের পৌষ্টিকালির অত্যন্ত জটিল, অদ্রবণীয়, অশােষণযােগ্য খাদ্য উপাদানসমূহ নির্দিষ্ট উৎসেচক বা এনজাইম এবং প্রাণরস বা হরমােনের সাহায্যে বিশ্লেষিত হয়ে শােষণযােগ্য এবং দ্রবণীয় সরল উপাদানে পরিণত হয় তাই পরিপাক।

প্রশ্ন ২২। ভিলাই কী?

উত্তর : ক্ষুদ্রান্ত্রের মিউকাস থেকে আঙ্গুলের মতাে যে অভিক্ষেপ বের হয় তাকে ভিলাই বলে।

প্রশ্ন ২৩। কোন ধরনের খাদ্য দেহে তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে?

উত্তর : স্নেহ ও চর্বি জাতীয় খাদ্য দেহে তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে।

প্রশ্ন ২৪। কোন ধরনের খাদ্য দেহে নাইট্রোজেন সরবরাহ করে?

উত্তর : আমিষ জাতীয় খাদ্য দেহে নাইট্রোজেন সরবরাহ করে।

প্রশ্ন ২৫। আমাদের খাদ্য তালিকায় শতকরা কত ভাগ প্রাণীজ আমিষ থাকা দরকার?

উত্তর : আমাদের খাদ্য তালিকায় শতকরা ২০ ভাগ প্রাণীজ আমিষ থাকা দরকার।

প্রশ্ন ২৬। গ্লুকোজ কী?

উত্তর : গ্লুকোজ হলাে একটি এক অণুবিশিষ্ট শর্করা।

প্রশ্ন ২৭। পৌষ্টিকতন্ত্র কাকে বলে?

উত্তর : যে তন্ত্রের সাহায্যে খাদ্যদ্রব্য ভেঙে দেহের গ্রহণ উপযােগী উপাদানে পরিণত ও শােষিত হয় তাকে পৌষ্টিকতন্ত্র বলে।

প্রশ্ন ২৮। ডেন্টিনকে আবৃতকারী পাতলা আবরণের নাম কী?

উত্তর : ডেন্টিনকে আবৃতকারী পাতলা আবরণটি হলাে সিমেন্ট।

প্রশ্ন ২৯। মানবদেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি কোনটি?

উত্তর ; দেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি হলাে যকৃত।

প্রশ্ন ৩০। লালারসে কোন এনজাইম থাকে?

উত্তর : লালারসে টায়ালিন নামক এনজাইম থাকে।

প্রশ্ন ৩১। ইনস্যলিন নামক হরমােনটি কোন অঙ্গা থেকে নিঃসৃত হয়?

উত্তর : অগ্ন্যাশয় থেকে ইনস্যুলিন হরমােনটি নিঃসৃত হয়।

প্রশ্ন ৩২। অজীর্ণ কী?

উত্তর : অজীর্ণ হলাে বদহজম। অর্থাৎ খাদ্যদ্রব্য সঠিকভাবে পরিপাক না হওয়াকেই অজীর্ণ বলা হয়।

 

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

 

প্রশ্ন ১। সম্পূরক আমিষ বলতে কী বুঝায়?

উত্তর : মিশ্র আমিষকে সম্পূরক আমিষ বলে। দুই বা ততােধিক উদ্ভিজ্জ আমিষ একত্রে রান্না করে খাদ্যমান বাড়ানাের ফলে আট রকম আবশ্যকীয় অ্যামাইনাে এসিড পাওয়া যায়। যেমন- ডাল ও চাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে সম্পূরক আমিষ তৈরি করা যায় ।

প্রশ্ন ২। আদর্শ খাদ্য পিরামিড কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : শর্করা জাতীয় খাবারকে নিচের স্তরে রেখে পর্যায়ক্রমে পরিমাণগত দিক বিবেচনা করে শাকসবজি, ফলমূল, আমিষ, স্নেহ ও চর্বিজাতীয় খাদ্যকে সাজালে যে কাল্পনিক পিরামিড তৈরি হয় তাকে আদর্শ খাদ্য পিরামিড বলে। আদর্শ খাদ্য পিরামিডের অংশগুলাে তার আকার অনুযায়ী নিচের দিকে বড় এবং উপরের দিকে ছােট অর্থাৎ আদর্শ খাদ্য পিরামিড অনুযায়ী একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে সবচেয়ে বেশি শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এরপর শাকসবজি ফলমূল, মাছ, মাংস, ডিম আরও কম এবং চর্বি জাতীয় খাদ্য সবচেয়ে কম গ্রহণ করতে হবে।

প্রশ্ন ৩। মুখগহ্বরে কোন খাদ্য উপাদানটি পরিপাক হয় ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : মুখগহ্বরে শর্করা জাতীয় খাদ্য উপাদানটি পরিপাক হয় মুখের অভ্যন্তরে দাত, জিহ্বা ও লালাগ্রন্থি থাকে। মুখগহ্বরে অবস্থিত লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত লালারসের টায়ালিন ও মলটেজ নামক এনজাইম শর্করা পরিপাকে অংশ নেয়।

প্রশ্ন ৪। খাদ্যপ্রাণ বলতে কী বােঝায়?

উত্তর : খাদ্যে পরিমাণমতাে শর্করা ও আমিষ থাকলে জীবের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য বিশেষ এক ধরনের খাদ্য উপাদানের প্রয়ােজন হয়। ঐ খাদ্য উপাদানকে ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ বলে। খাদ্যপ্রাণ সাধারণত খাদ্যে অতি সামান্য পরিমাণে থাকে এবং বিপাক ক্রিয়ায় উৎসেচকের সাথে কো-এনজাইম হিসেবে কাজ করে । খাদ্যপ্রাণ প্রাণীর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও শরীর সুস্থ রাখার জন্য অপরিহার্য। খাদ্যপ্রাণ জৈব প্রকৃতির যৌগিক পদার্থ যার অভাবে দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধিসাধনসহ বিভিন্ন কাজ ব্যাহত হয়।

প্রশ্ন ৫। বেসিক মেটাবলিক রেট বলতে কী বুঝ? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বেসিক মেটাবলিক রেট বলতে বুঝায় পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় মানব শরীরে ব্যবহৃত শক্তির পরিমাণ । BMR এর মান বের করা একটু কঠিন, এর সমীকরণ লিঙ্গ ও বয়সভেদে পার্থক্য আছে। BMR সম্পর্কে ধারণা পেতে বহুল ব্যবৃহত হ্যারিস বেনেডিক্ট সূত্রটি ব্যবহার করা যায় ।

মেয়েদের BMR = ৬৫৫ + (৯.৬ x ওজন কেজি)

+ (১.৮ x উচ্চতা সে.মি.) – (৪.৭x বয়স বছর)

ছেলেদের BMR = ৬৬ + (১৩.৭ X ওজন কেজি)

+ (৫ উচ্চতা সে.মি.) – (৬.৮ X বয়স বছর)

প্রশ্ন ৬। রাফেজ বলতে কী বােঝায়?

উত্তর : রাফেজ মূলত সেলুলােজ নির্মিত উদ্ভিদ কোষ প্রাচীর । শস্যদানা, ফলমূল এবং সবজির অপাচ্য তন্তুর অংশ রাফেজ নামে পরিচিত। যেমন– শস্যদানার বহিরাবরণ, সবজি, ফলের খােসা, শাঁস, বীজ ইত্যাদি।

প্রশ্ন ৭। উদ্ভিদের মাইক্রোউপাদান বলতে কী বােঝায়?

উত্তর : উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান অত্যন্ত সামান্য পরিমাণে প্রয়ােজন, তাদেরকে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টার বলে। উদ্ভিদের ১৬টি অত্যাবশ্যকীয় উপাদানের মধ্যে ৬টি হলাে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। এরা হলাে জিংক (Zn), মলিবডেনাম (Mo), ম্যাংগানিজ (Mn), বােরন (B), তামা (Cu) এবং ক্লোরিন (CI)।

প্রশ্ন ৮। মিশ্র আমিষ বলতে কী বােঝায়?

উত্তর : দুই বা ততােধিক উদ্ভিজ্জ আমিষ একত্রে রান্না করে খাদ্যমান বাড়ানাের ফলে আট রকম অ্যামাইনাে এসিড পাওয়া যায়। বিভিন্ন আমিষের সংমিশ্রণে তৈরি এরূপ আমিষকে মিশ্র আমিষ বলে।

প্রশ্ন ৯। ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট বলতে কী বােঝায়?

উত্তর : উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান বেশি পরিমাণ দরকার হয় সেগুলােকে ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট বা ম্যাক্রোউপাদান বলা হয়। ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট ১০টি যথা- নাইট্রোজেন (N), পটাসিয়াম (K), ফসফরাস (P), ক্যালসিয়াম (Ca), ম্যাগনেসিয়াম (Mg), কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H), অক্সিজেন (০) সালফার (S) এবং লৌহ (Fe)।

প্রশ্ন ১০। খাদ্য সংরক্ষণ বলতে কী বুঝ?

উত্তর : খাদ্য সংরক্ষণ বলতে বুঝায় এমন এক প্রক্রিয়া যাতে খাদ্যের পচন রােধ করা হয়। খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে সাধারণত পচন সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণ এবং খাদ্যের চর্বিজাতীয় অংশের জারণ রােধ করা হয়। ফলে খাদ্যের গুণাগুণ, গ্রহণযােগ্যতা ও খাদ্যমান অটুট থাকে।

প্রশ্ন ১১। থাইরয়েড সমস্যা বলতে কী বুঝায়?

উত্তর : থাইরয়েড গ্রন্থি গলায় ট্রাকিয়ার উপরের অংশে অবস্থিত থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমােন সাধারণত বিপাকের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। যখন থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে হরমােন নিঃসরণ বন্ধ হয়ে গিয়ে বিপাকীয় কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয় তখন তাকে থাইরয়েড সমস্যা বলে। চোখ বের হয়ে আসার রােগটি থাইরয়েড সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।

প্রশ্ন ১২। মানুষের স্থায়ী দাঁত কয় ধরনের ও কী কী?

উত্তর : মানুষের স্থায়ী দাত চার ধরনের। যথা—

১. কর্তন দাত, ২. ছেদন দাঁত, ৩. অগ্রপেষণ দাঁত, ৪. পেষণ দাঁত।

প্রশ্ন ১৩। দেহের জন্য খনিজ লবণ প্রয়ােজনীয় কেন?

উত্তর : খনিজ লবণ দেহ গঠন ও দেহের অভ্যন্তরীণ কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। হাড়, দাঁত, পেশি, এনজাইম ও হরমােন গঠনের জন্য খনিজ লবণ একটি অপরিহার্য উপাদান। স্নায়ুর উদ্দীপনা, পেশি সংকোচন, দেহকোষে পানির সাম্যতা বজায় রাখা, অম্ল ও ক্ষারের সমতাবিধান ইত্যাদি কাজে খনিজ লবণের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই খনিজ লবণ দেহের জন্য খুবই প্রয়ােজনীয়।

প্রশ্ন ১৪। নিম্নমানের আমিষ বলতে কী বােঝায়?

উত্তর : উদ্ভিজ্জ আমিষকে নিম্নমানের আমিষ বলা হয়। ডাল, চিনাবাদাম, শিমের বীচি ইত্যাদি উদ্ভিজ্জ আমিষ। এগুলাে প্রাণিজ আমিষের তুলনায় কম পুষ্টিকর, কারণ উদ্ভিজ্জ আমিষে প্রয়ােজনীয় সব কয়টা অ্যামাইনাে এসিড থাকে না। বীজে আমিষের পরিমাণ উদ্ভিদের অন্যান্য অংশের চেয়ে বেশি থাকে। উদ্ভিজ্জ আমিষের জৈবমূল্য কম বিধায় তা নিম্নমানের আমিষ বলে পরিচিত ।

প্রশ্ন ১৫। ডায়রিয়া রােগটি বিপদজনক কেন?

উত্তর : যদি দিনে অন্তত তিনবার পাতলা পায়খানা হয় তবে তার ডায়রিয়া হয়েছে বলে মনে করতে হবে। সাধারণত শিশুরা ডায়রিয়ায় বেশি ভােগে। ডায়রিয়া হলে রােগীর দেহ থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়, দেহের পানি কমে যায়, রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে দেহে পানি ও লবণের স্বল্পতা দেখা দেয়। এসময় যথাযথ চিকিৎসা করা না হয়, তবে রােগী মারাও যেতে পারে। এজন্য ডায়রিয়া রােগটি বিপদজনক।

প্রশ্ন ১৬। ফলমূলকে রাফেজ বলা হয় কেন- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ফলমুলকে রাফেজ বলা হয় কারণ রাফেজ মূলত সেলুলােজ নির্মিত উদ্ভিদ কোষপ্রাচীর । শস্যদানা, ফলমূল এবং সবজির অপচ অন্তুর অংশ রাফেজী নামে পরিচিত। যেমন– শস্যদানার বহিরাবরণ, সবজি, ফলের খােসা, শাস, বীজ ইত্যাদি।

প্রশ্ন ১৭। গাছের পাতা বিবর্ণ হয়ে যায় কেন?

উত্তর : উদ্ভিদের জীবনচক্রে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান বিভিন্ন কাজ করে থাকে। পুষ্টি উপাদান পরিমিত পরিমাণে প্রয়ােগ করা গেলে উপকারী প্রভাব দেখা যায়। অপরদিকে কোনাে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি দেখা দিলে উদ্ভিদে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। লৌহের (Fe) ঘাটতির কারণে গাছের পাতা বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিল। লৌহ (Fe) উপাদানটি উদ্ভিদের সবুজ কণা গঠন করে এবং বিভিন্ন প্রকার জারক রসকে ক্রিয়াশীল রাখে। তাই উদ্ভিদে এটির অভাব দেখা দিলে গাছের পাতা বিবর্ণ হয়ে যায় ।

প্রশ্ন ১৮। পেষণ দাত আমাদের জন্য জরুরি কেন?

উত্তর : মানুযের ৪ প্রকার দাতের মধ্যে পেষণ দাঁত অন্যতম। এ দাত খাদ্যবস্তু গ্রহণ করার পর তা চর্বণ ও পেষণ করে থাকে। চর্বণ ও পেষণের ফলে খাদ্য বস্তু পরিপাকে সহায়তা হয়। তাই পেষণ দাত আমাদের জন্য জরুরি একটি অঙ্গ।।

প্রশ্ন ১৯। BMI বলতে কী বুঝ? 

উত্তর : BMI হলাে Body Mass Index, অর্থাৎ দেহের উচ্চতার সাথে ওজনের সামঞ্জস্য। আর দেহের উচ্চতার সাথে যদি ওজনের সামঞ্জস্য থাকে, তবেই পুষ্টিগত দিক থেকে শরীরকে সুস্থ বলা হয়। শরীরের সুস্থতা ও স্থূলতার মান নির্ণয়ের এই মানদন্ড খুবই উপযােগী।

প্রশ্ন ২০। অজীর্ণতা বলতে কী বুঝায়?

উত্তর : অজীর্ণতা বলতে বদহজমকে বুঝানাে হয়ে থাকে। নানা কারণে বদহজম হয় বা হজমে ব্যাঘাত ঘটে। পেটের উপরের দিকে ব্যথা, পেট ফাঁপা, পেট ভরা মনে হওয়া, বকু জ্বালা করা, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, বুক ব্যথা, টক সেঁকুর ওঠা ইত্যাদি অজীর্ণতার লক্ষণ। এছাড়া পাকস্থলী বা অন্ত্রের আলসারের কারণেও হজমে অসুবিধা দেখা দিতে পারে।

প্রশ্ন ২১। যকৃতকে গবেষণাগার বলা হয় কেন?

উত্তর : যকৃত মানবদেহের সবচেয়ে বড় এম্বি । যকৃত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লােবিউল দ্বারা তৈরি। প্রত্যেকটি লােবিউলে অসংখ্য কোষ থাকে। যেগুলো পিত্তরস তৈরি করে। যকৃতে বিভিন্ন রকম জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে। তাই একে রসায়নের গবেষণাগার বলা হয়।

প্রশ্ন ২২। নাইট্রোজেনের অভাবে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় কেন? 

উত্তর : নাইট্রোজেনের অভাব হলে ক্লোরােফিল সৃষ্টি ব্যাহত হয়। আর ক্লোরােফিল সৃষ্টি ব্যাহত হলে খাদ্য প্রস্তুত বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে উদ্ভিদের বৃদ্ধিও ব্যাহত হয় ।

প্রশ্ন ২৩। উদ্ভিদে ডাইব্যাক (Dieback) রােগ হয় কেন?

উত্তর : সালফার নামক খনিজ পুষ্টির অভাবে উদ্ভিদের পাতা হালকা সবুজ হয়, কাণ্ডের শীর্ষ মরে যায় ফলে ডাইব্যাক রােগের সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন ২৪। চাল, গম আলু প্রভৃতি আমরা রান্না করে খাই কেন?

উত্তর : চাল, গম, আলু থেকে আমরা শ্বেতসার পাই। কাঁচা খাদ্যের শ্বেতসার সহজে হজম হয় না। এজন্য আমরা চাল, গম, আলু প্রভৃতি রান্না করে খাই।

প্রশ্ন ২৫। চর্বি, ঘি, ডালডা প্রভৃতি পানিতে ভাসে কেন?

উত্তর : চর্বি, ঘি, ডালডা প্রভৃতি স্নেহ পদার্থ । স্নেহ পদার্থ পানিতে অদ্রবণীয় । তাই চর্বি, ঘি, ডালডা প্রভৃতি পানিতে ভাসে।

প্রশ্ন ২৬। খনিজ লবণ মানবদেহের জন্য প্রয়ােজনীয় কেন?

উত্তর : খনিজ লবণ দেহ গঠন করে, দেহের অভ্যন্তরীণ কাজ নিয়ন্ত্রণকরে। তাছাড়া হাড়, দাঁত, পেশি, এনজাইম ও হরমোন গঠনে খনিজ লবণ, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্নায়ুর উদ্দীপনা, পেশি সংকোচন, দেহকোষ গঠন প্রভৃতি কাজও খনিজ লবণ করে। তাই খনিজ লবণ মানবদেহের জন্য প্রয়ােজনীয় একটি উপাদান।

প্রশ্ন ২৭। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য সৃষ্টি হওয়ার কারণ কী?

উত্তর : বিভিন্ন কারণে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য সৃষ্টি হতে পারে। যথা : পায়খানার বেগ চেপে রাখা, পরিশ্রম না করা, আন্ত্রিক গােলযােগ, কোলনের মাংশপেশি আস্তে আস্তে সংকুচিত হওয়া, পৌষ্টিনালির সাহায্যে খাদ্যের অপাচ্য অংশ থেকে অতিরিক্ত পানি শােষণ প্রভৃতি।

প্রশ্ন ২৮। দাত ও জিহ্বা খাদ্য পরিপাকে প্রয়ােজন কেন?

উত্তর : দাত ও জিহ্বা খাদ্য পরিপাকে অত্যন্ত প্রয়ােজনীয়। দাত খাদ্যকে চিবাতে সাহায্য করে এবং খাদ্যবস্তুকে ছােট ছােট অংশে পরিণত করে জিবা খাদ্যের স্বাদ গ্রহণ এবং খাদ্যবস্তু নেড়েচেড়ে চিবাতে সাহায্য করে।

Leave a Comment