সাহসী জননী বাংলা কবিতার জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

সাহসী জননী বাংলা কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

 

প্রশ্ন ১। ‘সাহসী জননী বাংলা কবিতায় চির কবিতার দেশ বলা হয়েছে কাকে?

উত্তর : ‘সাহসী জননী বাংলা কবিতায় বাংলাদেশকে চির কবিতার দেশ বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ২। মৃতের আগুন’ কোথায় চাপা?

উত্তর : মৃতের আগুন বুকে চাপা।

প্রশ্ন ৩। কখন হানাদার আসে?

উত্তর : মধ্যরাতে হানাদার আসে।

প্রশ্ন ৪। মধ্যরাতে কারা জাগে?

উত্তর : মধ্যরাতে নীলকমলেরা জাগে।

প্রশ্ন ৫। সাহসী জননী বাংলা’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত? 

উত্তর : ‘সাহসী জননী বাংলা’ কবিতাটি ‘ধূলি ও সাগর দৃশ্য কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

প্রশ্ন ৬। কার্তুজ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : কার্তুজ শব্দের অর্থ হলাে বন্দুকের টোটা।

প্রশ্ন ৭। ‘কার্তুজ’ শব্দটি কোন শব্দ থেকে এসেছে?

উত্তর : কার্তুজ শব্দটি কাটিজ শব্দ থেকে এসেছে।

প্রশ্ন ৮। কবিতার হাতে কী উঠেছে? 

উত্তর : কবিতার হাতে রাইফেল উঠেছে।

প্রশ্ন ৯। আপন মনের পাঠশালাতে’ কামাল চৌধুরীর কী ধরনের রচনা?

উত্তর : ‘আপন মনের পাঠশালাতে’ কামাল চৌধুরীর কিশাের কবিতা।

প্রশ্ন ১০। কবি কামাল চৌধুরী কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর : কবি কামাল চৌধুরী কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন ১১। কামাল চৌধুরী বাংলা কবিতায় কোন ধারার প্রধান প্রতিনিধি?

উত্তর : কামাল চৌধুরী বাংলা কবিতায় পরিত ধারার প্রধান প্রতিনিধি।

প্রশ্ন ১২। কামাল চৌধুরী কী নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন?

উত্তর : কামাল চৌধুরী গারাে জনগােষ্ঠীর মাতৃসূত্ৰীয় আবাস প্রথা নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

প্রশ্ন ১৩। বাঙালি কী ধরনের জাতি?

উত্তর : বাঙালি অনার্য জাতি।

প্রশ্ন ১৪। কামাল চৌধুরী কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর : কামাল চৌধুরী ১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন ১৫। “তােদের অসুর নৃত্য”- কাদের?

উত্তর : পাকিস্তানি সেনাদের।

প্রশ্ন ১৬। রক্তাক্ত হাত কাদের?

উত্তর : রক্তাক্ত হাত পাকিস্তানি সেনাদের।

প্রশ্ন ১৭। কাদের রক্তাক্ত হাত মুচড়ে দিয়েছে?

উত্তর : হানাদারদের রক্তাক্ত হাত মুচড়ে দিয়েছে।

প্রশ্ন ১৮। রক্তাক্ত হাত মুচড়ে দিতে কত মাস লেগেছে?

উত্তর : রক্তাক্ত হাত মুচড়ে দিতে নয় মাস লেগেছে।

প্রশ্ন ১৯। অনার্য অর্থ কী?

উত্তর : অনার্য অর্থ যারা আর্য নয় এমন জাতি।

প্রশ্ন ২০। বাঙালির প্রধান খাদ্য কী?

উত্তর : বাঙালির প্রধান খাদ্য ভাত।

প্রশ্ন ২১। বাঙালিকে কারা ভিতু মনে করত?

উত্তর : বাঙালিকে পাকিস্তানিরা ভিতু মনে করত।

প্রশ্ন ২২। বর্ণমালা কোথায় ঘােরে?

উত্তর : বর্ণমালা পথে পথে তেপান্তরে ঘােরে।

প্রশ্ন ২৩। উদ্বাস্তু অর্থ কী?

উত্তর : উদ্বাস্তু অর্থ বসতবাড়ি থেকে বিতাড়িত বা যার থাকার স্থায়ী আবাসন নেই।

প্রশ্ন ২৪। বুড়িগঙ্গা কোথায় অবস্থিত?

উত্তর : বুড়িগঙ্গা ঢাকার পাদদেশে অবস্থিত।

প্রশ্ন:২৫। গ্রেনেড কোথায় উঠেছে?

উত্তর : বাঙালির হাতে গ্রেনেড উঠেছে।

প্রশ্ন ২৬। প্রতিশােধের দ্বারা কী হবে?

উত্তর : প্রতিশােধের দ্বারা ভােজ হবে।

 

সহসী জননী বাংলা কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন     

প্রশ্ন ১। ‘অ, আ, ক, খ বর্ণমালা পথে পথে তেপান্তর ঘুরে।’ উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বর্ণমালা পথে পথে তেপান্তরে ঘােরার কারণ এই ভাষার বর্ণমালা শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত হয়ে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ চেতনায় ও সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য এদেশের তরুণরা বুকের রক্ত ঝরিয়েছে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগ হওয়ার পর থেকেই শাসকগােষ্ঠী এদেশের মানুষকে নানাভাবে শােষণ করতে থাকে। তারা প্রথম আঘাত করে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ লােকের ভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও উর্দুকে চাপিয়ে দিয়ে। শাসকগােষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে বাংলা ভাষার পরিবর্তে এদেশের মানুষের ওপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত বাঙালি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে এবং এর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তােলে। মূলত বাংলা ভাষার জন্য যে আন্দোলন ও সংগ্রামী চেতনার প্রকাশ ঘটেছে পরবর্তীতে তা স্বাধীনতা আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।

প্রশ্ন ২। ‘ডাকাত পড়েছে গ্রামে’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?

উত্তর : ‘ডাকাত পড়েছে গ্রামে’ বলতে গভীর রাতে ঘুমন্ত মানুষের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অতর্কিত হামলা চালানােকে বােঝানাে হয়েছে।

হানাদারদের ‘ডাকাত’ বলার কারণ হলাে- ডাকাতরা যেভাবে হঠাৎ করে এসেই মানুষের ওপর হামলা চালায়, হানাদাররাও সেভাবে এলে বর্বরতা চালিয়েছিল। ডাকাতরা সাধারণত দিনে আসে না। যথাযথ খোঁজখবরের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে রাতের আঁধারে চুপিসারে আসে। তারপর নির্দিষ্ট স্থানে হামলা করে সব লুটে নিয়ে যায়। পাকিস্তানি হানাদাররা ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে অতর্কিতে মানুষের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে হামলা চালায়। এ কারণেই পাকিস্তানি হানাদারদের ডাকাতের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

প্রশ্ন ৩। “যার সঙ্গে যে রকম, সেরকম খেলবে বাঙালি।”- ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর : “যার সঙ্গে যে রকম, সেরকম খেলবে বাঙালি”- লাইনটি  দ্বারা অত্যাচারীর প্রতি সমান প্রতিশােধকে বােঝানাে হয়েছে। 

পাকিস্তানি সৈন্যরা বাংলার বুকে সর্বোচ্চ তাণ্ডব চালিয়েছিল। তারা অন্যায়ভাবে  এদেশের অসংখ্য মানুষকে মেরেছে! মা-বােনের সম্ভম নষ্ট করেছে। আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ, প্রতিশােধ বাংলার মানুষও গ্রহণ করেছে। তারা যেরূপ নৃশংসতা বাংলার মানুষের প্রতি  দেখিয়েছে, বাঙালিও সেরূপ নৃশংসতার মধ্য দিয়ে তাদের হারিয়েছে, মেরেছে, কান কেটে নিয়েছে। আলােচ্য লাইন দ্বারা এ বিষয়টিই নির্দেশিত হয়েছে।

প্রশ্ন ৪। রাতজাগা নির্বাসন শেষে। কথাটি বুঝিয়ে লেখ। 

উত্তর : রাতজাগা নির্বাসন শেষে’ কথাটি দ্বারা কবি যুদ্ধকালীন  বাংলার মানুষের নির্ঘম অস্থির জীবনকে বুঝিয়েছেন।

পাকিস্তানি হানাদাররা রাতের অন্ধকারে বাঙালি জাতির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। ফলে প্রাণের তাগিদে এদেশের মানুষ ফেরারি হয়। তখন হানাদারদের অত্যাচারে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষই নিজেকে পরবাসী ভেবেছে।অতন্দ্র প্রহরীর মতাে শত্রুকে প্রতিরােধ করতে তারা রাতের পর রাত জেগে কাটিয়েছে। 

প্রশ্ন ৫। “জাগে, নীলকমলেরা জাগে।”- এখানে নীলকমল’।  বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?

উত্তর : “জাগে, নীলকমলেরা জাগে।”- এখানে নীলকমল’ বলতে মুক্তিযােদ্ধাদের বােঝানাে হয়েছে।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বর্বর হানাদাররা পদ্মা-বুড়িগঙ্গার তীরে তীরে দস্যুর মতাে হানা দিয়েছে। হত্যা করেছে মানুষ, ধ্বংস করেছে লােকালয়। কিন্তু বাংলার বীর সন্তানেরা রূপকথার রাজকুমারদের মতাে প্রতিবাদ করেছে, প্রতিশােধ নিয়েছে। বীর মুক্তিযােদ্ধারা দীর্ঘদিন লড়াই করেছে, বহু রাত জেগে জনজীবন পাহারা দিয়ে কাটিয়েছে। এদেশকে শত্রুমুক্ত করতে তারা নিঘুম রাত কাটিয়েছে। তাদের ত্যাগের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা পেয়েছে। তারা আমাদের স্বাধীনতার নায়ক, রূপকথার রাজকুমারদের মতাে।

প্রশ্ন ৬। অসুর নৃত্য আর ঠা ঠা হাসি কীভাবে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে?

উত্তর : অসুর নৃত্য আর ঠা ঠা হাসি প্রতিশােধের মাধ্যমে শত্রুদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তানি হানাদাররা এদেশের মধ্যে অসুরের “মতাে তাণ্ডব চালিয়েছে। তারা, সমস্ত দেশকে ধ্বংসস্থূপে পরিণত করেছে। অসংখ্য মানুষের প্রাণ হরণ করেছে। মানুষ হত্যার ক্ষেত্রে তারা কোনাে ভেদাভেদ মানেনি। বাঙালির রক্তে তাদের হাত লাল হয়ে গেছে। বাঙালিও তাদেরকে এর উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। কঠোর প্রতিরােধের মাধ্যমে তাদের অসুর নৃত্য থামিয়ে দিয়েছে। বন্দুকের গুলি দিয়েই তাদের বন্দুকের গুলির প্রতিবাদ করেছে। এভাবেই তারা অসুর নৃত্য আর ঠা ঠা হাসি ফিরিয়ে দিয়েছে।

প্রশ্ন ৭। বাঙালিকে অনার্য জাতি’ বলা হয় কেন?

উত্তর : বাঙালিকে ‘অনার্য জাতি’ বলার কারণ হলাে, আর্যরা ভারতবর্ষে আসার আগে থেকেই এ জাতির লােক এদেশে বসবাস করত।

আর্যদের আগমনের আগে থেকেই এই বাংলা ভূখণ্ডে মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে মিলেমিশে বসবাস করত। এদেশে আর্যদের আগমনের পর তারা অনার্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সেই সময় আর্যরা অনার্যদের ভিতু এবং দুর্বল ভেবে ঘৃণা করত। কবি এখানে অনার্যদের বীরত্বের কথা বলতে গিয়েই তিনি বাঙালিকে ‘অনার্য জাতি’ বলেছেন। ঐতিহাসিক ও সাহসী পরিচয় তুলে ধরেছেন।          

Leave a Comment