রানার কবিতার জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

রানার কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। দস্যুর চেয়ে রানারের বেশি ভয় কিসে?

উত্তর : দস্যর চেয়ে রানারের বেশি ভয় কখন সূর্য ওঠে।

প্রশ্ন ২। সুকান্ত ভট্টাচার্য কত বঙ্গাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর : সুকান্ত ভট্টাচার্য বাংলা ১৩৩৩ বঙ্গাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন ৩। সুকান্ত ভট্টাচার্য কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর : সুকান্ত ভট্টাচার্য কলকাতার কালীঘাটে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন ৪। সুকান্ত ভট্টাচার্য কোন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন?

উত্তর : সুকান্ত ভট্টাচার্য ম্যাট্রিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন।

প্রশ্ন ৫। কোন যুদ্ধ সুকান্তকে দারুণভাবে স্পর্শ করে?

উত্তর : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সুকান্তকে দারুণভাবে স্পর্শ করে ।

প্রশ্ন ৬। সুকান্তের কবিতায় কিসের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ পাওয়া যায়?

উত্তর : সুকান্তের কবিতায় অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ পাওয়া যায়।

প্রশ্ন ৭। সুকান্তের কবিতায় কার প্রতি গভীর মমতা প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর : সুকান্তের কবিতায় নিপীড়িত মানুষের প্রতি গভীর মমতা প্রকাশ পেয়েছে।

প্রশ্ন ৮। বাংলা কত সালে সুকান্ত ভট্টাচার্য মারা যান?

উত্তর : বাংলা ১৩৫৪ সালে সুকান্ত ভট্টাচার্য মারা যান।

প্রশ্ন ৯। রানার কবিতাটি কাদেরকে নিয়ে লেখা?

উত্তর : রানার’ কবিতাটি শ্রমজীবী মানুষদের নিয়ে লেখা ।

প্রশ্ন ১০। রানার ছুটেছে, তাই কী বাজছে?

উত্তর : রানার ছুটেছে, তাই ঝুমঝুম ঘন্টা বাজছে

প্রশ্ন ১১। রানারের হাতে কিসের বােঝা?

উত্তর : রানারের হাতে খবরের বােঝা।

প্রশ্ন ১২। রাতে চলার পথে রানার কী মানে না?

উত্তর : রাতে চলার পথে রানার কোনাে নিষেধ মানে না।

প্রশ্ন ১৩। দিগন্ত থেকে দিগন্তে কে ছােটে?

উত্তর : দিগন্ত থেকে দিগন্তে রানার ছােটে

প্রশ্ন ১৪। রানার কিসের কাজ নিয়েছে?

উত্তর : রানার নতুন খবর আনার কাজ নিয়েছে।

প্রশ্ন ১৫। জানা-অজানার বােঝা কার কাঁধে?

উত্তর : জানা-অজানার বােঝ রানারের কাধে।

প্রশ্ন ১৬। ‘রানার’ কবিতায় কে দুর্বার দুর্জয়?

উত্তর : রানার’ কবিতায় রানার দুর্বার দুর্জয়।

প্রশ্ন ১৭। জীবনের স্বপ্নের মতাে পিছে কী সরে যায়?

উত্তর : জীবনের স্বপ্নের মতাে পিছে বন সরে যায়।

প্রশ্ন ১৮। ভােরের আগমনে কোথায় লাল রং দেখা যায়?

উত্তর : ভােরের আগমনে পূর্ব কোণে লাল রং দেখা যায়।

প্রশ্ন ১৯। কারা আকাশে মিটমিট করে চায়?

উত্তর : অবাক রাতের তারারা আকাশে মিটমিট করে চায়।

প্রশ্ন ২০। রানার কখন শহরে পৌছে যাবে?

উত্তর : রানার ভােরে শহরে পৌছে যাবে ।

প্রশ্ন ২১। হাতের লণ্ঠন কী রকম শব্দ করে?

উত্তর : হাতের লণ্ঠন ঠনঠন শব্দ করে ।

প্রশ্ন ২২। রানারের চলার পথে কারা আলাে দেয়?

উত্তর : রানারের চলার পথে জোনাকির আলাে দেয় ।

প্রশ্ন ২৩। কে জীবনের বহু বছর পেছনে ফেলে গেছে?

উত্তর : রানার জীবনের বহু বছর পেছনে ফেলে গেছে।

প্রশ্ন ২৪। ক্লান্তশ্বাস কী ছুঁয়েছে?

উত্তর : ক্লান্তশ্বাস আকাশ ছুঁয়েছে।

প্রশ্ন ২৫। মাটি কিসে ভিজে গেছে?

উত্তর : মাটি ঘামে ভিজে গেছে।

প্রশ্ন ২৬। কার প্রিয়া একা ঘরে অভিমান করে আছে?

উত্তর : রানারের প্রিয়া একা ঘরে অভিমান করে আছে।

প্রশ্ন ২৭। কে একা শয্যায় বিনিদ্র রাত কাটায়?

উত্তর : রানারের প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত কাটায়।

প্রশ্ন ২৮। রাত শেষ হলে কী ওঠে?

উত্তর : রাত শেষ হলে সূর্য ওঠে ।

প্রশ্ন ২৯। ঘরে অভাব থাকার কারণে পৃথিবীকে কী মনে হয়?

উত্তর : ঘরে অভাব থাকার কারণে পৃথিবীকে কালাে ধােয়া মনে হয়।

প্রশ্ন ৩০। কার পিঠে টাকার বােঝা?

উত্তর : রানারের পিঠে টাকার বােঝা।

প্রশ্ন ৩১। পথে কিসের ভয়?

উত্তর : পথে দস্যুর ভয়।

প্রশ্ন ৩২। দুঃখে ও শােকে মানুষ কী লেখে?

উত্তর : দুঃখে ও শােকে মানুষ চিঠি লেখে ।

প্রশ্ন ৩৩। রানারের জীবনের দুঃখ কে জানে?

উত্তর : রানারের জীবনের দুঃখ পথের তৃণ জানে।

প্রশ্ন ৩৪। কার কথা কালাে রাত্রির খামে ঢাকা পড়ে থাকবে?

উত্তর : রানারের কথা কালাে রাত্রির খামে ঢাকা পড়ে থাকবে।

প্রশ্ন ৩৫। রানারকে কে সহানুভূতির চিঠি পাঠাবে?

উত্তর : রানারকে ভােরের আকাশ সহানুভূতির চিঠি পাঠাবে।

প্রশ্ন ৩৬। কে ক্ষুধার ক্লান্তিতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়?

উত্তর : রানার ক্ষুধার ক্লান্তিতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় ।

প্রশ্ন ৩৭।  কিসের স্পর্শে রানারের দুঃখের কাল কেটে যাবে?

উত্তর : আলাের স্পর্শে রানারের দুঃখের কাল কেটে যাবে।

 

রানার কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। তার জীবনের স্বপ্নের মতাে পিছে সরে যায় বন– কেন বলা হয়েছে?

উত্তর : তার জীবনের স্বপ্নের মতাে পিছে সরে যায় বন– রানারের বরখেলাপ সতর্ক দবার গতি এবং জীবনের স্বপ্ন পূরণের অক্ষমতাকে বােঝানাের জন্য প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে। 

রানার দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলে। তার চলার গতিতে পথের ধারের বন পিছে সরে সরে যায়। এ যেন রানারের জীবনের স্বপ্নের মতাে পিছে পড়ে থাকা। কারণ স্বল্প আয়, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা তার জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বপ্নকে অঙ্কুরেই মেরে ফেলে। সেসব ব্যর্থতা পেছনে ফেলে রানার তার দায়িত্বে অনড়; সে অসীম সাহসে, দুর্বার গতিতে, দুর্গম পথ পাড়ি দেয়। সূর্য ওঠার আগেই দায়িত্বশীল রানার পৌঁছে যেতে চায় তার লক্ষ্যে। এটা বােঝাতেই কবি উক্ত চরণটি উপস্থাপন করেছেন।

প্রশ্ন ২। “রাত্রির পথে পথে চলে কোনাে নিষেধ জানে না মানার।” এখানে ‘নিষেধ জানে না মানার’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?

উত্তর : “রাত্রির পথে পথে চলে কোনাে নিষেধ জানে না মানার।” এখানে ‘নিষেধ জানে না মানার’ বলতে রাতের অন্ধকারে বিপদাপন্ন পরিস্থিতিতে রানারের নির্ভীক পথচলাকে বােঝানাে হয়েছে ।

রানার মানুষের চিঠির বােঝা কাঁধে নিয়ে দূরদূরান্তে পাড়ি দেয়। সন্ধ্যায় চিঠির বােঝা নিয়ে যাত্রা করে সূর্য ওঠার আগে গন্তব্যে পৌছে যায়। বন-জঙ্গলের মধ্য দিয়ে সে একা একা হাঁটে। পথে ডাকাতের ভয় ছাড়াও থাকে নানা ভয়। রানারের কাঁধে চিঠির সঙ্গে মানি অর্ডার থাকে। যেকোনাে সময় সে শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। এ সবকিছুই সে আগ্রাহ্য করে নির্ভীক সৈনিকের মতাে এগিয়ে যায়। আলােচ্য লাইনে ‘নিষেধ জানে না মানার’ বলতে এটাই বােঝানাে হয়েছে।

প্রশ্ন ৩। “জানা-অজানার বােঝা তার কাঁধে”- এখানে ‘জানাঅজানা’ বলতে কী নির্দেশ করা হয়েছে?

উত্তর : “জানা-অজানার বােঝা তার কাধে”- এখানে ‘জানা অজানা বলতে রানারের বহনকৃত বিভিন্ন খবরসহ চিঠিকে বােঝানাে হয়েছে।

চিঠি হচ্ছে প্রিয়জনের কাছে আবেগ-অনুভূতির ভাষা প্রেরণের অন্যতম যােগাযােগ মাধ্যম। প্রতিদিন রানারের কাছে অনেক কথামালা আর অনেক সংবাদ জমা হয়। রানার জানে এসব চিঠিতে প্রয়ােজনের কথা, আনন্দের কথা, দুঃখের কথা রয়েছে। তবে কার চিঠিতে কী সংবাদ রয়েছে, তা সে জানে না। অনেক মানুষের প্রেরিত সংবাদ নিয়ে পথচলাই তার কাজ। প্রশ্নোক্ত লাইনে ‘জানাঅজানা’ বলতে এই বিষয়কে বােঝানাে হয়েছে।

প্রশ্ন ৪। রানারকে ‘দুর্বার দুর্জয়’ বলার কারণ লেখ।

উত্তর : অর্পিত দায়িত্ব পালনে ভয়শূন্য হয়ে রাত্রির পথে পথে ছুটে চলার জন্য রানারকে ‘দুর্বার দুর্জয়’ বলা হয়েছে।

রানার চিঠি আনা-নেওয়ার কাজ করে। এর বিনিময়ে সে সামান্য বেতন পেলেও দায়িত্ব পালনে অটল। সে সমস্ত ভয় উপেক্ষা করে নির্জন রাতে একা পথে পাড়ি দেয় দূরদূরান্তে। ক্লান্তিকেও রানার জয় করে, পথ যত দুই হােক, সূর্য ওঠার আগেই রানার তা পাড়ি দেয়। শত্রুকে রানার যতটুকু ভয় পায়, তার চেয়ে বেশি ভয় পায় সময়কে কারণ নির্দিষ্ট সময়ে পৌছুতে না পারা মানেই দায়িত্বের সতর্ক। এসব কারণেই রানারকে দূর্বার দুর্জয়’ বলা হয়েছে। বরখেলাপ কিন্তু কখনই রানারের এটা হয় না। 

প্রশ্ন ৫। “পৃথিবীর বােঝা ক্ষুধিত রানার পৌছে দিয়েছে মেলে।”এখানে ‘ক্ষুধিত রানার’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?

উত্তর : “পৃথিবীর বােঝা ক্ষুধিত রানার পৌছে দিয়েছে মেলে ।”এখানে ‘ক্ষুধিত রানার’ বলতে রানারের দৈন্য অবস্থাকে বােঝানাে রানার নির্ভুকি পথ চলে নিজের দায়িত্ব পালন করে। যে টাকা দুবেলা খাবার তাতে হয় না। ফলে রানারকে কখনো কখনাে অভুক্ত বেতন পায় তাতে রানারের সংসার চালানাে দুষ্কর হয়ে পড়ে থাকতে হয় । পেটের ক্ষুধা নিয়ে তবুও রানার দৃঢ়পদে এগিয়ে চলে। কাধে চিঠির বােঝা নিয়ে দূর দিগন্তে পাড়ি জমায়। আলােচ্য লাইনে ‘ক্ষুধিত রানার’ বলতে এ বিষয়টিকেই বােঝানাে হয়েছে।

প্রশ্ন ৬। “জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে।” কারা?- লেখ ।

উত্তর : “জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে।”- এখানে ওরা’ বলতে সমাজের সেই লােকদের বােঝানাে হয়েছে যারা শ্রমের যথার্থ মূল্যায়ন করে না। 

রানার অক্লান্ত পরিশ্রম করে। সে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিঠি আর টাকার বােঝা গন্তব্যে পৌছে দেয়। একা রাতের পথে ডাকাতের ভয় আছে, প্রকৃতিক দুর্যোগের ভয় আছে। যেকোনাে সময় রানারের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। এতসব ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেও রানার শ্রমের মূল্য ঠিকভাবে পায় না। তাকে অতি সামান্য পরিমাণ বেতন দেওয়া হয়। এই সামান্য টাকায় যেন তার জীবনের সব রাত সে বিক্রি করে দিয়েছে।

প্রশ্ন ৭। রানারের প্রিয়ার রাত বিদ্রি কাটার কারণ কী?

উত্তর : রানারের প্রিয়ার রাত বিনিদ্র কাটার কারণ হলাে রানারের ঘরে না থাকা।

রানার সারা রাত পথে হাঁটে চিঠির বােঝা নিয়ে। সকালে এসব চিঠি শহরে পৌঁছে দেয়। দায়িত্বের কারণে রানার ঘরে রাত কাটাতে পারে না। রানাৱের ঘরে প্রিয়া আছে, সংসারের কর্মব্যস্ততায় তার সারাদিন কেটে যায়। রাতে কর্মব্যস্ততা থাকে না। ফলে রানারের প্রিয়ার কাছে রাত হয়ে পড়ে অনেক দীর্ঘ আর নিঃসঙ্গ । চোখে ঘুম আসে না, তার মন পড়ে থাকে রানারের জন্য। প্রশ্নোক্ত লাইনটিতে এটাই বােঝানাে হয়েছে।

প্রশ্ন ৮। “রাত শেষ হয়ে সূর্য উঠবে কবে?”- এখানে রাত দ্বারা কী বােঝানাে হয়েছে?

উত্তর : “রাত শেষ হয়ে সূর্য উঠবে কবে?”- এখানে রাত দ্বারা দুঃসময়কে বােঝানাে হয়েছে। 

রানার তার দায়িত্ব পালনে জীবনের ঝুঁকি নেয়। একা ঘরে তার প্রিয়ার বিদ্রি রাত কাটে। কিন্তু এতসব ত্যাগ করে তার প্রাপ্তি সামান্য টাকা। তা দিয়ে সংসার চালানাে অনেক কষ্টের। কখনাে খেয়ে, কখনাে না খেয়ে রানারকে দিন কাটাতে হয়। যাদের তরে রানার শ্রম দেয়, তারা তাকে মূল্যায়ন করে না। ফলে তার জীবন দৈন্যের কশাঘাতে জর্জরিত। আলােচ্য লাইনে ‘রাত’ বলতে এই দৈন্যময় জীবনের অধ্যায়কে বােঝানাে হয়েছে।

Leave a Comment