বিভিন্ন শাকের গুনাগুন ও খাওয়ার নিয়ম

বিভিন্ন শাকের ঔষধি গুনঃ

আমাদের চারপাশে বিভিন্ন শাক রয়েছে যেগুলে আমরা প্রতিনিয়ত খেয়ে থাকি। কিন্তু সেইসব শাকসবজির ঔষধি গুন আমরা জানি না।

তাছাড়াও সেসব শাকের সঠিক ঔষধি গুন সঠিক ভাবে পাওয়ার জন্য সঠিকভাবে রান্না করে খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে।    

আজকের পোস্টে সেসব শাকের গুন-গুন সহ খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।       



পুঁই শাক

রাসায়নিক সার ব্যতীত উৎপন্ন পুঁই শাক বীর্য উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শরীরের ক্ষয় পুরণে অত্যন্ত সহায়ক।

পুঁই শাকের ডাটা তেলে ভেজে তৃপ্তিমত খেলে ধারণার বাইরে বীর্য উৎপন্ন হয়। তরল বীর্য গাড় করে এবং কাম উত্তেজনা বৃদ্ধি করে। কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে। 

প্রস্রাবের ক্ষয় রােধ করে। স্ত্রী সহবাসের পরে পুঁই শাক ভাজী খেলে সহবাসে যেই পরিমান বীর্য ক্ষয় হয়েছে তা পূর্ণ করে।

শরীরের মধ্যে ভিটামিন বৃদ্ধি করে। রক্ত শূন্যতা দূর হয়, মাথা ধরা, মাথা গরম, চোখ জ্বালা ইত্যাদি দূর করে। রাত্রে সুনিদ্রা না হলে অর্ধ ছাটাক পুই পাতার মধুসহ সেবন করলে ভাল নিদ্রা হয় ।

মেহ প্রমেহের জন্য পুঁই শাকের পনের কি ষােলটি টাটকা পাতা নিয়ে তা আধা সের পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি অর্ধ পোয়া হলে, তা নামিয়ে একটি মাটির পাত্রে অথবা পাথরের বাটিতে উন্মুক্ত স্থানে রাত্রিকালে বসিয়ে রাখবে।  পরদিন থেকে তিন দিন যাবৎ গােসলের পর কাশির চিনিসহ সেবন করবে।

 

কচু শাক

যাবতীয় চক্ষু রােগে বিশেষ করে চোখের জ্যেতি বৃদ্ধির জন্য কচু শাক অত্যন্ত উপকারী। চোখের যাপসার জন্য কিছুদিন ধারাবাহিকভাবে গরম ভাতের সঙ্গে কচুর শাক ভাজা খাবে। চোখের দৃষ্টির মধ্যে আশাপাশ বা অন্য কোনরূপে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে নিয়মিত কচুর শাক খেলে উহা দূর হয়ে যাবে।



মান কচুর ডগা

যত কঠিন আমাশয় হােক না কেন মান কচুর ডগা এক ছটাক পরিমাণ কুচি কুচি করে সঙ্গে সমপরিমাণ কাঁচা আমের আমচুর অথবা তেতুল টক একত্র করে কচলায়ে উহার রস সেবন করবে। এভাবে কয়েক দিন করলেই আমাশয় আরােগ্য হয়ে যাবে ।

 

কলমী শাক ‘কলম্বী শাক’

মেহ প্রমেহ রােগে আধা পােয়া কাঁচা দুধের সাথে অর্ধ ছটাক কলমী শাকের রস মিকচার করে সেবন করলে মেহ রােগ আরােগ্য হয় । শিশুর মায়ের স্তনে দুধ অল্প হলে কলমী শাকের ঝােল তৈরি করে খেলে দুধ বেড়ে যায় ।

বসন্ত রােগ দেখা দিলে কলমী শাকের ঝােল অত্যন্ত উপকারী। এতে বসন্ত আরােগ্য হয়ে যায় ।

 

ব্রাক্ষ্মী শাক ‘বিরমী শাক’

রক্ত শূন্যতার জন্য বিরমী শাক অনেক উপকারীঃ

রক্তের আয়রণ উপদান হ্রাস পেলে মানুষের সাধারণত রক্তশূন্যতা দেখা যায়। এই বিরমী শাকের মধ্যে অধিক পরিমাণে আয়রণ উপাদান নিহিত আছে। এ জন্যই নলকূপের আশেপাশে এই শাক ব্রাক্ষ্মী লতা ও পাতা উৎপাদন হতে দেখা যায়।

নলকূপের পানিতে যেহেতু আয়রণ বেশী, তাই সেখানে এগুলো জন্মে কলমী শাক। বিনা পানি মিশ্রণে বিরমী শাক ছেচে এক তােলা পরিমাণ রস প্রত্যহ খালি পেটে সেবন করবে। এ রকম কয়েকদিন সেবন করলেই ইনশাআল্লাহ শূন্যতা দূর হবে।



 

শিশুদের সর্দির জন্য বিরমী শাক ও বিনা পানিতে বিরমী শাকঃ

হেঁচে আধা তোলা পরিমাণ শাকের রস কিছু সরিষার তেল ও মাসকলাই মিশ্রণ করে অগ্নিতে ফুটিয়ে ছেলে-মেয়েদের বক্ষে মালিশ করবে।

আধা তোলা বিরমি শাকের রস মধু সহকারে খাওয়ালেও সর্দি কমে যায়।

বিরমী শাকে মেধাশক্তি বৃদ্ধি পায়ঃ  বিরমী শকের রস ঘৃতের সাথে পাক করে এক মাস পর্যন্ত সেবন করলে মেধাশক্তি বাড়ে।

 

আমরুল ‘আমরুলী শাক’

বুকে সর্দি অটকিলে আমরুল শাকের রস সরিষার তেল মিশ্রিত করে আগুনে উত্তাপ্ত করে সিদ্ধ করে মালিশ

করলে উপকার হয়। মুখে অরুচি দেখা দিলে আমরুল শাকের ঝোল খেলে অরুচি দূর হয়। অম্বলের ব্যথাও দূর হয়।

Leave a Comment