বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধের জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন-১। বাংলা সনের প্রথম মাসের নাম কী?

উত্তর: বাংলা সনের প্রথম মাসের নাম বৈশাখ।

প্রশ্ন ২। বাংলা নববর্ষের প্রধান অনুষ্ঠানের নাম কী?

উত্তর: বাংলা নববর্ষের প্রধান অনুষ্ঠানের নাম বৈশাখী মেলা।

প্রশ্ন-৩। নববর্ষ উৎসব কোন তারিখে উদযাপিত হয়?

উত্তর: নববর্ষ উৎসব পয়লা বৈশাখে উদযাপিত হয়।

প্রশ্ন-৪। নববর্ষের দিনে আমরা একে অন্যকে কী বলি?!

উত্তর: নববর্ষের দিনে আমরা একে অন্যকে শুভ নববর্ষ বলি।

প্রশ্ন-৫। আমাদের প্রধান জাতীয় উৎসব কোনটি? 

উত্তর: আমাদের প্রধান জাতীয় উৎসব বাংলা নববর্ষ।

প্রশ্ন-৬। যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী কে ছিলেন?

উত্তর: যুক্তফ্রন্ট সরকারে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বাঙালির জনপ্রিয় নেতা শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক।

প্রশ্ন-৭। ছায়ানট কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর: ছায়ানট ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রশ্ন-৮। হায়ানট কবে থেকে রমনার পাকুড়মূলে নববর্ষ উদযাপন শুরু করে?

উত্তর: ছায়ানট ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার পাকুড়মূলে নববর্ষ উদযাপন শুরু করে।

প্রশ্ন-৯। রমনার পাকুড়মূলে সর্বপ্রথম নববর্ষের উৎসব শুরু করে কোন প্রতিষ্ঠান?

উত্তর:রমনার পাকুড়মূলে সর্বপ্রথম নববর্ষের উৎসব শুরু করে হায়ানট।

প্রশ্ন-১০। আধুনিককালে নব আঙ্গিকের বর্ষবরণ উৎসবের সূচনা হয় কাদের উদ্যোগে?

উত্তর: আধুনিককালে নব আঙ্গিকের বর্ষবরণ উৎসবের সূচনা হয় কলকাতার ঠাকুর পরিবারে এবং শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের উদ্যোগে।

প্রশ্ন-১১। ঢাকায় নববর্ষ উদযাপনের দ্বিতীয় প্রধান আকর্ষণ কোনটি?

উত্তর: ঢাকায় নববর্ষ উদযাপনের দ্বিতীয় প্রধান আকর্ষণ হলাে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শােভাযাত্রা।

প্রশ্ন-১২। মুঘল সম্রাট আকবর কত সালে বাংলা সন চালু করেন?

উত্তর: মুঘল সম্রাট আকবর ১৫৫৬ সালে বাংলা সন চালু করেন।

প্রশ্ন-১৩। কত হিজরিতে বাংলা সন চালু হয়?

উত্তর: ৯৯২ হিজরিতে বাংলা সন চালু হয়।

প্রশ্ন-১৪। ‘সাল’ কথাটি কোন ভাষার শব্দ?

উত্তর: সাল’ কথাটি ফারসি ভাষার শব্দ।

প্রশ্ন-১৫। ‘পুণ্যাহ’ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য কী?

উত্তর পুণ্যাহ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য খাজনা আদায়।

প্রশ্ন-১৬। হালখাতা কী ধরনের অনুষ্ঠান?

উত্তর: হালখাতা হচ্ছে নববর্ষ উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের বকেয়া আদায়ের উদ্দেশ্যে আয়ােজিত একটি অনুষ্ঠান।

প্রশ্ন-১৭। নেকমরদের মেলা কোথায় বসে?

উত্তর: নেকমরদের মেলা ঠাকুরগাঁ জেলার রানীশংকৈল উপজেলায় বসে।

প্রশ্ন-১৮। চট্টগ্রামে বাংলা নববর্ষে কোন মেলা বসত?

উত্তর: চট্টগ্রামে বাংলা নববর্ষে মহামুনির বৌদ্ধপূর্ণিমা মেলা বসত।

প্রশ্ন-১৯। নববর্ষে চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত কোন খেলা বিশেষ উল্লেখযােগ্য?

উত্তর: নববর্ষে চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত বলী খেলা বিশেষ উল্লেখযােগ্য।

প্রশ্ন-২০। কত সালে বলী খেলার প্রচলন হয়েছিল?

উত্তর: ১৯০৭ সালে বলী খেলার প্রচলন হয়েছিল।

প্রশ্ন-২১। বলী খেলার প্রবর্তন করেন কে?

উত্তর: বলী খেলার প্রবর্তন করেন আবদুল জব্বার নামক এক ব্যক্তি।

প্রশ্ন-২২। বৈসাবি কোন এলাকার উৎসব? 

উত্তর: বৈসাবি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকার উৎসব।

প্রশ্ন-২৩। পহেলা বৈশাখে মােরগের লড়াই কোথায় উদযাপিত হয়?

উত্তর: পহেলা বৈশাখে মােরগের লড়াই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উদযাপিত হয়।

প্রশ্ন-২৪। কোন আন্দোলনের পর বাংলা নববর্ষ নতুন গুরুত্ব ও তাৎপর্য লাভ করে?

উত্তর: ১৯৫২ সনের ভাষা আন্দোলনের পর বাংলা নববর্ষ নতুন গুরুত্ব ও তাৎপর্য লাভ করে।

প্রশ্ন-২৫। পাকিস্তান আমল বলতে কোন সময়কে বােঝায়?

উত্তর: পাকিস্তান আমল বলতে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের পূর্ব পর্যন্ত সময়কে বােঝায়।

প্রশ্ন-২৬। ছায়ানট কী?

উত্তর: ‘ছায়ানট’ হলাে বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার একটি ঐতিহাবাহী অনুষ্ঠান।

প্রশ্ন-২৭। ‘পুণ্যাহ কী? 

উত্তর: ‘পুণ্যাহ’ হলাে পুণ্যের জন্য আয়ােজিত অনুষ্ঠান।

প্রশ্ন-২৮। কবিগান কী?

উত্তর: যে গানের মধ্য দিয়ে দুজন গায়ক পালা করে একে অন্যের যুক্তি খণ্ডন করে, তা-ই কবিগান।

প্রশ্ন-২৯। দেব-দেবীর মহিমা বা যশ প্রচারমূলক সঙ্গীতকে কী বলে?

উত্তর: দেব-দেবীর মহিমা বা যশ প্রচারমূলক সঙ্গীতকে কীর্তন বলে।

প্রশ্ন-৩০। যাত্রা কী?

উত্তর: যাত্রা হলাে প্রাচীন বাংলার দৃশ্যকাব্য।

প্রশ্ন-৩১। বৈসু, সাংগ্রাই, বিজু—এ তিনটি উৎসবকে একত্রে কী বলা হয়?

উত্তর: বৈসু, সাংগ্রাই, বিজু—এ তিনটি উৎসবকে একত্রে বৈসাবি বলা হয়।

প্রশ্ন-৩২। পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী কোন উৎসব উদযাপনে বাঙালিদের বাধা দিয়েছিল?

উত্তর: পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী বাংলা নববর্ষ উদযাপনে বাঙালিদের বাধা দিয়েছিল।

প্রশ্ন-৩৩। বাঙালির রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে কোন উৎসবের ইতিকথা মিশে আছে?

উত্তর: বাঙালির রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে বাংলা নববর্ষের ইতিকথা মিশে আছে।

প্রশ্ন-৩৪। মঙ্গল শােভাযাত্রা বের করা হয় কোন উৎসবে?

উত্তর: মাল শােভাযাত্রা বের করা হয় বাংলা নববর্ষের উৎসবে।

প্রশ্ন-৩৫। সময়ের সাথে সাথে কোন উৎসবটি বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে?

উত্তর: সময়ের সাথে সাথে বাংলা নববর্ষের উৎসবটি বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।

প্রশ্ন-৩৬। পাহাড়ি অবাঙালি জনগােষ্ঠী কোন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নববর্ষ উদযাপন করে?

উত্তর: পাহাড়ি অবাঙালি জনগােষ্ঠী বৈসাবি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নববর্ষ উদযাপন করে।

প্রশ্ন-৩৭। বাংলা নববর্ষ কোন সাহিত্যিকের পরিবার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উদযাপন করেছে?

উত্তর: বাংলা নববর্ষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উদযাপন করেছে।

প্রশ্ন-৩৮। শামসুজ্জামান খান কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর: শামসুজ্জামান খান ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন-৩৯। শামসুজ্জামান খান কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর: শামসুজ্জামান খান মানিকগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন-৪০। শামসুজ্জামান খান জাতীয় জাদুঘরের কোন পদে দায়িত্বরত ছিলেন? 

উত্তর: শামসুজ্জামান খান জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক পদে দায়িত্বরত ছিলেন।

প্রশ্ন-৪১। মাটি থেকে মহীরূহ’ কোন ধরনের রচনা?

উত্তর: ‘মাটি থেকে মহীরূহ একটি প্রবন্ধ গ্রন্থ।

 

বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন     

প্রশ্ন-১। পাকিস্তান আমলে বাঙালিদের নববর্ষ উৎসব উদযাপন করতে দেওয়া হতাে না কেন?

উত্তর: পাকিস্তানি শাসকেরা নববর্ষ উদযাপন পাকিস্তানি আদর্শের পরিপন্থি মনে করে বাঙালিদের এই উৎসব পালন করতে দিতেন না।

বাংলা নববর্ষ বাঙালিদের প্রধান জাতীয় উৎসব। বর্তমানে বাঙালিরা গভীর আবেগ ও ভালােবাসায় নববর্ষ উদযাপন করে। কিন্তু পাকিস্তান আমলে শাসকরা নববর্ষকে পাকিস্তানি আদর্শের পরিপন্থী বলে বাঙালিদের এ অনুষ্ঠান উদযাপন করতে দিতেন না।

প্রশ্ন-২। স্বৈরাচারী পাকিস্তান সরকার কীভাবে বাংলা নববর্ষ উদযাপন বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল?

উত্তর: পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী নির্বাচিত যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙে দিয়ে সামরিক শাসন জারি করে। ফলে সাময়িকভাবে বন্ধ হয় বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সব আয়ােজন।

শেরেবাংলার সরকার বাংলা নববর্ষে সরকারি ছুটি ঘােষণার পর বাঙালিরা এ দিনটি মহা ধুমধামে উদযাপন করত। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী যুক্তফ্রন্ট ভেঙে দিয়ে সামরিক শাসন জারি করে বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল এ উৎসব।

প্রশ্ন-৩। মঙ্গল শােভাযাত্রা বলতে কী বােঝায়? ব্যাখ্যা করাে।

উত্তর: মঙ্গল শােভাযাত্রা’ বাংলা নববর্ষের একটি মাজালিক অনুষ্ঠান।

শাব্দিক অর্থে মানুষের মঙ্গল কামনা করে আয়ােজিত শােভাযাত্রাই হলাে মঙ্গল শােভাযাত্রা। ১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শােভাযাত্রার আয়ােজন করা হয়। এ শােভাযাত্রায় বিভিন্ন প্রতীকের মাধ্যমে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

প্রশ্ন-৪। “নববর্ষের মঙ্গল শােভাযাত্রা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকধর্মী চিত্র বহন করে”- বুঝিয়ে লেখাে।

উত্তর: নববর্ষের-মঙ্গল শােভাযাত্রায় বিভিন্ন প্রতীকী শিল্পকর্মের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক ঐঠিহ্যকে ধারণ করা হয় বলে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে।

মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রধান আকর্ষণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে প্রতিবছরই পয়লা বৈশাখে মঙ্গল শােভাযাত্রার আয়ােজন করা হয়। শােভাযাত্রায় বিভিন্ন ধরনের প্রতীকী শিল্পকর্ম বহন করা হয়। এ সকল প্রতীকের মাধ্যমে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ধর্মনিরপেক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

প্রশ্ন-৫। কীভাবে বাংলা সনের প্রবর্তন হয়েছিল?

উত্তর: চান্দ্র হিজরি সনের সঙ্গে ভারতবর্ষের সৌরসনের সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলা সন প্রবর্তিত হয়েছিল।

বাংলা সনের ইতিহাস এখনাে স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে অনেক ঐতিহাসিক এবং পণ্ডিতদের মতে, ১৫৫৬ সালে মুগল সম্রাট আকবর চান্দ্র হিজরি সনের সঙ্গে ভারতবর্ষের সৌর সনের সমন্বয় করে বাংলা সন প্রবর্তন করেছিলেন। তবে আধুনিক গবেষকদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন আকবর যে, ইলাহি সন প্রবর্তন করেছিলেন তার ভিত্তিতেই বাংলায় আকবরের কোন প্রতিনিধি বা মুসলমান সুলতান বাংলা সনের প্রবর্তন করেছিলেন।

প্রশ্ন-৬। এই সব মেলা অঞ্চল বিশেষের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত  হতাে’- কথাটি ব্যাখ্যা করাে।

উত্তর: পয়লা বৈশাখে আয়ােজিত বার্ষিক মেলাগুলাে দেশের বিভিন্ন  অঞ্চলের মানুষের সংবাদ আদান-প্রদান, নানা বিষয়ে মতবিনিময়ের  আদর্শ স্থান হওয়ার বিষয়টি আলােচ্য বাক্যে বলা হয়েছে।

পূর্বে দুর্বল যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে বৈশাখী মেলাগুলােতেই মানুষ মিলিত হতাে। সারা বছরের কেনাকাটা করে নিত। মেলায় থাকত, কবিগান, কীর্তন, যাত্রা, গম্ভীরা, পুতুলনাচ, নাগরদোলাসহ নানা আয়ােজন। তাই বলা হয়েছে, এই সব মেলা অঞ্চল বিশেষের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হতাে।

প্রশ্ন-৭। আমানিকে কৃষকের পারিবারিক অনুষ্ঠান বলা হয় কেন?

উত্তর: আমানি কৃষক সম্প্রদায়ের একটি পরিবারকেন্দ্রিক অনুষ্ঠান বলে একে কৃষকের পারিবারিক অনুষ্ঠান বলা হয়।

চৈত্র মাসের শেষ দিনের সন্ধ্যারাতে কৃষক-পরিবারের গৃহকত্রী হাঁড়িভর্তি পানিতে অপক্ক চাল সারারাত ভিজতে দেন এবং তার মধ্যে একটি কচি আমের পাতাযুক্ত ডাল বসিয়ে রাখেন। পয়লা বৈশাখের সূর্য ওঠা ভােরে গৃহকত্রী ঝাড়ু দিয়ে সেই হাঁড়ির পানি সারা ঘরে ছিটিয়ে দেন, ভেজা চাল সবাইকে খেতে দেন। আমের ডালটি হাঁড়ির পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি। সকলের গায়ে ছিটিয়ে দেন। কৃষক-পরিবার মনে করে, এতে তাদের  নতুন বছর সুখ ও সমৃদ্ধিপূর্ণ হবে। শুধু কৃষকের ঘরেই এ অনুষ্ঠান হয় বলে আমানিকে কৃষকের পারিবারিক অনুষ্ঠান বলা হয়।

প্রশ্ন-৮। ‘পুণ্যাহ’ বলতে কী বােঝায়?

উত্তর: নতুন বছরের প্রথম দিনে প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের জন্য জমিদাররা যে অনুষ্ঠানের আয়ােজন করতেন তাই পুণ্যাহ।

নববর্ষ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে পহেলা বৈশাখে প্রজারা নবাব বা জমিদার বাড়িতে আমন্ত্রিত হতেন। তাদের মিষ্টিমুখ করানাে হতাে। পান-সুপারি দিয়ে আপ্যায়ন করা হতাে। এ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায়। মুর্শিদাবাদের নবাব এবং বাংলার জমিদাররা এ অনুষ্ঠান করতেন।

প্রশ্ন-৯। নববর্ষ কীভাবে আমাদের নানা ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়? বুঝিয়ে লেখাে।

উত্তর: নববর্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ স্থানীয় ও লােকজ রীতিনীতিতে নানা অনুষ্ঠান পালন করে থাকে, যা আমাদের নানা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।

গ্রামবাংলায়, পাহাড়ি এলাকায় নববর্ষ উদযাপিত হয় বিভিন্ন আনন্দময় খেলাধুলা ও কৌতুক আয়ােজনের মাধ্যমে। অঞ্চলভেদে এসব অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অঞলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রকাশিত হয়। এভাবেই নববর্ষ আমাদের নানা ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। 

প্রশ্ন-১০। বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান বর্ণিল হয়ে ওঠে কীভাবে?

উত্তর: নতুন পাজামা-পাঞ্জাবি পরে ছেলেরা এবং নানা রঙের শাড়ি পরে মহিলা ও বালিকারা নববর্ষ অনুষ্ঠানকে বর্ণিল করে তােলে।

পয়লা বৈশাখে ঢাকার বাংলা একাডেমিতে আয়ােজিত হয় বৈশাখী ও কারুপণ্য মেলা। লক্ষ মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা এলাকা। এত আয়ােজন এবং নানা বয়সি নারীপুরুষের সাজ-সজ্জা ও প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে বর্ণিল হয়ে ওঠে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান।

Leave a Comment