তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন  ১। পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকেই শাসকগােষ্ঠী শুরু করে নানা বৈষম্যনীতি। তারা পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মাতৃভাষাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার হীন ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু এদেশের ছাত্র-শিক্ষকসহ আপামর জনতা এর বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, বিসর্জন দেয় বুকের তাজা রক্ত।

ক. কার সিথির সিঁদুর মুছে গেল?

খ. জলপাই রঙের ট্যাঙ্ককে কবি দানব বলেছেন কেন?

গ. উদ্দীপকের যে ভাবটি তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় পাওয়া যায় তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্ণিত দিকগুলাের একটিমাত্র দিক উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে।” মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর 

ক। হরিদাসীর সিথির সিঁদুর মুছে গেল।

খ। জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক কামানের গােলার তীব্র শব্দ নিয়ে শহরে প্রবেশ করেছিল বলে কবি সেটাকে দানব বলেছেন।

“তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্বর পাকিস্তানি যুদ্ধবাজদের নির্মমতার চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। তারা বাঙালিদের ওপর নির্মম অত্যাচার চালায়। ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষকে অকাতরে হত্যা করে। জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক রাস্তায় নেমে আসে। ট্যাঙ্কের কামানের গােলায় ছাত্রাবাস, বস্তি সব ধ্বংস করে দেয়। রূপকথার দানবের মতাে চিৎকার করতে করতে সেই ট্যাঙ্কগুলাে ছুটে বেড়ায় শহরময়। এ প্রসঙ্গেই কবি জলপাই রঙের ট্যাঙ্ককে দানব বলেছেন।

গ। উদ্দীপকের যে ভাবটি ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে তা হলাে- পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর বিরুদ্ধে এদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম।

যুগে যুগে ভিনদেশি, বিভাষী, বিজাতীয়রা এদেশে এসে নানা রকম শােষণ-অত্যাচার চালিয়েছে। এদেশের মাটির সােনার ফসলই তাদেরকে এখানে টেনে এনেছে। তারা যথাসময়ে লােভ-লালসা চরিতার্থ তথা এদেশের সম্পদ আহরণ করে আবার ফিরে গেছে। প্রতিবারই এদেশের উত্তরাধিকারীদের ভাগ্যে লেপন করে গেছে দুর্ভাগ্যের কালিমা।

উদ্দীপকে পাকিস্তানি শাসকদের বাংলা ভাষার ওপর নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সেদিন এদেশের ছাত্র-জনতা বর্বর পাকিস্তানি পুলিশের গুলিতে বুকের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছেন। উদ্দীপকের এই ঐক্যবদ্ধ শক্তির ভাবটি আলােচ্য কবিতার ভাবের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবিতায় স্বাধীনতা অর্জনে আপামর বাঙালি নারী-পুরুষের সংগ্রামী চেতনা এবং তাঁদের মহান আত্মত্যাগের মহিমা তুলে ধরা হয়েছে। কবিতায় বর্বর পাকিস্তানি যুদ্ধবাজদের নির্মম অত্যাচার, হত্যা, ধর্ষণ, ধ্বংসলীলা উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশ স্বাধীন করেছেন। তাই উদ্দীপকের ভাষার জন্য ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামী চেতনার ভাব এবং তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় স্বাধীনতাকে পাওয়ার জন্য বাঙালির ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামী চেতনার ভাব এক ও অভিন্ন।

ঘ। ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্ণিত দিকগুলাের একটিমাত্র দিক উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে।- মন্তব্যটি যথার্থ।

স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। সেই অধিকার অর্জন করতে হলে মানুষকে অনেক ত্যাগ ও সংগ্রাম করতে হয়। সংগ্রাম ছাড়া স্বাধীনতা পাওয়া যায় না। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে দেশের জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকতে হয়।

উদ্দীপকে ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্ণিত আত্মত্যাগের দিকটি ফুটে উঠেছে। রাষ্ট্রভাষা বাংলার পরিবর্তে উর্দু চাপিয়ে দেওয়াকে এদেশের আপামর জনতা মেনে নেয়নি, ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছে। অবশেষে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। উদ্দীপকের এই বিষয়টি ছাড়াও কবিতায় যুদ্ধবাজ পাকিস্তানি সেনাদের নির্মম অত্যাচার, অমানবিক নির্যাতন, বিনা কারণে রাতের আঁধারে নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং ছাত্রাবাস, বস্তি, মানুষের ঘরবাড়ি সব ধ্বংস করে দেওয়া ইত্যাদি বিষয় বর্ণিত হয়েছে।

তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় স্বাধীনতা অর্জনে আপামর বাঙালি নারী-পুরুষের সংগ্রামী চেতনা এবং তাদের মহান আত্মত্যাগের মহিমাকে তুলে ধরা হয়েছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে এবং তাদেরকে স্বাধীনতা অর্জনের সমস্ত স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিতে চেয়েছে। এ বিষয়টি উদ্দীপকে প্রকাশ পায়নি। এছাড়া স্বাধীনতার জন্য অপেক্ষায় থাকার মতাে কোনাে বিষয়ও সেখানে নেই। এসব দিক বিবেচনায় বলা যায়, কবিতায় বর্ণিত দিকগুলাের একটি দিক উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে।

প্রশ্ন ২। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমিত দেশমাতৃকার দুর্দিনে অন্য বন্ধুদের সাথে যুদ্ধে যােগ দিল। পাক সেনাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপারেশনে সফল নেতৃত্ব দিল। একদিন সম্মুখ যুদ্ধে শত্রুর বুলেটের আঘাতে দেহ ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেল। বন্ধুরা তার মৃতদেহ বাড়িতে আনলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হলাে। কিন্তু তার বৃদ্ধ মা একটুও বিচলিত না হয়ে সবাইকে লক্ষ্য করে বললেন, “দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা গৌরব ও সম্মানের। সকলের ত্যাগের বিনিময়েই দেশ একদিন স্বাধীন হবে।”

ক. অবুঝ শিশু কোথায় হামাগুড়ি দিল?

খ. “তােমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা’- কবির এই দৃঢ় উক্তির কারণ বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের সাথে তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকে মায়ের উক্তিতে ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কবির আকাক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছেমন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক। অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতা-মাতার লাশের ওপর।

খ। প্রশ্নোক্ত পঙক্তিটিতে কবি বাঙালির জন্মগত অধিকার স্বাধীনতা অর্জনের দিকটি তুলে ধরেছেন।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালায়। তারা আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। কবি সেই ধ্বংস আর হত্যাযজ্ঞের মধ্যেও অবলােকন করেন নবীন রক্তের প্রাণস্পন্দন ও আশা। তাই তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেন- এত আত্মত্যাগ যার উদ্দেশ্যে সেই স্বাধীনতাকে বাঙালি একদিন ছিনিয়ে আনবেই।

গ। ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রকাশিত স্বাধীনতার জন্য বাংলার মানুষের সুমহান আত্মত্যাগের দিকটির সঙ্গে উদ্দীপকটির সাদৃশ্য রয়েছে।

যুগে যুগে বাঙালি জাতি নানা বিদেশি শত্রুর কাছে শােষিত নির্যাতিত হয়েছে। সবশেষে এ জাতির ওপর আগ্রাসন চালিয়েছে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। তারা বাঙালিকে দমিয়ে রেখে নিজেদের স্বার্থান্বেষী শাসন কায়েম করতে চেয়েছিল। কিন্তু বীর বাঙালি তাদের পরাজিত করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে।

উদ্দীপকে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমিত পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সে শহিদ হয় এবং সহযােদ্ধারা তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসে। তার বৃদ্ধা মা ছেলের আত্মত্যাগের জন্য গর্ববােধ করেছেন।

‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায়ও স্বাধীনতার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। কবি এখানে দেখিয়েছেন স্বাধীনতা আসবে বলে হরিদাসীর সিঁথির সিঁদুর মুছে যায়, সাকিনা.বিবির কপাল ভাঙে। ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হয়। পিতামাতার লাশের ওপর ওবুঝ শিশু হামাগুড়ি দেয়। স্বাধীনতার জন্য বাঙালিকে এমনই আত্মত্যাগ করতে হয়। কবিতার এ দিকটির সঙ্গেই উদ্দীপকটির সাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ। উদ্দীপকে মায়ের উক্তিতে তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কবির আকাক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে- মন্তব্যটি যথার্থ।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়ায়। অবশেষে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বপ্নের স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনতে এদেশের অগণিত মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছেন।

উদ্দীপকে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে অমিত যুদ্ধে গিয়ে শহিদ হয়। সহযােদ্ধারা তার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে এলে বৃদ্ধা মা তা দেখে শােকাকুল না হয়ে ছেলের এমন বীরােচিত মৃত্যুতে গর্ববােধ করেন এবং বলেন, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা গৌরব ও সম্মানের। সবার ত্যাগের বিনিময়েই একদিন এদেশ স্বাধীন হবে। অমিতের মায়ের এ উক্তিতে তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতার কবির আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখা যায়। কারণ এ কবিতায় কবি বলেছেন এ দেশের সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের কথা, যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। কবি তাই মনে করেন স্বাধীনতাকে বাঙালি এক দিন ছিনিয়ে আনবেই।

“তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি দেখিয়েছেন স্বাধীনতার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত। সেই সঙ্গে নবীন রক্তে প্রাণস্পন্দন ও আশা জেগে থাকতে দেখে কবি দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেন- যার উদ্দেশ্যে এত আত্মত্যাগ সেই স্বাধীনতাকে একদিন আসতেই হবে। উদ্দীপকের মায়ের কথায় কবির এ আকাক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে। এসব বিচারে মন্তব্যটি যথার্থ বলা যায়।   

 

প্রশ্ন ৩। “গহর মরেনি। মরতে পারে না

সে আজও রয়েছে বেঁচে।

বাংলাদেশের বুকের ভিতর,

হয়তাে এখন তার

ডান কাঁধ কামানের গােলায় ঝাঝরা,

বাঁ হাতে ব্যান্ডেজ বাধা,

তবুও বন্দুক হাতে এক লক্ষ্যে বসে আছে

টের ভিতর।

গহর আমরা শুধু

অফুরন্ত দিন গুনছি অগুনতি বছর।

ক. থুথুড়ে বুড়াের চোখের নিচে কী ছিল?

খ. সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল।”- এ কথার মাধ্যমে কী বােঝানাে হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের ডান কাঁধ কামানের গােলায় ঝাঝরা’ চরণটি “তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কোন দিকটি নির্দেশ করে?

ঘ. উদ্দীপকের ‘গহর’ আর ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার ‘তেজি তরুণ’ একই আদর্শে উজ্জীবিত।”তুমি কি একমত? ব্যাখ্যা দাও।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক। থুথুড়ে বুড়াের চোখের নিচে ছিল অপরাহের দুর্বল আলাের ঝিলিক।

খ। ‘সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল” এই কথার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে সাকিনা বিবির স্বামীর মারা যাওয়ার বিষয়টি বােঝানাে হয়েছে।

এদেশের লাখাে মানুষ মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হয়েছেন। পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বর আক্রমণে শহিদদের একজন সাকিনা বিবির স্বামী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশের জন্য সাকিনা বিবির মতাে গ্রামীণ নারীদের সহায়-সম্বল-সম্ভম বিসর্জিত হয়েছে। সাকিনা বিবি এখানে মুক্তিযুদ্ধে স্বামী, সম্ভ্রম হারানাে নারীদের প্রতিনিধি। প্রশ্নোক্ত কথাটিতে এই ভাবটিই প্রকাশ পেয়েছে।

গ। উদ্দীপকের ডান কাধ কামানের গােলায় ঝাঝরা’ চরণটিতে ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবির মুক্তিযুদ্ধের সময়কার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচারের দিকটি নির্দেশ করে।

স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। সেই অধিকার অর্জন করতে হলে মানুষকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। অনেক রক্ত ও অনেক ত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি এ দেশ স্বাধীন করেছে।

উদ্দীপকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী গহরের কথা বলা হয়েছে। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বাঙালির ত্যাগ-তিতিক্ষার দিকটি এখানে প্রতিফলিত হয়েছে। তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় সাকিনা বিবি, হরিদাসীরা বিধবা হয়েছে; ছাত্রাবাস-বস্তি উজার হয়েছে। হানাদাররা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে। বহু লােক আহত ও পঙ্গু হয়েছে। উদ্দীপকেও এই বিষয়টি লক্ষ করা যায়। গহর নামের লােকটি যুদ্ধে শহিদ হয়েও কবির চেতনায় চিরঞ্জীব হয়ে আছেন। তাঁর ডান কাঁধ কামানের গােলায় ঝাঝরা, বাম হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা, তবুও স্থির লক্ষ্যে সে ট্রেঞ্জের ভিতর যেন বসে আছে।

ঘ। উদ্দীপকের ‘গহর’ আর ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার তেজি তরুণ একই আদর্শে উজ্জীবিত।- মন্তব্যটি যথার্থ।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের মানুষের ওপর নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। এদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা দীর্ঘ নয় মাস শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের বুকে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়।

উদ্দীপকের কবিতাংশের গহর এক সাহসী তেজোদীপ্ত তরুণ। তার ডান কাঁধ কামানের গােলায় ঝাঁঝরা হয়ে গেছে, বাম হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা। তবুও বন্দুক হাতে সে এক লক্ষ্যে ট্রেঞ্জুের ভেতর বসে আছে। তার এই অবস্থান শত্রু নিধন, স্বাধীনতা অর্জন। কবি দিন গুনছেন স্বাধীনতার জন্য। তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় একইভাবে স্বাধীনতার স্বপ্নে তেজি তরুণ উজ্জীবিত। সে রাইফেল কাঁধে বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। কবি মনে করেন তার পদভারে একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হতে চলেছে। সবাই সেখানে প্রতীক্ষায় আছে স্বাধীনতার জন্য।

‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের বিধ্বস্ত অবস্থা তুলে ধরেছেন। এখানে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে যা উদ্দীপকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। উদ্দীপকের গহর এবং তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার তেজি তরুণ উভয়ই মুক্তি চেতনায় উজ্জীবিত। 

 

প্রশ্ন ৪। ১১ অক্টোবর, সােমবার, ১৯৭১। হঠাৎ করে ভারী অস্ত্র ও গােলা-বারুদ নিয়ে গাজীপুরা গ্রামে প্রবেশ করে একদল মিলিটারি। গ্রামে ঢুকে তারা প্রথমে বাজার ও দোকানপাট পুড়িয়ে দেয়। নির্বিচারে গুলি চালায় সাধারণ মানুষের ওপর। গুলি খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে যায় অনেক মানুষ। অনেকে গুরুতর আহত হয়। আতঙ্কে জীবন বাঁচাবার জন্য কেউ কেউ পালাবার চেষ্টা করে। অনেককে তারা ধরে নিয়ে যায় ক্যাম্পে। সে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি, যা এখনও সেই গ্রামের মানুষকে তাড়া করে বেড়ায়।

ক. শামসুর রাহমানের কবিতায় সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে কী?

খ. সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?

গ. উদ্দীপকে ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা আলােচনা কর।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

৪নং প্রশ্নের উত্তর

ক। শামসুর রাহমানের কবিতায় মধ্যবিত্ত নাগরিক জীবনের প্রত্যাশা, হতাশা, বিচ্ছিন্নতা, বৈরাগ্য ও সংগ্রাম সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

খ। সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল’ বলতে পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে সম্ভম হারানাে সাকিনা বিবির জীবনে মহা দুর্যোগ নেমে আসাকে বােঝানাে হয়েছে।

‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এদেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগের মহিমা তুলে ধরেছেন। এ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। তাদের সেই অত্যাচারের শিকার হয়েছে সাকিনা বিবি। স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য সার্কিনা বিবির মতাে গ্রামীণ নারীর সহায়-সম্বল-সন্ডম বিসর্জিত হয়েছে। কবি এখানে সাকিনা বিবিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

গ। উদ্দীপকে ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতনের দিকটি ফুটে উঠেছে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন চালায়। তারা এদেশের নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাঙালির মন থেকে চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল। 

উদ্দীপকে মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। এখানে ১৯৭১ সালের ১১ অক্টোবর ভারী অস্ত্র ও গােলাবারুদ নিয়ে গাজীপুরা গ্রামে একদল মিলিটারির হত্যাযজ্ঞ চালানাের কথা বলা হয়েছে। তাদের অত্যাচার থেকে গ্রাম ছেড়ে পালাতে গিয়ে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়। উদ্দীপকের এই চিত্রটি তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রতিফলিত জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক নিয়ে এদেশের মানুষের ওপর দানবীয় অত্যাচার চালানাের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবি এখানে সাকিনা বিবির কপাল ভাঙার, হরিদাসীর সিথির সিঁদুর মুছে যাওয়া, ভগ্নতূপে দাঁড়িয়ে কুকুরের আর্তনাদ, পিতা-মাতার লাশের উপর অবুঝ শিশুর হামাগুড়ি দেওয়া, সগীর আলী, কেষ্ট দাস, মতলব মিয়া, রুস্তম শেখ প্রমুখের মৃত্যুর কথা বলে পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা দিয়েছেন। এভাবে উদ্দীপকটি ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ। “উদ্দীপকটি ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।”- মন্তব্যটি যথার্থ।

পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা এদেশের। মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার চালায়। বাঙালিরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তাদের রুখে দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। 

উদ্দীপকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কিছু সদস্যের আক্রমণে গাজীপুরা গ্রামের মানুষের জীবনে নির্মমতা নেমে আসার দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। সেই হত্যাযজ্ঞের কথা ঐ গ্রামের বেঁচে যাওয়া মানুষেরা আজও ভুলতে পারে না। এই বিষয়টি তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার একটি বিশেষ দিককে নির্দেশ করে। এ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনের দিকটি উদ্দীপকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই বিষয়টি ছাড়াও কবিতায় স্বাধীনতা অর্জনের জন্য এদেশের সর্বস্তরের মানুষের আত্মত্যাগের বিষয়, নারী নির্যাতন, শিশু ও বৃদ্ধের প্রতি নির্মমতার দিক প্রতিফলিত হয়েছে, যা উদ্দীপকে নেই। তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতায় উদ্দীপকের বিষয় ছাড়াও স্বাধীনতার জন্য অধীর প্রতীক্ষা, রাইফেল কাঁধে তেজী তরুণ যােদ্ধর ঘুরে বেড়ানাে, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত ঘােষণা হয়ে, নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে স্বাধীনতার আগমনের স্বপ্ন ইত্যাদি রয়েছে। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

 

প্রশ্ন ৫। শহরের এক বড়লােক ব্যবসায়ী খামারবাড়ি করার জন্য গ্রামে কিছু জমি কিনলেন। সেখানে তিনি গােমস্তা লাগিয়ে কলের লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ করান, গরু-ছাগল পালন করান, মাছ চাষ করান— আরাে কত কি। এক সময় তিনি বললেন, ‘আমি পুরাে গ্রাম কিনে নিয়েছি, তােমাদেরকে বাড়ি-ঘর ছাড়তে হবে। একদিন তিনি শহর থেকে গুন্ডা এনে ঘর-বাড়ি দখল করতে এলেন। কিন্তু গ্রামবাসী একজোট হয়ে জীবন বাজি রেখে তা প্রতিহত করে। গুন্ডারা পালিয়ে গেলেও গ্রামের অনেকে এতে আহত হয়। তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ জীবন দিয়ে হলেও বাপ-দাদার ভিটা অন্য কাউকে দখল করতে দেবে না।

ক. জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক কীভাবে এলাে?

খ.  ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলাে কেন?

গ. উদ্দীপকের বড়লােক ব্যবসায়ী তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় উল্লিখিত কাদের প্রতিনিধি? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের গ্রামবাসীদের চেতনা তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্ণিত কবিচেতনারই প্রতিচ্ছবি”মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

৫নং প্রশ্নের উত্তর

ক জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক দানবের মতাে চিল্কার করতে করতে এলাে।

খ। স্বাধীনতার শত্রুদের নির্মম আক্রমণে ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড়ু হলাে।

বাংলার মানুষ স্বাধীনতার জন্য দিনের পর দিন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী তাদের অত্যাচার আর শােষণ চিরস্থায়ী করতে এদেশের মানুষকে হত্যা আর সম্পদ ধ্বংসের উৎসবে মেতে উঠেছিল। তাদের লেলিয়ে দেওয়া হানাদার সেনারা অতর্কিত সারা দেশে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখে। কামানের গােলা আর অগ্নিকাণ্ডে তারা সারা দেশ ধ্বংসস্থূপে পরিণত করে। তাদের সেই ধ্বংসযজ্ঞে ছাত্রাবাস ও বস্তি উজাড় হয়।

গ। উদ্দীপকের বড়লােক ব্যবসায়ী তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় উল্লিখিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রতিনিধি।

পাকিস্তান জন্মের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী বাংলাদেশকে নানাভাবে শাসন-শােষণ করেছে। বাঙালিরা নিজেদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে, প্রতিরােধ সংগ্রাম গড়ে তুলেছে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর পাকিস্তানি সেনারা নির্মম অত্যাচার ও হত্যাকাণ্ড চালায়। এর প্রতিবাদে বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশ স্বাধীন করে।

উদ্দীপকে শহরের এক বড়লােক ব্যবসায়ীর নিম্নশ্রেণির মানুষের অধিকার হরণ ও অত্যাচার-নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তিনি ‘খামারবাড়ি করার নাম করে গ্রামের কিছু জমি কেনে এবং নিজের লােক দিয়ে সেখানে গরু-ছাগল পালন, মাছ চাষ প্রভৃতি করতে থাকেন। একসময় গ্রামের সমস্ত জমি কিনে নিয়েছেন ঘােষণা দিয়ে গ্রামের মানুষদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বলেন। বড়লােক ব্যবসায়ীর এই অমানবিকতা তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অমানবিকতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তারাও এদেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। এভাবে উদ্দীপকের বড়লােক ব্যবসায়ী কবিতায় উল্লেখিত পাকিস্তানি বাহিনীর প্রতিনিধি হয়ে উঠেছে।

ঘ। “উদ্দীপকের গ্রামবাসীদের চেতনা তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্ণিত কবিচেতনারই প্রতিচ্ছবি”- মন্তব্যটি যথার্থ।

যুগে যুগে পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় নানাভাবে বর্বর শাসক-শােষকরা নিরীহ মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়েছে। কিন্তু যখন নির্যাতিতরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরােধ গড়ে তুলেছে তখন কোনাে শাসকগােষ্ঠীই তাদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি। শেষপর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ শক্তি ও সংগ্রামী চেতনারই জয় হয়েছে।

উদ্দীপকে এক বড়লােক ব্যবসায়ী গ্রামের সব জমি তিনি নিয়েছেন বলে ঘােষণা দিয়ে গ্রামবাসীকে তাড়াতে চেয়েছেন। কিন্তু গ্রামবাসী তার কথায় গ্রাম ছেড়ে চলে না গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অন্যায়কারী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে এবং জীবন বাজি রেখে তাদের ভিটেমাটি রক্ষা করার জন্য রুখে দাঁড়িয়েছে। এই বিষয়টি তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রতিফলিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার এবং তাদের বিরুদ্ধে বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরােধের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতায় কবি স্বাধীনতা অর্জনে এদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ চেতনা এবং আত্মত্যাগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এ বিষয়টি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদ্দীপকে প্রতিফলিত হযেছে। গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে বড়লােক ব্যবসায়ীর অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে এবং জীবন বাজি রেখে নিজেদের ভিটেমাটি রক্ষা করেছে। এ দিক থেকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

Leave a Comment