একাত্তরের দিনগুলো গল্পের গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ১। ১৯৭১ সালে মে মাসের কত তারিখ মাধ্যমিক স্কুল খােলার হুকুম হয়েছিল?

উত্তর : ১৯৭১ সালের মে মাসের ৯ তারিখ মাধ্যমিক স্কুল খােলার হুকুম হয়েছিল। 

প্রশ্ন ২। ঢাকার কয় জায়গায় গ্রেনেড ফেটেছে?

উত্তর : ঢাকার ছয় জায়গায় গ্রেনেট ফেটেছে।

প্রশ্ন ৩। জেনারেল নিয়াজী কত জন সৈন্য নিয়ে আত্মসমর্পণ করে?

উত্তর : জেনারেল নিয়াজী নব্বই হাজার সৈন্য দিয়ে আত্মসমর্পণ করে।

প্রশ্ন ৪৷ ‘কূটকৌশল’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : “কূটকৌশল” শব্দের অর্থ হলাে চতুরতা বা দুর্বুদ্ধি।

প্রশ্ন ৫। গােয়েবলস কে? 

উত্তর : গােয়েবলস হলাে রাজনীতিতে প্রতিহিংসা ও মিথ্যা রটনার প্রবর্তক জার্মানি বংশােদ্ভূত হিটলারের সহযােগী ।

প্রশ্ন ৬। মাখনের মতাে রং কোন ফুলের?

উত্তর : মাখনের মতাে রং পিস ফুলের।

প্রশ্ন ৭। কোন অঞ্চলগুলােতে প্রথম গেরিলা তৎপরতা শুরু হয়?

উত্তর : বর্ডারঘেঁষা অঙ্কুলগুলােতে প্রথম গেরিলা তৎপরতা শুরু হয়।

প্রশ্ন ৮। কূটকৌশল শব্দের অর্থ কী? 

উত্তর : কূটকৌশল শব্দের অর্থ চতুরতা।

প্রশ্ন ৯। কোন দিন একটানা বৃষ্টি হয়েছিল?

উত্তর : রােববার সারা দিনভর একটানা বৃষ্টি হয়েছিল।

প্রশ্ন ১০। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে হাসান ইমামের ছদ্মনাম কী ? 

উত্তর : স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে হাসান ইমামের ছদ্মনাম ছিল সালেহ আহমদ।

প্রশ্ন ১২। একাত্তরের দিনগুলি কোন ধরনের রচনা?

উত্তর : ‘একাত্তরের দিনগুলি’ স্মৃতিচারণমূলক রচনা।

প্রশ্ন ১৩। ‘জাহানারা ইমাম কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর : জাহানারা ইমাম ১৯২৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন ১৪। জাহানারা ইমামের প্রথম সন্তানের নাম কী?

উত্তর : জাহানারা ইমামের প্রথম সন্তানের নাম রুমী ।

প্রশ্ন ১৫। ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল কী বার ছিল?

উত্তর : ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল মঙ্গলবার ছিল ।

প্রশ্ন ১৬। জামী কে?

উত্তর : জামী লেখিকার ছােট ছেলে।

প্রশ্ন ১৭। বাবুদের মামার বাড়ি কোথায়?

উত্তর : বাপুর মামার বাড়ি শান্তিনগরে।

প্রশ্ন ১৮। লেখিকার দুলাভাইয়ের বাসা কোথায়?

উত্তর : লেখিকার দুলাভাইয়ের বাসা শান্তিনগরে।

প্রশ্ন ১৯। “কপালে যা আছে, তা হবেই”- কার কথা?

উত্তর : “কপালে যা আছে, তা হবেই”- করিমের কথা

প্রশ্ন ২০। কোন নদীতে প্রচুর লাশ ভেসে যাচ্ছে?

উত্তর : বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রচুর লাশ ভেসে যাচ্ছে।

প্রশ্ন ২১। লেখিকা কাদের জানােয়ার বলেছেন?

উত্তর : লেখিকা পাকিস্তানি হানাদারদেরকে নির্মম জানােয়ার বলেছেন।

প্রশ্ন ২২। পড়ালেখার ব্যাপারে রুমী কাকে সাহায্য করবে?

উত্তর : পড়ালেখার ব্যাপারে রুমী জামীকে সাহায্য করবে।

প্রশ্ন ২৩। ১৯৭১ সালের ১৭ মে কী বার ছিল?

উত্তর : ১৯৭১ সালের ১৭ মে সােমবার ছিল ।।

প্রশ্ন ২৪। ‘সালেহ আহমদ’- নামকে কে ছদ্মনাম বলে দাবি করল?

উত্তর : সালেহ আহমদ- নামকে রুমী ছদ্মনাম বলে দাবি করল ।

প্রশ্ন ২৫। শরীফ কে?

উত্তর : শরীফ লেখিকা জাহানারা ইমামের স্বামী

প্রশ্ন ২৬। মার্সি পিটিশন করতে কে রাজি নন?

উত্তর : মার্সি পিটিশন করতে শরীফ রাজি নন।

প্রশ্ন ২৭। ডা. রাব্বি কার ভাতিজা?

উত্তর : ডা. রাব্বি সুজার ভাতিজা ।

প্রশ্ন ২৮। মনিরুজ্জামানের স্ত্রীর নাম কী?

উত্তর : মনিরুজ্জামানের স্ত্রীর নাম ডলি ।

প্রশ্ন ২৯। মিলির স্বামীর নাম কী?

উত্তর : মিলির স্বামীর নাম মতিউর রহমান।

 

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

 

প্রশ্ন ১। স্বাধীনতা যুদ্ধে বেতারের ভূমিকা কী ছিল? 

উত্তর : স্বাধীনতা যুদ্ধে বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এদেশের নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায়। মৃত্যু ভয়ে মানুষ দেশ ছেড়ে পালাতে থাকে। তখন যারা দেশে থাকেন তারা অবরুদ্ধ ছিলেন। তারা বাইরে বের হতে পারতেন না। তখন দেশের অবস্থা সম্পর্কে জানার জন্য বেতার ছিল একমাত্র মাধ্যম। দেশের সাধারণ মানুষ তখন বেতার থেকেই সংবাদ সংগ্রহ করতেন। স্বাধীন বাংলা বেতারে ছদ্মবেশে সংবাদ ও চরমপত্র পাঠ করা হতাে। বেতারের মাধ্যমে তারা অনেক সময় সংবাদ আদান-প্রদান করতেন। আর  সরকারি বেতারে পাকিস্তানিরা নিজেদের মনের মতাে করে বিবৃতি দিতে বাধ্য করত এবং মিথ্যা ও ভুল খবর প্রচার করত।

প্রশ্ন ২। দলে দলে লােক রাস্তায় ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি তুলে বের হওয়ার  কারণ কী?

উত্তর : পাকিস্তানি আর্মি আত্মসমর্পণ করবে এ কথা শুনে দলে দলে লােক রাস্তায় ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি তুলে বের হয়েছিল।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের ঘটনা। দুপুর থেকে সারা শহরে ছিল ভীষণ চাঞ্চল্য আর উত্তেজনা। সবার মুখে মুখে এক কথা— পাকিস্তানি সেনারা, বিহারিরা সবাই পালাচ্ছে। বিকেলেই আত্মসমর্পণ করবে পাকিস্তানি সেনারা। তাই আনন্দে উত্তেজনায় কারফিউ উপেক্ষা করে। দলে দলে লোেক জয় বাংলা’ ধ্বনি তুলে রাস্তায় বের হয়।

প্রশ্ন ৩। ৫ই সেপ্টেম্বর, রবিবার ১৯৭১-এ কী ঘটেছিল?

উত্তর : ১৯৭১ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর রুমীর জন্য মার্সি পিটিশন করা হবে কিনা সে বিষয়ে লেখিকা এবং তাঁর স্বামী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। 

লেখিকার সন্তান মুক্তিযােদ্ধা রুমীকে পাকিস্তানি সেনারা আটক করেছে। রুমীর প্রাণভিক্ষা চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করলে তাকে ছাড়ানাে সম্ভব হতে পারে। কিন্তু খুনি সরকারের কাছে রুমীর প্রাণ ভিক্ষা চাওয়া । মানেই রুমীর আদর্শকে অপমান করা। তাই তারা সিদ্ধান্ত নেন, মার্সি পিটিশন করা হবে না, অন্যভাবে তাকে বের করে আনার চেষ্টা করা হবে। 

প্রশ্ন ৪। দুপুর থেকে সারা শহরে ভীষণ চাঞল্য ও উত্তেজনা কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : জেনারেল নিয়াজী আত্মসমর্পণ করতে পারে- এ খবরের কারণে  ১৬ ডিসেম্বর দুপুর থেকে সারা শহরে ভীষণ চাঞল্য ও উত্তেজনা ছিল।

ডিসেম্বরের শুরুর দিকেই প্রায় সারাদেশ হানাদারমুক্ত হয়ে  গিয়েছিল। বাঙালি মুক্তিযােদ্ধাদের কাছে হানাদাররা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। অবশেষে প্রাণ বাঁচাতে তারা আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজী আত্মসমর্পণ করবে- বিদ্যুতের বেগে এ খবর সারা ঢাকা শহরে ছড়িয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই দুপুর থেকে সারা শহরে চাঞ্চল্য ও উতেজনা বিরাজ করছিল।

প্রশ্ন ৫। মুক্তিফৌজ শব্দটা শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হওয়ার কারণ কী?

উত্তর ; মুক্তিফৌজ শব্দটা তখন অবিশ্বাস্য মনে হতাে। কারণ তখন  ঢাকা শহরে এত বেশি মিলিটারি অবস্থান করছিল যে,  মুক্তিফৌজের প্রবেশ সেখানে প্রায় অসম্ভব ছিল।

মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দিকে বাঙালিরা একেবারে ভীতসন্ত্রস্ত ও দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। যেখানে কোনাে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারত না হানাদারদের ভয়ে, সেখানে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরােধকারী দল আসবে- এটা ছিল প্রায় অবিশ্বাস্য। পাকিস্তানি সেনারাও ভাবতে পারেনি যে, তারা মুক্তিফৌজের গেরিলা হামলার শিকার হবে। তাই সংগত কারণেই দেশবাসীর কাছে শব্দটা অবিশ্বাস্য মনে হতাে ।

প্রশ্ন ৬। ‘চরমপত্র’ বলতে কী বােঝায়? 

উত্তর : ‘চরমপত্র’ বলতে সাধারণভাবে বােঝায় শেষবারের মতাে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য প্রেরিত পত্র।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে এ দেশকে মুক্ত করতে বাঙালি বীর সন্তানরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় মুক্তিযােদ্ধা ও দেশবাসীকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে হাস্যরসাত্মক কথিকা প্রচারিত হতাে। এগুলাের বিষয়বস্তু ছিল বিভিন্ন অপারেশনে হানাদার বাহিনীর পরাজয় এবং মুক্তিযােদ্ধাদের সাফল্য। এই কথিকাগুলােই চরমপত্র নামে খ্যাত। 

প্রশ্ন ৭। ‘নির্লজ্জ মিথ্যা ভাষণে ভরা বিবৃতি’ বলতে কী বোঝানাে হয়েছে?

উত্তর : “নির্লজ্জ মিথ্যা ভাষণে ভরা বিবৃতি” বলতে ১৯৭১ সালে এদেশের বুদ্ধিজীবী ও শিল্পীদের যে বিবৃতি দিতে পাকিস্তান সরকার বাধ্য করেছিল সেই বিবৃতিকে বােঝানাে হয়েছে।

১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকার রেডিও-টিভিতে বিখ্যাত ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে অনুষ্ঠান করাত। এসব অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু ছিল অত্যাচারী পাকিস্তান সরকারের গুণকীর্তন করা। সরকার যখন দেখল যে এতে সুবিধা হচ্ছে না তখন খবরের কাগজে বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বুদ্ধিজীবী ও শিল্পীদের স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। এই বিবৃতি সম্পর্কেই আলােচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।

প্রশ্ন ৮। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলাে খালি হওয়ার কারণ কী?

উত্তর : পাকিস্তানি হানাদারদের তাণ্ডবলীলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলাে খালি হয়ে গিয়েছিল ।

পাকিস্তানি হানাদাররা প্রথমে ঢাকা শহরে আক্রমণ করে। মার্চ গভীর রাতে তারা সারা শহরে মৃত্যুর তাণ্ডব চালায়। তাদের বিশেষ টার্গেট ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলাে। ঐ রাতেই তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রকে হত্যা করে। তখন যারা পালাতে পেরেছিল, তারা কোনােমতে বেঁচে গিয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথেই হানাদারদের তাণ্ডবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলাে খালি হয়ে গিয়েছিল ।

প্রশ্ন ৯। “ঢাকার মানুষ খামােখা জিঞ্জিরায় গেল গুলি খেয়ে মরতে।”- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : “ঢাকার মানুষ খামােখা জিঞ্জিরায় গেল গুলি খেয়ে মরতে।” ব্যাখ্যায় বাক্যটি দ্বারা অনিবার্য নিয়তিকে নির্দেশ করা হয়েছে।

পাকিস্তানি হানাদাররা হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে ঢাকা শহরের মানুষ জীবন রক্ষার জন্য পালাতে থাকে। যে যেদিকে পারল পালাল । কিছু লোক পালাল ঢাকার কাছেই বুড়িগঙ্গা নদীর ওপাড়ে জিঞ্জিরার দিকে। সেখানেও যে হানাদার বাহিনী আছে, তারা তা জানত না। ফলে যারা জিঞ্জিরায় পালিয়ে গিয়েছিল, তাদের অনেকেই সেখানে মারা পড়ল। বস্তুত ব্যাখ্যেয় বাক্যটি দ্বারা পাকিস্তানি সৈন্যদের নির্মমতাকে বােঝানাে হয়েছে।

প্রশ্ন ১০। দেশে কিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে না’- কেন? বুঝিয়ে দাও।

উত্তর : দেশে কিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে না’- কারণ দেশ হানাদারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কোনাে আগাম সংবাদ না দিয়েই ২৫ মার্চ রাতে সমস্ত শহর দখল করে নিয়েছিল। ঢাকা দখল করা মানে সমস্ত দেশ দখল করা। দেশ দখল করার পাশাপাশি তারা মৃত্যুময় তাণ্ডব চালিয়েছিল। নির্মমভাবে মানুষ হত্যা করে সমস্ত শহর উজাড় করেছিল। সেই পরিস্থিতিতে সবকিছুই অস্বাভাবিক মনে হতে থাকে। মূলত হানাদারদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ফলে দেশের অস্বাভাবিক পরিস্থিতিকে তুলে ধরা হয়েছে এ উক্তির মাধ্যমে। তাই বলা হয়েছে দেশে কিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে না।        

আরও,

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ সুভা

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ বই পড়া

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ অভাগীর স্বর্গ

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ পল্লিসাহিত্য

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ আম আঁটির ভেঁপু

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ প্রবাস বন্ধু

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব 

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ মমতাদি

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ পয়লা বৈশাখ

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ একাত্তরের দিনগুলো

  

Leave a Comment