জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১। অক্সিসােম কী?
উত্তর : মাইটোকন্ড্রিয়ার ক্রিস্টির গায়ে বৃন্তযুক্ত গােলাকার যে বস্তু থাকে তাই অক্সিসােম।
প্রশ্ন২ রাইবােজোম কী?
উত্তর : সাইটোপ্লাজমে মুক্ত অবস্থায় বর্তমান এবং অন্তঃপ্লাজমীয় জালিকার গায়ে অবস্থিত যে দানাদার কণায় প্রােটিন সংশ্লেষণ ঘটে তাই রাইবােজোম।
প্রশ্ন ৩। ক্রিস্টি কাকে বলে?
উত্তর : মাইটোকন্ড্রিয়ার ভেতরের স্তরটির ভেতরের দিকে ভাজ হয়ে যাওয়া অংশকে ক্রিস্টি বলে।
প্রশ্ন ৪। আদি কোষ কী?
উত্তর : যে সকল কোষের সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না অর্থাৎ নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ও নিউক্লিওলাস অনুপস্থিত তাদেরকে আদি কোষ বলে ।
প্রশ্ন ৫। অক্সিজোম কী?
উত্তর : মাইটোকন্ড্রিয়ার ক্রিস্টির গায়ে সুবিন্যস্তভাবে অসংখ্য বৃত্তাকার বস্তু থাকে। এরাই হলাে অক্সিজোম।
প্রশ্ন ৬ দেহকোষ কাকে বলে?
উত্তর :বহুকোষী জীবের দেহগঠনে যেসব কোষ অংশগ্রহণ করে তাকে দেহকোষ বলে।
প্রশ্ন ৭। ফ্যাগােসাইটোসিস কী?
উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় শ্বেত রক্তকণিকা ক্ষণপদ সৃষ্টির মাধ্যমে রােগ জীবাণু ভক্ষণ করে তাই ফ্যাগােসাইটোসিস।
প্রশ্ন ৮। টিস্যু কী?
উত্তর : সুসংগঠিত কতকগুলাে কোষ সুসংঘবদ্ধভাবে অবস্থান করে যদি একই ধরনের কাজ সম্পাদন করে তাই টিস্যু বা কলা।
প্রশ্ন ৯। অনৈচ্ছিক পেশি কী?
উত্তর : যে পেশির সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয় তাই অনৈচ্ছিক পেশি।
প্রশ্ন ১০। মাইক্রোভিল্লি কী?
উত্তর : কোষ ঝিল্লির ভাজই হলাে মাইক্রোভিল্লি।
প্রশ্ন ১১। প্লাজমােডেজমাটা কী?
উত্তর : পাশাপাশি অবস্থিত কোষগুলাে কোষ প্রাচীরের সূক্ষ্ম ছিদ্রের ভিতর দিয়ে প্রােটোপ্লাজমের সুতার মতাে অংশ দিয়ে পরস্পর যুক্ত থাকে। এই সুতার অংশই প্লাজমােডেজমাটা।
প্রশ্ন ১২। দেহের অনৈচ্ছিক পেশির কাজ নিয়ন্ত্রণ কোনটি?
উত্তর : দেহের অনৈচ্ছিক পেশির কাজ স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
প্রশ্ন ১৩। প্লাস্টিড কী?
উত্তর : উদ্ভিদকোষের সাইটোপ্লাজমে সাধারণত বর্ণকণাযুক্ত যে অঙ্গাণু দেখা যায় তাই প্লস্টিড।
প্রশ্ন ১৪। স্টোন সেল কী?
উত্তর : ফ্লুেরাইড কোষই হচ্ছে স্টোন সেল। এরা খাটো, সমব্যসীয়, অত্যন্ত পুরু এবং লিগনিনযুক্ত।
প্রশ্ন ১৫। ক্লোরােপ্লাস্ট কী?
উত্তর : ক্লোরােফিল বহনকারী সবুজ প্লাস্টিড হলাে ক্লোরােপ্লাস্ট।
প্রশ্ন ১৬। যােজক কলা কী?
উত্তর : যে সকল টিস্যুর মাতৃকার পরিমাণ তুলনামূলক বেশি এবং কোষের সংখ্যা কম তাই যােজক কলা।
প্রশ্ন ১৭। পেশি টিস্যু কাকে বলে?
উত্তর : ভূণের মেসােডার্ম থেকে তৈরি সংকোচন ও প্রসারণশীল বিশেষ ধরনের টিস্যুকে পেশী টিস্যু বলে।
প্রশ্ন ১৮। প্লাজমােডেজমাটা কী?
উত্তর : পাশাপাশি অবস্থিত কোষগুলাে কোষপ্রাচীরের সূক্ষ্ম ছিদ্রের ভিতর দিয়ে প্রােটোপ্লাজমের সুতার মতাে অংশ দিয়ে পরস্পর যুক্ত থাকে। এই সুতার অংশই প্লাজমােডেজমাটা।
প্রশ্ন ১৯। লিউকোপ্লাস্ট কী?
উত্তর : যেসব প্লাস্টিডে কোনাে রঞ্জক পদার্থ থাকে না তারাই হলাে লিউকোপ্লাস্ট।
প্রশ্ন ২০ সেন্ট্রিওল কাকে বলে?
উত্তর : নিউক্লিয়াসের কাছে দুটি ফাপা নলাকার বা দন্ডাকার অঙ্গাণু দেখা যায় তাদের সেন্ট্রিওল বলে।
প্রশ্ন ২১। কোষ গহ্বর কী?
উত্তর : সাইটোপ্লাজমে কোষের মধ্যে যে ফাঁকা স্থান দেখা যায় সেগুলােই হচ্ছে কোষ গহ্বর।
প্রশ্ন ২২। নিউক্লিয়াস কী?
উত্তর : জীবকোষের সাইটোপ্লাজমে নির্দিষ্ট পর্দাঘেরা ক্রোমােজোম বহনকারী সুস্পষ্ট যে বস্তুটি দেখা যায় তাই নিউক্লিয়াস।
প্রশ্ন ২৩। লাইমােসােম জীবকোষকে কী করে?
উত্তর : লাইসােসােম জীব কোষকে জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে।
প্রশ্ন ২৪। প্রােটিন সংশ্লেষণকারী ক্ষুদ্রাঙ্গের নাম কী?
উত্তর : প্রােটিন সংশ্লেষণকারী ক্ষুদ্রাঙ্গের নাম রাইবােসােম।
প্রশ্ন ২৫। মাইটোকন্ডিয়ার প্রধান কাজ কী?
উত্তর : মাইটোকন্ড্রিয়ার প্রধান কাজ শক্তি উৎপাদন করা ।
প্রশ্ন ২৬। ক্রেবস চক্র কোথায় সংঘটিত হয়?
উত্তর : ক্রেবস চক্র মাইটোকন্ড্রিয়ায় সংঘটিত হয়।
প্রশ্ন ২৭। তন্ত্র কী?
উত্তর : একাধিক অঙ্গ মিলিতভাবে যদি একই ধরনের শারীরবৃত্তীয় কাজ সম্পন্ন করে তবে ঐ অঙ্গসমূহকে একত্রে তন্ত্র বলে।
প্রশ্ন ২৮। মায়ােফাইব্রিলের অবস্থান কোথায়?
উত্তর : মায়ােফাইব্রিলের অবস্থান পেশিকোষে।
প্রশ্ন ২৯। ফ্লোয়েম ফাইবার কী নামে পরিচিত?
উত্তর : ফ্লোয়েম ফাইবার বাস্ট ফাইবার নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ৩০। কোন পেশি অস্থিতন্ত্রে সংলগ্ন থাকে?
উত্তর : ঐচ্ছিক পেশি অস্থিতন্ত্রে সংলগ্ন থাকে।
প্রশ্ন ৩১। ফ্লেরেনকাইমা টিস্য কী?
উত্তর : প্রােটোপ্লাজমবিহীন, লিগনিনযুক্ত এবং যান্ত্রিক কাজের জন্য নির্দিষ্ট কোষ দ্বারা গঠিত টিস্যুকে ফ্লেরেনকাইমা টিস্যু বলে ।
প্রশ্ন ৩২। নিঃস্রাবী টিস্যু কাকে বলে?
উত্তর : যেসব টিস্যু হতে মধু, তরুক্ষীর, রেজিন নিঃসৃত হয় তাকে নিঃস্রাবী টিস্যু বলে।
অনুধাবন মূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন ১। সেন্ট্রোসােম বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : প্রাণিকোষের নিউক্লিয়াসের কাছে যে দু’টি ফাপা নলাকার বা দণ্ডাকার অঙ্গাণু দেখা যায়, তাদেরকে সেন্ট্রিওল বলে। এই সেন্ট্রিওলের চারপাশে অবাঞ্ছিত গাঢ় তরলকে সেন্ট্রোস্ফিয়ার বলে ।
সেন্ট্রোস্ফিয়ারসহ সেন্ট্রিওলকে সেন্ট্রোসােম বলা হয়। সেন্ট্রোসােম স্পিন্ডল যন্ত্র ও বিভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাজেলা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। এছাড়া সেন্ট্রোসােমে বিদ্যমান সেন্ট্রিওল কোষ বিভাজনের সময় অ্যাস্টার রে উৎপাদন করে।
প্রশ্ন ২। প্রকৃত কোষ বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : যেসব কোষের নিউক্লিয়াস সুগঠিত অর্থাৎ নিউক্লিয়ার ঝিল্লী দ্বারা নিউক্লিও বস্তু সুগঠিত ও সুসংগঠিত তাদেরকে প্রকৃত কোষ বলে।
প্রকৃত কোষের ক্রোমােজোমে DNA, প্রােটিন, হিস্টোন ও অন্যান্য উপাদান থাকে। অধিকাংশ উচ্চ শ্রেণির জীবকোষ এ ধরনের হয়।
প্রশ্ন ৩। আদি কোষ বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : যে সকল কোষের সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না অর্থাৎ নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ও নিউক্লিওলাস অনুপস্থিত তাদেরকে আদি কোষ বলে। এসব কোষে মাইটোকন্ড্রিয়া, প্লাস্টিড, এন্ডােপ্লাজমিক রেটিকুলাম ইত্যাদি অণু থাকে না তবে রাইবােসােম উপস্থিত থাকে।
প্রশ্ন ৪। ক্রোমাটিন জালিকা কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কোষের বিশ্রামকালে নিউক্লিয়াসে কুন্ডলী পাকানাে সূক্ষ্ম সুতার মতাে অংশই হলাে ক্রোমাটিন জালিকা। কোষ বিভাজনের সময় এরা মােটা ও খাটো হয় তখন তাদের আলাদা আলাদা ক্রোমােসােম হিসেবে দেখা যায়।
প্রশ্ন ৫। রূপান্তরিত প্লাস্টিড বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : যেসব প্লাস্টিডের বর্ণের পরিবর্তনের কারণে উদ্ভিদ দেহে বর্ণের পরিবর্তন হয় তাদেরকে রূপান্তরিত প্লাস্টিড বলা হয়। লিউকোপ্লাস্ট এক ধরনের রূপান্তরিত প্লাস্টিড। এরা সাধারণত বর্ণহীন। তবে আলাের সংস্পর্শে এলে লিউকোপ্লাস্ট, ক্রোমােগ্লাস্ট বা ক্লোরােপ্লাস্টে রূপান্তরিত হতে পারে। এজন্যই লিউকোপ্লাস্টকে রূপান্তরিত প্লাস্টিড বলা হয়।
প্রশ্ন ৬। প্রােক্যারিওটিক সেল বলতে কী বােঝায়?
উত্তরঃ যেসব কোষে কোনাে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না তাদেরকে আদিকোষ বা প্রােক্যারিওটিক সেল বলা হয়। এসব কোষের নিউক্লিয়াস কোনাে পর্দা দ্বারা বেষ্টিত থাকে না।
প্রশ্ন ৭। কার্ডিয়াক পেশি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ কার্ডিয়াক পেশি বা হংপেশি এক বিশেষ ধরনের অনৈচ্ছিক পেশি । অর্থাৎ এ পেশির চির সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। এ পেশির গঠন ঐচ্ছিক পেশির মতাে কিন্তু কাজ অনৈচ্ছিক পেশির মতাে । মানব ভুণের একটি বিশেষ পর্যায় থেকে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কার্ডিয়াক পেশি সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া সচল রাখে।
প্রশ্ন ৮। মাইটোকন্ড্রিয়াকে কেন শক্তিঘর বলা হয়?
উত্তর : মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের শ্বসন অঙ্গাণু। এখানেই শ্বসনের সকল কাজ সম্পন্ন হয়। আর এ শ্বসনের মাধ্যমেই জীবদেহে শক্তি উৎপন্ন হয়ে থাকে। অর্থাৎ কোষের জৈবিক কাজ পরিচালনার জন্য যে শক্তি প্রয়ােজন তার একমাত্র উৎস মাইটোকন্ড্রিয়া। তাই একে কোষের শক্তিঘর বলা হয়।
প্রশ্ন ৯। হৃদপেশিকে অনৈচ্ছিক পেশি বলা হয় কেন?
উত্তর : হৃদপেশি বা কার্ডিয়াক পেশি মেরুদণ্ডী প্রাণীর এক বিশেষ ধরনের অনৈচ্ছিক পেশি । এ টিস্যুর কোষগুলাে নলাকৃতি, শাখান্বিত ও আড়াআড়ি দাগযুক্ত। এ টিস্যুর কোষগুলাের মধ্যে ইন্টারক্যালেটেড ডিস্ক থাকে। এদের সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। তাই হৃদপেশিকে অনৈচ্ছিক পেশি বলা হয়।
প্রশ্ন ১০। প্লাজমালেমা বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : প্রােটোপ্লাজমের বাইরে যে দ্বিস্তর বিশিষ্ট স্থিতিস্থাপক পর্দা থাকে তাকে কোষঝিল্লি বা প্লাজমালেমা বলে। এটি প্রধানত লিপিড ও প্রােটিন দ্বারা গঠিত। প্লাজমালেমা একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা হওয়ায় অভিস্রবণের মাধ্যমে পানি ও খনিজ লবণ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে ও পার্শ্ববর্তী কোষগুলােকে পরস্পর থেকে আলাদা রাখে।
প্রশ্ন ১১। অনৈচ্ছিক পেশি বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : যে সকল পেশি টিস্যুর সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয় তাদেরকে অনৈচ্ছিক পেশি টিস্যু বলে। এ পেশির কোষগুলাে মাকু আকৃতির। এদের গায়ে আড়াআড়ি দাগ থাকে না। এজন্য এদের মসৃণ পেশিও বলে। মেরুদন্ডী প্রাণীদের রক্তনালি, পৌষ্টিক নালীর প্রাচীরে অনৈচ্ছিক পেশি থাকে।
প্রশ্ন ১২। লসিকাতন্ত্র বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : মানবদেহের বিভিন্ন টিস্যুর মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানে যে জলীয় পদার্থ জমা হয় সেগুলাে কতকগুলাে ছােট নালির মাধ্যমে সংগৃহীত হয়ে একটি স্বতন্ত্র নালিকাতন্ত্র গঠন করে, যাকে লসিকাত বলে। লসিকা ঈষৎ ক্ষারীয় স্বচ্ছ হলুদ বর্ণের তরল পদার্থ। এদের লসিকা কোষ বলে।
প্রশ্ন ১৩। ব্যাকটেরিয়ার টিস্যু নেই কেন?
উত্তর : একই বা ভিন্ন প্রকারের একগুচ্ছ কোষ একত্রিত হয়ে যদি একই কাজ করে এবং তাদের উৎপত্তিও যদি অভিন্ন হয় তখন তাদের টিস্যু বা কলা বলে। অর্থাৎ কতগুলাে কোষ সমষ্টিগতভাবে কলা তৈরি করে। ব্যাকটেরিয়া একটি এককোষী জীব। সুতরাং এরা টিস্যু তৈরি করতে পারে না অর্থাৎ এদের টিস্যু নেই।
প্রশ্ন ১৪। যােঞ্জক টিস্যু কত ধরনের?
উত্তর : গঠন ও কাদের ভিত্তিতে যােজক টিস্যু ৩ ধরনের। যথা:
১. ফাইব্রাস যােজক টিস্যু
২. স্কেলিটাল যােক টিস্যু : এরা ২ ধরনের— i. অস্থি ॥. তরুণাস্থি
৩. তরল যােজক টিস্যু।
প্রশ্ন ১৫। দেহকোষ ও জননকোষের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
উত্তর : দেহকোষ ও জননকোষের মধ্যকার পার্থক্য নিরূপ :
দেহকোষ | জননকোষ |
১. কেবল দেহ বর্ধনে অংশগ্রহণ করে | ১. কেবল জননকাজে অংশগ্রহণ করে। |
২. দেহকোষ সাধারণত ডিপ্লেয়ড (2n) | ২. জননকোষ সর্বদা হ্যাপ্লয়েড (n) |
প্রশ্ন ১৭। ক্রোমােজোমকে বংশগতির বাহক বলা হয় কেন?
উত্তর : ক্রোমােজোমে অসংখ্য অতি সূক্ষ্মা জিন থাকে। এসব জিন রাসায়নিকভাবে DNA দ্বারা গঠিত। এ DNA জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য যেমন– এদের রং, আকার, স্বভাব, পরিব্যাপ্তি ইত্যাদি ধারণ করে যা বংশানুক্রমে মাতা-পিতা থেকে সন্তানন্ততিতে স্থানান্তরিত হয়। এ কারণে ক্রোমােজোমকে বংশগতির ধারক ও বাহক বলা হয়।
প্রশ্ন ১৮। উদ্ভিদের কান্ড মােটা হয় কেন?
উত্তর : বিভাজনক্ষম ভাজক টিস্যুর মাধ্যমে নতুন কোষ তৈরি হয়। জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর নতুন কোষ সৃষ্টি হয়। ক্যাম্বিয়াম কেন্দ্রের দিকে নতুন জাইলেম এবং পরিধির দিকে নতুন ফ্লোয়েম টিস্যুর কোষ তৈরির ফলে পরিণত কাণ্ড ও মূল প্রস্থে বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ মােটা হতে থাকে। এভাবেই গৌণ বৃদ্ধির ফলে উদ্ভিদের কাণ্ড বাড়তে থাকে।
প্রশ্ন ১৯। পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্যদ্রব্য পরিবহনে ফ্লোয়েম টিস্যু গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্যদ্রব্য ফ্লোয়েম টিস্যুর মাধ্যমে সকল সজীব কোষে পৌছায়। খাদ্য যােগান দেওয়ার মাধ্যমে ফ্লোয়েম টিস্যু| উদ্ভিদের কোষগুলােকে তথা উদ্ভিদকে সজীব ও কর্মক্ষম রাখে। পাতায় তৈরি খাদ্য সজীব কোষে পৌছতে না পারলে গাছ মরে যেত। তাই পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্যদ্রব্য পরিবহনে ফ্লোয়েম টিস্যু গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন ২০। আমগাছ মােটা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : গৌণ বৃদ্ধির ফলেই আম গাছ মােটা হয়। আম গাছের অন্তঃত্বকে ক্যাম্বিয়াম নামক এক বিশেষ ধরনের ভাজক টিস্যু থাকে। এটি এক স্তরবিশিষ্ট প্যারেনকাইমা টিস্যুর সমন্বয়ে গঠিত জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর মধ্যে বৃত্তাকারে অবস্থান করে। এ ক্যাম্বিয়াম টিস্যু বিভাজনের ফলে কাণ্ডের বাইরের দিকে নতুন ফ্লোয়েম টিস্যু এবং ভিতরের দিকে নতুন জাইলেম টিস্যু তৈরি হয়। এভাবে আমগাছ পাশে অথবা পৃষ্ঠে বৃদ্ধি পায় এবং আম গাছ মােটা হয়।
প্রশ্ন ২১। ফ্লোয়েম ফাইবারকে বাস্ট ফাইবার বলা হয় কেন?
উত্তর : ফ্লেরেনকাইম কোষ সমন্বয়ে ফ্লোয়েম ফাইবার তৈরি হয়। এগুলাে এক ধরনের দৈর্ঘ্য কোষ যাদের প্রান্তদেশ পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে। এজন্য এদের বাস্ট ফাইবার বলা হয়। পাটের আঁশ এক ধরনের বাস্ট-ফাইবার। উদ্ভিদ অঙ্গের গৌণবৃদ্ধির সময় এ ফাইবার উৎপন্ন হয়। এসব কোষের প্রাচীরে কূপ দেখা যায়। ফ্লোয়েম টিস্যুর মাধ্যমে পাতায় উৎপাদিত শর্করা এবং মূলে সঞ্জিত খাদ্য একই সাথে উপরে নিচে পরিবাহিত হয় ।
প্রশ্ন ২২। উড ফাইবার বলতে কী বােঝ?
উত্তর : জাইলেমে অবস্থিত ফ্লেরেনকাইমা কোষই হচ্ছে জাইলেম ফাইবার। এদেরকে উড ফাইবার বলা হয়। উড ফাইবারের কোষগুলাে লম্বা এবং দুপ্রান্ত সরু । পরিণত কোষে প্রােটোপ্লাজম থাকে বলে এরা মৃত। উদ্ভিদে এরা যান্ত্রিক শক্তি যােগায়। দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের সব জাইলেমে এরা অবস্থান করে। পানি ও খনিজ পদার্থ পরিবহন, খাদ্য, সয়, উদ্ভিদকে যান্ত্রিক শক্তি আর দৃঢ়তা প্রদান করা এ টিস্যুর প্রধান কাজ।
প্রশ্ন ২৩। কোষ ঝিল্লি কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রােটোপ্লাজমের বাইরে দুই স্তরের যে স্থিতিস্থাপক পর্দা থাকে তাকে কোষ ঝিল্লি বা প্লাজমালেমা বলে। কোষ ঝিল্লির ভাজকে মাইক্রোভিলাই বলে। এটি প্রধানত লিপিড এবং প্রােটিন দিয়ে তৈরি। কোষঝিল্লি একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা হওয়ায় অভিস্রবণের মাধ্যমে পানি ও খনিজ লবণ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে এবং পাশাপাশি কোষগুলােকে পরস্পর থেকে আলাদা করে রাখে ।
প্রশ্ন ২৪। গাছের বেড় কীভাবে বৃদ্ধি পায়?
উত্তর : উদ্ভিদের অন্তঃত্বকে ক্যাম্বিয়াম নামক এক বিশেষ ধরনের ভাজক টিস্যু থাকে। এটি এক স্তরবিশিষ্ট প্যারেনকাইমা টিস্যুর সমন্বয়ে গঠিত জাইলেম ও ফ্লোয়েম টিস্যুর মধ্যে বৃত্তাকারে অবস্থান করে। এ ক্যাম্বিয়াম টিস্যুর বিভাজনেৱ ফলে কাণ্ডের বাইরের দিকে নতুন ফ্লোয়েম টিস্যু এবং ভেতরের দিকে নতুন জাইলেম টিস্যু তৈরি হয়। এভাবেই গাছের বেড় বাড়ে।
প্রশ্ন ২৫। জনন মাতৃকোষ ডিপ্লয়েড হলেও জননকোষ হ্যাপ্লয়েড হয় কেন?
উত্তর : জনন মাতৃকোষ মিয়ােসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে পুংজনন কোষ ও স্ত্রীজনন কোষ সৃষ্টি করে। মিয়ােসিস বিভাজনে নিউক্লিয়াস দু’বার এবং ক্রোমােজোম একবার বিভাজিত হয় ফলে সৃষ্ট অপত্য কোষের ক্রোমোেজাম সংখ্যা মাতৃকোষের অর্ধেক হয়। তাই প্রজাতির বৈশিষ্ট্য বংশপরম্পরায় টিকিয়ে রাখতে মিয়ােসিসের। মাধ্যমে ডিপ্লয়েড জনন মাতৃকোষ বিভাজিত হয়ে হ্যাপ্লয়েড জনন কোষ সৃষ্টি করে।