কোনাে একটি জাতীয় সংবাদপত্রের সাংবাদিক হিসেবে তােমার দেখা একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি কর।

সম্পাদক

দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, ঢাকা।

জনাব,

নিম্নোক্ত প্রতিবেদনটি আপনার পত্রিকায় প্রকাশ করে বাধিত করবেন।

অন্তহীন সমস্যার আবর্তে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : রােগীদের চরম দুর্ভোগ

সংশ্লিষ্টদের চরম দায়িত্বহীনতা আর অবহেলার কারণে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। এর ফলে প্রতিদিনই অসংখ্য রােগীকে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। জানা গেছে, এখানকার নার্স, ডাক্তার ও কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত আবাসিক সুবিধা থাকলেও তাদের অনেকেই সেখানে থাকেন। ডাক্তারদের কেউ কেউ ঢাকা থেকে এখানে এসে অফিস করেন। এই সুযােগ নিয়ে কর্মচারীদের মধ্যেও কাজে ফাঁকি দেওয়ার একটি প্রবণতা গড়ে উঠেছে। গত দুই দশকেও এর শয্যা সংখ্যা ২৯টি থেকে আর বাড়েনি। এখানে ৭টি এমবিবিএস ডাক্তারের পদ থাকলেও ২টি পদ দীর্ঘদিন ধরেই খালি রয়েছে। যারা আছেন তাদেরও তিনজন আসেন ঢাকা থেকে। সপ্তাহে দুদিনের বেশি তারা হাসপাতালে থাকেন না। ফলে আউটডােরের রােগীদের ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে ডাক্তারের সাক্ষাৎ পেতে হয়। ঔষধের সরবরাহও এখানে খুব কম। যেটুকু আসে তার সিংহ ভাগই নাকি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চোরাই পথে বিক্রি করে দেয়। একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে আছে। এটা মেরামতের কোনাে উদ্যোগ নেই। এক্স-রে মেশিনসহ অনেক যন্ত্রপাতিই এখন আর ব্যবহার করা হচ্ছে না। অভিযােগ রয়েছে, বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসােহারা নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্যাথলজিস্ট ও ডাক্তাররা নিজেরাই এসব যন্ত্র অকেজো করে রেখেছেন। এর জন্য প্রতিবছর নতুন করে বাজেট এনে দু-এক মাসের জন্য তা চালু করা হলেও নানা অজুহাতে আবার তা বন্ধ করে দেওয়ারও অভিযােগ রয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার সঙ্গে যােগাযােগ করা হলে তিনি বিষয়টি অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেন। বেশ কজন রােগীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের খাদ্য ও পানীয় জলের অবস্থা খুবই শােচনীয়। তাদের অভিযােগ, নার্স ও ডাক্তাররা ঠিকমতাে তাদের দায়িত্ব পালন করেন না। অবশ্য সংশ্লিষ্ট আবাসিক চিকিৎসক এ বিষয়টি পুরােপুরি অস্বীকার করেছেন। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, হাসপাতালটির স্যানিটেশন ব্যবস্থা খুবই নিম্নমানের। সুইপারের ভূমিকা নিয়েও এখানে রয়েছে নানা প্রশ্ন। ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি, নানা অনিয়ম ও যখন-তখন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে এখানে ভর্তিকৃত রােগীদের দুর্ভোগ চরমে পৌছলেও কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে কোনাে দৃষ্টি নেই। রােগীদের অব্যাহত নানাবিধ বিড়ম্বনা নিয়েও নেই কারও কোনাে মাথাব্যথা। আর এই অব্যবস্থাপনার সুযােগ নিয়েই বেশকিছু প্রাইভেট ক্লিনিক রােগীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

প্রতিবেদন

আবু রায়হান

ভালুকা প্রতিনিধি

Leave a Comment