স্বাধীনতা, এ শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ১। দুলিতেছে তরি ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ,

ছিড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ?

কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ।

ক. সব স্মৃতি মুছে দিতে কী উদ্যত?

খ. ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হৃদয় মাঠখানি’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?

গ. উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার কোন দিককে উন্মােচিত করেছে ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’- কবিতার সমগ্র ভাবকে ধারণ করেনি।”- মূল্যায়ন কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর 

ক। কবির মতে সব স্মৃতি মুছে দিতে ‘কালাে হাত উদ্যত।

খ। ‘ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হৃদয় মাঠখানি” বলতে কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রেসকোর্স ময়দানকে বুঝিয়েছেন। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এই মাঠে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণ দান করেন।

রেসকোর্স ময়দান ছিল ঢাকার প্রাণকেন্দ্র। কবির স্মৃতিতে এই মাঠ চির অম্লান। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠনিঃসৃত ভাষণ শােনার জন্য এই মাঠে সেদিন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত হয়েছিল। সেদিন এই মাঠে আজকের শিশুপার্ক, গাছপালা, ফুলের বাগান এসবের কিছুই ছিল না। এ মাঠ ছিল একটা খােলা প্রান্তর। সেই দিন এই খােলা প্রান্তর সংগ্রামী জনতার উপস্থিতিতে, সংগ্রামী চেতনার ফুরণে সতেজ হয়ে উঠেছিল। সেই চেতনার ফসলই মুক্তিযুদ্ধ। আর মুক্তিযুদ্ধের ফসল আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।

গ। উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার স্বাধীনতা সংগ্রামের দৃঢ়সংকল্পের দিককে উন্মােচিত করেছে।

স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। মানুষমাত্রই স্বাধীনতা চায়, পরাধীন থাকতে চায় না। জীবনের পরিপূর্ণ স্বাদ গ্রহণের জন্য মানুষ স্বাধীনতা কামনা করে। স্বাধীনভাবে জীবনযাপন মানুষের জীবনকে অর্থবহ করে তােলে।

উদ্দীপকে প্রতিকূল অবস্থা জয় করার জন্য কবি অকুতােভয় বলিষ্ঠ নেতৃত্বের সন্ধান করেছেন। ভারতবর্ষের মুক্তি ও স্বাধীনতা প্রত্যাশী জনগণের ওপর সেদিনের বিদেশি শাসন প্রবল আঘাত হেনেছিল। সেই দুর্দিনে জাতীয় জীবন-তরণি যাতে অটল সংকল্প ও সুদৃঢ় মনােবল নিয়ে সামনে অগ্রসর হয় উদ্দীপকে সেই চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে। উদ্দীপকের এই বিষয়ের সঙ্গে আলােচ্য কবিতায় প্রতিফলিত স্বাধীনতা সংগ্রামের দৃঢ়সংকল্পের দিকটি উন্মােচিত হয়েছে। এখানে লাখ লাখ জনতার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষণ দিয়েছেন, তাতে স্বাধীনতা সংগ্রামের দৃঢ়সংকল্প ব্যক্ত হয়েছে। উদ্দীপকে হাল ধরার জন্য যে কাণ্ডারির প্রত্যাশা করা হয়েছে তা বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযােগ্য নেতৃত্বের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ। উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার সমগ্র ভাবকে ধারণ করেনি।”- মন্তব্যটি যথার্থ।

প্রত্যেক জাতির কাছে স্বাধীনতা অত্যন্ত প্রিয়। বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবােজ্জ্বল অধ্যায় ১৯৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রাম। এ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রকূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

উদ্দীপকে সমগ্র জাতিকে মুক্ত করার জন্য জাতীয় নেতা তথা কাণ্ডারিকে উদাত্ত আহ্বান জানানাে হয়েছে। যিনি জাতির দুর্দিনে উদ্দাম তরঙ্গসংকুল সাগরের বুকে জাতীয় জীবন-তরণিকে অটল সংকল্প ও সুদৃঢ় মনােবল নিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। উদ্দীপকের এই দিকটি আলােচ্য কবিতার একটি দিককে নির্দেশ করে মাত্র। অন্য দিকগুলাে যেমন- রমনা রেসকোর্সে সমবেত লাখ লাখ মানুষের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামী চেতনা, স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বান, গণসূর্যের মঞের বর্ণনা, সেদিনের বঙ্গবন্ধুর ভাষণের ঐতিহাসিক স্থানটির অস্তিত্ব বিলীনের অপচেষ্টা ইত্যাদি বিষয় উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়নি।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণের মূল বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এই ভাষণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। তার এই ভাষণের মধ্যেই সেদিন সূচিত হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান। বাঙালির শেকড় থেকে জেগে ওঠা এই সংগ্রামী নেতাকে কবি রাজনীতির কবি’ বলেছেন এবং তাঁর কণ্ঠনিঃসৃত বক্তব্যকে বলেছেন ‘অমর কবিতাখানি’। কবিতায় প্রতিফলিত এসব বিষয় উদ্দীপকের কবিতাংশে নেই। এসব দিক বিচারে তাই বলা হয়েছে উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার সমগ্র ভাবকে ধারণ করেনি।

প্রশ্ন ২। ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ শীর্ষক ডকুমেন্টারি ও প্রতিবেদন তৈরির কাজে নিয়ােজিত কুসুমপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযােদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী ও মুক্তিযােদ্ধা সন্তানদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত ললামহর্ষক ঘটনাবলি, তাদের আবেগঘন মুহূর্তের বিবরণ শুনে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দেশের স্বাধীনতার চেতনায় নতুনভাবে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত হয়। সাক্ষাৎকার পর্বে একজন মুক্তিযােদ্ধা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই ছিল আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার মূল অনুপ্রেরণা।

ক. বজ্রকণ্ঠ বাণী” অর্থ কী?

খ. জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের সাক্ষাৎকার প্রদানকারী মুক্তিযােদ্ধার ইতিহাস বর্ণনার মধ্যে স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে কবিতার কোন বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই ছিল আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার মূল অনুপ্রেরণা।”- মুক্তিযােদ্ধার মন্তব্যটি কবিতার আলােকে বিশ্লেষণ কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক। ‘বড়ুকণ্ঠ বাণী’ অর্থ- সহজে উদ্দীপ্ত দ্যুতিময় বঙ্গবন্ধুর বাণী।

খ। জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে বলতে রমনা রেসকোর্স ময়দানে সমবেত লক্ষ লক্ষ জনগণের সমাবেশ ও জনসমাবেশের এক দিকে অবস্থিত মঞকে বােঝানাে হয়েছে।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শােনার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ সমাবেত হয় রমনার রেসকোর্স ময়দানে। রমনা রেসকোর্সে সমবেত লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশকে কবি কল্পনা করেছেন জনসমুদ্রের বাগানরূপে। সেই জনসমুদ্রের একদিকে ছিল মঞ, কবির দৃষ্টিতে সেটি যেন সেই জনসমুদ্রের সৈকত।

গ। উদ্দীপকের সাক্ষাঙ্কার প্রদানকারী মুক্তিযােদ্ধাদের ইতিহাস বর্ণনার মধ্যে স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার যে বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে তা হলাে স্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের অনুপ্রেরণার ইতিহাস।

৭ই মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতিকে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। সেই আহ্বানে জনতার মধ্যে আসে নবজোয়ার। স্বাধীনতার বাণী পৌঁছে যায় মানুষের অন্তরে অন্তরে।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায় কবি ১৯৭১ সালের বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছেন। যা আমাদের স্বাধীনতার গুরুত্ব অনুধাবন ও দেশপ্রেমের প্রেরণা জাগ্রত করে। কারণ ১৯৭১ সালে জাতির জনকের সেই ডাষণের মধ্য দিয়ে সূচিত হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার আহ্বান। পরাধীনতার শেকল ভেঙে বাঙালি স্বাধীনতার জন্য এই ভাষণ শুনে যুদ্ধ করে। কবি অনাগত শিশুদের কাছে এই কথাটি জানিয়ে দিতে চেয়েছেন। উদ্দীপকেও সাক্ষাঙ্কার প্রদানকারী মুক্তিযােদ্ধার ইতিহাস বর্ণনার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা জাতির জনকের সেই ৭ই মার্চের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের কথা জানতে পারে। উদ্দীপক ও আলােচ্য কবিতা উভয় জায়গায় প্রকাশ পেয়েছে তৎকালীন অবস্থা, মুক্তিযুদ্ধের আহ্বান ও ৭ই মার্চের গুরুত্ব ও তাৎপর্য।

উদ্দীপকে মুক্তযােদ্ধর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম এ ইতিহাস জানতে পেরেছে। আর আলােচ্য কবিতায় কবি জানিয়েছেন অনাগত শিশুদের। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের ইতিহাস বর্ণনার মধ্য দিয়ে আলােচ্য কবিতার স্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের অনুপ্রেরেণার ইতিহাস ফুটে উঠেছে। এবং পেছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের অনুপ্রেরণা জাগ্রত করার বিষয়টি প্রকাশ করেছেন।

ঘ। “বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই ছিল আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার মূল অনুপ্রেরণা”- মন্তব্যটি যথার্থ।

একজন সত্যিকারের দেশনেতা দেশের মানুষের মুক্তির পথনির্দেশ করেন। তিনি জনগণকে সংঘবদ্ধ করেন। তাদের চেতনাকে উজ্জীবিত করেন। দুর্যোগ থেকে উত্তরণের জন্য অনুপ্রাণিত করেন।

উদ্দীপকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ শীর্ষক ডকুমেন্টারি ও প্রতিবেদনের কথা প্রকাশ পেয়েছে। এই প্রতিবেদনে বীর মুক্তিযােদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী ও মুক্তিযােদ্ধার সন্তানদের সাক্ষাৎকার প্রকাশ পায়। সাক্ষাৎকারে একজন মুক্তিযােদ্ধা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই ছিল আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ার মূল অনুপ্রেরণা। স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায়ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণের মূল বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এ ভাষণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। তাঁর এ ভাষণের মধ্যেই সেদিন সূচিত হয়েছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান।

উদ্দীপক ও আলােচ্য কবিতা উভয় জায়গায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্বের কথা প্রকাশ পেয়েছে। যে ভাষণ বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ায় অনুপ্রেরণা জোগায়। তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ

 

প্রশ্ন ৩। 

তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান!

যুগ-যুগান্ত সতি ব্যথা ঘােষিয়াছে অভিযান।

ফেনাইয়া উঠে বঞিত বুকে পুঞ্জিত অভিমান,

ইহাদের পথে নিতে হবে সাথে, দিতে হবে অধিকার।

ক. প্রাণের সবুজ কী?

খ. মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ’- কথাটি ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার যে দৃশ্যকে ধারণ করেছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার ভাবের খণ্ডাংশমাত্র”- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক। প্রাণের সবুজ হলাে আমাদের স্বাধীনতা।

খ। মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ’ বলতে কবি ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের সংগ্রামী চেতনার বিরুদ্ধ অকল্যাণ চেতনা ও অশুভ শক্তির উত্থানকে বুঝিয়েছেন।

১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার মধ্য দিয়ে এ দেশে অশুভ শক্তির উত্থান ঘটে। এই অশুভ শক্তি আমাদের সব ইতিবাচক ভাবনা-সৌন্দর্য ধ্বংস করতে চায়। ৭ই মার্চ বাঙালির হৃদয়ে সংগ্রামী চেতনা ও শুভ ভাবনার প্রদীপ জ্বালিয়েছিল। কবি দেখেন যে সেই শুভ শক্তির বিরুদ্ধে অশুভ শক্তির বিকট উল্লাস শুরু হয়েছে। আলােচ্য অংশে কবি এ বিষয়টি বুঝিয়েছেন।

গ। উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার জনসাধারণের জেগে ওঠার দৃশ্যকে ধারণ করেছে।

বাংলার মানুষ যুগ যুগ ধরে শাসকগােষ্ঠীর দ্বারা শােষিত হতে থাকে। শাসকরা অন্যায়ভাবে এদেশের মানুষের ওপর নির্যাতন করে। কিন্তু বাঙালিরাও থেমে থাকেনি। তারা সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে। উদ্দীপকে বলা হয়েছে অন্ধকার রাত, কবি সান্ত্রীদের সাবধান করেছেন। কারণ যুগ-যুগান্তরের সতি ব্যথা ফেনায়িত হয়ে উঠেছে। বতি মানুষ অধিকারের জন্য আজ সােচ্চার হয়ে উঠেছে। তারা আজ অভিযানে নেমেছে। আলােচ্য কবিতায়ও আমরা দেখতে পাই, বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ রেসকোর্স ময়দানে একত্র হয়। আপামর জনতা জেগে ওঠে মুক্তির স্বপ্নে। কৃষক, শ্রমিক, কেরানি, নারী, শিশু, বৃদ্ধ সবাই ফুসে ওঠে দারুণ ক্রোধে। প্রাণের নেতার নির্দেশ পাওয়ার অপেক্ষায় ব্যাকুল হয়ে ওঠে তারা। তাদের এই ব্যাকুলতার দৃশ্যই উদ্দীপকটি ধারণ করে।

ঘ। “উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার ভাবের খণ্ডাংশমাত্র”- মন্তব্যটি যথার্থ।

যুগে যুগে বাঙালি জাতি বিদেশি-বিভাষীদের দ্বারা শশাষণ-বঞ্চনার শিকার হয়েছে। সর্বশেষ পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়। পশ্চিম পাকিস্তানিদের শােষণ-নির্যাতনের হাত থেকে মুক্তি পেতে ঐক্যবদ্ধ হয়। বাঙালিকে অধিকারসচেতন করে সংগ্রামী চেতনায় প্রদীপ্ত হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যােগ্য নেতৃত্ব এবং ৭ই মার্চে দেওয়া তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায় কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণের দিকটিকে স্মরণ করেছেন। তিনি এ কবিতার মাধ্যমে সেদিনের রেসকোর্স ময়দান, মুক্তিপাগল সংগ্রামী জনতার উপস্থিতি, তাদের মধ্যে স্বাধীনতার আকাক্ষা এবং তাদের প্রাণপ্রিয় নেতার ওপর আস্থা; নির্ভরতা ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেছেন। কবিতায় কবি সেদিনের সেই ৭ই মার্চের ভাষণের মঞ্চের স্থানে বর্তমানে শিশুপার্ক মার্চের বিরুদ্ধে নেতিবাচক চেতনার কী ধরনের কর্মকাণ্ড, সেদিনের সেই ইতিহাসের চিহ্ন মুছে ফেলার নানা উদ্যোগের বিষয়ও তুলে ধরেছেন। এসব বিষয় উদ্দীপকে নেই। উদ্দীপকে কেবল মানুষের প্রতিবাদী হয়ে একসঙ্গে জেগে ওঠার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায় কবি বাঙালির প্রিয় নেতাকে কবি’ এবং তাঁর ভাষণকে ‘অমর কবিতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং আমরা স্বাধীনতা’ এ শব্দটি কীভাবে পেয়েছি তার শেকড় সন্ধান করেছেন। এ ধরনের কোনাে বিষয় উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়নি। এখানে শুধু অন্যায়ের বিরুদ্ধে মানুযের জেগে ওঠা এবং অধিকার সচেতনতার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

 

প্রশ্ন ৪।

জন্ম যাদের একাত্তরের পরে,

আমার এ গান শুধুই তাদের তরে।

বঙ্গবন্ধু দিলেন শেষে স্বাধীনতার ডাক

তার ডাকেতে উঠলাে জেগে মানুষ লাখে লাখ

ছাত্র-যুবক-কৃষক-মজুর সবাই অস্ত্র, ধরে।

আমার এ গান শুধুই তাদের তরে।

ক. কোন বিদেশি পত্রিকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি’ আখ্যা দেয়?

খ. শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প বলতে কবি কী বােঝাতে চেয়েছেন?

গ. উদ্দীপকটির সাথে স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতা কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের গান এবং স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতাটির বক্তব্য একই প্রজন্মের জন্য”- উক্তিটির সত্যতা যাচাই কর।

৪ নং প্রশ্নের উত্তর

ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজউইক’ পত্রিকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি’ আখ্যা দেয়।

খ। ৭ই মার্চ বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন বলে কবি এই ভাষণকে ‘শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প বলেছেন।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বিকেলে লাখ লাখ মানুষ অপেক্ষা করছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শােনার জন্য। এ বিকেলেই তিনি সেই জনতার মঞে দাড়িয়ে বকণ্ঠে ঘােষণা করেছিলেন- “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” এ বিকেলেই সেদিন মুক্তির দিকনির্দেশনা পেয়েছিল এবং বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিল। তাই কবি এই বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্যকে শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প বলেছেন।

গ। উদ্দীপকের সঙ্গে স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সর্বস্তরের মানুষের সাড়া দেওয়ার বিষয়টি সাদৃশ্যপূর্ণ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে ছিল মুক্তিযুদ্ধের অবদান। মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল বাঙালি জাতির গর্ব। আর এই জাতিকে সময়ােচিত নেতৃত্বদানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায় কবি স্বাধীনতাকামী মানুষের উপস্থিতি দেখিয়েছেন। কবিতায় ৭ই মার্চের ভাষণের দিকটি সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ সেদিন রেসকোর্স ময়দানে একত্র হয়। উদ্দীপকেও বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতাকামী মানুষের জেগে ওঠার দিকটি প্রকাশিত হয়েছে। মহান নেতার ডাকে ছাত্র-যুবক-কৃষক-মজুর সবাই অস্ত্র ধরেছে। ছিনিয়ে এনেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সর্বস্তরের মানুষের সাড়া দেওয়ার বিষয়টি উদ্দীপকটিকে স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ করে তুলেছে।

ঘ। “উদ্দীপকের গান এবং স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতাটির বক্তব্য একই প্রজন্মের জন্য”- উক্তিটি যথার্থ।

বাঙালি জাতি সংগ্রামের মাধ্যমে ছিনিয়ে এনেছে তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। কারণ বাঙালি বীরের জাতি। আর আগামী প্রজন্ম যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অগ্রসর হতে পারে সেজন্য তাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক প্রেক্ষাপট জানার সুযােগ করে দিতে হবে।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার মধ্য দিয়ে কবি আমাদের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। জনসমুদ্রের জোয়ার জেগেছিল সেদিন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে। গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে রাজনীতির কবি’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের মতাে দৃপ্ত পায়ে হেটে মঞ্চে উঠলেন। শােনালেন বাঙালির আশার বাণী। কবি সেই স্মৃতিকে আগামী প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে চেয়েছেন। উদ্দীপকের গানেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ডাকের বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রকাশিত হয়েছে সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিষয়টি। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে সেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল লাখ লাখ মানুষ।

উদ্দীপকের গানটি নতুন প্রজন্মের জন্য। যাতে তারা একাত্তরের সঠিক চেতনায় নিজেদের এগিয়ে নিতে পারে। স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার বক্তব্যেও একই চেতনা প্রকাশিত হয়েছে। তাই মন্তব্যটি যথার্থ।

 

প্রশ্ন ৫। বিপথগামী কিছু সেনা কর্মকর্তা সম্প্রতি তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থান ঘটানাের চেষ্টা করেন। মধ্যরাতে তারা ভারী অস্ত্রশস্ত্রসহ ট্যাঙ্ক, কামান, জঙ্গি বিমান ইত্যাদি নিয়ে আক্রমণ চালিয়ে রাজধানী শহরসহ রেডিও ও টেলিভিশন স্টেশন দখল করে নেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েফ এরদোগান সে সময় অন্য একটি শহরে অবস্থান করছিলেন। অ্যুথানের খবর শুনে তাৎক্ষণিক তিনি তাঁর স্মার্ট ফোনে একটি ভিডিও বার্তা রেকর্ড করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন এবং এতে তিনি দেশপ্রেমিক জনগণকে অ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান। সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ তার আহ্বানে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাতের অন্ধকার ছাপিয়ে রাস্তায় নেমে আসে এবং অ্যুত্থান ব্যর্থ করে দেয়।

ক. ছােটদের জন্য লেখা নির্মলেন্দু গুণের গ্রন্থটির নাম কী?

খ. কবির বিরুদ্ধে কবি’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?

গ. উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার সাথে যে দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “জাতির ক্রান্তিলগ্নে এরদোগানের চেয়ে বঙ্গবন্ধুর অবদান অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত”- উদ্দীপক ও স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতার আলােকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

৫নং প্রশ্নের উত্তর 

ক। ছােটদের জন্য লেখা নির্মলেন্দু গুণের’ গ্রন্থটির নাম- ‘কালাে মেঘের ভেলা’।

খ। কবির বিরুদ্ধে কবি’ বলতে এখানে শুভ শক্তির বিরুদ্ধে অশুভ শক্তির উত্থানকে বােঝানাে হয়েছে।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায় কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণের মূল বিষয়টি তুলে ধরেছেন। এই ভাষণেই তিনি পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। তার এই ভাষণের মধ্য দিয়ে সূচিত হয় আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার সংগ্রামী চেতনা। বাঙালির শেকড় থেকে জেগে ওঠা এই সংগ্রামী নেতাকে কবি ‘রাজনীতির কবি বলেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর এ দেশে অশুভ শক্তির উত্থান ঘটে। যে উত্থানে সব ইতিবাচক ভাবনা, সৌন্দর্যকে সমাহিত করার প্রয়াস চলে। তাই শুভ চেতনার বিরুদ্ধে আজ অশুভ চেতনার উত্থানকে কৰি কবির বিরুদ্ধে কবি’ বলে প্রকাশ করার প্রয়াস পেয়েছেন।

গ। উদ্দীপকটি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায় প্রতিফলিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রুর মােকাবিলা করার আহ্বানের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

জগতের মানুষকে মুক্তির পথ দেখাতে যুগে যুগে বহু মহাপুরুষ, রাষ্ট্রনায়কের আবির্ভাব ঘটেছে। তারা জনগণকে সংঘবদ্ধ করে সংগ্রামের পথে এগিয়ে দিয়েছেন। তাদের সময়ােচিত সিদ্ধান্ত, সংগ্রামী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে স্বাধীনতাকামী মানুষ মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছে।

উদ্দীপকে বিপথগামী কিছু সেনাকর্মকর্তার চেষ্টায় সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা এবং তুরস্কের রাষ্ট্রনায়কের সময়ােচিত পদক্ষেপের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে দেশটির প্রেসিডেন্টের আহ্বানে সাধারণ জনগণ বিপথগামী সেনাকর্মকর্তাদের অভিযানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাতের অন্ধকারে প্রতিরােধ সংগ্রামে নামে এবং সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দেয়। এ বিষয়টি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ সগ্রামের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে, মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে শত্রুর মােকাবিলা করার জন্য বাঙালির প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করে।

ঘ। “জাতির ক্রান্তিলগ্নে এরদোগানের চেয়ে বঙ্গবন্ধুর অবদান অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত”- মন্তব্যটি যথার্থ। 

জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে যােগ্য নেতৃত্বের কোনাে বিকল্প নেই। প্রত্যেক জাতির ভাগ্যেই দুর্যোগ-বিপর্যয় থাকে। তা কাটিয়ে উঠতে প্রয়ােজন যােগ্য নেতৃতুের। নেতৃত্বশূন্য জাতি নানাভাবে শােষণ-বনার শিকার হতে পারে। সেই সময় জাতিকে সঠিক পথনির্দেশনা দিতে সাহসী ও তেজোদীপ্তরা এগিয়ে আসেন।

উদ্দীপকে তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থান রুখতে সে দেশের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েফ এরদোগানের সময়ােচিত পদক্ষেপ ও নেতৃত্বের দিকটি প্রকাশিত হয়েছে। উদ্দীপকে প্রেসিডেন্টের আহ্বানে সে দেশের জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সামনে বিপথগামী সেনারা টিকতে পারেনি। ফলে সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যায়। এ বিষয়টি স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায় প্রতিফলিত মুক্তির সংগ্রামে এদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যােগ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তুলনা করা যায়। তবে তা সমতুল্য নয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছিল বাংলাদেশের মানুষকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্তিদান। অন্যদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এ নেতৃত্ব ছিল শুধু একটি সেনা অ্যুত্থান ব্যর্থ করে দেওয়ার।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে’ কবিতায় বঙ্গবন্ধু কীভাবে রাজনীতির কবি হয়ে উঠেছিলেন তার পরিচয় আছে। তিনি কীভাবে সময়ােচিত নেতৃত্রে মাধ্যমে দেশকে শত্রুমুক্ত ও স্বাধীন করেছেন সে কথাও কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে, যা উদ্দীপকে প্রকাশ পায়নি। বাঙালির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর যে অবদান তা এরদোগানের চেয়ে বহুগুণ ব্যাপক ও বিস্তৃত। তিনি বাঙালিকে ভিতর থেকে জাগিয়ে তুলে একটি সুগঠিত হানাদার বাহিনীকে রুখে দিতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ নেতৃত্ব দিয়েছেন দীর্ঘ সংগ্রাম-আন্দোলনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বুকে বুক মিলিয়ে। আর উদ্দীপকের এরদোগানের আহ্বান ছিল ভিডিওবার্তার মাধ্যমে একটি সাময়িক অ্যুথান রুখে দিতে। এসব বিষয় বিবেচনায় তাই বলা যায়, প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

Leave a Comment