সেই দিন এই মাঠ কবিতার জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

সেই দিন এই মাঠ কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। জীবনানন্দ দাশের কবিতার মৌলিক প্রেরণা কী?

উত্তর : জীবনানন্দ দাশের কবিতার মৌলিক প্রেরণা প্রকৃতির 

প্রশ্ন ২। ‘বেলা অবেলা কালবেলা’ কার লেখা? 

উত্তর : ‘বেলা অবেলা কালবেলা’ কাব্যগ্রন্থটি জীবনানন্দ দাশের লেখা।

প্রশ্ন ৩। জীবনানন্দ দাশ কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তর : জীবনানন্দ দাশ ১৯৫৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

প্রশ্ন ৪। সেইদিন এই মাঠ’ কবিতায় বর্ণিত ফুলের নাম কী?

উত্তর : সেইদিন এই মাঠ’ কবিতায় বর্ণিত ফুলের নাম চালতাফুল।

প্রশ্ন ৫ নক্ষত্রের তলে কিসে স্বপ্ন দেখবে?

উত্তর : নক্ষত্রের তলে নদী স্বপ্ন দেখবে।

প্রশ্ন ৬। মাল্যবান’ গ্রন্থের লেখক কে? 

উত্তর : মাল্যবান’ গ্রন্থের লেখক জীবনানন্দ দাশ।

প্রশ্ন ৭। নক্ষত্রের তলে কে স্বপ্ন দেখবে? 

উত্তর : নক্ষত্রের তলে নদী স্বপ্ন দেখবে।

প্রশ্ন ৮। জীবনানন্দ দাশের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ কেমন?

উত্তর : জীবনানন্দ দাশের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ এক অনন্য রূপসী।

প্রশ্ন ৯। ‘সেইদিন এই মাঠ’ কবিতাটির রচয়িতা কে?

উত্তর : কবি জীবনানন্দ দাশ

প্রশ্ন ১০। জীবনানন্দ দাশ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর : জীবনানন্দ দাশ বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন ১১। জীবনানন্দ দাশ কোন কোন কলেজে শিক্ষা লাভ করেন?

উত্তর : জীবনানন্দ দাশ বরিশালের ব্রজমােহন কলেজ ও কলকাতার  প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে শিক্ষা লাভ করেন।

প্রশ্ন ১২। এম.এ. ডিগ্রি লাভের পর জীবনানন্দ দাশ কী করেন?

উত্তর : এম.এ. ডিগ্রি লাভের পর জীবনানন্দ দাশ অধ্যাপনা শুরু করেন?

প্রশ্ন ১৩। জীবনানন্দ দাশ প্রধানত কী কবি হিসেবে পরিচিত?

উত্তর : আধুনিক জীবনচেতনার কবি।

প্রশ্ন ১৪। জীবনানন্দ দাশ কোথায় ট্রাম দুর্ঘটনায় আহত হন?

উত্তর : জীবননান্দ দাশ কলকাতায় ট্রাম-দুর্ঘটনায় আহত হন।

প্রশ্ন ১৫। সেইদিন এই মাঠ কী হবে না বলে কবি জানেন?

উত্তর : সেই দিন এই মাঠ স্তব্ধ হবে না বলে কবি জানেন।

প্রশ্ন ১৬। কবি এই মাঠ স্তব্দ হওয়ার দিন কী করবেন?

উত্তর : কবি সেদিনও স্বপ্ন দেখবেন।

প্রশ্ন ১৭। লক্ষ্মীটির তরে কে গান গাবে?

উত্তর : লক্ষ্মীটির তরে লক্ষ্মীপেঁচা গান গাবে।

প্রশ্ন ১৮। সেইদিন এই মাঠ’ কবিতায় কোন পাখির উল্লেখ আছে?

উত্তর : লক্ষ্মীপেঁচা।

প্রশ্ন ১৯। মানুষের গড়া পৃথিবীর অনেক সভ্যতা কী হয়ে গেছে?

উত্তর : মানুষের গড়া পৃথিবীর অনেক সভ্যতা বিলীন হয়ে গেছে।

প্রশ্ন ২০। এশিরীয় ও বেবিলনীয় সভ্যতা এখন কী নয়?

উত্তর : এশিরীয় ও বেবিলনীয় সভ্যতা এখন ধ্বংসস্তৃপ ছাড়া কিছু নয় ।

প্রশ্ন ২১। সভ্যতা একদিকে যেমন ক্ষয়িষ্ণু অন্যদিকে তার কী চলে?

উত্তর : সভ্যতা একদিকে যেমন ক্ষয়িষ্ণু অন্যদিকে চলে তার বিনির্মাণ ।

প্রশ্ন ২২। সেইদিন এই মাঠ’ কবিতায় শীতের শিশির কোথায় পড়ে?

উত্তর : ‘সেইদিন এই মাঠ’ কবিতায় শীতের শিশির চালতাফুলে পড়ে।

প্রশ্ন ২৩। লক্ষ্মীপেঁচার কণ্ঠে কী ধ্বনিত হয়?

উত্তর : লক্ষীপেঁচার কণ্ঠে মঙ্গলবার্তা ধ্বনিত হয়।

প্রশ্ন ২৪। প্রকৃতপক্ষে কিসের মৃত্যু আছে?

উত্তর : প্রকৃতপক্ষে মানুষের মৃত্যু আছে।

প্রশ্ন ২৫। ঝরা পালক’ কার রচিত কাব্যগ্রন্থ?

উত্তর : ‘ঝরা পালক’ কবি জীবনানন্দ দাশ রচিত কাব্যগ্রন্থ।

প্রশ্ন ২৬। জীবনানন্দ দাশের মা কী ছিলেন?

উত্তর : জীবনানন্দ দাশের মা একজন স্বভাবকবি ছিলেন।

প্রশ্ন ২৭। ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি কী জাতীয় গ্রন্থ?

উত্তর : ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’ জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ।       

 

প্রশ্ন ১। খেয়ানৌকাগুলাে চরের কাছে লাগানাের বিষয়টি উল্লেখ করে কবি কী বােঝাতে চেয়েছেন? 

উত্তর : প্রশ্নোক্ত চরণে গ্রামবাংলার প্রকৃতির স্বাভাবিক চিত্র তুলে ধরে কবি বােঝাতে চেয়েছেন কোনাে মৃত্যুই প্রকৃতির স্বাভাবিকতাকে  স্থবির করে দিতে পারে না; প্রকৃতি চিরকাল তার স্বাভাবিকতা  বজায় রাখে।

পৃথিবীতে কেউ চিরস্থায়ী নয় বলে প্রত্যেক মানুষকেই এক সময় পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হয়। কোনাে মূত্যুই সময়ের বহমানতাকে প্রভাবিত করতে পারে না। পৃথিবীর সবকিছু আপন গতিতেই চলতে থাকে। তাই কারও মৃত্যুতে প্রকৃতির কোনাে পরিবর্তন হয় না । প্রকৃতি আপন গতিতেই গতিশীল। পৃথিবী তার চলার গতি যেমন হারায় না প্রকৃতিও তেমনই তার স্বাভাবিকতা হারায় না। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রামবাংলার প্রকৃতিতেও স্বাভাবিকতা বিরাজ করে এবং স্বাভাবিক নিয়মেই খেয়ানৌকাগুলাে এসে চরের খুব কাছে লেগেছে। উক্ত চরণে কবি এটাই বােঝাতে চেয়েছেন।

প্রশ্ন ২। ‘বেবিলন ছাই হয়ে আছে’– এ উক্তি দ্বারা কী বােঝানাে হয়েছে?

উত্তর : ‘বেবিলন ছাই হয়ে আছে’- এ উক্তি দ্বারা মানুষের গড়া পৃথিবীর অনেক সভ্যতা বিলীন হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

মানুষ এবং মানুষের তৈরি সবকিছুর ধ্বংস অনিবার্য। ‘বেবিলন’ মানুষের  তৈরি সভ্যতা যা কালের পরিক্রমায় আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত। কিন্তু সৃষ্টির শুরু থেকে প্রকৃতি আপন গতিতে এগিয়ে চলছে। যার সৌন্দর্য কখনই শেষ হয় না। এ কারণে কবি বলেছেন বেবিলনের মতাে সভ্যতাও ছাই হয়ে গেছে। কিন্তু প্রকৃতি চিরকাল প্রাণময়। উক্তিটি সে কথাই প্রকাশ করে ।

প্রশ্ন ৩। “চারিদিকে শান্ত বাতি- ভিজে গন্ধ মৃদু কলরব”বলতে তুমি কী বােঝ?

উত্তর : “চারিদিকে শান্ত বাতি- ভিজে গন্ধ- মৃদু কলরব” লাইনটি দ্বারা নদীপাড়ের অবস্থাকে বােঝানাে হয়েছে।

শীতকালে চারদিক কুয়াশায় ভেজা থাকে। নদীর ঘাটে তখন সারাদিন মাছ ধরা নৌকার ভিড় জমে। জেলেরা মাছ নিয়ে হাটে  যায়। দরদাম করে মাছ বিক্রি করে। তখনও নৌকায় কুপি বাতি ধীরে ধীরে জ্বলতে থাকে। কবির মতে এ আলাে খুবই শান্ত । নদীর বুক জুড়ে ভেসে আসা হিম বাতাস যেন ভেজা গন্ধ নিয়ে কবির নাকে প্রবেশ করে। প্রশ্নোক্ত লাইন দ্বারা এটাই নির্দেশ করা হয়েছে।

প্রশ্ন ৪। ‘সেইদিন এই মাঠ’ কবিতায় সৌন্দর্যের অমরত্বের দিকটি।  কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ‘সেইদিন এই মাঠ’ কবিতায় সৌন্দর্যের অমরত্বের দিকটি প্রকৃতির সতেজতা ও চিরন্তন হয়ে ওঠার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে। 

‘সেইদিন এই মাঠ’ কবিতায় কবি প্রকৃতির চিরকালীন সৌন্দর্যের এবং মানুষের স্বপ্নের অমরত্বের দিকটি তুলে ধরেছেন। কবিতায় সভ্যতার ধ্বংস ও বিনির্মাণ উভয় দিক প্রতিফলিত হয়েছে। বিচিত্রভাবে  বিবর্তনের মধ্যেও রূপ-রস-গন্ধ নিয়ে প্রকৃতি টিকে থাকে। জাগতিক নিয়মে নশ্বর মানবজীবনস্রোত চলে অবিনশ্বর প্রকৃতির বিপরীতে টিকে থাকে কেবল মানবীয় কর্ম, চিন্তা আর স্বপ্ন। প্রকৃতির নানা বিষয়ের সঙ্গে এগুলাে মিশে অমরত্বের দাবি করে।

প্রশ্ন ৫। ‘আমি চলে যাব বলে’ কথাটি কেন বলা হয়েছে? 

উত্তর : সেইদিন এই মাঠ’ কবিতার কবি মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এ পৃথিবী থেকে চলে যাবেন বলে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন। পৃথিবীতে কেউ চিরস্থায়ী নয়। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মানুষের জীবনাবসান হলেও প্রকৃতির কোনাে পরিবর্তন হয় না। প্রকৃতি তার রূপ-রস-গন্ধসৌন্দর্য নিয়ে টিকে থাকে। প্রকৃতি স্বাভাবিক নিয়মেই তার রূপ-রস-গন্ধসৌন্দর্য বিলিয়ে যায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। যার ফলে কবি মৃত্যুবরণ করে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেও প্রকৃতির চালতাফুল শিশিরের জলে ভিজে নরম গন্ধ বিলানাে বন্ধ করে না দিয়ে অনন্তকালব্যাপী তার গন্ধের ঢেউ প্রবাহিত হতে থাকে সেই বিষয়টি কবি অনুভব করেছেন।

প্রশ্ন ৬। ‘এই নদী নক্ষত্রের তলে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

উত্তর : ‘এই নদী নক্ষত্রের তলে’ বলতে কবি সম্পূর্ণ পৃথিবীকে বুঝিয়েছেন।

সেইদিন এই মাঠ’ কবিতায় কবি প্রকৃতির চিরন্তন গতিময় সৌন্দর্য ও মানবজীবনের নশ্বরতাকে ব্যক্ত করেছেন। কবির মতে, পৃথিবীতে প্রাণের যে প্রবাহ ও ঘটনার যে নিয়ত আবর্তন তা চিরন্তন। পৃথিবীতে এই প্রাণের প্রবাহ কখনাে থামবে না। আর সেই সঙ্গে ঘটনার পরম্পরাও শেষ হবে না। এরই ধারাবাহিকতায় মহাকালের গর্ভে কবিও একদিন হারিয়ে যাবেন, বর্তমানের কেউ হয়তাে সেদিন থাকবে না। সেই দিন এই মাঠ থাকবে, প্রকৃতির বহমানতা থাকবে। পৃথিবীতে প্রাণের প্রবাহ চলবে এই নদী-নক্ষত্রের তলে ।

প্রশ্ন ৭। কবি এশিরিয়া, বেবিলনের উদাহরণ দিয়েছেন কেন?

উত্তর : কবির এশিরিয়া আর বেবিলনের উদাহরণ দেওয়ার কারণ হলাে, সভ্যতা ধ্বংসময়- সেটা প্রমাণ করা।

পৃথিবীর মঞে মানুষ অনেক কিছু করছে। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে আজ ইয়ত্তা নেই। পৃথিবীতে অনেক উন্নত সভ্যতা সৃষ্টি হয়েছিল। এশিরিয়া আর বেবিলন তার মধ্যে অন্যতম। এসব সভ্যতা ধ্বংস হবে এটা কেউ চিন্তাও করেনি। অথচ আজ আর সেসব সভ্যতার চিহ্নও অবশিষ্ট নেই।      

Leave a Comment