সুখী মানুষ নাটিকার জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

সুখী মানুষ নাটিকার জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন-০১। কোন গ্রামের মানুষকে মােড়ল খুব জ্বালিয়েছে ?

উত্তরঃ সুবৰ্ণপুর গ্রামের মানুষকে মােড়ল খুব জ্বালিয়েছে ।

প্রশ্ন-০২। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মােট চরিত্র সংখ্যা কতটি?

উত্তরঃ ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মােট চরিত্র সংখ্যা পাঁচটি।

প্রশ্ন-০৩। মােড়ল কার মুরগি জোর করে জবাই করে খেয়েছে ?

উত্তরঃ মােড়ল হাসুর মুরগি জোর করে জবাই করে খেয়েছে ।

প্রশ্ন-০৪। মানুষ এবং প্রাণী অমর নয়-উক্তিটি কার ?

উত্তরঃ মানুষ এবং প্রাণী অমর নয়-উক্তিটি কবিরাজের।

প্রশ্ন-০৫। “সুখী মানুষ” নাটিকার দ্বিতীয় সংলাপটি কার?
উত্তরঃ ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় দ্বিতীয় সংলাপটি রহমতের।

প্রশ্ন-০৬। সুখি মানুষ’ নাটিকার দৃশ্য কয়টি?

উত্তরঃ ‘সুখি মানুষ’ নাটিকার দৃশ্য দুটি ।

প্রশ্ন-০৭। মােড়লের বিশ্বাসী চাকরের নাম কী ?

উত্তরঃ মােড়লের বিশ্বাসী চাকরের নাম রহমত।

প্রশ্ন -০৮। কবিরাজের বয়স কত?

উত্তরঃ কবিরাজের বয়স ষাট বছর।

প্রশ্ন-০৯। ‘সাত ঘাটের কানাকড়ি’ মমতাজ উদ্দিন আহমদের কোন ধরনের রচনা ?

উত্তরঃ ‘সাত ঘাটের কানাকড়ি’ মমতাজ উদ্দিনের নাটক।

প্রশ্ন-১০। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার লেখক কে?

উওরঃ ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার লেখক মমতাজ উদ্দীন আহমদ।

প্রশ্ন-১১। কবিরাজের মতে বাঘের চোখ সংগ্রহের চেয়ে কঠিন কাজ কী ?

উত্তরঃ কবিরাজের মতে বাঘের চোখ সংগ্রহের চেয়েও কঠিন কাজ হলাে সুখী মানুষের ফতুয়া সংগ্রহ করা।

প্রশ্ন-১২। কে মােড়লের নাড়ি পরীক্ষা করছে ?

উত্তরঃ কবিরাজ মােড়লের নাড়ি পরীক্ষা করছে।

প্রশ্ন-১৩। কী গায়ে দিলে মােড়লের অসুখ ভালাে হবে ?

উত্তরঃ সুখী মানুষের ব্যবহৃত ফতুয়া গায়ে দিলে মােড়লের অসুখ ভালাে হবে।

প্রশ্ন-১৪। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মােড়লের চরিত্রটি কোন প্রকৃতির?

উত্তরঃ ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার মােড়লের চরিত্রটি লােভী ও অত্যাচারী।

প্রশ্ন-১৫। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় হা হা করে পাগলের মতাে হেসে উঠেছিল কে ?

উত্তরঃ ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় সুখি মানুষটি হাহা করে পাগলের মতাে হেসে উঠেছিল।

প্রশ্ন-১৬। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মানুষের অশান্তির মূল কারণ কী?

উত্তরঃ সুখী মানুষ নাটিকায় মানুষের অশান্তির মূল কারণ অন্যায় ও অনৈতিকভাবে উপার্জিত অর্থবিত্ত ।

সুখী মানুষ নাটিকার অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন-০১। সুখী মানুষ পাগলের মতাে হাসছিল কেন ?

উত্তরঃ সুখী মানুষটি হাসুর মুখে চোরের উপদ্রেবের শুনে পাগলের মতাে হাসছিল।

‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় সুখী মানুষটির তেমন কোনাে সম্বল নেই। সে বনের মধ্যে একটা ছােট কুটিরে একা থাকে। সারাদিন বনে কাঠ কাটে এবং দিনান্তে সেগুলাে হাটে নিয়ে বিক্রি করে। তাতে যে আয় হয় তা দিয়ে প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্র কেনে এবং তা রান্না করে খেয় মনের আনন্দে সে ঘুমিয়ে পড়ে। তার ঘরে কোনাে দামি বস্তু বা আসবাবপত্র নেই। তাই তার ঘরে চোর ঢুকে কিছু চুরি করে নিয়ে যাবে সেই ভয় তার নেই। এ কারণে হাসু যখন তাকে চোরের উপদ্রবের কথা বলে তখন সে হেসে ওঠে।

 

প্রশ্ন-০২। ‘মনের মধ্যে অশান্তি থাকলে ওষুধেও কাজ হয় না।’-এ কথার অর্থ বুঝিয়ে লেখ ।।

উত্তরঃ “মনের মধ্যে অশান্তি থাকলে ওষুধে কাজ হয় না।”-বলতে মানসিক যন্ত্রণায় কাতর মানুষের যে ঔষধ সেবনে কাজ হয়, শারীরিক উপশম লাভ করা যায় না তা বােঝানাে হয়েছে।

‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় কথাটি মােড়লকে বলেছে তার ফুফাত ভাই হাসু । মােড়ল একজন অত্যাচারী, অবিবেচক লােক। মানুষের অধিকার হরণ করে সে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। তার মধ্যে অনুশােচনা জাগ্রত হয়েছে, যার ফলে শারীরিক অশান্তির চেয়ে মানসিক অশান্তিই বেশি দেখা দিয়েছে। হাসুর মতে, কবিরাজের ওষুধে মােড়লের মনে শান্তি আসবে না।

 

প্রশ্ন-০৩। হাসু মােড়লকে কঠিন লােক বলেছে কেন ?

উত্তরঃ হাসু মােড়লকে নিষ্ঠুর অর্থে কঠিন লেখি বলেছে।

হাসু রহমতকে এ কথাটি বলে। রহমত মােড়লের জন্য কাদতে চাইলে হাসু তাকে মন উজাড় করে কাঁদতে বলে। বলে মােড়ল একটা কঠিন লােক, যে সুবর্ণপুরের মানুষকে বড় জ্বালিয়েছে। কারও গরু কেড়ে নিয়েছে, কারও ধান লুট করে নিয়েছে। মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখলে হেসেছে। আর এ কারণেই নিষ্ঠুর ও খারাপ অর্থে হাসু মােড়লকে কঠিন লােক বলেছে।
প্রশ্ন-০৪। ‘সবাই অসুখী। কারও সুখ নেই।’-কেন?

উত্তরঃ সবাই অসুখী। কারও সুখ নেই। কারণ পৃথিবীতে সবাই কেবল চায় আর চায়, চেয়ে পেয়েও কেউ সন্তুষ্ট হয় না।

কবিরাজের কথামতাে মােড়লের অসুখ দূর করতে সুখী মানুষের জামার খোঁজে বেরিয়েছিল হাসু আর রহমত। তারা পাঁচ গ্রাম ঘুরেও যখন একজন সুখী মানুষের সন্ধান পায় না তখন হতাশ হয়ে পড়ে। বনের ধারে অন্ধকার রাতে চাঁদের ম্লান আলােতে একটি কুড়েঘরের সামনে গিয়ে তারা ভাবতে থাকে। রহমত সুখী মানুষ পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হাসু সুখী মানুষ না পাওয়ার কারণটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আলােচ্য কথাটি বলেছে।

 

প্রশ্ন-০৫। ‘তােমার মােড়লের নিস্তার নেই’-হাসু এ কথা বলেছিল কেন ?

উত্তরঃ মােড়ল নানাভাবে মানুষকে ঠকিয়েছে বলে হাসুর মতে মােড়লের নিস্তার নেই।

মানুষকে ঠকিয়ে, মানুষের জিনিস কেড়ে নিয়ে মােড়ল নিজে সম্পদশালী হয়েছে। সে নানাভাবে মানুষের মনে কষ্ট দিয়েছে, মানুষকে শােষণ করেছে। তাই মােড়ল আজ অসুস্থ। তার মনে শান্তি নেই। তার এ অবস্থা দেখে হাসু প্রশ্নোক্ত কথটি বলেছে।

 

প্রশ্ন-০৬। সুখী মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন কেন ?

উত্তরঃ খুব কম মানুষই সুখী হওয়ায় সুখী মানুষ খুঁজে বের করা কঠিন কাজ। মানুষমাত্রই সুখী হতে চায়। এ কারণে সেই সুখের উপকরণ হিসেবে ধন, সম্পদ, অর্থ প্রভৃতির প্রতি তার চাহিদা দিনের পর দিন বাড়তে থাকে। এগুলাে পেলে সে আরও চায়। এই আরও চাওয়ার ফলে সেই মানুষের মনে সৃষ্টি হয় অশান্তি । সুখ তার জীবন থেকে হারিয়ে যায়। আমাদের সমাজে এ ধরনের মানুষের সংখ্যাই বেশি। এ কারণে প্রকৃত সুখী মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন।

 

প্রশ্ন-০৭। হাসু মােড়লের মৃত্যু কামনা করে কেন?

উত্তরঃ অন্যায়ভাবে হাসুর ও সুবর্ণপুর গ্রামর মানুসের কাছ থেকে সম্পদ লুট করে ধনী হওয়ার কারনে হাসু মােড়লের মৃত্যু কামনা করে।

‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মােড়ল চরিত্রটির কাজ হলাে অন্যের জিনিস লুট করা, ঠকানাে, যেকোনাে কিছু জোর করে ছিনিয়ে নেওয়া ইত্যাদি। সে অত্যাচারী । মানুষের কান্না দেখে সে হাসে। আর হাসু চরিত্রটি সৎ ও সাহসী চরিত্র। অন্যায়কারীর শান্তি হলে সে খুশি হয়। তাই সে অত্যাচারী মােড়লের মৃত্যু কামনা করে ।।

 

প্রশ্ন-০৮। ‘সুখী মানুষ’ নাটিকাতে সুখী মানুষ’ বলতে কী বোঝায় ?

উত্তরঃ সুখী মানুষ নাটিকাতে অন্যায় না করে নিজের উপার্জনে তুষ্ট থাকা ব্যক্তিকেই সুখী মানুষ বলা হয়েছে।

সারাদিন পরিশ্রম করে সেই পারিশ্রমিক দিয়ে সংসারের প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্র কেনার সুখই আলাদা। মনের সুখে চোখে ঘুম আসে । কোনাে ভাবনা থাকে না। কারণ প্রয়ােজনের অতিরিক্ত কোনাে কিছু জমা নেই। এসব সুখী মানুষের লক্ষণ।

 

প্রশ্ন-০৯। “জ্বলে গেল। হাড় ভেঙে গেল। আমাকে বাঁচাও।”-মােড়লের এরূপ বলার কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ “জ্বলে গেল, হাড় ভেঙে গেল, আমাকে বাঁচাও”-মােড়লের এরূপ বলার কারণ হলাে সে মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত।

কবিরাজ মােড়লের নাড়ি পরীক্ষা করে অসুখ প্রতিকারের উপায় যখন হাসু আর রহমতকে বুঝিয়ে বলছিল, তখন মােড়ল আলােচ্য কথাটি বলেছিল। কারণ মােড়লের হাড় মড়মড় রােগ হয়েছে। এ রােগ হলে হাড় মড়মড় করার কারণে রােগীকে সহ্যকে যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়।

 

প্রশ্ন-১০। “লােভে পাপ, পাপে মৃত্যু।”কবিরাজের এ কথা বলার কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ “লােভে পাপ, পাপে মৃত্যু।”-কবিরাজের এ কথা বলার কারণ হলাে, পাপী মােড়ল সারাজীবনের অপকর্মের শাস্তি হিসেবে হাড় মড়মড় রােগে আক্রান্ত হয়েছিল।

মানুষ পাপ করলে তার শাস্তি পাবে আর ভালাে কাজের মাধ্যমে পুরস্কার পাবে-এটাই জগতের শাশ্বত নিয়ম। মােড়লের লােভের সীমা ছিল না। ফলে সারাজীবন অন্যের ক্ষতির মাধ্যমে সে প্রচুর অন্যায় করেছে। আর অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে হাড় মড়মড় রােগে আক্রান্ত হয়েছে। এটা বুঝতে পারায় কবিরাজ আলােচ্য কথাটি বলেছেন।

 

প্রশ্ন-১১। “কী তাজ্জব কথা, পাঁচ গ্রামে একজনও সুখী মানুষ পেলাম না!”-ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ “কী তাজ্জব কথা, পাঁচ গ্রামে একজনও সুখী মানুষ পেলাম না!”-কথাটি রহমত বলেছিল। কারণ পাচ গ্রাম খুঁজে তারা একজনও সুখী মানুষের সন্ধান পায় নি।

মােড়লের দুরারােগ্য হাড় মড়মড় রােগের প্রতিরােধক হিসেবে কবিরাজ সুখী মানুষের ফতুয়া সংগ্রহের কথা বলেছিল। হাসু আর রহমত ফতুয়া খোঁজার দায়িত্ব পেল। কিন্তু পাঁচ গ্রামেও তারা একজন সুখী মানুষ পেল না। যাকে জিজ্ঞেস কররে, সেই নিজেকে অসুখী মানুষ হিসেবে দাবি করে। তাই আশ্চার্য হয়ে রহমত আলােচ্য কথাটি বলেছিল।

 

প্রশ্ন-১২। “আমার ঘরে কিছু নাই । সেই জন্যই তােম আমি সুখী মানুষ।”-ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ “আমার ঘরে কিছু নাই, সেই জন্যই তাে আমি সুখী মানুষ।”-জনৈক সুখী লােক এ কথাটি বলেছিল। 

কারণ সম্বল হিসেবে তার কিছুই ছিল না। প্রাপ্তি মানুষের আকাক্ষা বাড়িয়ে তােলে। ফলে আরও পাওয়ার আশায় ব্যক্তি আত্মার চর্চা করতে ভুলে যায়।জনৈক সুখী লােকের কোনাে সম্পদ নেই । বনে কাঠ কাটে আর খায়। ফলে সম্পদের প্রতি তার কোনাে মােহ নেই। নিজের আত্মাকে চর্চা করার যথেষ্ট সুযােগ সে পায়। তাই সে নিজেকে সুখী ভাবতে পেরেছে।

Leave a Comment