প্রশ্ন-১। শাহেদ এবং কবির বাল্যবন্ধু। শাহেদ জ্ঞানের নির্দিষ্ট একটি শাখায় সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের পর সেই জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে জীবিকা অর্জনের পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে দুর্ভাগা কবিরকে হঠাৎ করে বাবা মারা যাবার কারণে লেখাপড়া ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। বসত বাড়িটি ছাড়া বাবা আর কোনাে সম্পত্তিই রেখে যেতে পারেননি। উপায়ন্তর না পেয়ে অবশেষে কবির জীবিকার জন্য অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজে লেগে গেল ।
ক. The Value Base of Social Work’ গ্রন্থের লেখক কে?
খ. আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার বলতে কী বােঝায়?
গ. উদ্দীপকে কবিরের জীবিকার্জনের উপায়টির বৈশিষ্ট্য পাঠ্যপুস্তকের আলােকে বর্ণনা করাে।
ঘ. শাহেদের জীবিকার্জনের পন্থাটি কবিরের জীবিকার্জনের পন্থা থেকে আলাদা- এ বিষয়ে তােমার মতামত ব্যক্ত করাে।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক। ‘The Value Base of Social Work’ গ্রন্থটির লেখক হলেন চার্লস
খ। আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার বলতে ব্যক্তির স্বকীয়তা বজায় রেখে যােগ্যতা প্রমাণের মাধ্যমে আত্মােন্নয়নের সুযােগকে বােঝায়।
আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার সমাজকর্মের গুরুত্বপূর্ণ একটি মূল্যবােধ। ব্যক্তির পছন্দ, চাহিদা, সামর্থ্য এবং ক্ষমতা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তােলার ক্ষেত্রে এ অধিকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ অধিকার ব্যক্তির আত্মনির্ভরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনকে অর্থবহ করে তােলে।
গ। উদ্দীপক কবিরের জীবিকার্জনের উপায়টি হচ্ছে বৃত্তি।
মানুষ তার জীবনধারণের জন্য যে সকল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়ােজিত থাকে তাকে বৃত্তি বলা হয়। বৃত্তির কিছু স্বকীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন—বৃত্তির ক্ষেত্রে কোনাে বিশেষ শিক্ষা বা যােগ্যতার প্রয়ােজন হয় না। এক্ষেত্রে বিশেষ কোনাে মূল্যবােধ ও নৈতিক মানদণ্ড থাকে না। বৃত্তির জন্য পেশাগত প্রতিষ্ঠানের প্রয়ােজনীয়তা আবশ্যক নয়। বৃত্তির ক্ষেত্রে তেমন সুনির্দিষ্ট কোনাে দায়িত্ব থাকে না। এখানে ব্যক্তি নিজের ইচ্ছামতাে কাজ করতে পারে। বৃত্তি যেহেতু ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে তাই এখানে জবাবদিহিতা বিশেষভাবে অনুপস্থিত। অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক স্বীকৃতি ছাড়াও বৃত্তির অনুশীলন হয় এবং সেক্ষেত্রে এটি জনকল্যাণমূলক নাও হতে পারে।
উদ্দীপকের কবির বাবা মারা যাওয়ার কারণে সংসারের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এ কারণে লেখাপড়া ছেড়ে সে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করে। বসতবাড়ি ছাড়া অন্য কোনাে সম্পত্তি না থাকায় সে অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে। কবিরের জীবিকার্জনের এ কাজটি বৃত্তিরই অন্তর্ভুক্ত। আর বৃত্তির বৈশিষ্ট্যগুলাের উপরে বর্ণিত হয়েছে।
ঘ। শাহেদের জীবিকার্জনের পন্যটি কবিরের জীবিকার্জনের পন্থাটি লাদা— এ বিষয়টির সাথে আমি একমত।
বৃত্তি বলতে জীবনধারণের জন্য যেকোনাে রকমের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বােঝায়। অন্যদিকে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যােগ্যতা অর্জনই পেশা। প্রতিটি পেশারই কতগুলাে বৈশিষ্ট্য ও মূল্যবোেধ থাকে যা পেশাকে বৃত্তি থেকে পৃথক সত্তা দান করে।
উদ্দীপকের শাহেদ জ্ঞানের নির্দিষ্ট একটি শাখায় সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করেছে। পরবর্তী সময়ে সেই জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে সে জীবিকা থেকে অর্জনের পথ বেছে নিয়েছে। শাহেদের জীবিকার্জনের পন্থাটি পেশার বৈশিষ্ট্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। অন্যদিকে কবির বৃত্তির মাধ্যমে জীবিকার্জন করছে। শাহেদকে জীবিকার্জনের জন্য সুসংগঠিত ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করতে হয়েছে। কিন্তু কবিরকে এরকম কোনাে সুসংগঠিত ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করতে হয়নি। তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক শিক্ষার মাধ্যমে শাহেদকে তার পেশাগত কাজ সম্পর্কে বিশেষ নৈপুণ্য ও দক্ষতা অর্জন করতে হয়েছে। কিন্তু কবিরকে তার কাজের জন্য কোনাে ধরনের নৈপুণ্য ও দক্ষতা অর্জন করতে হয়নি। একজন পেশাদার হিসেবে শাহেদকে অবশ্যই তার পেশার মূল্যবােধগুলাে মেনে চলতে হয়। কিন্তু কবিরকে তার কাজের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনাে মূল্যবােধ মেনে চলতে হয় না। শাহেদের পেশার সামগ্রিক উন্নয়ন ও কর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য পেশাগত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু কবিরের বৃত্তির ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনাে প্রতিষ্ঠানের প্রয়ােজন নেই। শাহেদের পেশাকে অবশ্যই জনগণ ও সমাজের স্বীকৃতি অর্জন করতে হয়েছে। কিন্তু কবিরের বৃত্তির ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনাে বাধ্যবাধকতা নেই।
উপরের আলােচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, শাহেদ ও কবিরের জীবিকার্জনের পন্থা সম্পূর্ণ আলাদা।
প্রশ্ন ২। রীমা ও সীমা ঢাকা মেডিকেল থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করে। সীমা একটি হাসপাতালে রােগী দেখেন এবং রীমা কসমেটিক্স এর ব্যবসা করেন।
ক. NASw কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?
খ. “সামাজিক স্বীকৃতি পেশার অন্যতম বৈশিষ্ট্য”- ব্যাখ্যা কর।
গ. রীমা জীবিকা অর্জনের কোন উপায়টি বেছে নিয়েছে? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. রীমা ও সীমার জীবিকা অর্জনের উপায় দু’টির বৈসাদৃশ্য নির্ণয় করাে।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক। ১৯৫৫ সালে NASW (National Association of Social Workers) প্রতিষ্ঠিত হয়।
খ। সামাজিক স্বীকৃতি পেশার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
জীবিকা নির্বাহের জন্য আমরা যে সব কাজ করি তার সবগুলােকে পেশা বলা যায় না। পেশার সুনির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সামাজিক স্বীকৃতি এর অন্যতম। যেমন- আমাদের সমাজে ডাক্তারি, শিক্ষকতা, নার্সিং, ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি কাজের সামাজিক স্বীকৃতি রয়েছে। এজন্য এগুলাে পেশা হিসেবে বিবেচিত। সুতরাং সামাজিক স্বীকৃতি পেশার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
গ। রীমা জীবিকা নির্বাহের উপায় হিসেবে কসমেটিকসের ব্যবসা শুরু করেছেন, যা বৃত্তির অন্তর্ভুক্ত।
জীবিকা নির্বাহের জন্য সাধারণত মানুষকে কোনাে না কোনাে কাজ করতে হয়। এ সব কাজকে বৃত্তি ও পেশা এ দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সাধারণত, যেকোনাে জীবিকা অর্জনের উপায়ই বৃত্তির অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ বৃত্তি হলাে জীবনধারণের জন্য করতে হয় এমন যেকোনাে ধরনের অর্থনৈতিক কার্যাবলি ।
উদ্দীপকের রীমার বেছে নেওয়া কাজটির প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে কয়েকটি বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। প্রথমত, কসমেটিকসের ব্যবসার জন্য তাকে তত্ত্বনির্ভর বা প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান অর্জন করতে হয়নি। দ্বিতীয়ত, তার কাজটি এমন যেক্ষেত্রে কোনাে সুনির্দিষ্ট মূল্যবােধ ও নৈতিক মানদণ্ড প্রয়ােজন হয় না। তৃতীয়ত, রীমা তার ব্যবসা স্বাধীনভাবে পরিচালনা করতে পারেন। এক্ষেত্রে তাকে কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। চতুর্থত, রীমার কাজটি জনকল্যাণমূলক নয়, বরং এটি কেবল তার জীবিকা নির্বাহের উপায়। এ সব বৈশিষ্ট্যের আলােকে বলা যায়, রীমা জীবিকা নির্বাহের উপায় হিসেবে বৃত্তিকে বেছে নিয়েছে।
ঘ। রীমা ও সীমার জীবিকা নির্বাহের উপায় দুটি যথাক্রমে বৃত্তি ও পেশা নামে পরিচিত। এ দুয়ের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান।
অনেকেই বৃত্তি ও পেশাকে প্রায় একই অর্থে ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু সমাজকর্মে বৃত্তি বলতে জীবনধারণের জন্য যেকোনাে ধরনের অর্থনৈতিক কাজকে বােঝায়। অন্যদিকে, পেশার মূল দিক হচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যােগ্যতা অর্জন। প্রতিটি পেশারই কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে যা পেশাকে বৃত্তি থেকে আলাদা করে ।
রীমার কাজের জন্য তাকে কোনাে তাত্ত্বিক জ্ঞান অর্জন করতে হয়নি কিন্তু একজন ডাক্তার হওয়ার জন্য সীমাকে প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান অর্জন করতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, এজন্য তাকে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণও নিতে হয়েছে। অথচ ব্যবসা পরিচালনার জন্য রীমাকে আলাদাভাবে কোনাে প্রশিক্ষণ নিতে হয়নি। আবার সীমার পেশার ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র কিছু মূল্যবােধ ও নৈতিক মানদণ্ড রয়েছে, যা রােগী ও কাজের জায়গার প্রতি তার আচার-আচরণ ও সেখানে তার কার্যাবলিকে নিয়ন্ত্রণ করে। সীমার কাজের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলাে, তাকে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়। এক্ষেত্রে তার জবাবদিহিতার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্যদিকে রীমার ব্যবসায় সুনির্দিষ্ট মূল্যবােধ, জবাবদিহিতা প্রভৃতি বৈশিষ্ট্য অনুপস্থিত। এক্ষেত্রে সে তুলনামূলকভাবে অনেক স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। শেষে আরও বলা যায়, সীমার পেশা সমাজে উচ্ছ মর্যাদার এবং এটি জনকল্যাণমূলক। কিন্তু রীমার কাজটি এরকম নয়।
তাই আলােচনার শেষে বলা যায়, রীমা ও সীমার কাজের মধ্যে অর্থাৎ বৃত্তি ও পেশার মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।
প্রশ্ন ৩। নিবেদিতা চৌধুরী তিন বছর নার্সিং কলেজে শিক্ষানবিশ হিসেবে হাতে-কলমে শিক্ষা গ্রহণ করে বর্তমানে সিনিয়র নার্স হিসেবে কর্মরত আছেন রােগীরা তাকে অনেক পছন্দ করে। তাকে বিশ্বাস করে। রােগীদের সেবা করার ক্ষেত্রে তিনি কখন আবেগতাড়িত হন না। তবে বিশেষ কিছু নীতি ও মূল্যবােধ মেনে চলেন। তিনি এই সেবার মাধ্যমেই পরিবারের ভরণ-পােষণ ও জীবিকা নির্বাহ করেন।
ক. বিভারিজ রিপাের্ট কত সালে পেশ করা হয়?
খ. শিল্পবিপ্লব বলতে কী বােঝায়?
গ. উল্লিখিত নিবেদিতা চৌধুরীর কাজটি কোন ধরনের অর্থনৈতিক কাজের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে কি এমন কোনাে বৈশিষ্ট্য আছে যার আলােক নিবেদিতার সেবার কাজটিকে শুধু জীবিকা নির্বাহের উপায় বলা যায়? মতামত দাও।
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক। ১৯৪২ সালে বিভারিজ রিপাের্ট পেশ করা হয়।
খ। শিল্পবিপ্লব বলতে সে সকল প্রচেষ্টা ও পরিবর্তনের সমষ্টিকে বােঝায় যার প্রেক্ষিতে শিল্প যুগের সূচনা হয়েছিল।
শিল্পবিপ্লব মূলত শিল্প এবং বিপ্লব – এ দুটি পৃথক শব্দের সমষ্টি। এর দ্বারা শিল্প সংক্রান্ত বিপ্লবকে নির্দেশ করা হয়। অর্থাৎ এর ফলে কায়িক শ্রমনির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তে যন্ত্রনির্ভর উৎপাদন পদ্ধতির আবির্ভাব ঘটে। শিল্পবিপ্লবের সূচনা হয় ইংল্যান্ডে, যা পরবর্তীতে অতি দ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। শিল্পবিপ্লবের মধ্য দিয়েই সারা বিশ্বের কৃষিনির্ভর সামন্ততান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থা শিল্প নির্ভর অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হয়।
গ। উদ্দীপকে উল্লিখিত নিবেদিতা চৌধুরীর কাজ প্রকৃতি, ধরন ও বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় পেশার অন্তর্ভুক্ত।
জীবিকা নির্বাহের জন্য নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য, দক্ষতা, নৈপুণ্য, তত্ত্বনির্ভর সুশৃঙ্খল জ্ঞান, মূল্যবােধ ও নৈতিকতা এবং ব্যবহারিক জ্ঞানভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে পেশা বলা হয়। এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার অর্জিত জ্ঞানকে স্বাধীনভাবে প্রয়ােগ করে জীবিকা অর্জন করতে পারে। নিবেদিতা চৌধুরীর কাজটিও এ ধরনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। নিবেদিতা চৌধুরী একজন সিনিয়র নার্স হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য তাকে পড়াশােনার মাধ্যমে তাত্ত্বিক জ্ঞান অর্জন করতে হয়েছে। তিনি তিন বছর নার্সিং কলেজে শিক্ষানবিস হিসেবে হাতেকলমে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। এভাবে তিনি তার কাজের জন্য দক্ষতা ও নৈপুণ্য অর্জন করেছেন। তাছাড়া তিনি রােগীদের সেবা করার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু নীতি ও মূল্যবােধ মেনে চলেন। এই নীতি ও মূল্যবােধসমূহ তার কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট । তিনি কখনােই আবেগতাড়িত হয়ে কাজ করেন না।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, পরিবারের ভরণপােষণ এবং জীবিকা নির্বাহে নিবেদিতা চৌধুরী যে অর্থনৈতিক কাজটি বেছে নিয়েছেন সেটিতে পেশার সকল মৌলিক বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান। তাই এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, তার কাজটি জীবিকা নির্বাহের বিশেষ পন্থা পেশাকেই ইঙ্গিত করে ।
ঘ। উদ্দীপকে উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহের আলােকে নিবেদিতার সেবার কাজটিকে শুধু জীবিকা নির্বাহের উপায় বলা যাবে না।
জীবিকা নির্বাহের জন্য মানুষ যে সকল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে সেগুলােকে বৃত্তি ও পেশা এ দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। বৃত্তি বলতে জীবনধারণের জন্য যেকোনাে ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বােঝায়।
কিন্তু যখন কোনাে বৃত্তির সাথে প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবােধ, জবাবদিহিতা প্রভৃতি যুক্ত হয় তখন তা পেশা হিসেবে বিবেচিত হয়। নিবেদিতার কাজটিও পেশার অন্তর্ভুক্ত।
নিবেদিতা রােগীদের সেবা প্রদানের কাজে একজন সিনিয়র নার্স হিসেবে কর্মরত আছেন। এই কাজের মাধ্যমেই তিনি তার পরিবারের ভরণপােষণ করেন। এ দিকটি বিবেচনায় তার কাজটিকে বৃত্তি বলা যায় । কিন্তু তার কাজটি কেবল জীবিকা নির্বাহের উপায় হিসেবেই সীমাবদ্ধ নয়। কারণ তার কাজটির জন্য তাকে প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান অর্জন করতে হয়েছে, হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে এবং সুনির্দিষ্ট দক্ষতা অর্জন করতে হয়েছে। তাছাড়া সেবাধর্মী কাজটিতে তিনি সংশ্লিষ্ট মূল্যবােধ ও নৈতিকতা দ্বারা পরিচালিত হন এবং তার কাজের জন্য এক ধরনের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতার বিষয় রয়েছে। এ সকল বৈশিষ্ট্যের কারণে। নিবেদিতার কাজটি কেবল বৃত্তি বা জীবিকা অর্জনের উপায় নয়, বরং পেশা হিসেবে চিহ্নিত হবে। পরিশেষে বলা যায়, নিবেদিতার কাজটি বৃত্তি অপেক্ষা বিস্তৃত এবং তা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পেশার ধারণার সাথেই সাদৃশ্যপূর্ণ।
প্রশ্ন ৪। আবেদিন কাদের একজন পেশাদার সমাজকর্মী । তিনি তার সমস্যাগ্রস্ত ক্লায়েন্টদের সাথে পেশাগত সম্পর্ক স্থাপন করে, সুশৃঙ্খল জ্ঞান ও নীতিমালার ভিত্তিতে, পেশাগত সংগঠনের আওতায় থেকে সেবা প্রদান করে থাকেন।
ক. মূল্যবোেধ কী?
খ. পেশা ও বৃত্তির সম্পর্ক কোথায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত আবেদিন কাদের এর পেশাগত মূল্যবােধগুলাে প্রয়ােজন কেন? ব্যাখ্যা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত আবেদিন কাদের এর- “পেশা হিসেবে সমাজকর্ম কতটা যৌক্তিক”?-উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক। মূল্যবােধ হলাে একটি মানদণ্ড, যা মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে।
খ। পেশা ও বৃত্তি একে অপরের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। পেশা ও বৃত্তি উভয়ই জীবিকা অর্জনের পন্থা। অর্থ উপার্জন তাদের মূল লক্ষ্য পেশা ও বৃত্তি উভয়ই সেবাকাজ।
একজন পেশাজীবী মানুষকে যেমন সেবা দিয়ে থাকেন, তেমনি একজন বৃত্তিজীবীও মানুষকে সেবা দিয়ে থাকেন। পেশা ও বৃত্তি উভয়েরই কাজের প্রকৃতি অনুসারে পরিচিতি হয়। যেমন- আইনজীবী, ডাক্তার, কৃষক, মাঝি ইত্যাদি। সমাজে পেশাজীবীর পাশাপাশি বৃত্তিজবী ব্যক্তিও বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। যেমন—শিক্ষাবিস্তার, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান প্রভৃতি। পেশা ও বৃত্তির জন্য শ্রম অত্যাবশ্যক। পেশার জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রম, আর বৃত্তির জন্য শারীরিক শ্রম দিতে হয়। অনেক সময় পেশার জন্য শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উভয় শ্রমই দিতে হয়।
গ। সমাজকর্ম পেশার কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য এর পেশাগত মূল্যবােধের প্রয়ােজন রয়েছে। প্রতিটি পেশার পেশাগত অনুশীলনে বেশ কিছু মূল্যবােধ অনুসরণ করা হয়। অন্যান্য পেশার মতাে সমাজকর্মেরও কতগুলাে পেশাগত মূল্যবােধ রয়েছে। এগুলাে সমাজকর্ম পেশা এবং সমাজকর্মীর জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও আচার-আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে।
ব্যক্তির মূল্য ও মর্যাদার স্বীকৃতি সমাজকর্ম পেশার অন্যতম মূল্যবােধ। ব্যক্তির অন্তর্নিহিত মূল্য ও মর্যাদার যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করা হলে ব্যক্তির সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটে। যা ব্যক্তির মধ্যে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করে। এর ফলে ব্যক্তি নিজের সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানে সক্ষম হয়ে ওঠে। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার মূল্যবােধটি ব্যক্তিকে তার সমস্যা সমাধান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে সে প্রয়ােজনীয় ক্ষেত্রে নিজের সমস্যাগুলাে নিজেই সুষ্ঠুভাবে মােকাবিলা করতে পারে। সবার জন্য সমান সুযােগ এ মূল্যবােধের আলােকে সমাজকর্ম প্রতিটি মানুষের স্বার্থ এবং সুযােগকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সমাজকর্মে সম্পদের সদ্ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবােধ হিসেবে বিবেচিত। কেননা সমাজকর্ম সর্বদাই নিজস্ব সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্যা মােকাবিলায় বিশ্বাসী।
সমাজকর্ম ব্যক্তির স্বনির্ভরতা অর্জনে বিশ্বাসী। স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমে ব্যক্তি সমাজের কল্যাণে গতিশীল ভূমিকা রাখতে পারে । সমাজকর্ম ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী কারণ ব্যক্তি স্বাধীনতার বিকাশ ঘটলে ব্যক্তির অন্তর্নিহিত মর্যাদার স্বীকৃতি ঘটে। তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি হয়। এর ফলে সে সমাজের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারে। সার্বিক আলােচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, সমাজকর্মের পেশাগত মূল্যবােধগুলাের প্রয়ােজনীয়তা অপরিসীম।
ঘ। পেশার সকল বৈশিষ্ট্য সমাজকর্মে বিদ্যমান। এ কারণে আবেদিন কাদেরের সমাজকর্ম পেশাকে পেশা হিসেবে অভিহিত করা যায়।
সমাজকর্ম একটি সুনির্দিষ্ট মূল্যবােধ নির্দেশিত পেশা। প্রতিটি পেশার মতাে সমাজকর্মেরও কতগুলাে মূল্যবােধ রয়েছে। পেশাগত অনুশীলনের সময় সমাজকর্মীগণ এ সকল মূল্যবােধ যথাযথভাবে মেনে চলেন।
সমাজকর্ম পেশায় রয়েছে বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। এই বিশেষ শিক্ষা অর্জিত হয় বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে। এছাড়া বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়ােগের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। সমাজকর্ম পেশায় রয়েছে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থা সমাজকর্মীর ব্যক্তিগত দায়িত্ববােধ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের গতিশীলতাও বৃদ্ধি পায়। সমাজকর্ম পেশায় পেশাগত সংগঠনের উপস্থিতিও বিদ্যমান। এ ধরনের সংগঠন কর্মীদের মাঝে ইতিবাচক চিন্তা-চেতনার বিকাশ ঘটায়। সমাজকর্ম সমাজের উন্নতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সমাজকর্মীরা সমাজের উন্নয়ন এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে। সমাজকর্ম ব্যক্তির সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতা ও সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ সাধন করে সমাজের সার্বিক কল্যাণ সাধনে নিয়ােজিত। সমাজকর্ম একটি উপার্জনক্ষম পেশা। সমাজকর্মীরা তাদের জ্ঞান, দক্ষতা, নৈপুণ্য ও অভিজ্ঞতার প্রয়ােগ ঘটিয়ে এ পেশাকে বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে। পাশাপাশি তারা নিজেদের জীবিকা নির্বাহের জন্য অর্থনৈতিক কার্যাবলি হিসেবে সমাজকর্মকে পেশা হিসেবে স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করেছে।
সার্বিক আলােচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, পেশার বৈশিষ্ট্যসমূহ সমাজকর্মে বিদ্যমান। এ সকল বৈশিষ্ট্যই সমাজকর্মকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
প্রশ্ন ৫। রুনা ইসলাম একজন পেশাদার সমাজকর্মী। স্বামী পরিত্যক্ত রােশনি সাহায্যের জন্য তার প্রতিষ্ঠানে আসলে তিনি তাকে মর্যাদার সাথে সাদরে গ্রহণ করেন। তিনি রােশনির সমস্যার সমাধানে তাকে একটি হাঁস মুরগির খামার করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু রােশনি তাকে জানায় যে, সে সেলাই-এর কাজ ভালাে জানে। তাই তাকে একটি সেলাই মেশিন কিনে দিলে বেশি ভালাে হবে। রুনা ইসলাম তার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে তাকে একটি সেলাই মেশিন কিনে দেন।
ক. মূল্যবােধের ইংরেজি প্রতিশব্দ কী?
খ. পেশা বলতে কী বােঝায়?
গ. উদ্দীপকে রুনা ইসলামের কাজে সমাজকর্মের কোন কোন মূল্যবােধের প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের উল্লেখিত মূল্যবােধগুলাে সমাজকর্ম পেশার সামগ্রিক মূল্যবােধ সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে কি? বিশ্লেষণ কর।
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক। মূল্যবােধের ইংরেজি প্রতিশব্দ Values।
খ। পেশার আভিধানিক অর্থ জীবিকা বা জীবনধারণের বিশেষ উপায়।
মানবজ্ঞানের কোনো একটি নির্দিষ্ট শাখায় উচ্চমানের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানার্জন করে, সে জ্ঞানকে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে অর্থাৎ জীবনধারণের উপায় হিসেবে বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়ােগ করাকে এককথায় পেশা বলা হয়।
গ। উদ্দীপকে উপস্থাপিত সমাজকর্ম মূল্যবােধসমূহ হলাে- ব্যক্তির মূল্য ও মর্যাদার স্বীকৃতি, আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতা।
প্রতিটি পেশার অনুশীলনে কতিপয় মূল্যবােধ অনুসৃত হয়ে থাকে। সমাজকর্ম পেশার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু মূল্যবোেধ অনুসৃত হয়, যা সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ায় সাফল্য আনে। সমাজকর্মী রুনা ইসলামও এসব মূল্যবােধ অনুসরণের ফলে রােশনির সমস্যা সমাধানে সফল হয়েছেন।
সমাজকর্মী রুনা ইসলাম রােশনির সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে প্রথমেই সাহায্যার্থী হিসেবে তাকে মর্যাদাবান চিন্তা করেছেন এবং আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেছেন। এটি ব্যক্তির মর্যাদা ও মূল্যের স্বীকৃতি মূল্যবােধ নামে পরিচিতি। ব্যক্তির অন্তর্নিহিত মূল্য ও মর্যাদার স্বীকৃতি প্রদান করা হলে তার সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হয় এবং তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস জেগে ওঠে। তাই সাহায্যকারী ও সক্ষমকারী প্রক্রিয়া হিসেবে সমাজকর্ম এ মূল্যবােধটি অনুসরণ করে। এছাড়া রােশনির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার ওপরও গুরুত্ব প্রদান করেছে। আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার ব্যক্তিকে তার স্বকীয়তা ও যােগ্যতা প্রমাণের সুযােগ সৃষ্টি করে দেয়। ব্যক্তিকে আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে হবে এ মূল, অনুসরণ আবশ্যক।
উপরের আলােচনা থেকে বলা যায়, উল্লিখিত মূল্যবােধ অনুসরণের মাধ্যমেই সমাজকর্মী রুনা ইসলাম রােশনির সমস্যা সমাধানে সক্ষম ও সফল হয়েছেন।
ঘ। সমাজকর্ম মূল্যবােধসমূহের মাত্র তিনটি দিক উদ্দীপকে স্থান পাওয়ায় এটি সমাজকর্ম মূল্যবােধসমূহের সামগ্রিকতা ধারণে ব্যর্থ হয়েছে।
সমাজকর্ম একটি সাহায্যকারী পেশা। সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা সমাধান ও উন্নয়নে সাহায্য করাই এর কাজ। সমাজকর্ম অনুশীলনের বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেশ-কাল নিরপেক্ষতা ভেদে এর কিছু স্বতন্ত্র মূল্যবােধ গড়ে উঠেছে। উদ্দীপকে সমাজকর্মী রুনা ইসলামের কাজে উক্ত মূল্যবােধসমূহের তিনটি দিকের প্রতিফলন দেখা যায়।
সমাজকর্মী রুনা ইসলাম রােশনির সমস্যা সমাধানে ব্যক্তির মূল্য ও মর্যাদার স্বীকৃতি, আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা— এই তিনটি মূল্যবােধ পরিপূর্ণভাবে অনুশীলন করেছেন। শুধু এ তিনটিই সমাজকর্মের মূল্যবােধ নয়। সমাজকর্মের আরও অনেক মূল্যবােধ রয়েছে। যেগুলাে সঠিকভাবে অনুসরণ করলে সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়া সাফল্য লাভ করে। এসব মূল্যবােধের মধ্যে রয়েছে- সকলকে সমান সুযােগ দান। অর্থাৎ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সর্বশ্রেণির মানুষকে সাহায্য গ্রহণের সমান সুযােগ প্রদান করা। তাছাড়া সাহায্যার্থীকে স্বনির্ভর করে তােলার মানসিকতা নিয়ে সমাজকর্মী সাহায্য করবেন। ব্যক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তাকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তােলাই হবে সমাজকর্মীর প্রধান কাজ। সমাজকর্মের অন্য একটি মূল্যবােধ হচ্ছে সম্পদের সদ্ব্যবহার করা, অর্থাৎ সাহায্যার্থীর বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
সমাজকর্মী সর্বদাই সাহায্যার্থীকে গােপনীয়তা রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন। তাহলে সাহায্যাথী তার সব ধরনের তথ্য প্রকাশ করতে ভরসা পাবেন। সমাজকর্মী সাহায্যার্থীর মধ্যে সামাজিক দায়িত্ব সৃষ্টি করে কাজ করবেন। পারস্পরিক দায়িত্ববােধ সমাজের উদ্দেশ্য অর্জনকে সফল করে তােলে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবােধ ও সহনশীলতা সমাজকর্মের অপর একটি মূল্যবোধ। এটি না থাকলে সামাজিক বন্ধন শিথিল হয়ে পড়ে। সর্বোপরি একজন সমাজকর্মী তার জ্ঞানের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে সাহায্যার্থীকে সেবা প্রদান করবেন। পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকে সমাজকর্মের উল্লেখিত মূল্যবােধসমূহের কোনাে ইঙ্গিত নেই। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি সমাজকর্মের সামগ্রিক মূল্যবোধ ধারণ করতে সক্ষম হয়নি।