প্রশ্ন ১। ভার্নালাইজেশন কাকে বলে?
উত্তর : শৈত্য প্রদানের মাধ্যমে উদ্ভিদের ফুল ধারণকে ত্বরান্বিত করার প্রক্রিয়াকে ভার্নালাইজেশন বলে।
প্রশ্ন ২। প্রতিবর্তী ক্রিয়া কী?
উত্তর : উদ্দীপনার আকস্মিকতা ও স্বয়ংক্রিয়মপ্রতিক্রিয়াই হলাে প্রতিবর্তী ক্রিয়া ।।
প্রশ্ন ৩। অভিকর্ষ উপলদ্ধি (Georeception) কী?
উত্তর : ভূণমূল বা ভূণকাণ্ডের অগ্রাংশ অভিকর্ষের উদ্দীপনা অনুভব করে কোষীয় উপাদানগুলাে নিচের দিকে স্থানান্তরিত হওয়ার ঘটনাই হলাে অভিকর্ষ উপলদ্ধি।
প্রশ্ন ৪। নিউরেলেমা কী?
উত্তর : কোষদেহ হতে উৎপন্ন লম্বা তন্তু অ্যাক্সনের চারদিকে অবস্থিত পাতলা আবরণটিই হলাে নিউরেলেমা।
প্রশ্ন ৫। অ্যাক্সন কী?
উত্তর : স্নায়ুকলার কোষদেহ থেকে উৎপন্ন বেশ লম্বা শাখাহীন তন্তুটি হলাে অ্যাক্সন।
প্রশ্ন ৬। সিন্যাপস কী?
উত্তর : একটি নিউরনের অক্সিজেনের সাথে দ্বিতীয় একটি নিউরনের ডেনড্রাইট যুক্ত থাকে। এ সংযােগস্থলকে সিন্যাপস বলে।
প্রশ্ন ৭। নিউরন কী?
উত্তর : স্নায়ুতন্ত্রের গাঠনিক একক হচ্ছে নিউরন বা স্নায়ু কোষ।
প্রশ্ন ৮। ফাইটোহরমােন কী?
উত্তর : উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশ, বিভিন্ন অঙ্গ সৃষ্টি ইত্যাদি উদ্ভিদ দেহে উৎপাদিত বিশেষ এক ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থের প্রভাবে হয়ে থাকে, যা সকল কাজকেই নিয়ন্ত্রণ করে। উদ্ভিদের এ জৈব রাসায়নিক পদার্থটিই ফাইটোহরমােন।
প্রশ্ন ৯। চলন কাকে বলে?
উত্তর : যে পদ্ধতিতে প্রাণী নিজ প্রচেষ্টায় সাময়িকভাবে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যায় তাকে চলন বলে।
প্রশ্ন ১০। এপিলেপসি কী?
উত্তর : এপিলেপসি মস্তিষ্কের একটি রােগ যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর খিচুনী বা কাঁপুনি দিতে থাকে।
প্রশ্ন ১১। হরমােন কী?
উত্তর : মানব ও বিভিন্ন প্রাণীর দেহের এক ধরনের বিশেষ নালিবিহীন গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস, যা রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। নালিবিহীন গ্রন্থি নিঃসৃত এ রসই হরমোেন।
প্রশ্ন ১২। এপিলেপসি কী?
উত্তর : এপিলেপসি মস্তিষ্কের একটি রােগ যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর খিচুনী বা কাঁপুনি দিতে থাকে।
প্রশ্ন ১৩। ডােপামিন কী?
উত্তর : স্নায়ুকোষ নিঃসৃত এক প্রকার নির্যাসই হলাে ডােপামিন।
প্রশ্ন ১৪। বায়ােলজিক্যাল ক্লক কী?
উত্তর : উদ্ভিদের আলাে-অন্ধকারের ছন্দই বায়ােলজিক্যাল ক্লক।
প্রশ্ন ১৫। সামগ্রিক চলন কাকে বলে?
উত্তর : উদ্ভিদ দেহের কোনাে অংশ যখন সামগ্রিকভাবে প্রয়ােজনের তাগিদে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে তাকে সামগ্রিক চলন বলে।
প্রশ্ন ১৬। পুস্টলেটেড হরমােন কী?
উত্তর : উদ্ভিদের কিছু হরমােন আছে যাদেরকে আলাদা করা যায়নি এরাই পুস্টলেটেড হরমোন।
প্রশ্ন ১৭। ফেরােমেন কী?
উত্তর : ফেরােমেন হলাে পতঙ্গ কর্তৃক নিঃসৃত হরমােন।
প্রশ্ন ১৮। মেরুরজ্জ্ব কী?
উত্তর : মানবদেহের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের এবং স্নায়ুকলায় নির্মিত যে পৃষ্ঠীয় অংশ মেনিনজেস ও মেরুদণ্ডে সুরক্ষিত অবস্থায় মস্তিষ্কের পেছন থেকে প্রলম্বিত হয়, তাকে মেরুরজ্জ্ব বলে।
প্রশ্ন ১৯। র্যানভিয়ারের পর্ব কী?
উত্তর : র্যানভিয়ার পর্ব হলাে একটি বিচ্ছিন্ন আবরণবিহীন পর্দা যেখানে নিউরিলেমার সাথে অ্যাক্সনের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শ ঘটে।
প্রশ্ন ২০। বীজের সুপ্তাবস্থায় ভঙ্গ করা এবং অঙ্কুরােদগমে সাহায্য করে কোন হরমােনটি?
উত্তর : জিবেরেলিন নামক ফাইটো হরমােনটি বীজের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করা এবং অঙ্কুরােদগমে সাহায্য করে।
প্রশ্ন ২১। ফল পাকাতে সাহায্যকারী হরমােনটির নাম কী?
উত্তর : ইথিলিন নামক হরমােনটি ফল পাকাতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন ২২। বীজ রােপণের পূর্বে কত ডিগ্রি উষ্ণতা প্রয়ােগে উদ্ভিদে স্বাভাবিক পুষ্প প্রস্ফুটন ঘটে?
উত্তর : বীজ রােপণের পূর্বে ২ – ৫° ডিগ্রি সে. উষ্ণতা প্রয়ােগে উদ্ভিদে স্বাভাবিক পুষ্প প্রস্ফুটন ঘটে।
প্রশ্ন ২৩। এককোষী বা আদিকোষী উদ্ভিদের জননকোষ কোনটির সাহায্যে পানিতে সাঁতার কাটে?
উত্তর : এককোষী বা আদিকোষী উদ্ভিদের জনন কোষ ফ্লাজেলার সাহায্যে পানিতে সাঁতার কাটে ।
প্রশ্ন ২৪। আয়ােডিনের অভাবে কী হয়?
উত্তর : আয়ােডিনের অভাবে থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যায়।
প্রশ্ন ২৫। গ্লুকোসিয়া কী?
উত্তর : মূত্রের সাথে গ্লুকোজের বের হওয়াকে গ্লকোসিয়া বলা হয়।
প্রশ্ন ২৬। মস্তিষ্ক কী?
উত্তর : সুষুম্নাকাণ্ডের শীর্ষে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের যে স্ফীত অংশ করটির মধ্যে অবস্থান করে, তাই মস্তিষ্ক ।
প্রশ্ন ২৭। কখন এপিলেপসি রােগের ব্যাপকতা বেশি দেখা যায়?
উত্তর : যে কোনাে বয়সে হতে পারে, তবে ৫ থেকে ২০ বছর বয়সে এই রােগের ব্যাপকতা বেশি দেখা যায়।
প্রশ্ন ২৮। প্যারালাইসিস কী?
উত্তর : শরীরের কোনাে অংশের মাংসপেশির কার্যাবলি নষ্ট হওয়াকে প্যারালাইসিস বলে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন ১। স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র বলতে কি বুঝায়?
উত্তর : যে তন্ত্রের কার্যকারিতার উপর মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জ্বর কোনাে প্রভাব না থাকায় এরা স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে আপন কর্তব্য সম্পাদন করে তাদেরকে স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র বলে। যেমন : হৃৎপিণ্ড, অন্ত্র, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয় ইত্যাদি তন্ত্রগুলাে স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত হয়।
প্রশ্ন ৩। স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহনে সিন্যাপসের ভূমিকা লেখ ।
উত্তর : পরপর দুটি নিউরনের প্রথমটির অ্যাক্সন ও পরেরটির ডেনড্রাইটের মধ্যে যে স্নায়ুসন্ধি গঠিত হয় তাকে সিন্যাপস বলে ।
সিন্যাপস এর মধ্য দিয়েই স্নায়ু উদ্দীপনা একটি নিউরন থেকে পরবর্তী নিউরনে পরিবাহিত হয়। স্নায়ুটিস্যু উদ্দীপনা গ্রহণ করে এবং সেখান থেকে মস্তিষ্কে পরিবাহিত হয় এবং মস্তিষ্ক তাতে সাড়া দেয়। উচ্চতর প্রাণীতে স্নায়ু টিস্যু স্মৃতি সংরক্ষণ করা সহ বিভিন্ন অঙ্গের কাজ নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।
প্রশ্ন ৪। অনিষ্টকারী পােকা দমনে ফেরোমন-এর ব্যবহার ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ফেরােমন পতঙ্গ নিঃসৃত এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ। কোনাে পতঙ্গ বাতাসে ফেরােমন নিঃসৃত করলে ২-৪ কিলােমিটার দূর থেকে তার সঙ্গীরা আকৃষ্ট হয়। তাই ফেরােমন ছিটিয়ে অনিষ্টকারী পােকা দমন করা হয়।
প্রশ্ন ৫। ফটোট্রপিজম বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : ফটোট্রপিজম হলাে উদ্ভিদের এক ধরনের বক্র চলন। উদ্ভিদের কান্ড ও শাখা-প্রশাখার সব সময় আলাের দিকে চলন ঘটে এবং মূলের চলন সবসময় আলাের বিপরীত দিকে হয়। কাণ্ডের আলাের দিকে চলনকে পজিটিভ ফটোট্রপিজম এবং মূলের আলাের বিপরীত দিকে চলনকে নেগেটিভ ফটোট্রপিজম বলে।
প্রশ্ন ৬। নালীবিহীন গ্রন্থি বলতে কী বোেঝায়?
উত্তর : মানবদেহের যে সকল গ্রন্থি থেকে হরমােন নিঃসৃত হয় তাদেরকে নালিবিহীন গ্রন্থি বলে। নালীবিহীন গ্রন্থি নানা ধরনের হয়ে থাকে। নালীবিহীন গ্রন্থি একে অপরকে নিয়ন্ত্রণ করে। আবার ন্মলীবিহীন গ্রন্থির কার্যকলাপ স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
প্রশ্ন ৭। প্রতিবর্তী ক্রিয়া বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলতে উদ্দীপনার আকস্মিকতা ও স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়াকে বুঝায়। হঠাৎ করে আঙ্গুলে সুচ ফুটলে অথবা হাতে গরম কিছু পড়লে আমরা অতিদ্রুত হাতটি উদ্দীপনার স্থান থেকে সরিয়ে নেই। এটি প্রতিবর্তী ক্রিয়ার ফল। প্রতিবর্তী ক্রিয়া মূলত সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
প্রশ্ন ৮। পিটুইটারি গ্রন্থিকে প্রধান গ্রন্থি বলা হয় কেন?
উত্তর : পিটুইটারি গ্রন্থি মানবদেহের হরমােন উৎপাদনকারী প্রধান গ্রন্থি। পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমােন সংখ্যায় যেমন বেশি, অপরদিকে অন্যান্য গ্রশ্মির উপর এসব হরমােনের প্রভাবও বেশি। তাই এ গ্রন্থিকে প্রধান গ্রশ্মি বলা হয় ।
প্রশ্ন ৯। ফটোপিরিওডিজমের ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর : দিন ও রাত্রিকালের তুলনামূলক দৈর্ঘ্যের প্রতি কোনাে উদ্ভিদের সাড়া দেওয়ার প্রবণতাকে ফটোপিরিওডিজম বলে। অন্যভাবে বলা যায়, উদ্ভিদের পুস্পধারণের উপর দিবালােকের দৈর্ঘ্যের প্রভাবকে ফটোপিরিয়ডিজম বলে।
প্রশ্ন ১০। আইলেটস অফ ল্যাংগারহ্যানস বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : আইলেটস অফ ল্যাংগারহ্যানস বলতে যা অগ্ন্যাশয়ের মাঝে অবস্থান করে শর্করার বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে এবং এর নালিহীন কোষগুলাে ইনসুলিন ও গ্লকাগন নিঃসরণ করে এবং রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রশ্ন ১১। প্রতিবর্তী ক্রিয়াকে আমরা কেন নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না?
উত্তর : যেসব উদ্দীপনার প্রতিক্রিয়া মস্তিষ্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত না হয়ে সুষুম্না কান্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তাকে প্রতিবর্তী ক্রিয়া বলে। মস্তিষ্ক স্নায়ুতন্ত্রের পরিচালক । অর্থাৎ মস্তিষ্ক দ্বারা আমরা বিভিন্ন কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করি । কিন্তু যেহেতু প্রতিবর্তী ক্রিয়া মস্তিষ্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না, তাই আমরা ইচ্ছা করলে একে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না ।
প্রশ্ন ১২। পিঁপড়াদের এক সারিতে চলাচল করতে দেখা যায় কেন?
উত্তর : সমন্বয় সাধনে নানা প্রাণী হরমােন ব্যবহার করে। কোনাে পিঁপড়া খাদ্যের খোঁজ পেলে খাদ্য উৎস থেকে বাসায় আসার পথে এক ধরনের হরমােন নিঃসৃত করে, যাকে ফেরােমন বলে । এর উপর নির্ভর করে অন্য পিপড়াগুলাের খাদ্য উৎসে যায় এবং খাদ্য সংগ্রহ করে বাসায় ফিরে আসে। এ কারণে পিপড়াদের এক সারিতে চলাচল করতে দেখা যায়।
প্রশ্ন ১৩। নিউরন বিভাজিত হয়না কেন?
উত্তর : নিউরন স্নায়ুতন্ত্রের গাঠনিক একক। কোষদেহ, ডেনড্রাইট এবং অ্যাক্সনের সমন্বয়ে নিউরন গঠিত। কোষের সাইটোপ্লাজমে মাইটোকন্ড্রিয়া, গলজি বডি, রাইবােসােম, আন্তঃপ্লাজমীয় জালিকা ইত্যাদি অঙ্গাণু থাকে। তবে নিউরনের সাইটোপ্লাজমে কোনাে সক্রিয় সেন্ট্রিওল থাকে না। তাই নিউরন বিভাজিত হয় না ।
প্রশ্ন ১৪। লেটুসকে কেন বড়দিনের উদ্ভিদ বলা হয়?
উত্তর : লেটুস জাতীয় উদ্ভিদের পুম্পায়নের জন্য দৈনিক গড়ে ১২-১৬ ঘন্টা আলাে প্রয়ােজন। যা বড় দিনের উদ্ভিদের বৈশিষ্ট। তাই লেটুসকে বড় দিনের উদ্ভিদ বলা হয়।
প্রশ্ন ১৫। অক্সিন উদ্ভিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : অক্সিন প্রয়ােগে শাখা কলমে মূল গজায়, ফলের অকাল ঝরে পড়া রােধ হয়। অক্সিনের প্রভাবে অভিস্রবণ ও শ্বসন ক্রিয়ার হার বাড়ে। বীজহীন ফল উৎপাদন ঘটে অক্সিনের সাহায্যে। তাই অক্সিন উদ্ভিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন ১৬। জিবেরেলিন হরমােনটির কাজ সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : জিবেরেলিন হরমােনটির বীজের সুপ্তাবস্থা কাটাতে এবং অঙ্কুরােদগমে কার্যকারিতা আছে। ফল গঠন ও উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে এই হরমােনটি সাহায্য করে।
প্রশ্ন ১৭। ইথিলিন হরমােনটির উদ্ভিদের জন্য উপকারী কেন?
উত্তর : ইথিলিন হরমােনটি বীজ ও মুকুলের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করে চারাগাছকে লম্বা করে। গাছের বৃদ্ধি, কাণ্ডের বৃদ্ধি, ফুল ও ফল সৃষ্টির সূচনা করে। ফল পাকাতে এই হরমােনটি সাহায্য করে। তাই ইথিলিন উদ্ভিদের জন্য উপকারী একটি হরমােন।
প্রশ্ন ১৮। জনন অঙ্গ গ্রন্থি প্রাণীর জন্য অত্যাবশ্যকীয় কেন?
উত্তর : জনন অঙ্গ গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমােন প্রাণীর জনন অঙ্গের বৃদ্ধি, জনন চক্র ও যৌন আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। তাই প্রাণীর বংশ বিস্তারের জন্য জনন অঙ্গ গ্রন্থি অত্যাবশ্যকীয়।
প্রশ্ন ১৯। স্ট্রোকের চিকিৎসা সম্পর্কে লিখ ।
উত্তর : স্ট্রোকের রােগীর জরুরি চিকিৎসা প্রয়ােজন। দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করলে রােগীর জীবন ও বিকলাঙ্গতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। স্ট্রোকের লক্ষণ দেখার দুই ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা নিলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ২০। ধূমপানে বিষপান’ কথাটি বলা হয় কেন?
উত্তর : ধূমপান করলে শরীরে নিকোটিনের মাত্রা বেড়ে যায়। নিকোটিন একটি মারাত্মক বিষ। নিকোটিনের প্রভাবে মানুষের মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই বলা হয় ধূমপানে বিষপান।
প্রশ্ন ২১। সাইটোকাইনিন হরমােনটির কাজ সম্পর্কে লিখ।
উত্তর : সাইটোকাইনিন হরমােনটি উদ্ভিদের কোষবৃদ্ধি, অজোর বিকাশ সাধন, বীজ ও অঙ্গের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করা ও বার্ধক্য বিলম্বিতকরণে ভূমিকা পালন করে।
পাঠ্যবইয়ের অনুশীলনীর সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১। ফাইটোহরমোন কী?
উত্তর : উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশ, বিভিন্ন অঙ্গ সৃষ্টি ইত্যাদি উদ্ভিদ দেহে উৎপাদিত বিশেষ এক ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থের প্রভাবে হয়ে থাকে। এ পদার্থ উদ্ভিদের সকল কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। এ পদার্থকে হরমােন বা প্রাণরস বলে। উদ্ভিদের এ জৈব রাসায়নিক পদার্থটিকে ফাইটোহরমােন বলে।
প্রশ্ন ২। অভিকর্ষ উপলদ্ধি কী?
উত্তর : উদ্ভিদের ভূণমূল বা ভূণকাণ্ডের অগ্নাংশ অভিকর্ষের উদ্দীপনা অনুভব করতে পারে। একে অভিকর্ষ উপলদ্ধি বলে। অভিকর্ষের ফলে কোষের উপাদানগুলাে নিচের দিকে স্থানান্তরিত হয়।
প্রশ্ন ৩। স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে?
উত্তর : যে তন্ত্রের সাহায্যে প্রাণী উত্তেজনায় সাড়া দিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে এবং দেহের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে পারস্পরিক সংযােগ সাধন করে এবং তাদের কাজে সুসংবদ্ধতা আনয়ন ও শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে তাকেই স্নায়ুতন্ত্র বলে ।
প্রশ্ন ৪। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র কী নিয়ে গঠিত?
উত্তর : কেন্দ্রিয় স্নায়ুতন্ত্র মস্তিষ্ক ও সুষুস্মাকাণ্ড নিয়ে গঠিত। ভূণের এক্টোডামের কুঞ্জনের মাধ্যমে স্নায়ুতন্ত্র বিকাশ লাভ করে। নটকর্ডের ঠিক উপরে স্নায়ুতন্ত্রের অবস্থান। এক্টোডার্ম ভিতরের দিকে ভাজ খেয়ে একটি ফাপা নিউরাল টিউব দেহের দৈর্ঘ্য বরাবর বিস্তার লাভ করে। এ নিউরাল টিউব ভূণীয় বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে পৃথক হয়ে অগ্রভাগে একটি স্ফীতাকার মস্তিষ্ক এবং একটি লম্বা দণ্ডকার সুষুম্নাকাণ্ড গঠন করে।
প্রশ্ন ৫। প্যারালাইসিস কেন হয়?
উত্তর : শরীরের কোনাে অংশের মাংসপেশির কার্যাবলি নষ্ট হওয়াকে প্যারালাইসিস বলে। প্যারালাইসিস বা ঘাড়ের সুষুম্নাকাণ্ড আঘাত বা দুর্ঘটনাজনিত কারণে প্যারালাইসিস হতে পারে। স্নায়ু রােগ, সুষুম্মা দণ্ডের ক্ষয় ও রােগ প্যারালাইসিসের কারণ হতে পারে।
প্রশ্ন ১। উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে হরমােনের ভূমিকা আলােচনা কর।
উত্তর : উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় কাজে হরমােন কাজ করে থাকে। নিচে উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে বিভিন্ন হরমােনের ভূমিকা আলােচনা করা হলাে :
অক্সিন :
১. অক্সিন বৃদ্ধি বর্ধন ফাইটোহরমােন যা কোষের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে। ফলে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ঘটে।
২. অক্সিন উদ্ভিদের শীর্ষ প্রকটতার সৃষ্টি করে ।
৩. অক্সিন উদ্ভিদের মূল সৃষ্টির সূচনা করে।
৪. অক্সিনের প্রভাবে উদ্ভিদের অভিস্রবণ ও শ্বসন ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি পায়।
৫. অক্সিন বীজহীন ফল উৎপাদনে সাহায্য করে ।
জিবেরেলিন :
১.জিবেরেলিন বিভিন্ন ঘনত্বের অক্সিনের সাথে যুক্ত হয়ে উদ্ভিদের কোষ বিভাজনে উৎসাহিত করে।
২. জিবেরেলিন উদ্ভিদের কোষের বৃদ্ধি ও বিকাশ সাধন করে ।
৩. জিবেরেলিন উদ্ভিদের বীজ ও অঙ্গের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করে।
সাইটোকাইনিন :
১. এ হরমােন বিভিন্ন ঘনত্বের অক্সিনের সাথে যুক্ত হয়ে কোন বিভাজনকে উদ্দীপিত করে ।
২৷ কোষ বৃদ্ধি, অল্পের বিকাশ সাধন, বার্ধক্য বিলম্বিত করা প্রভৃতি কাজ সাইটোকাইনিন হরমােনটি করে থাকে।
ইথিলিন :
১. ইথিলিন ফল পাকাতে সাহায্য করে।
২. ইথিলিন চারাগাছকে অত্যধিক লম্বা করে, চারাগাছের বৃদ্ধি ঘটায়, ফুল ও ফল সৃষ্টির সূচনা করে।
৩. ইথিলিন পাতা, ফুল ও ফলের ঝরে পড়া ত্বরান্বিত করে।
উপরােক্ত আলােচনা থেকে আমরা উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ধরনের হরমােনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে পারি ।
প্রশ্ন ২। থাইরয়েড সমস্যার লক্ষণগুলাে লেখ।
উত্তর : মানবদেহের থাইরয়েড গ্রন্থি থাইরক্সিন নামক হরমোন নিঃসরণ করে। থাইরক্সিন নামক হরমােনের নিঃসরণের ব্যাঘাত ঘটলে থাইরয়েড গ্রন্থিতে যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তাই হলাে থাইরয়েড সমস্যা। নিচে থাইরয়েড সমস্যার লক্ষণগুলাে বর্ণনা করা হলােঃ
১. থাইরয়েড সমস্যা হলে চোখ বের হয়ে আসা রােগটি হয়। এক্ষেত্রে চোখের স্বাভাবিক অবস্থান থেকে চোখটি বের হয়ে আসে অর্থাৎ চোখটি বড় হয়ে যায়।
২. থাইরয়েড সমস্যার লক্ষণ হলাে গলা ফুলে যাওয়া। থাইরয়েড সমস্যায় গলা ফুলে যায় অর্থাৎ গলগণ্ড হয়। গলা ফুলে যাওয়ায় রােগীর খাদ্যগ্রহণ করতে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
৩. থাইরয়েড সমস্যার ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়। শিশু হাবাগােবা হয়।
৪. থাইরয়েড সমস্যার ফলে গায়ের চামড়া খসখসে হয়। চেহারা গােলাকার হয়। মুখমণ্ডল গােবেচারা আকারের হয়।
৫, থাইরয়েড সমস্যা হলে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। শিশুদের বুদ্ধি ও মেধার বিকাশ কমে যায়।