শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব গল্পের গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান ও অনুধাবন মূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ১। শিক্ষার শ্রেষ্ঠ দিক কোনটি?

উত্তর : শিক্ষার শ্রেষ্ঠ দিক অপ্রয়ােজনের দিক।

প্রশ্ন ২। ‘ক্ষুৎপিপাসা’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : ‘ক্ষুৎপিপাসা’ শব্দের অর্থ হলাে— ক্ষুধা ও তৃষ্ণা 

প্রশ্ন ৩। মােতাহের হােসেন চৌধুরীর অনুবাদ গ্রন্থ দুটির নাম লেখ?

উত্তর : মােতাহের হােসেন চৌধুরীর অনুবাদ গ্রন্থ দুটির নাম হলাে ‘সভ্যতা’ ও ‘সুখ’।

প্রশ্ন ৪। শিক্ষার আসল কাজ কী?

উত্তর : শিক্ষার আসল কাজ মূল্যবােধ সৃষ্টি করা।

প্রশ্ন ৫। ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?

উত্তর : ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধটি মােতাহের হােসেন চৌধুরীর ‘সংস্কৃতি কথা’ গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।

প্রশ্ন ৬। ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব ‘ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?

উত্তর : ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধটি সংস্কৃতি কথা’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। 

প্রশ্ন ৭। ‘লেফাফাদুরস্তি’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : ‘লেফাফাদুরন্তি’ শব্দের অর্থ বাইরের দিক ত্রুটিহীন কিন্তু  ভিতরে প্রতারণা।  

প্রশ্ন ৮। মােতাহের হােসেন চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস কোন গ্রামে?

উত্তর : মােতাহের হােসেন চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস কাঞ্চনপুর গ্রামে।

প্রশ্ন ৯। কোনটি আমাদের মানবসত্তার ঘরে নিয়ে যেতে পারে? 

উত্তর : শিক্ষা আমাদের মানবসত্তার ঘরে নিয়ে যেতে পারে।

প্রশ্ন ১০। শিক্ষার দুটি দিক কী কী?

উত্তর : শিক্ষার দুটি দিকের একটি হলাে প্রয়ােজনের দিক, আর অপরটি হলাে অপ্রয়ােজনীয় দিক।

প্রশ্ন ১১। শিক্ষার কোন দিক জীবনকে উপভােগ করতে শেখায়?

উত্তর : শিক্ষার অপ্রয়ােজনীয় দিকটি মানবজীবনকে উপভােগ করতে শেখায়।

প্রশ্ন ১২। ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের লেখকের নাম কী?

উত্তর : মােতাহের হােসেন চৌধুরী।

প্রশ্ন ১৩। মানবজীবনে সর্বপ্রথম প্রয়ােজন কোনটি?

উত্তর : মানবজীবনে সর্বপ্রথম প্রয়ােজন হলাে শিক্ষা ।

প্রশ্ন ১৪। জীবসত্তা ও মানবসত্তা সম্পর্কে কোন প্রবন্ধে আলােচনা করা হয়েছে?

উত্তর : ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে জীবসত্তা ও মানবসত্তা নিয়ে আলােচনা করা হয়েছে।

প্রশ্ন ১৫। শিক্ষা কী?

উত্তর : শিক্ষা হচ্ছে জীবসত্তার ঘর থেকে মানবসত্তার ঘরে ওঠার মই।

প্রশ্ন ১৬ শিক্ষা মানুষের কোন দিকটিকে জাগ্রত করে?

উত্তর : শিক্ষা মানুষের সচেতনতা ও মূল্যবােধের দিকটি জাগ্রত করে।

প্রশ্ন ১৭। কোন চেষ্টাকে লেখক অভিনন্দন জানিয়েছেন?

উত্তর : অন্নচিন্তার নিগড় থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টাকে কিন্তু লেখক অভিনন্দন জানিয়েছেন।

প্রশ্ন ১৮। মনুষ্যত্বের আহ্বান কখন মানুষের মর্মে গিয়ে পৌছাতে দেরি হয়?

উত্তর : যখন প্রাণিত্বের বাঁধন থেকে মুক্তি পায় না তখন মনুষ্যত্বের আহ্বান মানুষের মর্মে গিয়ে পৌঁছাতে দেরি হয়।

প্রশ্ন ১৯। আত্মার পতন হয় কিসে?

উত্তর : আত্মার পতন হয় আলস্য ও অসাধুতায়।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। কখন হাঁটার আনন্দ উপভােগ করা যায় না? 

উত্তর : ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধের লেখকের মতে- পায়ের কাঁটার  দিকে বারবার নজর দিতে হলে হাঁটার আনন্দ উপভােগ করা যায় না।

“শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব” প্রবন্ধে লেখক মানবজীবনকে একটি দোতলা ঘরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। জীবসত্তা সেই ঘরের নিচতলা আর মানবসত্তা উপরের তলা। শিক্ষা মানুষকে ক্ষুৎপিপাসা থেকে মুক্তি দেয় এবং আত্মার অকৃত্রিম আনন্দের স্বাদ দেওয়ার জন্য মানবসত্তার ঘরে নিয়ে যায়। সাধারণত অর্থচিন্তায় মানুষ সবসময় ব্যস্ত থাকে। আর অর্থচিন্তায় তাড়িত মানুষ প্রকৃত মনুষ্যত্ব অর্জন করতে পারে। ফলে মানুষ তার জীবনের প্রকৃত আনন্দ উপভােগ করতে পারে না। এই বিষয়টি বােঝাতেই লেখক হাঁটার আনন্দ উপভােগের ক্ষেত্রে পায়ের কাঁটার দিকে বারবার তাকাতে নিষেধ করেছেন।

প্রশ্ন ২। শিক্ষার প্রয়ােজনীয় ও অপ্রয়ােজনীয় দিকগুলাে বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর : ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে শিক্ষার প্রয়ােজনীয় ও অপ্রয়ােজনীয় উভয় দিকের কথা বলা হয়েছে। 

শিক্ষার প্রয়ােজনীয় দিককে লেখক কম গুরুত্ব দিয়েছেন, অপ্রয়ােজনীয় দিককে শ্রেষ্ঠ দিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মানুষ জৈবিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সব সময় অর্থচিন্তার নিগড়ে বন্দি থাকে। মনে করে উচ্চশিক্ষায় পাস দিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে জৈবিক চাহিদা মেটানােই শিক্ষাগ্রহণের মূল উদ্দেশ্য। এখানে ব্যক্তি শিক্ষার সুফল ব্যক্তিগতভাবে ভােগ করে। এই বিষয়টি শিক্ষার প্রয়ােজনীয় দিক। অন্যদিকে শিক্ষার মাধ্যমে চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্ক্ষা এবং মানবসত্তাকে বিকশিত করাই হলাে শিক্ষার অপ্রয়ােজনীয় দিক। এই  অপ্রয়ােজনীয় দিকটি মানুষের মূল্যবােধ সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন ৩। ‘প্রাণিত্বের বাঁধন থেকে মুক্তি’ বলতে কী বােঝ?

উত্তর : ‘প্রাণিত্বের বাঁধন থেকে মুক্তি’ বলতে লেখক অর্থচিন্তা তথা জীবসত্তার বাঁধন থেকে মুক্তিকে বুঝিয়েছেন।

‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধ অনুসারে শিক্ষার প্রধান কাজ দুটি। মানুষের জীবসত্তার প্রয়ােজনে অন্ন-বস্ত্রের চিন্তা থেকে মুক্তি এবং মূল্যবােধ তৈরির মাধ্যমে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানাে। যথার্থ শিক্ষার ফলে মনুষ্যত্বের স্বাদ পেলে মানুষের অন্ন-বস্ত্র সমস্যার সমাধান সহজ হয়ে ওঠে। অর্থচিন্তায় ব্যস্ত মানুষ প্রকৃত মনুষ্যত্ব অর্জনে সক্ষম নয়। এ চিন্তায় মানুষ জীবনকে উপভােগ করতে ব্যর্থ হয়।

প্রশ্ন ৪।। জীবসত্তার উন্নয়ন ছাড়া মানবসত্তার উন্নয়ন হয় না কেন? 

উত্তর : জীবসত্তার উন্নয়ন ছাড়া মানবসত্তার উন্নয়ন হয় না। কারণ ক্ষুৎপিপাসায় কাতর মানুষকে তৃপ্ত রাখতে না পারলে আত্মার অমৃত উপলব্ধি করা যায় না।

লেখক মানুষের দুটি সত্তার কথা বলেছেন। একটি জীবসত্তা, যার প্রয়ােজন অন্ন-বস্ত্রের চিন্তা থেকে মুক্তি লাভ করা। আর অন্যটি মানবসত্তা, যার প্রয়ােজন শিক্ষার মাধ্যমে মনুষ্যত্বের বিকাশ সাধন করা। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ অর্থচিন্তার নিগড়ে বন্দি থাকে। ফলে মনুষ্যত্বের বিকাশ সাধন সম্ভব হয় না। মানবসত্তার উন্নয়ন ঘটে না। তাই মানুষের অন্ন-বস্ত্রের চিন্তার সমাধান হলে অর্থাৎ জীবসত্তার উন্নয়ন ঘটলে মানবসত্তারও উন্নয়ন ঘটবে। তাই বলা হয়েছে, জীবসত্তার উন্নয়ন ছাড়া মানবসত্তার উন্নয়ন হয় না। 

প্রশ্ন ৫। শিক্ষাকে মইয়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কেন?

উত্তর : উত্তরণের মাধ্যম হিসেবে শিক্ষাকে মইয়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে মােতাহের হােসেন চৌধুরী মানবজীবনকে একটি দোতলা ঘরের সঙ্গে তুলনা করেছেন। জীবসত্তা হচ্ছে তার নিচতলা আর মানবসত্তা হচ্ছে তার উপরের তলা। আর মানবজীবনকে এই জীবসত্তা থেকে মানবসত্তায় উত্তীর্ণ করার মাধ্যম হচ্ছে শিক্ষা। এ কারণেই তিনি শিক্ষাকে মইয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

প্রশ্ন ৬। মানুষের জীবনকে একটি দোতলা ঘরের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কেন?

উত্তর : মানবজীবনের আছে দুটি সত্তা— একটি তার জীবসত্তা, অন্যটি মানবসত্তা বা মনুষ্যত্ব।

মানবজীবনকে যদি একটি দোতলা ঘরের সাথে তুলনা করা যায় তাহলে জীবসত্তার অস্তিত্ব হচ্ছে নিচের তলায় আর মানবসত্তা বা মনুষ্যত্বের অস্তিত্ব হচ্ছে সেই ঘরের উপরের তলায়। জীবসত্তার ঘর থেকে মানবসত্তর ঘরে উত্তরণের উপায় হচ্ছে শিক্ষা। জীবসত্তা মানুষের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখে। আর মানবসত্তা মানুষের মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করে। এ বিষয়টিকে স্পষ্ট করতেই লেখক মানবজীবনকে দোতলা ঘরের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

প্রশ্ন ৭। মুক্তির জন্য কী কী উপায় অবলম্বন করতে হবে?

উত্তর : মানবমুক্তির নিমিত্তে দুটি উপায় অবলম্বন করা অতীব জরুরি। যেমন প্রথমত অন্নবস্ত্রের চিন্তা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে হবে।

দ্বিতীয়ত শিক্ষাদীক্ষা দ্বারা মানুষকে মনুষ্যত্বের স্বাদ পাওয়ার সাধনা করতে হবে। চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা ও আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলে মানবমুক্তি অর্জিত হয় না। উপযুক্ত দুটি উপায় অবলম্বন ছাড়া মানবমুক্তি কখনই সম্ভব নয়।

প্রশ্ন ৭। মানবসত্তা বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?

উত্তর : মানবজীবনের দুটি সন্তা- একটি জীবসত্তা, অপরটি মানবসত্তা।

মানবসত্তা চিন্তাচেতনা, মননশীলতার রণক্ষেত্র। জীবসত্তার অন্ধ শৃঙখলকে উপেক্ষা করে মানুষের চিন্তা, বুদ্ধি, সত্য-সুন্দর ও মননশীলতার সুকুমার বৃত্তিগুলােকে বিকশিত করার মাধ্যমে মানবসত্তার পরিপুষ্টি দান করতে হয়। মানবজীবনের উন্নয়নে এ সত্তার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। 

আরও,

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ সুভা

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ বই পড়া

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ অভাগীর স্বর্গ

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ পল্লিসাহিত্য

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ আম আঁটির ভেঁপু

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ প্রবাস বন্ধু

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব 

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ মমতাদি

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ পয়লা বৈশাখ

▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ একাত্তরের দিনগুলো

Leave a Comment