মংডুর পথে রচনার পাঠের উদ্দেশ্যঃ
রচনাটি পাঠ করে শিক্ষার্থীরা প্রতিবেশী একটি দেশের অর্থনীতি , জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির রুপ সম্পর্কে অবহিত হতে পারবে। ওই দেশ সম্পর্কে তাদের মনে আগ্রহ ও ভালােবাসা সঞ্চারিত হবে।
মংডুর পথে রচনার মূল বক্তব্যঃ
আমাদের পুর্ব দিকের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার । সেই দেশ ভ্রমনের ফলে লেখক যেসব অভিজ্ঞতা লাভ করেন তার কিছু বিবরন এই রচনায় পরিবেশিত হয়েছে।
মিয়ানমারের পশ্চিম সীমান্তের শহর মংডু দিয়ে লেখকের ওই দেশ সফর শুরু হয়েছিল। মংডুর মানুষের পােষাক পরিচ্ছদ, খাদ্যাভ্যাস, ব্যবসায় – বানিজ্য সম্পর্কে একটি ধারনা এই রচনা থেকে পাওয়া যায়।
মংডুতে বসবাসরত বিভিন্ন ধর্মের লােক সম্পর্কেও পরিচয় আছে এতে। সেখানকার মেয়েরা অনেকটা স্বাধীন ভাবে ব্যবসায়-বানিজ্য করে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে অনেক লােক মংডুতে গিয়ে স্থায়িভাবে বসবাস করার এবং রাখাইন সম্প্রদায়ের লােক মংডুতে ও বাংলাদেশের পটুয়াখালীতে বসবাস করার বর্ননা আছে। ফলে লেখক দুটি দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির মিল খোঁজার চেষ্টা করেছেন।
সেখানে দৌলত কাজি ও আলাওলের মতাে কবিরা বাংলায় কাব্য চর্চা করেছেন। একসময় আরাকানে ছিল মুসলমানদের শাসন। মিয়ানমারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রাধান্য থাকলেও মংডুতে উল্লেখযােগ্য সংখ্যক মুসলমানদের বসবাস লক্ষ করেছেন লেখক।
মংডুর পথে রচনার লেখক পরিচিতিঃ
* জন্ম – বিপ্রদাশ বড়ুয়ার জন্ম ১৯৪০ সালের চট্টগ্রামের ইছামতী গ্রামে।
* তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর শিশু একাডেমিতে কর্মরত ছিলেন।
* ছােটগল্প – যুদ্ধজয়ের গল্প, গাঙচিল
* উপন্যাস – মুক্তিযােদ্ধারা।
* প্রবন্ধ – কবিতায় বাকপ্রতিমা,
* নাটক – কুমড়ােলতা ও পাখি
* জীবনী – বিদ্যাসাগর ,পল্লীকবি জসীম উদ্দী৷
* শিশুতােষ গল্প – সুর্য লুঠের গান।
* শিশুতােষ উপন্যাস – রােবট ও ফুল ফোটানাের রহস্য।
মংডুর পথে রচনার গুরুত্বপুর্ন তত্ত্বঃ
* বৌদ্ধভিক্ষুদের জীবিকার প্রধান উৎস – ভিক্ষা
* বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গৈরিক পােশাক হলাে – চীবর।
* বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ভিক্ষার পাত্রের নাম – ছাবাইক।
* চট্টগ্রামের ব্যান্ডেল রােড বহন করছে – পর্তুগীজদের স্মৃতি।
* মংডু আর টেকনাফের মাঝখানে রয়েছে – নাফ নদী।
* পাইক্যার একচেটিয়া চালক – স্থানীয় মুসলমানেরা ।
* আরাকান রাজসভায় সাহিত্যচর্চা করতেন – দৌলত কাজি ও কবি আলাওল।
* একসময় আরাকান স্বাধীন ছিল – মিয়ানমার থেকে।
* মংডুতে রিকশার মতাে তিন চাকার গাড়িকে বলে – পাইক্যা।
* বর্মিরা সবাই পরে – লুঙ্গি।
* লুঙ্গি ,ফুঙ্গি ও প্যাগােডা – এই তিন নিয়ে মিয়ানমার।
* মংডুর নারীরা – চির স্বাধীন ।
* আমাদের দেশের তুলনায় মংডুতে মাছের দাম – পানির সমান।
* লেখক মংডুতে উল্লেখযােগ্য হারে দেখেছেন – মুসলমানদের বসবাস।
* মংডুর পথে রচনায় ধারনা পাওয়া যায় – মংডুর মানুষের পােশাক,খাদ্যাভ্যাস ও ব্যবসা সম্পর্কে।
* মংডু শহর অবস্থিত – মিয়ানমারের পশ্চিম সীমান্তে ।
* নিরবচ্ছিন্ন বলতে বােঝায় – একটানা।
* খ্রিষ্টান ধর্মের প্রচারককে বলা হয় – পাদরি।
* অভিবাসী – স্বদেশ ছেড়ে অন্যদেশে যারা বাস করে তাদের বলা হয়।
* আলাওলের শ্রেষ্ঠ রচনা – পদ্মাবতী।
* মালিকের স্ত্রীকে বলে – মালকিন।
* বৌদ্ধ ধর্মের গুরুকে বলে – মহাথেরাে।
* মিয়ানমারের টাকাকে বলে – চ্যা।
* মিয়ানমারে বসবাসরত বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বলে – ফুঙ্গি।
* বৌদ্ধমন্দির কে বলা হয় – প্যাগােডা।
* অমাবস্যার পর থেকে পুর্ণিমা পর্যন্ত চন্দ্রকলার বাড়ার সময়কে বলে – শুক্লপক্ষ।
* লাল রঙের বৃক্ষের নির্যাস কে বলে – লাক্ষা ।
* মংডুর হােটেলে বিজলি থাকবে না – রাত ৯ টার পর।
* আরাকানের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন রাজধানীর নাম – ম্রাউক – উ।
* টেকনাফ ও মংডুর মাঝখানে – নাফ নদী
* মংডুর পথে রচনাটি – একট ভ্রমন কাহিনী ।
* পাদরি মেস্ট্রো সেবাস্টিন মানরিক মংডুর পথে আসেন – সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে।
* পর্তুগীজরা নিজেদের বসতির জায়গাকে – ব্যান্ডেল বলত।
* ফেনী নদী থেকে আন্দামান সাগরের কাছাকাছি পুরাে বঙ্গোপসাগরের উপকুল ছিল – আরাকান রাজ্যের পরিধি।
* মিয়ানমারের সবাই – লুঙ্গি পরে।
* মিয়ানমারের মেয়েদের পরনে – লুঙ্গি ও ঝলমলে ব্লাউজ জাতীয় জামা বা গেঞ্জি থাকে।
* মংডুর ব্যবসা বানিজ্য প্রায় – মুসলমানদের দখলে।
*রাখাইনদের বসবাস – আরাকান, কক্সবাজার ও পটুয়াখালীতে।
* রয়েল রেস্তোরার বাঙালি মেয়েটির নাম – ঝরনা।
* ঝরণার পুর্বপুরুষের বাড়ি – চট্টগ্রামের রাউজানে।
* চাকমা মারমারা ভর্তা করে – ধানি লংকা পুড়ে নুন ও পেঁয়াজ দিয়ে।
* চাকমারা পােড়া বা সিদ্ধ ধানি লংকা পিষে নেয় – কুইজ্যায় বা হামানদিস্তায়।
* বৃষ্টিভেজা গাছপালার পাতা চকচক করছে – ধাতব নতুন টাকার মতাে।
* পদাউকের ফুল – সােনা রঙের মতাে।
* মিয়ানমারে পদাউক ফুলের নাম – সেন্না।
* মিয়ানমারের একটি নদীর নাম – সুধার ডিয়ার ।
* নদীর ওপারে মুসলিম গ্রামের নাম – সুধার পাড়া।
* মংডুতে বুড়াে আঙুলের সমান চিংড়ির কিলাে – ৪ থেকে ৫ শ চ্যা।
* বর্মী রমণীদের সেলাইবিহীন লুঙ্গির নাম – থামি।
* ভিক্ষুদের পরিধেয় চীবর – সেলাইবিহীন লুঙ্গির মতাে।
* ভিক্ষুরা পরে – ত্রিচীবর ।
* ছাবাইক – লাক্ষা দিয়ে তৈরী হয় ।
* বাংলাদেশে লুঙ্গি প্রবেশ করে – বার্মা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ।
* বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রধান গুরু – মহাথেরাে।