মংডুর পথে রচনার জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

মংডুর পথে রচনার জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন-০১। পাইক্যা’-এর একচেটিয়া চালক কারা ?

উত্তরঃ পাইক্যার একচেটিয়া চালক মংডুর স্থানীয় মুসলমান।

প্রশ্ন-০২। আরাকান রাজ্যের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন রাজধানীর নাম কী

উত্তরঃ আরকান রাজ্যের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন রাজধানীর নাম ম্রাউক-উ।

প্রশ্ন-০৩। কোন গাছের নিচের নুডলসের দোকান রয়েছে ?

উত্তরঃ শিরীষ গাছের নিচে নুডলসের দোকান রয়েছে।

প্রশ্ন-০৪। ‘মহাথেরাে’ শব্দ দ্বারা কী বােঝানাে হয় ?

উত্তরঃ ‘মহাথেরাে’শব্দ দ্বারা বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রধান গুরুকে বােঝানাে হয়।

প্রশ্ন-০৫। দৌলত কাজী কত শতকের কবি ছিলেন ?

উত্তর : দৌলত কাজী সতেরাে শতকের কবি ছিলেন ।

প্রশ্ন-০৬। সব দেশের লােক কাদের চিনতে পারে ?

উত্তরঃ সব দেশের লােক বিদেশিদের চিনতে পারে।

প্রশ্ন-০৭। পর্তুগিজরা নিজেদের বসতির জায়গাকে কী বলত ?

উত্তরঃ পর্তুগিজরা নিজেদের বসতরি জায়গাকে ব্যান্ডেল বলত ।

প্রশ্ন-০৮। রাতে খাওয়ার জন্য ‘মংডুর পথে রচনার লেখক কোথায় গিয়েছিলেন ?

উত্তরঃ রাতে খাওয়ার জন্য মংডুর পথে রচনার লেখক রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন।

প্রশ্ন-০৯। ফুঙ্গি কী ?

উত্তরঃ ফুঙ্গি হলাে বৌদ্ধ ভিক্ষু।

প্রশ্ন-১০। মংডু কোথায় ?
উত্তরঃ মংডু টেকনাফের ওপারে।

প্রশ্ন-১১। বার্মার পশ্চিম সীমান্তের শহর কোনটি ?

উত্তরঃ বার্মার পশ্চিম সীমান্তের শহর মংডু।

প্রশ্ন-১২। চট্টগ্রামের ব্যান্ডেল রােড’ কাদের স্মৃতি বহন করে ?

উত্তরঃ চট্টগ্রামের ব্যান্ডেল রােড’ পর্তুগিজদের স্মৃতি বহন কর।

প্রশ্ন-১৩। দৌলত কাজী’ কোন রাজ্যের রাজসভায় সভাকবি ছিলেন ?

উত্তর : ‘দৌলত কাজী’ আরকান রাজ্যর রাজসভায় সভাকবি ছিলেন।

প্রশ্ন-১৪। মিয়ানমারের সাধারণ পােশাক কী ?

উত্তরঃ মিয়ানমারের সাধারণ পােশাক লুঙ্গি।

প্রশ্ন-১৫। মংডু শহরের পূর্ব দিকের সেতুটির নাম কী ?

উত্তরঃ মংডু শহরের পূর্ব দিকের সেতুটির নাম শেউইজার সেতু।

প্রশ্ন-১৬। বার্মায় কাদের অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেয়া হয়।

উত্তরঃ বার্মায় ফুঙ্গিদের অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেয়া হয়।

প্রশ্ন-১৭। ‘চীবর’ কী ?

উত্তরঃ ‘চীবর’ হচ্ছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গৈরিক পােশাক বিশেষ ।

প্রশ্ন-১৮। বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রধান গুরুকে কী বলা হয় ?

উত্তরঃ বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রধান গুরুকে মহাথেরাে বলা হয়।

মংডুর পথে রচনার অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন-০১। মিয়ানমারের সীমান্ত শহর মংডুর পথে নেমে লেখকের হৃদয় অচেনা আবেগে উপচে পড়ল কেন ?বুঝিয়ে লেখ।

উত্তরঃ মিয়ানমারের সীমান্ত শহর মংডুর পথে নেমে আনন্দে লেখকের হৃদয় অচেনা আবেগে উপচে পড়ল।

আমাদের বাংলাদেশের পূর্বদিকের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার। এই মিয়ানমারের মংডু শহরের পথে নেমেই লেখকের হৃদয় অচেনা আবেগে উপড়ে পড়ল। কারণ প্রথমত অচেনা অপরিচিত একটি দেশ মিয়ানমার যা দেখার ইচ্ছা লেখকের অনেক দিনের এবং দ্বিতীয়ত এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এ দুটোকে জানার ও দেখার আনন্দে লেখকের হৃদয় আবেগে উপচে পড়ল ।

 

প্রশ্ন-০২। ব্যান্ডেল বলতে কী বুঝ?

উত্তরঃ ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে এসে বসতি স্থাপন করে সেই বসতি জায়গাকে বান্ডেল বলা হতাে।

মংডু বাংলাদেশের টেকনাফের ওপাড়ে মিয়ানমারের একটি সীমান্ত শহর। এই শহরের মাঝখানে নাফ নদী। নাফ নদী পার হয়ে ব্রিটিশ যুগের বহু আগে অনেক বিদেশি বাংলাদেশে এসেছে। ষােড়শ শতাব্দীতে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে এসে বসতি স্থাপন করে। তারা তাদের বসতির জায়গাকে বান্ডেল বলত।

 

প্রশ্ন-০৩। মংডুর মহিলারা চির স্বাধীন’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে ?

উত্তরঃ মংডুর মহিলারা দোকানের মালিক, দোকানের বিক্রেতা, হােটেলের ম্যানেজার এমনকি ওয়েটার। সেখানে রাস্তার পাশে তরুণীরা পসরা সাজিয়ে বেচা-কেনা করে। পথে পথে মিয়ানমারের রঙ্গিলা যুবতি-তরুণীরা। বাড়ির সামনে, দোকানের বাইরে দাড়িয়ে আছে কেউ কেউ। এসব দিক বিবেচনা করেই লেখক বলেছেন, ‘মংডুর মহিলারা চিরস্বাধীন।’

 

প্রশ্ন-০৪। লেখকের মন খাঁচা ছাড়া পাখির মতাে উড়তে চাইল কেন?

উত্তরঃ অভিবাসন ও শুল্ক দফতর থেকে ছাড়া পেয়ে লেখকের মনটা খাঁচা ছাড়া পাখির মতাে উড়াল দিতে চাইল।

এমণের উদ্দেশ্যে লেখক মিয়ানমারের মংডু শহরে যখন পৌছান তখন সন্ধ্যার আধার ঘনিয়ে এসেছে। অভিবাসন ও শুল্ক দফতর থেকে ছাড়া পেয়ে লেখকের মন খাঁচা ছাড়া পাখির মতাে উড়াল দিতে চেয়েছে। কারণ এই পথে আরাকান রাজ্যের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন রাজধানী ম্রাউক-উ দেখতে পাবেন ।

 

প্রশ্ন-০৫। ‘ভিক্ষাই তাদের জীবিকা’-কাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে ? বর্ণনা কর।

উত্তরঃ ‘ভিক্ষাই তাদের জীবিকা’-কথাটি ভিক্ষু বা ফুঙ্গিদের সম্পর্কে বলা হয়েছে।

ভিক্ষুরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ। তারা ভিক্ষা করেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। তারা সকালে খালি গায়ে ভিক্ষা করতে বের হয়। বাসের চালে, পথে-ঘাটে সর্বত্র ফুঙ্গিদের দেখা যায়। ভিক্ষা ছাড়া ভিক্ষু বা ফুঙ্গিদের চলবে না। অন্যান্য ভিক্ষু বা ফুঙ্গি সম্পর্কে বলা হয়েছে ভিক্ষাই তাদের জীবিকা।

 

প্রশ্ন-০৬। শুক্লপক্ষ বলতে কী বােঝ?

উত্তরঃ ‘শুক্লপক্ষ’ বলতে অমাবস্যার পর থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত চন্দ্রকলা বাড়ার সময়কে বােঝায়।

‘মংডুর পথে’ রচনায় লেখক বাংলাদেশের পূর্বদিকের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ভ্রমণের বর্ণনা করতে গিয়ে মিয়ানমারের সীমান্ত শহর মংডু দিয়ে যাওয়ার সময় নির্দেশ করতে শুক্লপক্ষের চাঁদের কথা বলেছেন। এ সময় সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে আসার অল্প সময় পরেই আকাশে চাঁদ দেখা দেয়। চাদের স্নিগ্ধ আলােয় প্রকৃতির পরিবেশ আরও মনােরম হয়ে ওঠে। মংডুর পথে নেমে লেখকের মুখ, চোখ, কান ও হৃদয় তাই এক অচেনা আবেগে ভরে উঠেছিল।

 

প্রশ্ন-০৭। ‘পাইকা’ বলতে কী বােঝায় ?

উত্তরঃ ‘পাইক্যা এক ধরনের যানবাহন। 

মিয়ানমারে ‘পাইক্যা’ যাতায়াতের জন্য বেশ সুবিধাজনক। তিন চাকার রিকশা, যেমন মােটর বাইকের পাশে আর একটা চাকা লাগিয়ে ক্যারিয়ারে বউ বাচ্চা বসাতে পারে এও প্রায় তেমনি সারা মিয়ানমার জুড়ে এই ‘পাইক্যা। স্থানীয় মুসলমানরা এর একচেটিয়া চালক।

 

প্রশ্ন-০৮। মিয়ানমারের মেয়েদের স্বাধীন চিত্রটি লেখ।

উত্তরঃ ‘মংডুর পথে’ রচনায় লেখক মিয়ানমারের মেয়েদের স্বাধীন চিত্রটি তুলে ধরেছেন।

মিয়ানমারে তিনি দেখেছেন মেয়েরা অবাধে নানা ব্যবসা-বাণিজ্য করে। ঝুপড়ি দোকানে পানীয়ের পসরা সাজিয়ে বসে, আবার অনেক মেয়ে রেস্তোরাও চালায়। বিভিন্ন ভাসমান দোকানেও তারা খাবার বিক্রি করে। সেখানকার মেয়েদের সর্বত্র বিচরণ দেখা যায়। লেখক তাই বলেছেন, “মহিলারা চির স্বাধীন। দোকানের মালিক তারা।”

 

প্রশ্ন-০৮। ছেলে-বুড়াে-যুবক-যুবতি সবার পরনে লুঙ্গি কেন ?

উত্তরঃ লুঙ্গি মিয়ানমারের জাতীয় পোশাক বলে সবাই লুঙ্গি পরে।

ছেলে-বুড়াে-যুবক-যুবতি সবার পরিধানে লুঙ্গি । স্কুলের পােশাকও লুঙ্গি ও জামা বা শার্ট। বর্মি মুসলমান-হিন্দু-বড়ুয়া-জাতীয় পােশাক। তাই সবার পরনেই লুঙ্গি দেখা যায়। খ্রিষ্টান সার পরনেই লুঙ্গি । মেয়েদের পরনে লুঙ্গি ও ঝলমলে ব্লাউজ জাতীয় জামা বা গেঞ্জি। আসলে লুঙ্গি হলাে বর্মিদের।

 

প্রশ্ন-০৯। ফুঙ্গিরা ভিক্ষে করে কেন ?

উত্তরঃ ভিক্ষা ফুঙ্গিদের জীবিকা বলে ফুঙ্গিরা ভিক্ষা করে।

মিয়ানমারের ফুঙ্গিদের অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখা হয়। সকালে তারা খালি পায়ে ভিক্ষা করতে বের হন। ভিক্ষা ছাড়া তাদের চলবে না। ভিক্ষাই তাদের জীবিকা। আর এটাই নিয়ম। তাউ ফুঙ্গিরা ভিক্ষা করে।

 

প্রশ্ন-১০। মংডু ভ্রমণের সময় লেখক যে হােটেলটিত ছিলেন তার বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ মংডুতে লেখক যে হােটেলে ছিলেন সেটির অবস্থা অত্যন্ত শােচনীয়। লেখক মিয়ানমারে ভ্রমণের সময় ইউনাইটেড হােটেলে জায়গা না পেয়ে একটি চতুর্থ শ্রেণির হােটেলে উঠেছিলেন। সেটির অবস্থা শােচনীয় বললেও কম বলা হবে।

কাঠের মেঝে ও কাঠের যেমন- তেমন দেয়াল। সেই হােটেলের বিছনায় ছিল উঁচুনিচু চাষা জমির মতাে তােশক। মশারিতে ছিল বিবিএ ও বিপরীতধর্মী নানা রকম উৎকট দুর্গন্ধ। মাথার ওপরে যদিও বা পাখা আছে কিন্তু রাত নটার হিসেবে অভিহিত করেছেন। পর বিদ্যুৎ থাকবে না, সুতরাং ফ্যানও ঘুরবে না। এমনকি রাতে বাতিও থাকবে না । তাই লেখক হােটেলটিকে অখ্যাত।

Leave a Comment