প্রশ্ন-১। এক দল লোেক কোন ভাষাকে বাংলার জননী বলে মনে করত?
উত্তর: এক দল লােক সংস্কৃত ভাষাকে বাংলার জননী বলে মনে করত।
প্রশ্ন-২। আগেকার দিনে সংস্কৃত ভাষা কী হিসেবে ব্যবহৃত হতাে?
উত্তর: আগেকার দিনে সংস্কৃত ভাষা সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হতাে।
প্রশ্ন-৩। কার মতে, মাগধী প্রাকৃতের কোনাে পূর্বাঞ্চলীয় রূপ থেকে জন্ম নেয় বাংলা ভাষা?
উত্তর: জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসনের মতে, মাগধী প্রাকৃতের কোনাে পূর্বাঞ্চলীয় রূপ থেকে জন্ম নেয় বাংলা ভাষা।
প্রশ্ন-৪। পৃথিবীর আদি ভাষাগােষ্ঠীর নাম কী?
উত্তর: পৃথিবীর আদি ভাষাগােষ্ঠীর নাম- ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষাগােষ্ঠী।
প্রশ্ন-৫। ঋগ্বেদের মন্ত্রগুলােতে কোন ভাষার প্রাচীন রূপ পাওয়া যায়?
উত্তর: ঋগ্বেদের মন্ত্রগুলােতে প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার প্রাচীন রূপ পাওয়া যায়।
প্রশ্ন-৬। বিধিবদ্ধ, পরিশীলিত ও শুদ্ধ ভাষা বলতে কোন ভাষাকে বােঝায়?
উত্তর: বিধিবদ্ধ, পরিশীলিত ও শুদ্ধ ভাষা বলতে সংস্কৃত ভাষাকে বােঝায়।
প্রশ্ন-৭। ঋগ্বেদের মন্ত্রগুলাে কোন সময়ে লিখিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়?
উত্তর: ঋগ্বেদের মন্ত্রগুলাে ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে লিখিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
প্রশ্ন-৮। ভারতীয় আর্য ভাষার স্তর কয়টি?
উত্তর: ভারতীয় আর্য ভাষার স্তর তিনটি।
প্রশ্ন-৯। ভারতীয় আর্য ভাষার প্রথম স্তরটির নাম কী?
উত্তর: ভারতীয় আর্য ভাষার প্রথম স্তরটির নাম বৈদিক ভাষা।
প্রশ্ন-১০। ভারতীয় আর্যভাষার প্রথম স্তরটির ব্যাপ্তি উল্লেখ করাে?
উত্তর: ভারতীয় আর্যভাষার প্রথম স্তরটির ব্যাপ্তিকাল খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ অব্দ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দ।
প্রশ্ন-১১। বৈদিক ভাষার ব্যাপ্তিকাল লেখাে।
উত্তর: বৈদিক ভাষার ব্যাপ্তিকাল ৮০০ খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ অব্দ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব অব্দ।
প্রশ্ন-১২। সংস্কৃত কাদের ভাষা ছিল?
উত্তর: সংস্কৃত ছিল সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা।
প্রশ্ন-১৩। সংস্কৃত ভাষা কোন ব্যাকরণবিদের হাতে চূড়ান্তভাবে বিধিবদ্ধ হয়?
উত্তর: সংস্কৃত ভাষা কোন ব্যাকরণবিদ পাণিনির হাতে চূড়ান্তভাবে বিধিবদ্ধ হয়।
প্রশ্ন-১৪, বাংলা সংস্কৃতের কেমন মেয়ে?
উত্তর: বাংলা সংস্কৃতের দুষ্টু মেয়ে।
প্রশ্ন-১৫, বৈদিক ও সংস্কৃত কোন আর্য ভাষার অন্তর্গত?
উত্তর: বৈদিক ও সংস্কৃত প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার অন্তর্গত।
প্রশ্ন-১৬. প্রাকৃত ভাষাগুলাের শেষ স্তরের নাম কী?
উত্তর: প্রাকৃত ভাষাগুলাের শেষ স্তরের নাম অপভ্রংশ।
প্রশ্ন-১৭. প্রাকৃত ভাষার পরবর্তী রূপ কোনটি?
উত্তর: প্রাকৃত ভাষার পরবর্তী রূপ অপভ্রংশ।
প্রশ্ন-১৮, অপভ্রংশ মানে কী?
উত্তর: অপভ্রংশ মানে যা খুব বিকৃত হয়ে গেছে।
প্রশ্ন-১৯, ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে কোন অপভ্রংশ থেকে বাংলা ভাষার উদ্ভব?
উত্তর: ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকে বাংলা ভাষার উদ্ভব।
প্রশ্ন-২০. কার মতে, পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকে উদ্ভূত হয়েছে বাংলা, আসামি ও ওড়িয়া ভাষা?
উত্তর: ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকে উদ্ভূত হয়েছে বাংলা, আসামি ও ওড়িয়া ভাষা।
প্রশ্ন-২১. ড. সুনীতিকুমারের মতে, বাংলা ভাষার সাথে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কোন দুটি ভাষার?
উত্তর: ড. সুনীতিকুমারের মতে, বাংলা ভাষার সাথে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আসামি ও ওড়িয়া ভাষার।
প্রশ্ন-২২. ভাষাতাত্ত্বিক কাদের বলা হয়?
উত্তর: ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে যারা গবেষণা করেন, তাদেরকে ‘ডাষাতাত্ত্বিক’ বলা হয়।
প্রশ্ন-২৩. সংস্কৃত শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: সংস্কৃত শব্দের অর্থ বিধিবদ্ধ বা পরিশীলিত। পণ্ডিতগণও তাই প্রমাণ করেছেন।
প্রশ্ন-২৪, শতাব্দী’ কাকে বলে?
উত্তর: একশত বছর সময়কালকে শতাব্দী বলে।
প্রশ্ন-২৫. শ্লোক’ কী?
উত্তর: শ্লোক’ হলাে সংস্কৃত ভাষায় রচিত কবিতা।
প্রশ্ন-২৬: দুর্বোধ্য অর্থ কী?
উত্তর: ‘দুর্বোধ্য’ অর্থ- যা বােঝা কঠিন।
প্রশ্ন-২৭. ‘বিধিবদ্ধ’ শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর: ‘বিধিবদ্ধ’ শব্দটির অর্থ নিয়ম দ্বারা শাসিত।
প্রশ্ন-২৮, ‘উড়ত’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘উদ্ভূত’ শব্দের অর্থ উৎপন্ন।
প্রশ্ন-২৯, উদ্ভব’ মানে কী?
উত্তর: উদ্ভব’ মানে সূচনা।
প্রশ্ন-৩০, বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের রচয়িতা কে?
উত্তর: বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের রচয়িতা হুমায়ুন আজাদ।
প্রশ্ন-৩১, বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
উত্তর: বাংলা ভাষার জন্মকথা” প্রবন্ধটি কতাে নদী সরােবর বা বাঙলা ভাষার জীবনী গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে।
প্রশ্ন-৩২. বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে লেখক কী সম্পর্কে আলােচনা করেছেন?
উত্তর: বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে লেখক বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে আলােচনা করেছেন।
প্রশ্ন-৩৩, ভাষার ধর্ম কী?
উত্তর: ভাষার ধর্ম হচ্ছে বদলে যাওয়া।
প্রশ্ন-৩৪, পূর্বে সাধারণ মানুষেরা কোন ভাষায় কথা বলত বলে মত দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: পূর্বে সাধারণ মানুষেরা প্রাকৃত ভাষায় কথা বলত বলে মত দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন-৩৫. প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা কোন ভাষাবংশের শাখা?
উত্তর: প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষাবংশের শাখা।
প্রশ্ন-৩৬. ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, বাংলা ভাষার উৎপত্তি কোথা থেকে?
উত্তর: ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, বাংলা ভাষার উৎপত্তি গৌড়ী অপভ্রংশ থেকে।
প্রশ্ন-৩৭. হুমায়ুন আজাদ কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: হুমায়ুন আজাদ ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন-৩৮. হুমায়ুন আজাদের জন্ম কোন জেলায়?
উত্তর: হুমায়ুন আজাদের জন্ম মুন্সীগঞ্জ জেলায়।
প্রশ্ন-৩৯, হুমায়ুন আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন?
উত্তর: হুমায়ুন আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
প্রশ্ন-৪০. হুমায়ুন আজাদ কী হিসেবে বিশেষ খ্যাতি পেয়েছেন?
উত্তর: হুমায়ুন আজাদ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের একজন গবেষক হিসেবে বিশেষ খ্যাতি পেয়েছেন।
প্রশ্ন-৪১, কিশাের পাঠকদের জন্য লেখা হুমায়ুন আজাদের দুটি গ্রন্থের নাম কী?
উত্তর: কিশাের পাঠকদের জন্য লেখা হুমায়ুন আজাদের দুটি গ্রন্থের নাম হলাে— ‘লালনীল দীপাবলি এবং কত নদী সরােবর।
প্রশ্ন-৪২. অলৌকিক ইস্টিমার’ কী ধরনের রচনা?
উত্তর: অলৌকিক ইস্টিমার একটি কাব্যগ্রন্থ।
প্রশ্ন-৪৩. হুমায়ুন আজাদ কবে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: হুমায়ুন আজাদ ২০০৪ সালের ১২ই আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্ন-৪৪. হুমায়ুন আজাদ কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: হুমায়ুন আজাদ জার্মানির মিউনিখ শহরে মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলা ভাষার জন্মকথা প্রবন্ধের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন-১। ‘এক হাজার বছর পর বাঙলা ভাষা ঠিক এমন থাকবে না’ – কেন? বুঝিয়ে লেখাে।
উত্তর: ভাষার বদলে যাওয়া ধর্মের দিকটির কথা বােঝাতেই প্রশ্নোত্ত উক্তিটি করা হয়েছে।
ভাষা নিয়ত পরিবর্তনশীল। সময়ের সাথে সাথে এতে যুক্ত হয় নতুন শব্দ আবার কালের বিবর্তনে হারিয়ে যায় বিভিন্ন উপাদান। তাই বর্তমানে আমরা যে বাংলা ভাষা ব্যবহার করছি, তা কয়েকশ বছর পর বদলে যাবে। আবার কয়েকশ বছর আগেও বাংলা ভাষা বর্তমান রূপে ছিল না। এ কথাটি বােঝাতেই প্রশ্নোত্ত উক্তিটি করা হয়েছে।
প্রশ্ন-২। প্রাকৃত ভাষার পরিচয় দাও।
উত্তর: সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন জীবনের কথ্য ভাষাকেই প্রাকৃত ভাষা বলা হতাে।
আজ থেকে হাজার বছর আগে মানুষের ভাষা বাংলা ছিল না। সে সময় সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষ লেখা ও পড়ার জন্য ব্যবহার করত সংস্কৃত ভাষা, কিন্তু সাধারণ মানুষ সংস্কৃত ভাষায় কথা বলত না। তারা কথা বলত প্রাকৃত ভাষায়। প্রাকৃত ভাষা ছিল তাদের দৈনন্দিন জীবনের কথ্য ভাষা।
প্রশ্ন-৩। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা বলতে কী বােঝো? ব্যাখ্যা করাে।
উত্তর: ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষা বংশের অন্তর্গত ভারতীয় আর্যভাষার প্রাচীন রূপটিই প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা।
প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষার প্রাচীন রূপ পাওয়া যায় ঋগ্বেদের মন্ত্রগুলােতে। এগুলাে এক হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে লিবিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। বৈদিক ও সংস্কৃত হলাে প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা।
প্রশ্ন-৪। ব্যাকরণবিদরা সংস্কৃত ভাষা সৃষ্টি করেছিলেন কেন?
উত্তর: সময়ের সাথে সাথে বৈদিক ভাষা দুর্বোধ্য হয়ে ওঠার কারণে ব্যাকরণবিদরা সংস্কৃত ভাষা সৃষ্টি করেছিলেন।
খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ অব্দ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দ পর্যন্ত মানুষ বৈদিক ভাষা ব্যবহার করে আসছিল। পরবর্তী সময়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত ভাষার বদল ঘটতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় একসময় বৈদিক ভাষা মানুষের কাছে দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে । ফলে অপেক্ষাকৃত সহবােধ্য ডাষা সৃষ্টির তাগিদ থেকেই ব্যাকরণবিদরা সৃষ্টি করেছিলেন পরিশীলিত সংস্কৃত ভাষা।