প্রশ্ন ১। প্রায় সব দেশে, সব জনগােষ্ঠীর মধ্যে সব সংস্কৃতিতেই নববর্ষ উদ্যাপনের প্রথা প্রচলিত আছে। এর মাধ্যমে একটি মৌলিক ঐক্য আমাদের চোখে পড়ে। তা হলাে নবজন্ম বা পুনর্জন্ম। পুরােনাে জীর্ণতাকে বিদায় দিয়ে সতেজ, সজীব, নবীন এক জীবনের মধ্যে প্রবেশ করার আনন্দানুভূতি। গ্রাম-নগর নির্বিশেষে বাংলার সব মানুষ সে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ কি খ্রিষ্টান হােক, পয়লা বৈশাখ অনুষ্ঠানে যােগ দেয়। এ সময় বৈশাখী মেলা, হালখাতা, পুণ্যাহ, বৈসাবি উৎসবসহ নানা উৎসবের আয়ােজন করা হয়।
ক. পুণ্যাহ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য কী?
খ. আমানি’ অনুষ্ঠানকে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকে বাংলা নববর্ষ প্রন্ধের যে দিকটি ফুটে উঠেছে, তা ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. উদ্দীপকে বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের সম্পূর্ণ ভাব ফুটে ওঠেনি। মন্তব্যটির সত্যতা নির্ণয় করাে।
১নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক। ‘পুণ্যাহ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য হলাে খাজনা আদায়।
খ। আমানি অনুষ্ঠানটি মঙ্গল বয়ে আনবে- এমন বিশ্বাস প্রচলিত থাকার কারণে আমানিকে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান বলা হয়।
আমানি মূলত কৃষকের পারিবারিক অনুষ্ঠান। চৈত্র মাসের শেষ দিনের সন্ধ্যারাতে ভিজতে দেওয়া অপক্ক চাল আর কচি আমের পাতাযুক্ত ডাল দিয়ে গৃহকত্রী পয়লা বৈশাখে মঙ্গল বার্তা বয়ে আনেন পরিবারে। সারা ঘরে ছিটানাে হয় সেই পানি। ভেজা চাল সবাইকে খেতে দিয়ে আমের ডালের’কচি পাতা হাঁড়ির পানিতে ভিজিয়ে বাড়ির সবার গায়ে ছিটিয়ে দেন তিনি। সবাই বিশ্বাস করে এ অনুষ্ঠান পালনে সবার কল্যাণ হবে। আমানিকে তাই মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান বলা হয়।
গ। উদ্দীপকে বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে প্রকাশিত নতুন বছরকে নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা এবং আনুষ্ঠানিকতার দিকটি ফুটে উঠেছে।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের মূল আলােচ্য বিষয় পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ। আলােচ্য প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বাংলা নববর্ষের নানা দিক নিয়ে আলােচনা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রবন্ধটির শুরুতেই তিনি নববর্ষকে নিয়ে এ দেশের মানুষের ভাবনা ও প্রত্যাশাকে তুলে ধরেছেন।
উদ্দীপকে লেখক নববর্ষকে নিয়ে মানুষের সামগ্রিক একটি ধারণাকে উপস্থাপন করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, পৃথিবীর প্রায় সব দেশে, সব, জাতির মধ্যেই নববর্ষ পালনের রেওয়াজ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সব দেশের মানুষদের মধ্যে একটি মৌলিক ঐক্য তিনি লক্ষ করেছেন। আর তা হলাে পুরােনাে জীর্ণতাকে বিদায় দিয়ে এক সজীব জীবনে প্রবেশ করার আনন্দানুভূতি। পাশাপাশি নববর্ষের নানা আনুষ্ঠানিকতার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। আলােচ্য প্রবন্ধে লেখকও নববর্ষ উদযাপনকে ঘিরে এদেশের মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি প্রত্যাশা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালনের কথা ব্যক্ত করেছেন, যা নববর্ষকে নিয়ে উদ্দীপকের বক্তব্যের অনুরূপ।
সে বিবেচনায়, উদ্দীপকটিতে আলােচ্য প্রবন্ধে প্রকাশিত নববর্ষকে ঘিরে মানুষের প্রত্যাশা ও আনুষ্ঠানিকতার বিষয়টিই ফুটে উঠেছে।
ঘ। “উদ্দীপকে বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের সম্পূর্ণ ভাব ফুটে ওঠেনি”— মন্তব্যটি সম্পূর্ণরূপে সত্য।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক এ দেশে নববর্ষ উদযাপনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলােচনা করেছেন। আর তা করতে গিয়ে, তিনি নববর্ষ উদ্যাপনের ইতিহাস, নানা আনুষ্ঠানিকতা, এ দেশের জনমনে বাংলা নববর্ষের গভীর প্রভাবসহ আরও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলােকপাত করেছেন।
উদ্দীপকটি নববর্ষ উদযাপনকে কেন্দ্র করে রচিত। সেখানে লেখক নববর্ষ উদযাপন নিয়ে বিভিন্ন দেশ ও জাতিগােষ্ঠীর মধ্যকার মৌলিক ঐক্যের দিকটি অন্বেষণ করেছেন। তিনি লক্ষ করেছেন, নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন জাতিগােষ্ঠীর মধ্যে প্রচলিত ধারণাটি মােটামুটি একরকম। পাশাপাশি উদ্দীপকটিতে বাংলা নববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক এ দেশে নববর্ষ পালন সম্পর্কে বিস্তারিত আলােচনা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রবন্ধটিতে তিনি বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস, পাকিস্তান আমলে পশ্চিমা শাসকগােষ্ঠীকর্তৃক নববর্ষ উদযাপনে বাধাদান, জাতীয়তাবাদী চেতনার জাগরণে এর ভূমিকাসহ নানা বিষয় নিয়ে আলােচনা করেছেন। উদ্দীপকে এসব বিষয় উপস্থাপিত হয়নি। সেখানে কেবল প্রবন্ধে উল্লেখিত নববর্ষ নিয়ে মানুষের ভাবনা ও আনুষ্ঠানিকতার দিকটিই স্থান পেয়েছে। অর্থাৎ প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি সত্য।
বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধের জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ২। নিশি অবসান ঐ পুরাতন বর্ষ হও গত
বন্ধু হও শত্রু হও যেখানে যে রহ
ক্ষমা করিও আজিকার মতাে
পুরাতন বর্ষের সাথে পুরাতন অপরাধ যত
ক. বাংলা নববর্ষের প্রধান অনুষ্ঠানের নাম কী?
খ. বাংলা নববর্ষ আমাদের প্রধান জাতীয় উৎসব’- কেন?
গ. উদ্দীপকের ভাবার্থ বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের কোন দিকটি নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. “উদ্দীপকটি বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের সমগ্র ভাব ধারণা করে।”— বিশ্লেষণ করাে।
২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক। বাংলা নববর্ষের প্রধান অনুষ্ঠানের নাম বৈশাখী মেলা।
খ। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে বলেই বাংলা নববর্ষকে আমাদের প্রধান জাতীয় উৎসব বলা হয়েছে।
পশ্চিম পাকিস্তানিরা বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান বন্ধ করে আমাদের মননে ও সংস্কৃতিতে চরমভাবে আঘাত হানে। তারা এ উৎসবকে নস্যাৎ করতে সবরকম অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু বাঙালি এর প্রতিবাদে সােচ্চার হয়ে ওঠে। কারণ নববর্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও জাতিসত্তা গঠনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। এ কারণে বাংলা নববর্ষকে আমাদের প্রধান জাতীয় উৎসব বলা হয়েছে।
গ। উদ্দীপকের ভাবার্থ বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে উল্লেখিত নববর্ষকে কেন্দ্র করে বাঙালির প্রত্যাশার দিকটিকে নির্দেশ করে।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বাংলা নববর্ষ উদযাপনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলােচনা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আলােচ্য প্রবন্ধটিতে তিনি নববর্ষ উদযাপনের ক্ষেত্রে দেশবাসীর ধারণা ও প্রত্যাশার দিকটি তুলে ধরেছেন।
উদ্দীপকের কবিতাংশে পুরােনাে বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানাে হয়েছে। কবির প্রত্যাশা, এর মধ্য দিয়ে বিগত দিনের সব পাপ, তাপ, দুঃখ-যন্ত্রণা বিদূরিত হয়ে নতুন দিনের আগমন ঘটবে। আলােচ্য কবিতাংশে নববর্ষকে কেন্দ্র করে ফুটে ওঠা কবির এই প্রত্যাশার দিকটি বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধেও পরিলক্ষিত হয়। প্রাবন্ধিক সেখানে নতুন বছর বরুণ করে নেওয়াকে কেন্দ্র করে বাঙালিসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জাতিগােষ্ঠীর মধ্যে প্রচলিত অভিন্ন ধারণা এবং প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেছেন, যা উদ্দীপকের মূলভাবকেই তুলে ধরে। সে বিবেচনায়, উদ্দীপকের ভাবার্থ আলােচ্য প্রবন্ধের নববর্ষ উদযাপন নিয়ে বাঙালির প্রত্যাশার দিকটিকেই নির্দেশ করে।
ঘ। উদ্দীপকটি বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের সমগ্র ভাব, ধারণ করে না।”- মন্তব্যটি যথার্থ বলেই আমি মনে করি।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বাংলা নববর্ষের সামগ্রিক ইতিহাস পর্যালােচনা করেছেন। আর তা করতে গিয়ে তিনি দেশবাসীর নববর্ষ সম্পর্কিত ধারণা, নানান আনুষ্ঠানিকতাসহ বাঙালির রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাসকে যুক্ত করে এর প্রভাব বর্ণনা করেছেন।
উদ্দীপকের কবিতাংশে পুরােনাে বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছর বরণ করে নেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। নিজের ভুল স্বীকার করে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নতুন বছর শুরু করার প্রত্যয় ফুটে উঠেছে সেখানে কবির প্রত্যাশা, নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন দিনের সূচনা হবে। আলােচ্য প্রবন্ধে এ বিষয়টি প্রতিফলিত হলেও এটিই প্রবন্ধটির একমাত্র বিষয় নয়।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে নববর্ষ উদযাপনের একটি সামগ্রিক চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রাবন্ধিক সেখানে নববর্ষকে ঘিরে বাঙালির প্রত্যাশা এবং নানান আনুষ্ঠানিকতার বর্ণনা দিয়েছেন। আলােচ্য প্রবন্ধে নববর্ষকে কেন্দ্র করে ফুটে ওঠা এই ধারণা এবং প্রত্যাশার দিকটি উদ্দীপকের কবিতাংশেও পরিলক্ষিত হয়। তবে এ ছাড়াও প্রবন্ধটিতে নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস এবং বাঙালির রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে এর যােগসূত্রের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। উদ্দীপকের স্বল্প পরিসরে এসব বিষয় উত্থাপিত হয়নি। সেদিক বিবেচনায়, প্রশ্নোত্ত উক্তিটি যথার্থ।
প্রশ্ন ৩। নিশি অবসান ঐ পুরাতন বর্ষ হও গত
বন্ধু হও শত্রু হও যেখানে সে রহে
ক্ষমা করিও আজিকার মতাে
পুরাতন বর্ষের সাথে পুরাতন অপরাধ যত।
ক. আমাদের প্রধান জাতীয় উৎসব কোনটি?
খ. পূর্ব-বাংলার বাঙালিরা প্রতিবাদে সােচ্চার হয়ে উঠেছিল কে?
গ. উদ্দীপকের সাথে বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের বৈসাদৃশ্য চিহ্নিত করে ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. “পুরাতনকে ভুলে নতুনকে গ্রহণের মধ্যেই রয়েছে নববর্ষের সার্থকতা উদ্দীপক ও বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের আলােকে মূল্যায়ন করাে।
৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক। আমাদের প্রধান জাতীয় উৎসব বাংলা নববর্ষ।
খ। পাকিস্তান আমলে বাংলা নববর্ষ উৎসবে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং এ দিনটিকে জাতীয় ছুটির দিন ঘােষণার দাবিকে শাসক চক্র অগ্রাহ্য করায় পূর্ববাংলার বাঙালিরা প্রতিবাদে সােচ্চার হয়ে উঠেছিল।
বাংলা নববর্ষ বাঙালি গভীর ভালােবাসায় উদযাপন করে। এ উৎসব বাঙালির প্রাণের উৎসব। কিন্তু পাকিস্তান আমলে এ উৎসবকে উদযাপন করতে দেওয়া হয়নি। ফলে বাঙালির সংস্কৃতির ওপর এক চরম আঘাত আসে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে উৎসবের দিনটিকে জাতীয় ছুটি ঘােষণার দাবিকেও অগ্রাহ্য করে পাকিস্তানি শাসক চক্র। ফলে এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে পূর্ববাংলার বাঙালিরা প্রতিবাদে সােচ্চার হয়ে ওঠে।
গ। বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্দীপকের সাথে বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
‘বাংলা নববর্ষ রচনায় তুলে ধরা হয়েছে বাংলা নববর্ষ কীভাবে বাঙালির জীবনে এক গৌরবময় অধ্যায়ে পরিণত হয়েছে সেই বিষয়টি। প্রাচীনকালে নববর্ষ উৎসবে যেসব ব্রত-অনুষ্ঠান পালন করা হতাে, তা লেখক তুলে ধরেছেন রচনাটিতে। প্রাচীনকাল থেকেই পুণ্যাহ হালখাতা, বৈশাখী মেলা, ঘােড়দৌড় ও বিভিন্ন লােকমেলার আয়ােজন করে নববর্ষ উৎসবকে বুকে ধারণ করে আছে বাঙালি। আমাদের দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গেও মিশে আছে নববর্ষ উৎসব। সর্বোপরি বাংলা নববর্ষ কীভাবে আমাদের প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে, তা জানা যায় আলােচ্য রচনায়।
উদ্দীপকে পুরােনাে বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানাে হয়েছে। সেখানে নতুন বছরকে বরণ করার পাশাপাশি সবার কাছে নতুনের আহ্বান জানানাে হয়েছে। কবি পুরােনাে গ্লানি মুছে নতুন করে শুরু করতে চান। নতুন বছরকে বরণের পাশাপাশি সবার কাছে পুরােনাে দোষত্রুটির মার্জনা কামনা করেছেন। উদ্দীপকে নতুন বছরকে বরণ করার এই দিকটি থাকলেও আলােচ্য রচনায় বর্ণিত নববর্ষের ইতিহাস-ঐতিহ্যের দিকটি অনুপস্থিত। এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্দীপক এবং বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধের বৈসাদৃশ্য রচিত হয়েছে।
ঘ। পুরাতনকে ভুলে নতুনকে গ্রহণের মধ্যেই রয়েছে নববর্ষের সার্থকতা উদ্দীপক ও ‘বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে এমনই ভাবনা দেখা যায়।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধটিতে লেখক বাংলা নববর্ষকে ঘিরে আয়ােজিত নানা উৎসব আয়ােজনের বর্ণনা দিয়েছেন। সেসব উৎসব অনুষ্ঠানের সবগুলােতেই রয়েছে পুরােনােকে বিদায় দিয়ে নতুনকে গ্রহণের উদ্দীপনা।
উদ্দীপকে পুরােনাে বর্ষকে বিদায় জানিয়ে নতুন বর্ষকে স্বাগত জানানাে হয়েছে। নতুন বছর শুরু করার আগে পুরাতন বছরে করা ভুল শুধরে নেওয়ার প্রয়াস এখানে লক্ষণীয়। একই সাথে সবার সাথে বন্ধুত্ব বজায় রাখার মধ্য দিয়ে ইতিবাচকভাবে নতুন বছরকে গ্রহণ করার মনােভাব পাই উদ্দীপকে। এদিকে, আলােচ্য প্রবন্ধে বর্ণিত পয়লা বৈশাখের আয়ােজনগুলােতেও নব উদ্যমে সবকিছু শুরু করার দিকটি লক্ষণীয়। বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে পুণ্যাহ, হালখাতা, আমানিসহ নববর্ষকেন্দ্রিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানের দিকে লক্ষ করলেই দেখা যায় যে, এগুলাে করা হতাে সবকিছুকে নতুন করে শুরু করার উদ্দীপনা থেকে ‘পুণ্যাহ অনুষ্ঠানে খাজনা আদায়ের মধ্য দিয়ে, ‘হালখাতা’ অনুষ্ঠানে বাকি লেনদেন চুকানাের মধ্য দিয়ে হিসাবের সাথে সাথে সম্পর্কেরও নবায়ন হতাে। আমানি’ অনুষ্ঠানে বাঙালি গৃহিণী নতুন বছরকে কল্যাণকর করতে নানা আয়ােজন করত। নববর্ষ আসা মানেই পুরােনাে বর্ষের বিদায়। আর তাই পুরাতনকে ভুলে নতুনকে গ্রহণেই নববর্ষের সার্থকতা। উদ্দীপক ও আলােচ্য প্রবন্ধে আমরা এমনই ভাবনার প্রতিফলন দেখতে পাই।
প্রশ্ন ৪। মতিনের বন্ধুরা বাংলা নববর্ষে বেড়াতে যাবে শুনে সেও যেতে চাইল। কিন্তু মতিনের বাবা তাকে যেতে বাধা দিয়ে বললেন, ‘এটা আমাদের, উৎসব নয়।’ অবশেষে মায়ের হস্তক্ষেপে মতিন বন্ধুদের সাথে বেড়াতে গেল। গিয়ে দেখে, স্কুলের বিশাল মাঠে যেন রঙের মেলা। এক পাশে আছে নাগরদোলা, চরকি আর সাপের খেলা। পুরাে মাঠ জুড়ে নানা পণ্যের বাহারি দোকান। নারী-পুরুষ-শিশু সবাই নতুন রঙিন পােশাকে সেজেছে। ধনী-দরিদ্র সবার চোখে-মুখে আনন্দের ঝিলিক।
ক. বৈসাবি কোন এলাকার উৎসব?
খ. বৈশাখী মেলাকে বাৎসরিক বিনােদনের জায়গা বলা হয়েছে কেন?
গ. উদ্দীপকের মতিনের বাবার মানসিকতা বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত কাদের মানসিকতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. মতিনের দেখা উৎসবটি বাংলা নববর্ষের একমাত্র উৎসব নয়’- উক্তিটি বিশ্লেষণ করাে
৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক। বৈসাবি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকার উৎসব।
খ। বছরে একবার বৈশাখী মেলাকে কেন্দ্র করে গ্রাম অঞ্চলের মানুষ নানা ধরনের বিনােদন লাভ করত বলে আলােচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে নববর্ষ উদযাপনের নানা আনুষ্ঠানিকতার কথা বলা হয়েছে। বাংলা নববর্ষের তিনটি প্রধান অনুষ্ঠানের একটি হলাে বৈশাখী মেলা। দেশের বিভিন্ন স্থানে বৈশাখের প্রথম দিন থেকেই এই মেলা শুরু হয়। এই মেলার সংস্কৃতি অনেক পুরােনাে এবং আঞ্চলিক। এই আঞ্চলিক মেলা থেকে মানুষ সারাবহরের প্রয়ােজনীয় জিনিস কিনে রাখত। মেলায় থাকত কবিগান, কীর্তন, যাত্রা, গম্ভীরা গান, পুতুল নাচ, নাগরদোলাসহ নানা আনন্দ আয়ােজন। আর এ কারণেই বৈশাখী মেলাকে বাৎসরিক বিনােদনের জায়গী বলা হয়েছে।
গ। উদ্দীপকের মতিনের বাবার মানসিকতা বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত স্বৈরাচারী পাকিস্তানি সরকারের মানসিকতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
বাংলা নববর্ষ বাঙালির খুবই গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। আজকের বাংলাদেশ যে স্বাধীন হতে পেরেছে, তার পেছনে নববর্ষের প্রেরণাও সক্রিয় ছিল। কারণ, পাকিস্তানিরা বাঙালির প্রাণের উৎসব নববর্ষ উদযাপনে বাধা দিয়েছিল এবং এর প্রতিবাদে রুখে দাঁড়িয়েছিল বাঙালিরা। আর তাই বাঙালির রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে সাংস্কৃতিক ইতিহাস, বিশেষ করে নববর্ষ উদযাপনের ইতিকথা মিশে আছে।
উদ্দীপকের মতিন তার বন্ধুদের সঙ্গে নববর্ষের অনুষ্ঠানে বেড়াতে যেতে চায়। কিন্তু তার বাবা তাকে যেতে দিতে চান না। কেননা, তিনি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে মনে করেন, এটা তাদের অনুষ্ঠান নয়। তার এমন দৃষ্টিভঙ্গি বাঙালি জাতীয়তাবাদকে অনেকাংশে বাধাগ্রস্ত করে। কিন্তু মতিনের মা তাকে এই অনুষ্ঠানে যেতে দিয়েছেন। বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধ ও উদ্দীপকের আলােচনায় একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, বাঙালি জাতীয়তাবাদ গঠনে বাংলা নববর্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। পাকিস্তানিরা বাঙালির প্রধান জাতীয় উৎসব পালনে বাধা দিয়েছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদকে সংগঠিত হতে না দেওয়ার অভিপ্রায়ে। এ কারণে তারা এটাকে ধর্মীয় কারণ দেখিয়ে বানচাল করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাঙালি সােচ্চার হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদে। অর্থাৎ মতিনের বাবার মানসিকতা। বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধে উল্লিখিত স্বৈরাচারী পাকিস্তানি সরকারের মানসিকতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ। বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধে ‘নববর্ষ উদযাপনের তিনটি প্রধান উৎসব ও নানা আঞ্চলিক উৎসবের কথা বলা হয়েছে তাই মতিনের দেখা অনুষ্ঠানই বাংলা নববর্ষের একমাত্র অনুষ্ঠান নয়।
শামসুজ্জামান খান রচিত ‘বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে নববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। নববর্ষের প্রাচীনতম উৎসব হচ্ছে পুণ্যাহ। এর পরই রয়েছে হালখাতা, যা এখনাে ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয়। বৈশাখী মেলা নববর্ষের অন্যতম আকর্ষণ। তাছাড়া আমানি উৎসবের কথাও, আমরা জানতে পারি। ক্ষুদ্র নৃগােষ্ঠীর মধ্যে বৈসাবি’ নামক একটি উৎসবও নানা আনুষ্ঠানিকতায় পালিত হয়।
উদ্দীপকে মতিনের চোখে নববর্ষ উদযাপনের একটি অনুষ্ঠান অর্থাৎ বৈশাখী মেলার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। সে একদিন দেখে তাদের মাঠে অনেক লােকসমাগম, দোকান প্রচুর খেলনাসামগ্রী। বন্ধুদের সাথে সে পুতুলনাচ, সার্কাস, নাগরদোলা, সাপখেলা প্রভৃতি দেখে অনেক আনন্দ মতিনের খুব ভালাে লাগে। মতিনের দেখা এই অনুষ্ঠানটি হলাে নববর্ষ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত অনেকগুলাে অনুষ্ঠানের মধ্যে একটি অনুষ্ঠান।
বাংলা নববর্ষ প্রবন্ধে নববর্ষ উদযাপনের নানান অনুষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকে কেবল একটি অনুষ্ঠানের কথা উল্লিখিত হয়েছে। প্রবন্ধে বাংলা সন চালু হওয়ার পর নববর্ষ উদযাপনে নানা অনুষ্ঠান যুক্ত হয়। তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। এটা নবাব ও জমিদারগণ প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের জন্য আয়ােজন করত। এছাড়াও আছে ‘হালখাতা’, যা দোকানিরা সারাবছরের লেনদেনের পাওনা আদায়ে আয়ােজন করত। এছাড়াও সারাদেশ জুড়ে আয়ােজন করা হয় বৈশাখী মেলা। এ তিনটি সর্বজনীন উৎসব ছাড়াও আরও আঞ্চলিক অনুষ্ঠান ছিল যেমন- চট্টগ্রামের বলী খেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মােরগের লড়াই, কিশােরগঞ্জ, নেত্রকোণা, নড়াইলের যাঁড়ের লড়াই ইত্যাদি। কিন্তু উদ্দীপকে শুধু বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের বৈশাখী মেলার কথা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের মতিনের দেখা অনুষ্ঠানই বাংলা নববর্ষের একমাত্র উৎসব নয়।
প্রশ্ন ৫। পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাঙালির এক অনন্য উৎসব, আর অন্যতম জাতীয় উৎসব। এর ঐতিহা সুপ্রাচীন ও গৌরবমণ্ডিত। অবশ্য কালের যাত্রাপথ ধরে এর উদযাপন রীতিতে নানা পালাবদল ঘটেছে, বিভিন্ন সময়ে তা বিভিন্ন মাত্রিকতা অর্জন করেছে। সুদূর অতীতে এর সঙ্গে কৃষি সমাজের যােগসূত্র ছিল অবিচ্ছেদ্য।
ক. আধুনিককালে নব আঙ্গিকের বর্ষবরণ উৎসবের সূচনা হয় কাদের উদ্যোগে?
খ. নববর্ষের উৎসব কীভাবে দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে?
গ। “সুদূর অতীতে এর সঙ্গে কৃষি সমাজের যােগসূত্র ছিল অবিচ্ছেদ্য।” -উদ্দীপকের এই লাইনের সঙ্গে বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে সাদৃশ্যের জায়গাগুলাে কোথায়? উল্লেখপূর্বক ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. উদ্দীপকটি বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের সমগ্র চেতনাকে ধারণ করতে পেরেছে কি? তােমার মতামতের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক। আধুনিককালে নব আঙ্গিকের বর্ষবরণ উৎসবের সূচনা হয় কলকাতার ঠাকুর পরিবারে এবং শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের উদ্যোগে।
খ। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার মধ্য দিয়ে নববর্ষের উৎসব দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী এদেশে বাংলা নববর্ষ উৎসব বন্ধ করার অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু বাঙালি এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। তারা নববর্ষ অনুষ্ঠানকে ঘিরে বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং জাতিসত্তা গঠনের প্রয়াসে ঐক্যবদ্ধ হয়। এভাবে সকলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষ ধীরে ধীরে দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
গ। প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি বাংলা নববর্ষের প্রাচীন উদযাপন রীতির দিককে ইঙ্গিত করে, যা আলােচ্য প্রবন্ধের বাংলার কৃষিভিত্তিক সমাজের নববর্ষ উদযাপনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে বাঙালির অন্যতম জাতীয় উৎসব বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কথা বলা হয়েছে। প্রাচীন বাংলায় কৃষিভিত্তিক সমাজকে কেন্দ্র করে নববর্ষের উৎসব অনুষ্ঠিত হতাে। সে সময় পুণ্যাহ, হালখাতা, আমানি প্রভৃতি আচার অনুষ্ঠান পালিত হতাে। কৃষকরা নিজেদের মতাে করে নববর্ষের উৎসবে শামিল হতাে। কোনাে কোনাে এলাকায় অনুষ্ঠিত হতাে বৈশাখী মেলা। এছাড়া নানারকম আঞ্চলিক মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান পালিত হতাে বিভিন্ন এলাকায়। কৃষি ও কৃষককে কেন্দ্র করে নববর্ষ উদযাপিত হলেও কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই অনুষ্ঠান বর্তমান রূপ পেয়েছে।
উদ্দীপকে সুদূর অতীতে বাংলা নববর্ষের সাথে কৃষি সমাজের যােগসূত্রের কথা বলা হয়েছে। এদেশে কৃষিভিত্তিক সমাজ থাকার কারণে কৃষকেরাই ছিল এই উৎসবের মূলে। কালের পরিক্রমায় সভ্যতার উন্নতির ফলে নববর্ষ উৎসব আধুনিক রূপ লাভ করেছে। বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধেও কৃষি সমাজের নববর্ষ উৎসবের ইতিহাসের কথা বলা হয়েছে। প্রবন্ধে বর্ণিত পুণ্যাহ, হালখাতাসহ নানারকম আলিক মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের দিকগুলাে প্রশ্নোত্ত লাইনের প্রেক্ষিতে তাই সাদৃশ্যময়।
ঘ। উদ্দীপকে বাংলা নববর্ষের বিবর্তনের ঐতিহা তুলে ধরা হলেও আলােচ্য প্রবন্ধের বাঙালি জাতীয়তাবাদ গঠনের দিকটি ফুটে না ওঠায় উদ্দীপকটি প্রবন্ধের সমগ্র চেতনাকে ধারণ করতে পারেনি।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে বাঙালির রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে নববর্ষ উৎসবের প্রভাবের দিকটি বর্ণিত হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার পেছনে নববর্ষের প্রেরণা কীভাবে কাজ করেছে, তা লেখক তুলে ধরেছেন। এছাড়াও প্রাচীনকাল থেকে বাংলা নববর্ষ বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হওয়ার দিকটিও প্রবন্ধে তুলে ধরা হয়েছে। প্রাচীন কৃষিভিত্তিক সমাজে পয়লা বৈশাখ যে উৎসাহ উদ্দীপনায় পালিত হতাে সেখান থেকে বর্তমান অবস্থানে আসার প্রেক্ষাপটও এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
উদ্দীপকে বাঙালির অনন্য জাতীয় উৎসব পয়লা বৈশাখের কথা বলা হয়েছে। প্রাচীন এই উৎসবের গৌরব ও ঐতিহাের কথা বলতে গিয়ে কৃষি সমাজের সঙ্গে এর যােগসূত্রের কথাও বর্ণিত হয়েছে উদ্দীপকে। এই উৎসব সময়ের আবর্তনে নানা মাত্রিকতা লাভ করে বাঙালির জাতীয় উৎসবে রূপ নিয়েছে। নববর্ষের এই বিবর্তন ও ঐতিহ্যের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে উদ্দীপকে।
বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধে নববর্ষ উৎসবের উৎপত্তি ও বিকাশের পাশাপাশি বাঙালি জাতীয়তাবাদ সৃষ্টিতে এর ভূমিকার কথা বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকে এই সমগ্র বিষয় প্রকাশ পায়নি। সেখানে কেবল নববর্ষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কথাই ফুটে উঠেছে। ফলে উদ্দীপকে পয়লা বৈশাখের জাতীয়তাবাদী চেতনার কথা অনুপস্থিত। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি বাংলা নববর্ষ’ প্রবন্ধের সমগ্র চেতনাকে ধারণ করতে পারেনি।