প্রশ্ন ১। প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম কী?
উত্তর : প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ‘বীরবল’।
প্রশ্ন ২। বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতির প্রবর্তক কে?
উত্তর : বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতির প্রবর্তক হলেন প্রমথ চৌধুরী।
প্রশ্ন ৩। মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ কোনটি?
উত্তর : মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ হচ্ছে বই পড়া।
প্রশ্ন ৪। শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ কী?
উত্তর : শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ হলাে সাহিত্যচর্চা।
প্রশ্ন ৫। সুশিক্ষিত লােক মাত্রই কী?
উত্তর : সুশিক্ষিত লােক মাত্রই স্বশিক্ষিত ।
প্রশ্ন ৬। প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম কী ছিল?
উত্তর : প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ছিল ‘বীরবল’।
প্রশ্ন ৭। সাহিত্যচর্চার জন্য কী প্রয়ােজন?
উত্তর : সাহিত্যচর্চার জন্য লাইব্রেরির প্রয়ােজন।
প্রশ্ন ৮। দেহের মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয়, কার হয় না?
উত্তর : দেহের মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয়, আত্মার মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয় না।
প্রশ্ন ৯। ‘পদচারণ’ কার লেখা?
উত্তর : ‘পদচারণ’ প্রমথ চৌধুরীর লেখা।
প্রশ্ন ১০। কী ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর নেই?
উত্তর : বই পড়া ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর নেই।
প্রশ্ন ১১। লেখক কোনটিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন?
উত্তর : লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন।
প্রশ্ন ১২। লেখক লাইব্রেরিকে কিসের ওপরে স্থান দিয়েছেন?
উত্তর : লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন।
প্রশ্ন ১৩। শিক্ষা গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুই-ই দূর করবে বলে কার বিশ্বাস?
উত্তর : শিক্ষার ফল লাভে উদ্বাহু ব্যক্তির।
প্রশ্ন ১৪ কে শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন?
উত্তর : যিনি যথার্থ গুরু তিনিই শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন।
প্রশ্ন ১৫। কিসের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু?
উত্তর : শিক্ষার ফল লাভের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু।
প্রশ্ন ১৬। কাকে আমরা নিষ্কর্মার দলে ফেলি?
উত্তর : কেউ স্বেচ্ছায় বই পড়লে তাকে আমরা নিষ্কর্মার দলে ফেলি।
প্রশ্ন ১৭। বই পড়ার প্রধান দুটি দিক কী কী?
উত্তর : বই পড়ার প্রধান দুটি দিক হলাে যথাক্রমে প্রাতিষ্ঠানিক উপায় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উপায়।
প্রশ্ন ১৮। উত্তরসাধক মাত্র কে?
উত্তর : গুরু উত্তরসাধক মাত্র ।
প্রশ্ন ১৯। বিজ্ঞানের চর্চা কোথায়?
উত্তর : বিজ্ঞানের চর্চা জাদুঘরে।
প্রশ্ন ২০। কাব্যামৃতে অরুচি ধরার দোষ কার?
উত্তর : কাব্যামৃতে অরুচি ধরার দোষ প্রচলিত শিক্ষার।
প্রশ্ন ২১। ‘সুসার’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : সুসার শব্দের অর্থ প্রাচুর্য।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন ১। শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না কেন?
উত্তর : শিক্ষার ন্যায় অন্তর্লোকের মনােরাজ্যের অর্জন গ্রহণসাপেক্ষ বিধায় শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না।
সুশিক্ষিত লােক মাত্রই স্বশিক্ষিত। শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদান করায় নয়, ছাত্রকে তা অর্জন করতে সক্ষম করায়। যিনি যথার্থ গুরু তিনি শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং তার অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে ব্যক্ত করে তােলেন। সেই শক্তির বলে শিষ্য নিজের মন নিজে গড়ে তােলে, নিজের অভিমত বিদ্যা নিজে অর্জন করে। বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়। গুরু উত্তরসাধক মাত্র।
প্রশ্ন ২। লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিতে চান কেন?
উত্তর : লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিতে চান, কারণ লাইব্রেরিতে লােকে স্বেচ্ছায় স্বচ্ছন্দচিত্তে স্বশিক্ষিত হওয়ার সুযােগ পায় ।
আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষাপদ্ধতি উল্টো। সেখানে ছেলেদের বিদ্যে গেলানাে হয়। তা তারা হজম করতে পারুক আর নাই, তা কেউ দেখে না। ফলে ছেলেরা শারীরিক ও মানসিকভাবে জীর্ণশীর্ণ হয়ে বেরিয়ে আসে কলেজ থেকে। পক্ষান্তরে লাইব্রেরিতে প্রত্যেকে নিজ নিজ শক্তি ও রুচি অনুসারে নিজের মনকে নিজের চেষ্টায় আত্মার রাজ্যে, জ্ঞানের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। তাই লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিতে চান।
প্রশ্ন ৩। শিক্ষা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুই-ই দূর করবে। উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : “শিক্ষা আমাদের গায়েল জ্বালা ও চোখের জল, দুই-ই দূর করবে”- উক্তিটির মধ্য দিয়ে শিক্ষা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ভুল ধারণা প্রকাশ পেয়েছে।
আমাদের দেশ রােগ-শােক, দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশ। সুন্দর জীবনধারণ করা এখানে কঠিন। তাই শখ করে বই পড়ার প্রস্তাব অনেকের কাছে নিরর্থক ও নির্মম ঠেকবে বলে প্রমথ চৌধুরী মনে করেন। তিনি বলেন, আমরা সকলে শিক্ষার ফললাভের জন্য সব সময় উদ্বাহু। কারণ আমাদের বিশ্বাস শিক্ষা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুই-ই দূর করবে।
প্রশ্ন ৪। সাহিত্যের রস উপভােগ করতে আমরা প্রস্তুত নই কেন?
উত্তর : সাহিত্যের ফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না বলে আমরা সাহিত্যের রস উপভােগ করতে প্রস্তুত নই। সাহিত্য মানুষের সুকুমার বৃত্তিকে জাগিয়ে তােলে। মানুষকে বিকশিত করে তােলে। সাহিত্যের রস মানুষের আত্মাকে সজীব করে তােলে। কিন্তু আমরা যেকোনাে পাঠের ফল সরাসরি প্রত্যাশা করি। আর এ কারণেই আমরা সাহিত্যের রস উপভােগ করতে প্রস্তুত নই।
প্রশ্ন ৫। সাহিত্যচর্চার সুফল সম্পর্কে অনেকেই সন্দিহান কেন?
উত্তর : সাহিত্যচর্চার কোনাে নগদ বাজার দর নেই বলে এর সুফল সম্পর্কে অনেকেই সন্দিহান। সমাজের অনেকেই সাহিত্যের রস উপভােগ করতে প্রস্তুত না উত্তীর্ণ থাকলেও শিক্ষার ফললাভের জন্য উদ্বাস্তু হয়ে থাকেন। তাদের বিশ্বাস শিক্ষা তাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুই-ই দূর করবে। সাহিত্যচর্চার সুফল সম্পর্কে লােকে যে সন্দেহ করে, তার কারণ এ শিক্ষার ফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না, অর্থাৎ তার কোনাে নগদ বাজার দর নেই।
প্রশ্ন ৬। সাহিত্যচর্চাকে লেখক শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলেছেন কেন?
উত্তর : সাহিত্যচর্চায় মন ও জ্ঞানের সামগ্রিক রূপ পাওয়া যায় বলে লেখক সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলেছেন।
লেখকের মতে, যে জাতি মনে বড় নয়, সে জাতি জ্ঞানেও বড় নয়। মানুষের মনকে সরল, সচল, সরাগ ও সমৃদ্ধ করার ভার আজকের দিনে সাহিত্যের ওপর ন্যস্ত হয়েছে। কেননা, মানুষের দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মনীতি, অনুরাগ-বিরাগ, আশা-নৈরাশ্য, তার অন্তরের সত্য ও স্বপ্ন এসবের সমবায়ে সাহিত্যের জন্ম। এসব কারণেই লেখক সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলেছেন।
প্রশ্ন ৭। “সাহিত্যচর্চার জন্য চাই লাইব্রেরি।”- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বই পড়া অর্থাৎ সাহিত্যচর্চার জন্য লাইব্রেরি অপরিহার্য।
বাস্তবতার দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে, বিভিন্ন ধরনের চর্চা ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। যেমন- ধর্মের চর্চা মন্দির কিংবা মসজিদে, দর্শনের চর্চা গুহায়, নীতির চর্চা ঘরে এবং নাই বিজ্ঞানের চর্চা জাদুঘরে। ঠিক তেমনি সাহিত্যের চর্চার জন্যও লাইব্রেরির কোনাে বিকল্প নেই।
প্রশ্ন ৮। লেখকের কাউকে শখ হিসেবে বই পড়তে পরামর্শ দিতে না চাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বই পড়া মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ হওয়া সত্ত্বেও লেখক ওপরে কাউকেই বই পড়তে পরামর্শ দিতে চাননি।
প্রথম কারণ, লেখকের সেই পরামর্শ কেউ গ্রাহ্য করবেন না এজন্য যে আমরা জাতি হিসেবে শৌখিন নই। আর দ্বিতীয় কারণ হলাে রােগ-শােক, দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশে যেখানে স্বাভাবিকভাবে দূর জীবনধারণই প্রধান সমস্যা সেখানে শখ করে বই পড়ার প্রস্তাব ভুল পাঠকের কাছে খুব নির্মম ঠেকবে ।
প্রশ্ন ৯। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলােতে যে শিক্ষা দেওয়া হয় তা অপূর্ণাঙ্গ শিক্ষা। আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ স্কুল-কলেজগুলােতে যে ধরনের শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে তা অনেক ক্ষেত্রেই জ্ঞান বিকাশে সহায়ক নয়। শুধু পরীক্ষায় পাস করার দিকে শিক্ষার্থীদের নজর থাকে। শিক্ষকরাও পাসের লক্ষ্য নিয়েই তাদের শিক্ষা দেন। নােটসর্বস্ব বিদ্যা অর্জন করে উদরপূর্তির ব্যবস্থা হয়তাে তাতে হয়, কিন্তু অপূর্ণ শিক্ষার কারণে আত্মবিকাশের সুযােগ হয় না।
প্রশ্ন ১০। “কিন্তু এই গেলা আর ওগলানাে দর্শকের কাছে তামাশা হলেও বাজিকরের কাছে তা প্রাণান্তকর ব্যাপার”- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : উদ্ধৃত বাক্যটি দ্বারা বাজিকরের প্রাণান্তকর চেষ্টা ও তার সাধনার ফলাফল বােঝানাের মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
বাজিকর বিভিন্ন আকার ও আয়তনের বস্তু গিলে আবার দর্শকের সামনে তা উদগিরণ করে। এটা দর্শকের কাছে নিতান্ত তামাশা ও অদ্ভুত কৌশল মনে হলেও মূলত এ কাজটা করতে বাজিকরের বহু শ্রম ব্যয়ের দরকার হয়। তেমনি আমাদের এ সময়ে ছাত্ররা নােটের লেখা তােতাপাখির মতাে মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লিখে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। মানুষ এতে বাহবা দেয়। মূলত এ ছাত্র ঐ বাজিকরের মতােই প্রাণান্তকর চেষ্টার মাধ্যমে পরীক্ষায় নম্বর পেয়েছে।
প্রশ্ন ১১। স্কুল-কলেজের শিক্ষাকে লেখক ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন কেন?
উত্তর : প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরী আমাদের দেশে প্রচলিত স্কুল কলেজের শিক্ষাকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন।
লেখকের মতে, শিক্ষা মানুষের আত্মাকে উদ্বোধিত করে, মনুষ্যত্ববােধ জাগ্রত করে। কিন্তু বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় সেই সুযােগ নেই। বর্তমানে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের দেওয়া নােট মুখস্থ করে এবং পরীক্ষার খাতায় তা ওগরায়। তাই লেখক স্কুল-কলেজের প্রচলিত শিক্ষাকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন।
প্রশ্ন ১২। পুঁজিবাদী সমাজে সাহিত্যপাঠের পরিস্থিতি কেমন তা বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : সাহিত্যের বই কেনা যেখানে অপচয় ও অনর্থক মনে হয় সেখানে সাহিত্যপাঠের পরিস্থিতি সমাজে যথার্থই নাজুক বলে প্রতীয়মান হয়।
পুঁজিবাদী সমাজের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি হলাে- শিক্ষা বা জ্ঞান কেবল অর্থ উপার্জনের জন্যই প্রয়ােজনীয়। মননশীলতা আর বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান অর্জনের জন্য কারও তেমন কোনাে আগ্রহ দেখা যায় না। ব্যবসায়িক স্বার্থে অর্থ ব্যয় করতে কেউ কার্পণ্য না করলেও সাহিত্য বা কাব্যচর্চার জন্য কানাকড়িও খরচ করতে সবার অনীহা দেখা যায়।
আরও,
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ সুভা
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ বই পড়া
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ অভাগীর স্বর্গ
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ পল্লিসাহিত্য
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ আম আঁটির ভেঁপু
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ প্রবাস বন্ধু
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ মমতাদি
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ পয়লা বৈশাখ
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ একাত্তরের দিনগুলো