প্রশ্ন ১। পাশের দশকব্যাপী বাঙালিদের কী প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতিকাল ছিল?
উত্তর : পাশের দশকব্যাপী বাঙালিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার, প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতিকাল ছিল।
প্রশ্ন ২। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান কী?
উত্তর : ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা ও ছাত্রসমাজের ১১ দফার প্রেক্ষিতে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ১৯৬৯ সালে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে অভ্যুত্থান ঘটেছিল তাকে উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান বলে।
প্রশ্ন ৩। বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি কী?
উত্তর : ১৯৬৬ সালের ৬ দফা কর্মসূচিকে আইয়ুব সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি’ বলে আখ্যায়িত করেন।
প্রশ্ন ৪। মৌলিক গণতন্ত্র কাকে বলে?
উত্তর : ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান নিজের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে যে পরােক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি চালু করেন, তা-ই মৌলিক গণতন্ত্র নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ৫। ২১-দফা দাবির প্রথম দাবিটি কী ছিল?
উত্তর : ২১-দফা দাবির প্রথম দাবিটি ছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা হবে।
প্রশ্ন ৬। ২১ মার্চ ১৯৪৮ সাল রেসকোর্স ময়দানে মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ কী ঘােষণা দেন?
উত্তর : ২১ মার্চ ১৯৪৮ সালে রেসকোর্স ময়দানে মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘােষণা দেন, “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।”
প্রশ্ন ৭। ছয় দফা কর্মসূচি কী?
উত্তর : ছয় দফা কর্মসূচি বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ।
প্রশ্ন ৮। বাঙালি জাতীয়তাবাদ কাকে বলে?
উত্তর : বাংলা ভাষা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতিগত পরিচয়ে যে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয় তাকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলে।
প্রশ্ন ৯। কখন আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হন?
উত্তর : ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হন।
প্রশ্ন ১০। কয়টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল?
উত্তর : চারটি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল।
প্রশ্ন ১১। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় কত সালে?
উত্তর : বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭০ সালে।
প্রশ্ন ১২। পাকিস্তানে প্রথম সামরিক আইন জারি করেন কে?
উত্তর : পাকিস্তানে প্রথম সামরিক আইন জারি করেন ইস্কান্দার মির্জা।
প্রশ্ন ১৩। কত সালে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে?
উত্তর : ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে।
প্রশ্ন ১৪। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ কত দিন অব্যাহত ছিল?
উত্তর : ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৭ দিন অব্যাহত ছিল।’
প্রশ্ন ১৫। কার নেতৃত্বে ‘তমদুন মজলিস’ গঠিত হয়েছিল?
উত্তর : অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে ‘তমদুন মজলিস’ গঠিত হয়েছিল।
প্রশ্ন ১৬। ১৯৩৭ সালে মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার বিরােধিতা করেন কে?
উত্তর : ১৯৩৭ সালে মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার বিরােধিতা করেন শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক।
প্রশ্ন ১৭। কাকে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার এক নম্বর আসামি করা হয়?
উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার এক নম্বর আসামি করা হয়।
প্রশ্ন ১৮। যুক্তফ্রন্ট সরকার কত দিন ক্ষমতায় ছিল?
উত্তর : যুক্তফ্রন্ট সরকার ৫৬ দিন ক্ষমতায় ছিল।
প্রশ্ন ১৯। কত সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ঘটেছিল?
উত্তর : ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ঘটেছিল।
প্রশ্ন ২০। কোন সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে?
উত্তর : ১৯৫৩ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
প্রশ্ন ২১। ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুনভাবে কী নামে গঠিত হয়?
উত্তর : ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুনভাবে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ নামে গঠিত হয়।
প্রশ্ন ২২। কার নেতৃত্বে গণআজাদী লীগ গঠিত হয়?
উত্তর : কামরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে গণআজাদী লীগ গঠিত হয়।
প্রশ্ন ২৩। ঐতিহাসিক আগরতলা মামলায় মােট আসামির সংখ্যা কত ছিল?
উত্তর : ঐতিহাসিক আগরতলা মামলায় মােট আসামির সংখ্যা ছিল ৩৫ জন।
প্রশ্ন ২৪। আওয়ামী মুসলিম লীগ দলটি কখন প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর: ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন ২৫। যুক্তফ্রন্টের একুশ দফার একুশতম দফায় কী ছিল?
উত্তর : যুক্তফ্রন্টের একুশ দফার একুশতম দফা ছিল- ‘পর পর তিনটি উপনির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট পরাজিত হলে মন্ত্রিসভা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবে।’
প্রশ্ন ২৬। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানাে একুশে ফেব্রুয়ারি … …’ গানটির রচয়িতা কে?
উত্তর : আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানাে একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটির রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী।
প্রশ্ন ২৭। তমদুন মজলিস কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান?
উত্তর : তমদুন মজলিস একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।
প্রশ্ন ২৮। তমদুন মজলিস কবে গঠিত হয়?
উত্তর :’তমদ্দুন মজলিস ১৯৪৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর গঠিত হয়।
প্রশ্ন ২১। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট গঠনের মূল উদ্যোগ ছিল কার?
উত্তর: ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট গঠনের মূল উদ্যোগ ছিল আওয়ামী লীগের।
প্রশ্ন ৩০। পাকিস্তানের সংবিধানে বাংলা ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় কত সালে?
উত্তর : পাকিস্তানের সংবিধানে বাংলা ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ১৯৫৬ সালে।
প্রশ্ন ৩১। ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’- এর রচয়িতা কে?
উত্তর : ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’- এর রচয়িতা সংগীতশিল্পী আবদুল লতিফ।
প্রশ্ন ৩২। আইয়ুব খান কখন ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান?
উত্তর : আইয়ুব খান ১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ ক্ষমতা থেকে সরে দাড়ান।
প্রশ্ন ৩৩। ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলায় কোন ভাবাদর্শ ছড়িয়ে দেয়?
উত্তর : ভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলায় জাতীয়তাবাদের ভাবাদর্শ ছড়িয়ে দেয়।
প্রশ্ন ৩৪। ১৯৬২ সালের প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ কয় দফা কর্মসূচি ঘােষণা করেছিল?
উত্তর : ১৯৬২ সালের প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ ১৫ দফা কর্মসূচি ঘােষণা করেছিল।
প্রশ্ন ৩৫। আইয়ুব খান কখন ক্ষমতা দখল করে?
উত্তর : ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করেন।
প্রশ্ন ৩৬। মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার প্রস্তাব করেন কে?
উত্তর : মুসলিম লীগের দাপ্তরিক ভাষা উর্দু করার প্রস্তাব করেন মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
প্রশ্ন ৩৭। কত তারিখে যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়?
উত্তর : ১৯৫৩ সালের ১৪ই নভেম্বর যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রশ্ন ৩৮। ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয় কবে?
উত্তর : ১৯৬৫ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর ভারতের সাথে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়।
প্রশ্ন ৩৯। কোন সালে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর: ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন ৪০। বাঙালি জাতীয়তাবাদ কাকে বলে?
উত্তর: বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি, ভাষা, নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ও স্বজাত্যবােধের ফলে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছে তাকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলে।
প্রশ্ন ৪১। কে, কখন ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করেন?
উত্তর : ১৯৬৬ সালের ৫–৬ ফেব্রুয়ারি লাহােরে অনুষ্ঠিত বিরােধী দলসমূহের এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করেন।
প্রশ্ন ৪২। বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি কী?
উত্তর : বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি হলাে মাতৃভাষা বাংলা।
প্রশ্ন ৪৩। কবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় (ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে) সভা অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর : ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় (ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে) সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন ৪৪। ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত কত তারিখে পাকিস্তানের গণপরিষদে “উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ব্যবহারের দাবি জানান?
উত্তর : ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের গণপরিষদের উর্দু ও ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষা ব্যবহারের দাবি জানান।
প্রশ্ন ৪৫। ‘স্মৃতির মিনার’ কবিতাটি কে রচনা করেন?
উত্তর: ‘স্মৃতির মিনার’ কবিতাটি রচনা করেন কবি আলাউদ্দিন আল আজাদ।
প্রশ্ন ৪৬। এ. কে ফজলুল হক কখন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন?
উত্তর : এ. কে ফজলুল হক ১৯৫৪ সালের ৩ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
প্রশ্ন ৪৭। মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তর : মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দিন আহমদ।
প্রশ্ন ৪৮। কিসের জন্য ভাষা আন্দোলন শুরু হয়?
উত্তর: মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য ভাষা আন্দোলন শুরু হয়।
প্রশ্ন ৪৯। পাকিস্তান সৃষ্টির আগে কী নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়?
উত্তর: পাকিস্তান সৃষ্টির আগেই রাষ্ট্রভাষা কী হবে তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ৫০। মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ কখনউর্দু ভাষার প্রস্তাব করেন?
উত্তর: ১৯৩৭ সালে মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দু ভাষার প্রস্তাব করেন।
প্রশ্ন ৫১। কে উর্দু ভাষার বিরােধিতা করেন?
উত্তর: শেরে বাংলা এ. কে ফজলুল হক উর্দু ভাষার বিরােধিতা করেন।
প্রশ্ন ৫২। ১৯৪৭ সালের ১৭ মে রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার প্রস্তাব দেন কে?
উত্তর : ১৯৪৭ সালের ১৭ মে চৌধুরী খালিকুজ্জামান রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার প্রস্তাব দেন।
প্রশ্ন ৫৩। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ উর্দু ভাষার বিপক্ষে কীভাবে প্রতিবাদ জানান?
উত্তর: ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ উর্দু ভাষার বিপক্ষে প্রবন্ধ লিখে প্রতিবাদ জানান।
প্রশ্ন ৫৪। কার নেতৃত্বে তমদুন মজলিশ প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে?
উত্তর : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে তমদুন মজলিশ প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।
প্রশ্ন ৫৫। কোন সম্মেলনে বাংলাকে শিক্ষা ও আইন-আদালতের বাহন করার প্রস্তাব করা হয়?
উত্তর : যুবকর্মী সম্মেলনে বাংলাকে শিক্ষা ও আইন-আদালতের বাহন করার প্রস্তাব কন্স হয়।
প্রশ্ন ৫৬। কখন রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়?
উত্তর : ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রশ্ন ৫৭। রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার সিদ্ধান্ত হলে পূর্ব বাংলায় কী শুরু হয়?
উত্তর : রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে পূর্ব বাংলায় তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়।
প্রশ্ন ৫৮। পাকিস্তান সরকার কীভাবে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে?
উত্তর : পাকিস্তান সরকার ১৪৪ ধারা জারির মাধ্যমে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘােষণা করে।
প্রশ্ন-৫৯। গণপরিষদের কোন সদস্য উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষা ব্যবহারের দাবি জানান?
উত্তর : গণপরিষদের সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষা ব্যবহারের দাবি জানান।
প্রশ্ন ৬০।কখন ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়?
উত্তর: ২৬ ও ২৯শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়।
প্রশ্ন ৬১। সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ কখন পুনঃগঠিত হয়?
উত্তর : ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ পুনঃগঠিত হয়।
প্রশ্ন ৬২। কখন বাংলা ভাষা দাবি দিবস’ পালনের ঘােষণা দেওয়া হয়?
উত্তর: ১১ মার্চ বাংলা ভাষা দাবি দিবস’ পালনের ঘােষণা দেওয়া হয়।
প্রশ্ন ৬৩। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ কখন প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর: ১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন ৬৪। ১৯৪৮ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তর : ১৯৪৮ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন খাজা নাজিমুদ্দিন।
প্রশ্ন ৬৫। পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী কয় দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন?
উত্তর : পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ১৫ মার্চ সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ৮ দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
প্রশ্ন ৬৬। মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ কখন ঢাকায় আসেন?
উত্তর : ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ পাকিস্তানের গভর্নর মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় আসেন।
প্রশ্ন ৬৭। পাকিস্তানের গভর্নর রেসকোর্স ময়দানে কী ঘােষণা দেন?
উত্তর : পাকিস্তানের গভর্নর রেসকোর্স ময়দানে ঘােষণা দেন “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।”
প্রশ্ন ৬৮। কাকে আহ্বায়ক করে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নতুনভাবে গঠিত হয়?
উত্তর: আবদুল মতিনকে আহ্বায়ক করে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ নতুনভাবে গঠিত হয়।
প্রশ্ন ৬৯। ৪ ফেব্রুয়ারি-কোথায় ছাত্র বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়?
উত্তর : ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়।
প্রশ্ন ৭০। শেখ মুজিবকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কোন জেলে স্থানান্তর করা হয়?
উত্তর : শেখ মুজিবকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফরিদপুর জেলে পাঠানাে হয়।
প্রশ্ন ৭১। শফিউর কখন মারা যায়?
উত্তর : ১৯৫২ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি শফিউর মারা যায়।
প্রশ্ন ৭২। প্রথম শহিদ মিনার কাকে দিয়ে উদ্বােধন করা হয়?
উত্তর : ২৩ ফেব্রুয়ারি শফিউরের পিতাকে দিয়ে প্রথম শহিদ মিনার উদ্বােধন করা হয়।
প্রশ্ন ৭৩। আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত গানের লাইনটি কী?
উত্তর : আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত গানের লাইনটি হলােঃ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানাে একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।
প্রশ্ন ৭৪। পাকিস্তানের মােট জনসংখ্যার কত অংশ বাঙালি ছিল?
উত্তর : পাকিস্তানের মােট জনসংখার ৫৬ শতাংশ ছিল বাঙালি।
প্রশ্ন ৭৫। পাকিস্তান শাসনামলে রাজনৈতিক ধারা কত ভাগে বিভক্ত ছিল?
উত্তর : পাকিস্তান শাসনামলে রাজনৈতিক ধারা তিন ভাগে বিভক্ত ছিল ।
প্রশ্ন ৭৬। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী
প্রশ্ন ৭৭। আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দটি কবে বাদ দেওয়া হয়?
উত্তর : ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয়।
প্রশ্ন ৭৮। এ. কে ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কখন শপথ গ্রহণ করে?
উত্তর : ১৯৫৪ সালের ৩ এপ্রিল এ. কে ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
প্রশ্ন ৭১। কে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে?
উত্তর : পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গােলাম মােহাম্মদ ১৯৫৪ সালের ৩০ মে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে।
প্রশ্ন ৮৫। কাকে গৃহবন্দী করা হয়?
উত্তর : শেরে বাংলা এ. কে ফজলুল হককে গৃহবন্দী করা হয়।
প্রশ্ন ৮১। ১৯৫৮ সালে কে সামরিক আইন জারি করেন?
উত্তর : ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা সামরিক আইন জারি করেন।
প্রশ্ন ৮২। সামরিক শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে আইয়ুব খান কী ব্যবস্থা চালু করেন?
উত্তর : সামরিক শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যে আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্র নামে একটি ব্যবস্থা চালু করেন।
প্রশ্ন ৮৩। ১৯৬৫ সালে কার ভােটে আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন?
উত্তর : ১৯৬৫ সালে ৮০ হাজার মেম্বারের ভােটে আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
প্রশ্ন ৮৪। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে কখন পূর্ব বাংলায় আন্দোলন শুরু হয়?
উত্তর : আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৬১ সালে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন শুরু হয়।
প্রশ্ন ৮৫। ছয় দফার প্রবক্তা কে ছিলেন?
উত্তর : ছয় দফার প্রবক্তা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রশ্ন ৮৬। আইয়ুব খান কখন প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন?
উত্তর: ১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১। তমুদুন মজলিস’ কে, কখন এবং কেন গঠন করা হয়?
উত্তর : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে ১৯৪৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তমদুন মজলিশ নামক একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। এ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করা।
প্রশ্ন ২। বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ১৯৫৪ সালে পূর্ববাংলা প্রাদেশিক আইনসভার নির্বাচন পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্ববহ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এ নির্বাচন সমগ্র পাকিস্তানে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের পরাজয়ের ফলে তারা জনগণের কাছে জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলে। এ নির্বাচনে বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালিদের মধ্যে সংগ্রামের নতুন প্রেরণা জোগায়। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযােগ্য নেতৃত্বে বাঙালি জাতীয়তাবাদ আরও বিকশিত ও সুদৃঢ় হয়। তাই ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অত্যধিক।
প্রশ্ন ৩। ১৯৬৯ সালের গণঅ্যুত্থানের ঐতিহাসিক গুরুত্ব লেখ।
উত্তর : পাকিস্তানি শাসনামলে পূর্ব বাংলার সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে সবচেয়ে বড় আন্দোলন ছিল উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। এ অভ্যুত্থানের ফলে পাকিস্তান সরকার আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়। এর ফলে সরকারের ওপর যে মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি হয় তা ৭০-এর নির্বাচনকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন,এ আন্দোলনের ফলেই। শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয় এসময়েই। তাই ইতিহাসে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্ব অনেক বেশি।
প্রশ্ন ৪। আইয়ুব খান প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হয়ে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর জেনারেল আইয়ুব খান ইস্কান্দার মীর্জাকে উৎখাত ও দেশত্যাগে বাধ্য করে ক্ষমতা দখল এবং নিজেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে-অধিষ্ঠিত করেন। তিনি উক্ত পদে বসে যেসব পদক্ষেপ নেন তা হলাে-
১. নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘােষণা;
২. পূর্ব ঘােষিত ১৯৫৯ সালে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচন স্থগিত করা;
৩. দুর্নীতি ও চোরাচালানি দূর করার অঙ্গীকার ব্যক্ত ও ৪. রাজনৈতিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা।
প্রশ্ন ৫। যুক্তফ্রন্ট সরকার কেন ব্যর্থ হয়?
উত্তর : ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। কিন্তু পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের যড়যন্ত্রের কারণে যুক্তফ্রন্টকে ৫৬ দিন ক্ষমতায় থাকার পর ক্ষমতা ছাড়তে হয়। কারণ, পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে মনেপ্ৰাণে গ্রহণ করতে পারে নি। তাই তারা যড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছিল। আর এরই ধারাবাহিকতায় আদমজী পাটকল ও কর্ণফুলীতে বাঙালি-অবাঙালি দাঙ্গকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে।
প্রশ্ন ৬। শেখ মুজিবকে ফরিদপুর জেলে পাঠানাে হয় কেন?
উত্তর : ভাষা আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধুকে বিনা বিচারে কারাগারে আটক রাখা হলে কারাগারের ভিতর থেকেও তিনি নেতৃবৃন্দকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিতেন। ঢাকা মেডিকেলে বন্দী হিসেবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি আন্দোলনের পথনির্দেশনা দিতেন। তাই পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী ভীত হয়ে বঙ্গবন্ধু ও মহিউদ্দীন আহম্মদকে ফরিদপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।
প্রশ্ন ৭। আগরতলা মামলা সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : পাকিস্তান সরকার ১৯৬৮ সালের জানুয়ারিতে শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে মােট ৩৫ জন সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলাটি ইতিহাসে আগরতলা মামলা বলে পরিচিতি লাভ করে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযােগ ছিল যে, তারা সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে পাকিস্তান রাষ্ট্র থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য। ভারতের আগরতলায় ষড়যন্ত্র করেছিলেন। এ মামলায় বিচারকার্যের জন্য একটি স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।
প্রশ্ন ৮। তমদুন মজলিস কর্তৃক গঠিত সংগ্রাম পরিষদের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : তমদুন মজলিস কর্তৃক গঠিত সংগ্রাম পরিষদ ভাষা আন্দোলনের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ১৯৪৭ সালে ডিসেম্বর মাসে করাচিতে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদে সারাদেশে সভা, মিছিল, ধর্মঘট পালিত হয়। তখন তমদুন মজলিস কর্তৃক গঠিত সংগ্রাম পরিষদ’ রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ নামে রূপান্তরিত হয়। এ সংগ্রাম পরিষদ ৮ দফা দাবিতে স্বাক্ষর করতে খাজা নাজিমুদ্দীনকে বাধ্য করে। এতে বলা হয় যে, পূর্ব বাংলার ইংরেজির স্থলে বাংলাকে সরকারি ভাষা ও শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা হবে। যার প্রেক্ষিতে বাংলা ভাষা জাতীয় ভাষার মর্যাদা পায় ।
প্রশ্ন ৯। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কী?
উত্তর : ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ বলা হয়। ইতিহাস পাঠে আমরা জানতে পারি যে, ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৯৫৩ সাল থেকে প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখটি ভাষা দিবস’ বা ‘শহিদ দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিবেচনায় জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো (UNESCO) ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর দিবসটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। ফলে ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর গােটা বিশ্বে ২১শে ফেব্রুয়ারি দিবসটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
প্রশ্ন ১০। ভাষা আন্দোলনে শেখ মুজিবের ভূমিকা উল্লেখ কর।
উত্তর : ভাষা আন্দোলনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা প্রশংসনীয়। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বাংলা ভাষা দিবস’ পালনের ঘােষণা দেওয়া হয় এবং পিকেটিং করা অবস্থায় শেখ মুজিব, শামসুল হক, অলি আহাদসহ ৬৯ জনকে গ্রেফতার করলে ১২-১৫ মার্চ ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়। পরবর্তীতে কারাবন্দী শেখ মুজিব ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ও ২১ ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি পালনের জন্য ছাত্র ও আওয়ামী মুসলিম লীগের নেতা কর্মীদের ডেকে পরামর্শ দেন। এভাবে ভাষা আন্দোলনে বিভিন্নভাবে শেখ মুজিব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
প্রশ্ন ১১। ঐতিহাসিক ৬ দফার গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিকসহ প্রায় সকল অধিকারের দাবি।
এ ছয় দফা কর্মসূচি বাঙালির চেতনামূলে বিস্ফোরণ ঘটায়। এ কর্মসূচিতে স্বাধীনতার কথা বলা না হলেও এটি বাঙালিদের স্বাধীনতার । মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। তাই ঐতিহাসিক ছয় দফার গুরুত্ব অনেক।
প্রশ্ন ১২। পাকিস্তানের সামরিক শাসন জারি হওয়ার কারণ বর্ণনা কর।
উত্তর : ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পরে পাকিস্তানে শক্তিশালী কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। কেন্দ্র ও প্রাদেশিক কাঠামােতে দুর্বল সম্পর্ক, ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন, সামরিক-বেসামরিক ষড়যন্ত্র এবং সংসদের অ-কার্যকারিতা সরকারকে দুর্বল করে তােলে। এরই মধ্যে সাংসদদের মারামারিতে স্পিকার শাহেদ আলী আঘাত পেয়ে নিহত হয়। এমতাবস্থায় ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা সামরিক শাসন আইন জারি করেন।
প্রশ্ন ১৩। যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার চারটি দফা উল্লেখ কর।
উত্তর : ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের দেওয়া ২১ দফার ৪টি দফা হলাে-
১. বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করতে হবে;
২. শাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক করতে হবে;
৩. সকল প্রকার দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে;
৪. বাস্তুহারাদের পুনর্বাসন করতে হবে।
প্রশ্ন ১৪। মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক তাৎপর্য গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : বিশ্ব ইতিহাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বাংলাদেশ হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের মধ্যে প্রথম দেশ, যে দেশ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান নেতা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার যে ডাক দেন এবং ২৫ মার্চ রাতে অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার যে ঘােষণা প্রদান করেন, ১৬ ডিসেম্বর তা বাস্তবে পূর্ণতা পায়। মুক্তিযুদ্ধের ফলেই আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, যা বিশ্বের মানচিত্রে স্থান পেয়েছে। তাই মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক তাৎপর্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন ১৫। পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের প্রশাসনিক বৈষম্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পাকিস্তানের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় পূর্ব পাকিস্তানের ভূমিকা ছিল অতি নগণ্য। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বৈষম্য ছিল ব্যাপক। ১৯৬৬ সালে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের গেজেটেড কর্মকর্তা ছিল যথাক্রমে ১,৩৩৮ ও ৩,৭০৮ জন এবং নন-গেজেটেড কর্মকর্তা:ছিল যথাক্রমে ২৬,৩১০ এবং ৮২,৯৪৪ জন। ১৯৬২ সালে ফরেন সার্ভিসে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব ছিল মাত্র ২০.৮%। বিদেশে ৬৯ জন রাষ্ট্রদূতের মধ্যে ৬০ জনই ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের।
প্রশ্ন ১৬। ভাষা আন্দোলন কীভাবে আমাদের জাতীয়তাবাদ বিকাশে ভূমিকা রাখে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতির জীবনে একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। বাঙালি জাতির জীবনে এ আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ এ আন্দোলনের সিঁড়ি বেড়ে বাঙালির জীবনে আসে ৫৪-এর নির্বাচন, ৬৬-এর ছয় দফা, ৬৯-এর গণঅভুথান সর্বোপরি আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ। এ আন্দোলন বাঙালিদের এক নবজাগরণে দীক্ষিত করে এবং পরবর্তী সকল আন্দোলনের অনুপ্রেরণা জোগায়। পাকিস্তান সৃষ্টির পর এ আন্দোলনই সর্বপ্রথম বাঙালি জনগােষ্ঠীকে একটি জাতীয় প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসে।
প্রশ্ন ১৭। স্বাধীনতাযুদ্ধে নারী সমাজ কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ভূমিকা ছিল গৌরবােজ্জ্বল। মুক্তিযােদ্ধা শিবিরে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা অস্ত্র চালনা ও গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। অপরদিকে সহযােদ্ধা হিসেবে আহত মুক্তিযােদ্ধাদের সেবা, মুক্তিযােদ্ধাদের আশ্রয়দান ও তথ্য সরবরাহ করে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এদেশের অগণিত নারী মুক্তিসেনা।
প্রশ্ন ১৮। পাকিস্তানি শাসনামলে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে কী ধরনের বৈষম্য ছিল?
উত্তর : পাকিস্তানি শাসনামলে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রেও অনেক বৈষম্য পরিক্ষিত হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির আগে পূর্ব বাংলা পশ্চিম পাকিস্তানের চাইতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ও শিক্ষায় এগিয়ে ছিল। পাকিস্তান সৃষ্টির পর শিক্ষা খাতে বরাদে পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিগুণের বেশি লাভ করতে থাকে। ফলে পশ্চিম পাকিস্তানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার জন্য নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। এভাবেই পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যের সৃষ্টি করে।
প্রশ্ন ১৯। “পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্বেই ভাষা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।” – ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পাকিস্তান সৃষ্টির আগেই ভাষা কী হবে তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ১৯৩৭ সালে মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ মুসলিম লীগের দাপ্তরিক, ভাষা উর্দু করার প্রস্তাব করলে এ, কে ফজলুল হক এর বিরােধিতা করেন। ১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাসে পাকিস্তান নামক একটি রাষ্ট্রের জন্ম প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় তখনই বিতর্কটি পুনরায় শুরু হয়। ১৯৪৭ সালের ১৭ মে তারিখ চৌধুরী খলীকুজ্জামান ” এবং “জুলাই মাসে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দেন।
প্রশ্ন ২০। শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষার সিদ্ধান্তের ফলাফল ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাসে করাচিতে অনুষ্ঠিত এক শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে পূর্ব বাংলায় তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি ওঠে, লেখালেখি শুরু হয় এবং ডিসেম্বর মাসেই রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ নতুনভাবে গঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সভাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পাকিস্তান সরকার ১৪৪ ধারা জারিসহ সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘােষণা করে। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ছাত্র-জনতা মিছিল করে এবং তাদের বুকের তাজা রক্তে রাষ্ট্রভাষার যকৃতি পায় বাংলা ভাষা।
প্রশ্ন ২১। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের দাবি উপেক্ষিত পরবর্তী পরিস্থিতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ১৯৪৮ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ গণপরিষদের ভাষা হিসেবে উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলার ব্যবহারের দাবি জানান। তার দাবি অগ্রাহ্য হলে ২৬ ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ধর্মঘট পালিত হয়। ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ পুনঃগঠিত হয়। ১১ মার্চ বাংলা ভাষা দাবি দিবস পালনের ঘােষণা দেওয়া হয়। ঐদিন সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান। মুসলিম লীগ এ কর্মসূচি পালনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পিকেটিং অবস্থায় শেখ মুজিব, শামসুল হক, অলি আহমদসহ ৬৯ জনকে গ্রেফতার করলে ঢাকায় ১৩-১৫ মার্চ ধর্মঘট পালিত হয়।
প্রশ্ন ২২। যত্রজনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ২০ ফ্রেব্রুয়ারি সরকারি এক ঘােষণায় ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪৪ ধারা জারিসহ সভাসমাবেশ মিছিল এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে। আন্দোলনে নেতৃবৃন্দ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা নিয়ে অনেক আলােচনা শেষে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২১শে ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ১০ জন করে মিছিল শুরু করা হবে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের দিক থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল এগিয়ে চলে।
প্রশ্ন ২৩। প্রথম শহিদ মিনার উদ্বােধন ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ছাত্রজনতা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করলে পুলিশ প্রথমে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে, মিছিলে লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে গুলিবর্ষণ শুরু করলে আবুল বরকত, জব্বার, রফিক, সালামসহ আরও অনেকে শহিদ হন, অনেকে আহত হন। ঢাকায় ছাত্র হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে ২২ ফেব্রুয়ারি বিশাল র্যালি বের হয় এবং পুলিশের হামলায় শফিউর মারা যায়। শহিদদের স্মৃতি অমর করে রাখার জন্য ঢাকায় ২২ ফেব্রুয়ারি ছাত্রজনতা মেডিকেল কলেজের সামনে একটি শহিদ মিনার নির্মাণ করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি শফিউরের পিতাকে দিয়ে প্রথম শহিদ মিনার উদ্বোধন করা হয়।
প্রশ্ন ২৪। শহিদ দিবসকে উপলক্ষ করে গীতিকার ও কবিগণের প্রতিক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আবদুল গাফফার চৌধুরী রচনা করেন আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানাে ২১শে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’ সংগীতশিল্পী আবদুল লতিফ রচনা ও সুর করেন, ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়, তারা ঢাকা শহর রক্তে ভাসাইলি।’ ড. মুনীর চৌধুরী জেলে বসে রচনা করেন, ‘কবর’ নাটক, জহির রায়হান রচনা করেন ‘আরেক ফালুন’ উপন্যাসটি। ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পূর্ব বাংলায় শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতিচর্চায় পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
প্রশ্ন ২৫। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনের বর্ণনা দাও।
উত্তর : পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক নির্বাচনে মুসলিম লীগের শােচনীয় পরাজয় ঘটানাের লক্ষ্যে ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর, আওয়ামী লীগ যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। ২১ দফা প্রণয়ন শেষে ৪টি দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। দল ৪টি ছিল আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজামে ইসলামী ও গণতান্ত্রিক দল। ১৯৫৪ সালের মার্চ মাসে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জনগণ যুক্তফ্রন্টের ২১ দফাকে তাদের স্বার্থরক্ষার সনদ বলে বিবেচনা করে। পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি। মুসলিম লীগ মাত্র ৯টি আসন লাভ করে। বাকি আসন অন্যরা পায় ।
প্রশ্ন ২৬। যুক্তফ্রন্ট সরকারের বর্ণনা কর।
উত্তর : ১৯৫৪ সালের ৩ এপ্রিল যুক্তফ্রন্টভুক্ত কৃষক শ্রমিক পার্টির নেতা এ. কে ফজলুল মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। যুক্তফ্রন্ট সরকার মাত্র ৫৬ দিন ক্ষমতায় ছিল। পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করতে পারেননি। তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয়। আদমজী পাটকল ও কর্ণফুলিতে বাঙালি-অবাঙালি দাঙ্গাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গােলাম মােহাম্মদ ১৯৫৪ সালের ৩০ মে যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বরখাস্ত করে। শেরে বাংলাকে গৃহবন্দী করা হয়, শেখ মুজিবসহ তিন হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রশ্ন ২৭। পাকিস্তানের সামরিক শাসনের ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর : পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে নস্যাৎ করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানভিত্তিক সামরিক-বেসামরিক শাসনগােষ্ঠী তৎপরতা চালিয়ে যেতে থাকে। ফলে সংসদ ও সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। কেন্দ্রে এবং প্রদেশে ঘন ঘন সরকারের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। ষড়যন্ত্রকারী গােষ্ঠী ক্ষমতা দখলের জন্য অপেক্ষায় ছিল। পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদের পরস্পরবিরােধী ‘এমএল এদের মধ্যে মারামারির মতাে এক অপ্রীতিকর ঘটনায় ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলী গুরুতর আহত হয়ে পরবর্তীতে হাসপাতালে মারা যান। এ সুযােগে ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা সামরিক আইন জারি করেন।
প্রশ্ন ২৮। পূর্ব বাংলার প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীতে বাঙালিদের নিয়ােগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বিরাজ করেছিল। মােট অফিসারের মাত্র ৫%, সাধারণ সৈনিকদের মাত্র ৪%, নৌবাহিনীর উচ্চপদে ১৯%, নিম্নপদে ৯%, বিমান বাহিনীর পাইলটদের ১১%, টেকনিশিয়ানদের ১.৭% ছিলেন বাঙালি।
প্রশ্ন ২৯। ছয় দফা কর্মসূচির পটভূমি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম সুস্পষ্ট রূপলাভ করে ৬ দফার স্বায়ত্তশাসনের দাবিনামায়। ১৯৬৬ সালের ৫-৬ ফেব্রুয়ারি লাহােরে অনুষ্ঠিত বিরােধী দলসমূহের এক সম্মেলনে যােগদান করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান। সেখানে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য ৬ দফা তুলে ধরেন।
প্রশ্ন ৩০। ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা কেন দায়ের করা হয়?
উত্তর : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং তার বিশ্বাস ছিল শেষপর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম’ব্যতীত বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব হবে না। তাই তিনি সশস্ত্র পশ্বায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সে সময়ে গােপনে গঠিত বিপ্লবী পরিষদের সদস্যদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সম্মতি দিয়েছিলেন। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হওয়ার পূর্বেই তা ফাঁস হয়ে যাওয়ার কারণে ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা দায়ের হয়।