প্রশ্ন ১। প্রত্নতাত্ত্বিক অর্থ কী?
উত্তর : প্রত্নতাত্ত্বিক অর্থ পুরাতত্ত্ববিদ।
প্রশ্ন ২। খনা কে?
উত্তর : খনা হলেন একজন জ্যোতিষী।
প্রশ্ন ৩। ‘পল্লিসাহিত্য’ কী জাতীয় রচনা?
উত্তর : ‘পল্লিসাহিত্য প্রবন্ধ জাতীয় রচনা ।
প্রশ্ন ৪। খনার বচন কী?
উত্তর : প্রাচীন ভারতের প্রখ্যাত নারী জ্যোতিষী খনার উপদেশমূলক বাণী বা কথাগুলােই খনার বচন নাম পরিচিত।
প্রশ্ন ৫। রােমাঁ রােলাঁ কার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিল?
উত্তর : রােমাঁ রােলাঁ মদিনা বিবির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিল ।
প্রশ্ন ৬। আধুনিক শিক্ষার কর্মনাশা স্রোতে কী হারিয়ে যাচ্ছে?
উত্তর : আধুনিক শিক্ষার কর্মনাশা স্রোতে পল্লির উপকথাগুলাে হারিয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন ৭। দেওয়ান মদিনার রচয়িতা কে?
উত্তর : দেওয়ান মদিনা’র রচয়িতা হলেন মনসুর বয়াতি।
প্রশ্ন ৮। ভাটিয়ালি গান কী?
উত্তর : বাংলার পল্লিগীতির একটি বিশিষ্ট ধারার নাম ভাটিয়ালি।
প্রশ্ন ৯। আজ আমাদের কোনটি দরকার?
উত্তর : শহুরে সাহিত্যের বালাখানার পাশে গেঁয়াে সাহিত্যের জোড়াবাংলা ঘর তােলা।
প্রশ্ন ১০। নৃতত্ত্ব কী?
উত্তর : মানুষের উৎপত্তি ও বিকাশ সংক্রান্ত বিজ্ঞান ।
প্রশ্ন ১১। মদিনা বিবি কে?
উত্তর : মদিনা বিবি ‘দেওয়ানা-মদিনা’ লােকগাথার নায়িকা ।
প্রশ্ন ১২। পল্লিসাহিত্য প্রবন্ধে লেখকের মতে শহুরে সাহিত্য কয় আনা?
উত্তর : ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখকের মতে শহুরে সাহিত্য পনেরাে আনা।
প্রশ্ন ১৩। লােকমুখে প্রচলিত ও বিশ্বাসযােগ্য বাক্যকে কী বলে?
উত্তর : লােকমুখে প্রচলিত ও বিশ্বাসযােগ্য বাক্যকে বলে প্রবাদবাক্য।
প্রশ্ন ১৪। পল্লির পরতে পরতে কী ছড়িয়ে আছে?
উত্তর : পল্লির পরতে পরতে সাহিত্য ছড়িয়ে আছে।
প্রশ্ন ১৫। শহুরে বা নাগরিক সাহিত্য বলতে কী বােঝ?
উত্তর : শহর বা নগরের মানুষের জীবন নিয়ে রচিত সাহিত্যকে।নাগরিক সাহিত্য বলে।
প্রশ্ন ১৬। ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে সবার সম্পত্তি কোনটি?
উত্তর : ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে সবার সম্পত্তি হচ্ছে পল্লিসাহিত্যের বিভিন্ন উপাদান।
প্রশ্ন ১৭। কিসের কঙ্কালবিশেষ এখনও অবশিষ্ট আছে?
উত্তর : পল্লিসাহিত্যের কঙ্কালবিশেষ এখনও অবশিষ্ট আছে।
অনুধাবন মূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন ১। প্রবাদ-প্রবচন বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রবাদ-প্রবচন বলতে জীবন ও জগৎ সম্বন্ধে প্রয়ােজনীয় কোনাে অভিজ্ঞতা হৃদয়গ্রাহী ভাষারূপ লাভ করাকে বােঝায়।
‘প্রবচন’ মানে প্রকৃষ্ট যে বচন। সংক্ষেপে ও সুন্দরভাবে অনেক ক্ষেত্রে ছন্দমিল কিংবা উপমা প্রভৃতি ব্যবহার করে, প্রবাদে সমাজের বাংলা কোনাে মূল্যবান অভিজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। আমাদের দৈনন্দিন কথাবার্তায় প্রবাদ-প্রবচনগুলাে অলংকারের কাজ করে। এতে বাক্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। যেমন- ‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা নেই’; ‘আপনি বাঁচলে বাপের নাম’ ইত্যাদি। প্রবাদ-প্রবচনের মাধ্যমে অতীতের নানাবিষয়, পরিপ্রেক্ষিতে এগুলাের প্রয়ােগ থেকে বাস্তব জীবনের শিক্ষা লাভ হয়।
প্রশ্ন ২। “আজ দুঃখে দৈন্যে প্রাণে সুখ নেই।” কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : “আজ দুঃখে দৈন্যে প্রাণে সুখ নেই।” এ উক্তিটি দ্বারা আমাদের পল্লিসাহিত্যের বর্তমান দৈন্যদশার কথা প্রকাশ করা হয়েছে।
এখানে আমাদের উদাসীনতা ও পারিপার্শ্বিকতার দুরাচারে পল্লিসাহিত্য আজ যে বিপন্ন তাই বােঝানাে হয়েছে। বাংলা পল্পির প্রত্যেক পরতে পরতে সাহিত্য ছড়িয়ে আছে। অথচ আমাদের সচেতন সাহিত্য সমাজ পল্লির অমূল্য সেসব সাহিত্যের কদর করছে না। নব্য শহুরে সাহিত্যের প্রতি তারা বেশি অনুরাগী হয়ে উঠেছে। যারা পল্লির এসব সাহিত্য তৈরি ও চর্চা করত তারাও আজ দুঃখ-দৈন্যে আক্রান্ত। আমাদের মনে সুখের পরশ নেই।
প্রশ্ন ৩। “পল্লিগ্রামে শহরের মতাে গায়ক, বাদক, নর্তক না থাকলেও প্রশ্ন তার অভাব নেই”- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : “পল্পিগ্রামে শহরের মতাে গায়ক, বাদক, নর্তক না থাকলেও তার অভাব নেই”- উক্তিটি দ্বারা এটিই বােঝানাে হয়েছে যে, শহরে গায়ক, বাদক আর নর্তকের মতাে গ্রামের প্রকৃতির মধ্যেও নানা উপাদান বিদ্যমান।
পল্লি মানেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অবাধ ছড়াছড়ি। গ্রামের শ্যামল-কোমল সবুজরাজির মিলনে, নদীর কুলকুল শব্দে, পাখির নিরন্তর । কলকাকলিতে, পাতার মর্মর ধ্বনিতে, ফসলের মাঠে বাতাস বয়ে যাওয়ার সুরে এক মায়াময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শহরের তীব্র কোলাহলের মাঝে গায়ক-নর্তকদের শিল্পধ্বনি ম্রিয়মাণ। পল্লির পরতে পরতে শিল্পের হর্ষধ্বনি, প্রতিনিয়ত স্বতঃস্ফূর্ত। পল্লিতে কবিয়াল, গায়ক, বাদকের অভাব নেই। আলােচ্য লাইন দ্বারা লেখক সেটিই নির্দেশ করেছেন।
প্রশ্ন ৪। আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপ কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আরব্য উপন্যাসের সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক গল্প ‘আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপ’।
এই গল্পটির ঘটনাস্থল চীনদেশ। এক গরিব দুঃখিনী মায়ের একমাত্র ছেলে আলাউদ্দিন। সে এক চতুর জাদুকরের বিস্ময়কর প্রদীপ লাভ করে। এ প্রদীপে ঘষা দিলেই এক মহাশক্তিধর দৈত্য এসে হাজির হয়। আর আলাউদ্দিনের আদেশ অনুযায়ী অলৌকিক সব কাজ সে মুহূর্তেই করে দেয়। এভাবে সেই প্রদীপের বদৌলতে আলাউদ্দিন প্রচুর ধনসম্পদ ও বিশাল এক রাজপ্রাসাদের অধিকারী হয়। তখন তার মায়ের দুঃখও দূর হয়।
প্রশ্ন ৫। প্রবাদবাক্য আমাদের জীবনে কীভাবে জড়িয়ে আছে?
উত্তর : প্রবাদবাক্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ওতপ্রােতভাবে জড়িয়ে আছে।
পল্লিসাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান প্রবাদবাক্য যুগ যুগ ধরে । মানুষ প্রাত্যহিক জীবনের কথাবার্তায় প্রবাদবাক্য ব্যবহার করে আসছে। প্রবাদবাক্য আমাদের বাটুতা ও চিকর্ষের দীপ্তিকে প্রকাশ করে। শুধু কথার মধ্যেই প্রবাদের ব্যবহার সীমাবদ্ধ নয়। সাহিত্যের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কথাসাহিত্যের শৈল্পিক উপস্থাপনায় প্রবাদ-প্রবচন একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ।
প্রশ্ন ৬। Proletariat সাহিত্য বলতে কী বােঝ?
উত্তর : Proletariat সাহিত্য হচ্ছে অত্যাচারিত শ্রমজীবী দুঃখী মানুষের সাহিত্য।
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তার ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে অভিনব ভাব বিন্যাসের মধ্য দিয়ে পল্লিসাহিত্যের বিশিষ্ট দিকগুলাে উপস্থাপন করেছেন। এখানে তিনি Proletariat সাহিত্যের কথা বলেছেন। যে সাহিত্যের আত্মা ইট-পাথরের ও লােহার কৃত্রিম বাঁধন থেকে মুক্ত। যে সাহিত্য মাটির ঘরে, মাটির মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসিকান্না, আনন্দ-বেদনা, আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে রচিত, তাকেই তিনি Proletariat সাহিত্য বলেছেন। এ ধরনের সাহিত্যে শ্রমজীবী শ্রেণির দুঃখ-বেদনার কথা প্রতিফলিত হয়।
প্রশ্ন ৭। ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখকের অন্তর্বেদনার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখকের অন্তর্বেদনার কারণ শহরে পল্লিসাহিত্যের বিলুপ্তি ।
নানা লেখকের মতে, এদেশে একদিন পল্লিসাহিত্যের সন্ডার ছিল । উপযুক্ত গবেষক ও আগ্রহী সাহিত্যিকদের উদ্যোগের অভাবে শ্যামল- সেগুলাে সংগৃহীত না হওয়ায় আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে নিরন্তর আমরা বঞ্চিত হচ্ছি পল্লির মূল্যবান প্রাচীন সম্পদ থেকে। এটিই লেখকের অন্তর্বেদনার মূল কারণ।
প্রশ্ন ৮। পল্লিসাহিত্যে উল্লিখিত ‘পিয়ে বসে পেঁড়াের খবর’ পল্লির প্রবাদটি প্রাচীন ইতিহাসের কোন গােপন কথা স্মরণ করিয়ে দেয়?
উত্তর : পিঁড়েয় বসে পেঁড়াের খবর’ প্রবাদটি অতীত ইতিহাসের দ্বারা একটি বিশেষ সময়কে স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রবাদ হলাে দীর্ঘদিন ধরে লােকমুখে প্রচলিত বিশ্বাসযােগ্য কথা বা জনশ্রুতি। জীবন ও জগৎ সম্বন্ধে কোনাে প্রয়ােজনীয় অভিজ্ঞতা যখন হৃদয়গ্রাহী ভাষারূপ লাভ করে লােকসাধারণের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী জনপ্রিয়তা পায়, সেই ভাষারূপকে বলে প্রবাদ-প্রবচন। ‘পিঁড়েয় বসে পেঁড়াের খবর’ একটি প্রাচীন প্রবাদ। এ প্রবাদটি প্রাচীন ইতিহাসের সেই সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, এই প্রবাদ যখন প্রচলিত হয় তখন পাণ্ডুয়া ছিল বঙ্গের রাজধানী।
প্রশ্ন ৯। পল্লিসাহিত্যের উপকরণের দৃষ্টান্ত দাও।
উত্তর : পল্লিসাহিত্যের উপকরণ প্রধানত পল্লির মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িত বিষয় ও অনুভূতি।
গ্রামীণ নর-নারীর অনুভূতিই পল্লিসাহিত্যের মূল উপকরণ। তাই পল্লিবাসীর দৈনন্দিন জীবনযাপনের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে তালতমাল, আঁকাবাঁকা নদ-নদী, পল্লির মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার কথা, আনন্দ-বেদনার কথা, মান-অভিমানের কথা, রাখাল-কৃষকের কথা, তাদের প্রেম-বিরহের কথা প্রভৃতি পল্লিসাহিত্যের প্রধান উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন ১০। নাগরিক সাহিত্যের উপাদানের দৃষ্টান্ত দাও।
উত্তর : নাগরিক সাহিত্যের উপাদান প্রধানত শহুরে মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িত বিষয় ও অনুভূতি।
আজকাল বাংলা সাহিত্য বুলে যে সাহিত্য চলছে তার পনেরাে আনাই শহুরে সাহিত্য বা নাগরিক সাহিত্য। অভিজাত শ্রেণির লােকদের নিয়ে নাগরিক সাহিত্য গড়ে উঠেছে। নাগরিক সাহিত্যের উপাদানগুলাের মধ্যে রয়েছে রাজ-রাজড়ার কথা, বাবু-বিবির কথা, মােটরগাড়ির কথা, সিনেমা-থিয়েটারের কথা, বিজলি বাতির কথা ইত্যাদি।
প্রশ্ন ১১। পল্পিসাহিত্যে হিন্দু-মুসলমান ভেদ নেই কেন?
উত্তর : সর্বজনীনতা পল্লিসাহিত্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হওয়ায় হিন্দু-মুসলমান বলে কোনাে ভেদ নেই।
হিন্দু-মুসলমান শুধু নয়, জাতি-ধর্ম-গােষ্ঠী বলে কোনাে ভেদজ্ঞানই পল্লিসাহিত্যে স্বীকৃত নয়। এর মূল কারণ হচ্ছে পল্লিসাহিত্যে রয়েছে সকল মনের প্রভাব। এ সাহিত্য কোনাে ব্যক্তি বা গােষ্ঠীর সৃষ্টি যেমন নয়, তেমনি গােষ্ঠীবিশেষের সম্পদ হিসেবে গৃহীতও হয় না। এতে ধর্ম প্রাধান্য পায়নি। মানুষের মনের সামগ্রিক ছবিই এখানে প্রাধান্য পেয়েছে।
আরও,
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ সুভা
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ বই পড়া
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ অভাগীর স্বর্গ
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ পল্লিসাহিত্য
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ আম আঁটির ভেঁপু
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ প্রবাস বন্ধু
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ মমতাদি
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ পয়লা বৈশাখ
▶জ্ঞান ও অনুধাবন মূলকঃ একাত্তরের দিনগুলো