পল্লিজননী কবিতার জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

পল্লিজননী কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। পল্লিজননী’ কবিতায় কোন ফলের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : পল্লিজননী’ কবিতায় বেথুল ফলের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ২। কবি জসীমউদ্দীন কোন কবি নামে খ্যাত?

উত্তর : কবি জসীমউদ্দীন ‘পল্লিকবি’ নামে খ্যাত।

প্রশ্ন ৩। পল্লিজননী’ কবিতাটি কবি জসীমউদ্দীনের কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে?

উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতাটি জসীমউদ্দীনের ‘রাখালী” কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে।

প্রশ্ন ৪। ‘পল্লিজননী’ কবিতায় সাত-নরি শিকায় কী বেঁধে রাখার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতায় সাত-নরি শিকায় ঢ্যাপের মােয়া বেঁধে রাখার কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ৫। রুগ্‌ণ ছেলের শিয়রে কে জাগছে?

উত্তর : রুগুণ ছেলের শিয়রে জাগছে মাতা।

প্রশ্ন ৬। আড়ং’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : ‘আড়ং’ শব্দের অর্থ হাট বা বাজার বা মেলা।

প্রশ্ন ৭। ঘরের চালে কী ডাকে?

উত্তর : ঘরের চালে হুতুম ডাকে। 

প্রশ্ন ৮। রুগণ ছেলের সুস্থতার জন্য পল্লিজননী’ কবিতার মা কী মানত করেছিল?

উত্তর : রুগণ ছেলের সুস্থতার জন্য ‘পল্লিজননী’ কবিতার মা নামাজের ঘরে মােমবাতি ও দরগায় দান মানত করেছিল। 

প্রশ্ন ৯। ঘরের চালে কী ডাকে?

উত্তর : ঘরের চালে হুতুম ডাকে।

প্রশ্ন ১০। পচান পাতার ঘ্রাণ কোথা থেকে আসছে?

উত্তর : পচান পাতার ঘ্রাণ আসছে এঁদো ডােবা থেকে।

প্রশ্ন ১১। “পল্লিজননী” কবিতার কবির নাম লেখ।

উত্তর : পল্লিজননী’ কবিতার কবির নাম জসীমউদ্দীন।

প্রশ্ন ১২। কিশাের ছেলেটির বন্ধুদের নাম কী?

উত্তর : কিশাের ছেলেটির বন্ধুদের নাম করিম ও আজিজ।

প্রশ্ন ১৩। বিস্তর জোনাকি কোথায়?

উত্তর : বিস্তর জোনাকি আছে বাঁশবাগানে।

প্রশ্ন ১৪। জসীমউদ্দীনের কোন কাব্যটি বিভিন্ন বিদেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে?

উত্তর : নক্সী-কাঁথার মাঠ’ কাব্যটি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

প্রশ্ন ১৫। জসীমউদদীন ডি-লিট ডিগ্রি ছাড়া আর কোন পুরস্কার লাভ করেন?

উত্তর : জসীমউদ্দীন ডি-লিট ডিগ্রি ছাড়া একুশে পদক লাভ করেন।

প্রশ্ন ১৬। জসীমউদদীন কত সালে কবি মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তর : জসীমউদ্দীন ১৯৭৬ সালে কবি মৃত্যুবরণ করেন।

প্রশ্ন ১৭। কত তারিখে জসীমউদ্দীনের মৃত্যু হয়?

উত্তর : ১৯৭৬ সালের ১৪ মার্চ জসীমউদ্দীন মৃত্যুবরণ করেন।

প্রশ্ন ১৮। জসীমউদ্দীন কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তর : জসীমউদ্দীন ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

প্রশ্ন ১৯। নিবু নিবু প্রদীপের সাথে কী হয়?

উত্তর : নিবু নিবু প্রদীপের সাথে বিরহী মায়ের একেলা পরান দোলে।

প্রশ্ন ২০। ঘরটির বেড়ার ফাক দিয়ে কী আসছে?

উত্তর : ঘরটির বেড়ার ফাঁক দিয়ে শীতের বাতাস আসছে।

প্রশ্ন ২১। ছেলের শিয়রে বসে মাতা মনে মনে কী গুনছে?

উত্তর : ছেলের শিয়রে বসে মাতা মনে মনে ছেলের আয়ু গুনছে।

প্রশ্ন ২২। রুগণ ছেলেটির ঘুম না এলে মাতা কী করে?

উত্তর : মা ছেলের পাণ্ডুর গালে চুমু খায় ও সারা গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়।

প্রশ্ন ২৩। রুগ্‌ণ ছেলেটির মা কোথায় মােমবাতি মানে?

উত্তর : রুগ্ণ ছেলেটির মা নামাজের ঘরে মসজিদে মােমবাতি মানে।

প্রশ্ন ২৪। রুগণ ছেলেটির মা মনে মনে কী জাল বােনে?

উত্তর : ভালােয় ভালােয় তার ছেলে যেন সুস্থ হয়ে ওঠে– মা মনে মনে এই জাল বােনে।

প্রশ্ন ২৫। পল্লিজননী” কবিতায় কার ঝাড়ার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : ‘পল্লিজননী’ কবিতায় রহিম চাচার ঝাড়ার কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ২৬। কী দিয়ে হুড়ুমের কোলা ভরতে বলেছে?

উত্তর : খেজুর গুড়ের নয়া পাটালি দিয়ে হুড়ুমের কোলা ভরতে বলেছে।

প্রশ্ন ২৭। ছেলে চুপ করলে মা কী করে?

উত্তর : ছেলে চুপ করলে মা তার মাথায় ধীরে ধীরে হাত বােলায়।

প্রশ্ন ২৮। কার শিয়রে বসে মায়ের কত কথা মনে পড়ে?

উত্তর : রুগণ ছেলের শিয়রে বসে মায়ের কত কথা মনে পড়ে।

 

পল্লিজননী কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। “সম্মুখে তার ঘাের কুটি মহাকাল রাত পাতা”- বলতে কী বােঝ?

উত্তর : “সম্মুখে তার ঘাের কুটি মহাকাল রাত পাতা” বলতে রুগণ ছেলের শিয়রে বসে থাকা মায়ের হৃদয়ের আতঙ্কিত অবস্থাকে বােঝানাে হয়েছে।

‘পল্লিজননী’ কবিতায় অসহায় দরিদ্র এক মায়ের চিত্র প্রকাশিত হয়েছে। ছেলের শিয়রে বসে মা একা রাত জাগে এবং ছেলের নানা আবদারের কথা ভাবে। রাত বাড়ার সাথে সাথে মায়ের মনে আশঙ্কাও বেড়ে চলে। অসুস্থ ছেলের কখন কী হয় তা নিয়ে সে শঙ্কিত। রাতের আঁধার, নিবু নিবু প্রদীপ, অসুস্থ ছেলে ও মা সব মিলিয়ে এক বিভীষিকাময় পরিবেশ। এ অবস্থায় সন্তান হারানাের আতঙ্ক মাকে স্বস্তি দিচ্ছে না। তার একমাত্র বুকের ধন হারিয়ে যাওয়ার ভাবনা যেন তার কাছে দুর্বিষহ বেদনা। আর মায়ের এই অনুভূতিই আলােচ্য উক্তিতে প্রকাশ পেয়েছে।

প্রশ্ন ২। শিয়রের কাছে নিবু নিবু দীপের সাথে বিরহী মায়ের পরান দোলে কেন? 

উত্তর : শিয়রের কাছে নিবু নিবু প্রদীপের সাথে বিরহী মায়ের পরান  দোলে পুত্র হারানাের আশঙ্কায় ।

বাবা-মায়ের কাছে সন্তান অত্যন্ত আদরের ধন। সেই সন্তানের অসুস্থতা মায়ের হৃদয়ে পাষাণভার তৈরি করে। পল্লিজননী’ কবিতায় দুঃখিনী মা রুগ্‌ণ ছেলের শিয়রে জেগে আছে। রাতের আঁধারের সঙ্গে লড়াই করতে করতে মাটির প্রদীপের তেল ফুরিয়ে আসে। প্রদীপের এই তেল ফুরিয়ে আসার সঙ্গে সন্তানের জীবনপ্রদীপও নিভে আসে। এ কারণে পুত্র হারানাের আশঙ্কায় শিয়রের কাছে নিবু নিবু প্রদীপের সঙ্গে মায়ের বিরহী পরান দুলে ওঠে।

প্রশ্ন ৩। ‘দুঃ ছাই। কিবা শঙ্কায় মার পরাণ উঠিছে ভরি।’ – ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : “দুঃ ছাই! কিবা শঙ্কায় মার পরাণ উঠিছে ভরি।” –চরণটিতে অসুস্থ সন্তানের জন্য মায়ের আশঙ্কার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে ।

‘পল্লিজননী’ কবিতায় নিদ্রাহীন জননীর রূগণ সন্তানকে ভালাে করে তােলার চেষ্টা এবং একই সঙ্গে সন্তান হারানাের শঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে। অন্ধকার রাতে হুতােম পাখির ডাক তার কাছে অকল্যাণের সুর বলে মনে হয়েছে। মা লক্ষ করেছে, গভীর রাতের ঘন অন্ধকার ভেদ করে বাঁশ বাগান থেকে ভেসে আসা কানা কুয়োর ডাক, সুপারির বনে বাদুড়ের পাখা ঝাপটানাে, কুয়াশার মধ্যে বনের পথে জোনাকিদের উড়ে যাওয়া প্রভৃতি। এসব দেখেশুনে মায়ের মন শঙ্কায় ভরে ওঠে । মা বালাই বালাই বলে সেসব অমঙ্গলকে তাড়াতে চায়। প্রশ্নোক্ত লাইনটিতে এ বিষয়টিকেই নির্দেশ করা হয়েছে।

প্রশ্ন ৪। মাটির প্রদীপের তেল ফুরিয়ে আসাকে কিসের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : মাটির প্রদীপের তেল ফুরিয়ে আসাকে কবি দুঃখিনী মায়ের ছেলের জীবনপ্রদীপ প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন ।

‘পল্লিজননী’ কবিতায় কবি অসুস্থ সন্তানের শিয়রে এক পল্লিমায়ের পুত্র হারানাের শঙ্কা তুলে ধরেছেন। রুগণ ছেলের শিয়রে বসে মা ছেলের সুস্থতা কামনা করে। তার পাশে বাতাসের সঙ্গে খেলতে খেলতে তেল ফুরিয়ে আসা মাটির প্রদীপটি নিভে আসছে। মা ভাবে, ধীরে ধীরে ছেলের জীবনপ্রদীপও নিভে আসছে। দারিদ্র্যের কারণে মা দুরন্ত ছেলেটির অনেক বায়নাই মেটাতে পারেনি। তাই তার মনে সেসব বিষয়ে আক্ষেপ জেগে উঠেছে। সীমাহীন অসহায়ত্বে ক্ষণে ক্ষণে মায়ের মন হাহাকার করে ওঠে। মা সন্তানের সুস্থতার জন্য মসজিদে মােমবাতি এবং দরগায় দান মানত করে।

প্রশ্ন ৫। কিশোের ছেলেটি তার লাটাই মাকে যত্ন করে রাখতে বলেছিল কেন?

উত্তর : লাটাইটি কিশাের ছেলেটির অত্যন্ত প্রিয় একটি খেলার উপকরণ বলে সে তার মাকে এটি যত্ন করে রাখতে বলেছিল।

কিশাের বয়সী দুরন্ত ছেলেদের ঘুড়ি ওড়ানাে বড় শখ। ঘুড়ি ওড়ানাে জন্য প্রয়ােজন লাটাই, যা কিশােরের অত্যন্ত প্রিয় একটি জিনিস। সুস্থ হয়ে কিশাের ছেলেটি আবার তার প্রিয় লাটাই নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুড়ি ওড়াতে যাবে। তাই সে তার মাকে যত্ন করে লাটাইটি রেখে দিতে বলেছিল।

প্রশ্ন ৬। ঘুম যে আসে না কি করিব আমি তার– লাইনটি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : পল্লিজননী’ কবিতায় রুগ্‌ণ ছেলেটিকে তার মা চুপটি করে একবার ঘুমাতে বললে ছেলেটি রেগে গিয়ে ঘুম না আসার কথা বলে।

‘পল্লিজননী’ কবিতায় এক গ্রাম্য দুরন্ত ছেলের রুগুণাবস্থায় তার মাথার কাছে বসে রাত জাগা এক মায়ের মনঃকষ্টের চিত্র তুলে কুঁড়েঘরে মা তার রুগণ ছেলেকে শুইয়ে রেখে শিয়রে বসে পুত্র ধরা হয়েছে। কেননা কবিতায় দেখা যায়, অর্থাভাবে ছােট একটি হারানাের শঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে পুত্রের মুখপানে করুণভাবে চেয়ে তার মৃত্যুর প্রহর গুনছে। পুত্রটি তার শুয়ে থেকে থেকে অতিষ্ঠ হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করে, রাত কত অবশিষ্ট আছে, কখন সকাল হবে? ছেলের কথা শুনে মা তাকে একটিবার চুপটি করে ঘুমাতে বললে ছেলেটি রেগে গিয়ে ঘুম না আসার কথা বলে।     

Leave a Comment