তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধ্যায়ের রচনা মূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১। কিভাবে আইসিটি বিশ্বকে পরিবর্তন করতে পারে? বর্ণনা করাে।

উত্তর: আইসিটি আজ বিশ্ব পরিচালনায় মূল চাবিকাঠি। সমস্ত ক্ষেত্রে আজ আইসিটির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। যেকোনাে জনপদকে উন্নত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে আইসিটি ছাড়া উপায় নেই। কারণ যেকোনাে উন্নয়নমূলক কাজ আজ আইসিটি নির্ভর হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের বেশিরভাগ কাজ আজ আইসিটি নির্ভর। কর্মসৃজন-কর্মপ্রাপ্তি, যােগাযােগ, ব্যবসা, সরকারি কাজ, চিকিৎসা, গবেষণা— সব কিছু আজ, আইসিটি দ্বারা প্রভাবিত। মানুষ আইসিটিকে ভিত্তি করে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করছে। পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই বলা যায়, আইসিটি বিশ্বকে খুব সহজেই পরিবর্তন করতে পারে।

 

প্রশ্ন-২। তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি সম্পর্কে লেখ।

অথবা, তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি কী?

উত্তর: তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি বলতে আমরা তথ্য প্রযুক্তি ও যােগাযােগ প্রযুক্তির এক ধরনের একীভূত অবস্থাকে বুঝি।

টেলিযােগাযােগ, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৎসম্পর্কিত সফটওয়্যার, তথ্য সংরক্ষণ, অডিও-ভিডিও সিস্টেম ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত এ ব্যবস্থার মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী খুব সহজে তথ্য গ্রহণ, সংরক্ষণ, সছালন ও বিশ্লেষণ করতে পারেন। এর ব্যাপক ব্যবহারের ফলে বর্তমান বিশ্ব মানুষের জন্য শ্রেয় হতে শ্রেয়তর হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত কাজ থেকে রাষ্ট্রের বড় বড় কাজে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার হচ্ছে। এখন অনেক কাজ সহজ হয়ে গেছে এবং নতুন নতুন কাজ সৃষ্টি হচ্ছে এই তথ্য ও যােগাযোেগ প্রযুক্তির কল্যাণে।

 

প্রশ্ন-৩। দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখ কর।

উত্তর: দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সব ক্ষেত্রেই এখন তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির প্রভাব আছে। তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযােগ্য ব্যবহার উল্লেখ করা হলাে:

১. বিদেশ থেকে সহজেই মােবাইল ফোনের মাধ্যমে টাকা পাঠানাে।

২. মােবাইল ফোনেই পরীক্ষার ফলাফল জেনে নেওয়া।

৩. ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাকরির দরখাস্ত করা।

৪. মােবাইলের মাধ্যমেই ট্রেনের টিকেট কাটা।

৫. প্রয়ােজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে ইন্টাররেটের মাধ্যমে জেনে নেওয়া।

৬. বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নাগরিক সেবাসমূহ অনলাইনের মাধ্যমে জেনে নেওয়া।

৭. একজন শিক্ষার্থীর শ্রেণির কাজের কঠিন সমস্যাটি ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে সাহায্য নেওয়া।

এ রকম প্রভৃতি ক্ষেত্রে আমরা তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছি।

 

প্রশ্ন-৪। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা কী কী কাজ করতে পারি যা আগে তে অনেক সময়ের প্রয়োজন হতাে এবং অনেক দূর-দূরান্ত যেতে হতাে?

উত্তর: ইন্টার কানেকটেড নেটওয়ার্ককে বলা হয় ইন্টারনেট।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদন, চাকুরির সন্ধান, সংবাদপত্র, একে অপরের সাথে ভিডিও কথাবার্তা, চিঠি আদান-প্রদান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুসন্ধান, পড়াশােনা, ঘরে বসেই অর্থ উপার্জন (ফ্রিল্যান্সিং), লেন-দেন, ব্যবসা বাণিজ্যসহ অনেক কিছুই করতে পারি। একসময় ছিল যখন বিসিএস পরীক্ষার আবেদন করার জন্য হেটে হেটে নদীর ঘাটে যাওয়া, সেখান থেকে নৌকা করে পার হয়ে শহরে যাওয়া, সেখানে দরখাস্ত টাইপ করে, তারপর সেটি পাঠাননা। কত কাজ।’ ফলে অনেক সময়ের প্রয়ােজন হতাে। কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই বিসিএস পরীক্ষার আবেদন কয়েকমুহূর্তের মধ্যে করা যায়।

 

প্রশ্ন-৫। “আইসিটির কারণে অনেক কাজের ধরণ বদলে যাচ্ছে” উক্তিটি বিশ্লেষণ করাে। 

উত্তর: তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ব্যাপক বিকাশের ফলে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। বিশেষ করে কিছু সনাতনী কাজ বিলুপ্ত হয়েছে বা বেশ কাজের ধারা পরিবর্তন হয়েছে। কোনাে প্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হলে সেখানে দক্ষ জনশক্তির প্রয়ােজন হয়। কেননা প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। উদাহরণস্বরুপ পূর্বে অধিকাংশ অনেক অফিসে অপারেটিং সিস্টেম Windows-7 ব্যবহার করতাে। কিন্তু বর্তমানে অপারেটিং সিস্টেম windows-10 অনেক অফিসে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ফলে প্রযুক্তি দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে এবং সাথে এর ব্যবহারিক দক্ষতাও পরিবর্তন হচ্ছে। অর্থাৎ পরবর্তিত কাজের পরিস্থিতিতে কর্মক্ষেত্রে ঠিকে থাকার জন্য নিজেকে ক্রমাগত দক্ষ হতে হয়। ফলে দক্ষতা উন্নয়নের কর্মসূচিতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন সাধিত হয়।

 

প্রশ্ন-৬। বেকার সমস্যা নিরসনে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ব্যবহার আলােচনা করাে।

উত্তর: তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির অন্যতম হাতিয়ার হলাে ইন্টারনেট।

ইন্টারনেট বিকাশের ফলে বর্তমানে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলাের জন্য ঘরে বসে কাজের সুযােগ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করার ফলে বিভিন্ন নতুন নতুন কাজের সৃষ্টি হয়। যেমন- ওয়েবসাইট উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, মাসিক বেতন পেমেন্ট সিস্টেম, ভাতার বিল প্রস্তুতকরণ, অফিস অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম, সফটওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণ, অফিস ব্যবস্থাপনা, অফিসের কার্যক্রম সিসিটিভির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ সহ দক্ষ জনবলের প্রয়ােজন। এছাড়াও মােবাইল অপারেটর কোম্পানিতে বিপুল সংখ্যক কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযােগ হয়েছে। তথ্য ও যােগাযোেগ প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। ফলে বেকার সমস্যা নিরসন হবে।

 

প্রশ্ন-৭। কর্মসৃজন ও কর্ম প্রত্যাশীদের কাজের সুযােগ প্রাপ্তিতে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি কী ভূমিকা পালন করে বলে তুমি মনে করাে?

অথবা, কর্মসৃজন ও কর্মপ্রাপ্তিতে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ভূমিকা সংক্ষেপে লেখ।

অথবা, “তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির কারণে অসংখ্য কাজের সৃষ্টি হয়েছে” —উক্তিটি বিশ্লেষণ করাে।

উত্তর: বর্তমানে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বিশ্বে কর্মসৃজন ও কর্ম প্রাপ্তি এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির বিপুল বিকাশের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ একটি হলাে নতুন কাজের সুযােগ সৃষ্টি। তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের ফলে কিছু কিছু সনাতনী কাজ বিলুপ্ত হয়েছে বা বেশ কিছু কাজের ধারা পরিবর্তিত হয়েছে বটে, তবে অসংখ্য নতুন কাজের সুযােগ সৃষ্টি হয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি এক হাজার ইন্টারনেট সংযােগের ফলে নতুন ৮০টি কাজের সুযােগ সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ এখন ঘরে বসেও তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির কল্যাণে আয় করতে পারছে।

সুতরাং বলা যায়, কর্মসৃজন ও কর্ম প্রাপ্তিতে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

প্রশ্ন-৮। সংযুক্তিই উৎপাদনশীলতা”- উক্তিটি বিশ্লেষণ করাে।

উত্তর: “Connectivity is Productivity” কথাটির অর্থ হলাে- সংযুক্তিই উৎপাদনশীলতা। তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির প্রয়ােগে উৎপাদনশীলতার বৃদ্ধিকে বাঙালি শিক্ষাবিদ ও বর্তমান আমেরিকার ম্যাসাসুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনােলজি (MIT)-এর অধ্যাপক ড. ইকবাল কাদির সংজ্ঞায়িত করেছেন “Connectivity is Productivity” অর্থাৎ “সংযুক্তিই উৎপাদনশীলতা” কথাটি বলে। কথাটি দ্বারা বােঝানাে হয়েছে প্রযুক্তির সাথে উৎপাদনশীলতার সম্পর্কের কথা। প্রযুক্তির সাথে জনগণের সংযুক্তি বাড়লে তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়ে। ফলে তৈরি হয় নতুন নতুন কর্মোদ্যোগ। সৃষ্টি হয় নতুন কাজের সুযােগ। এর ফলে, কর্মসৃজন ও কর্মপ্রাপ্তির এক নতুন জগৎ সৃষ্টি হয়। সামগ্রিকভাবে দেশের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

 

প্রশ্ন-৯। বর্তমানে বিক্সি প্রতিষ্ঠান তাদের নিয়ােগ বিজ্ঞপ্তি কীভাবে প্রকাশ করছে?

উত্তর: শুধু কর্মসৃজন নয়, কর্মপ্রত্যাশীদের কাজের সুযােগ প্রাপ্তিতেও ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির বড় ভূমিকা রয়েছে। পূর্বে যেকোনাে ধরনের নিয়ােগ বিজ্ঞপ্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নােটিশ বাের্ডে, বড় বড় সরকারি প্রতিষ্ঠানের দেওয়ালে সেঁটে দেওয়া হতাে। এছাড়া বড় বড় কোম্পানি বা সরকারি কর্মী নিয়ােগের বিজ্ঞপ্তি পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হতাে। আইসিটি ও ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে বর্তমানে ইন্টারনেটে ‘জবসাইট’ নামে নতুন এক ধরনের সেবা চালু হয়েছে। এই সকল জবসাইটে নিয়ােগকারী প্রতিষ্ঠান সরাসরি তাদের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে পারে। শুধু তাই নয়, নিয়ােগকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুকের মতাে সামাজিক যােগাযােগ সাইটেও বিনামূল্যে নিয়ােগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারে। ফলে, কর্মপ্রত্যাশীদের একটি বিরাট অংশ সেই বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে অবগত হতে পারে। এছাড়া এরূপ কোনাে কোনাে সাইটে কর্মপ্রত্যাশীগণ নিজেদের নিবন্ধিত করে রাখতে পারে। সে ক্ষেত্রে, যেকোনাে নতুন কাজের খবর প্রকাশিত হওয়া মাত্রই নিবন্ধিত ব্যক্তি ই-মেইলে বা এসএমএসের মাধ্যমে এ সম্পর্কে অবহিত হতে পারে।

 

প্রশ্ন-১০। বাংলাদেশে মােবাইল ফোনের বিস্তার কীভাবে নতুন কর্ম সৃজনের দিগন্ত উন্মােচন করেছে? সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর: তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির প্রয়ােগের ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রযুক্তিতে জনগণের সংযুক্তি বাড়ে। ফলে সৃষ্টি করে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। তদ্রুপ বাংলাদেশে মােবাইল ফোনের বিস্তার-এ নতুন কর্ম সৃজনের দিগন্ত উন্মােচন হয়েছে। নিম্নে সংক্ষেপে লেখা হলাে:

ক. মােবাইল কোম্পানিতে কাজের সুযােগ: দেশের প্রায় ৯টি মােবাইল অপারেটর কোম্পানিতে বিপুলসংখ্যক কর্মীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। মােবাইল কোম্পানিই বর্তমান দেশের প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানি।

খ. মােবাইল ফোনসেট বিক্রয়, বিপনন ও রক্ষণাবেক্ষণ: দেশের প্রায় ১২ কোটি মােবাইল গ্রাহককে মােবাইল ফোন সেট সরবরাহ, সেগুলাের বিপনন, ইত্যাদি বিভিন্ন মানের সেবার জন্য বিপুল পরিমাণ কর্মীর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।

গ. বিভিন্ন মােবাইল সেবা প্রদান: বর্তমানে মােবাইলে নতুন নতুন সুযােগ সুবিধা যুক্ত হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন মােবাইল সেবাকেন্দ্র। ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঘ. নতুন খাতের সৃষ্টি: মােবাইলে প্রযুক্তি বিস্তারের ফলে মােবাইল ব্যাংকিংয়ের মতাে অসংখ্য নতুন খাতের সৃষ্টি হয়েছে। যার মাধ্যমে অনেক নতুন কর্মপ্রত্যাশীর কর্মসংস্থানের সুযােগ হয়েছে।

 

প্রশ্ন-১১। আউটসাের্সিং বলতে কী বুঝ? সংক্ষেপে বর্ণনা দাও।

অথবা, আউটসাের্সিং কী? এর মাধ্যমে কী কাজ করা হয় আলােচনা কর।

উত্তর: ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে বর্তমানে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলাের জন্য ঘরে বসে অন্য দেশের কাজ করে দেওয়ায় সুযােগ সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের অনেক কাজ, যেমন-ওয়েবসাইট উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, মাসিক বেতন ভাতার বিল প্রস্তুতকরণ, ওয়েবসাইটে তথ্য যােগ করা, সফটওয়্যার তৈরি ইত্যাদি অন্য দেশের কর্মীর মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকে। এটিকে বলা হয় আউটসাের্সিং (Outsourcing)। ইন্টারনেট সংযোেগ থাকলে যে কেউ এ ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। এক্ষেত্রে কাজের দক্ষতার পাশাপাশি ভাষা দক্ষতাও সমানভাবে প্রয়ােজন হয়। এই সকল কাজ ইন্টারনেটে অনেক সাইটে পাওয়া যায়। এর মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি হলাে ওডেস্ক (www.odesk.com), ফ্রিল্যান্স (www.freelancer.com), ইল্যান্স (www.elance.com) ইত্যাদি। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় তিরিশ সহস্রাধিক মুক্ত পেশাজীবী এই সকল সাইটের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানে সক্ষম হয়েছে।

 

প্রশ্ন-১২। “তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে একজন কর্মী অনেক বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে” – কথাটি বুঝিয়ে লেখ। 

উত্তর: তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে একজন কর্মী অনেক বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে। প্রযুক্তির কারণে অনেক কাজের ধরণ প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে। ফলে একজন কর্মীর দক্ষ হয়ে ওঠার পেছনে নিচের বিষয়গুলাে ভূমিকা রাখে—

১।তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে পরিবর্তিত পরিস্তিতিতে কর্মক্ষেত্রে টিকে থাকার জন্য নিজেকে ক্রমাগত দক্ষ করে তুলতে হয়। ফলে দক্ষতা উন্নয়নের কর্মসূচিগুলােতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে।

২।কম্পিউটারের সাহায্যে অনেক ধরনের কাজ ঘরে বসেই করা সম্ভব হচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে পূর্বে বিশেষ দক্ষতা থাকলে যে কাজ সম্পন্ন করা যেত না, এরূপ অনেক কাজ কম্পিউটারের সহায়তায় সহজে সম্পন্ন করা যাচ্ছে। যেমন ফটোগ্রাফি বা ভিডিও এডিটিং।

৩।অনেকে ঘরে বসে কাজ করছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন ভার্চুয়াল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানে সহায়ক কর্মীর সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনি তাদের কাজের ধরনও পাল্টে গেছে।

৪।স্বয়ংক্রিয়ভাবে মনিটরিং করা সম্ভব হওয়াতে কর্মীদের কাজে ফাকি দেওয়ার প্রবণতাও ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে।

 

প্রশ্ন-১৩। প্রাপক ও প্রেরক উভয়ই একই সময়ে যােগাযােগ করতে পারে কী ধরনের যােগাযােগ পদ্ধতিতে? যােগাযােগ পদ্ধতিটির বর্ণনা দাও।

উত্তর: প্রাপক ও প্রেরক উভয়ই একই সময়ে যােগাযােগ করতে পারে দ্বিমুখী পদ্ধতিতে। যখন একাধিক ব্যক্তি একই সময়ে একে অপরের সাথে যােগাযােগ করতে পারে তখন তাকে দ্বিমুখী যােগাযােগ পদ্ধতি বলে। এটি ব্রডকাস্ট পদ্ধতির সম্পূরক রূপ। দ্বিমুখী যােগাযােগ পদ্ধতির সমচেয়ে ভালাে উদারহণ হলাে মােবাইল বা টেলিফোন । মােবাইল ফোনের সাহায্যে একই সাথে দুইজন ব্যক্তি আলাপ-আলােচনা করতে পারে। বর্তমানে দ্বিমুখী যােগাযােগ পদ্ধতি বেশি ব্যবহৃত হয়। পৃথিবীর সব দেশেই এ পদ্ধতি ব্যবহার করে তাদের যােগাযােগ কার্যক্রম সম্পূর্ণ করে ।

 

প্রশ্ন-১৪। যােগাযােগ কাকে বলে? ইহা কত প্রকার কী কী? ব্যাখ্যা কর।

অথবা, যােগাযােগ করার পদ্ধতিকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় বর্ণনা কর।

উত্তর: একে অপরের সাথে বিভিন্ন উপায়ে তথ্য আদান-প্রদান করাকে যােগাযােগ বলে। যােগাযােগ করার পদ্ধতি দুটি প্রকার যথা: 

ক.ব্রডকাস্ট পদ্ধতি ও 

খ. দ্বিমুখী পদ্ধতি।

নিম্নে এদের ব্যাখ্যা দেওয়া হলাে:

ব্রডকাস্ট হলাে যােগাযােগ করার একটি স্বীকৃত পদ্ধতি যখন একজন বা একটি প্রতিষ্ঠান ‘একমুখী’ পদ্ধতিতে অনেকের সাথে যােগাযােগ করে, সেটাকে ইংরেজিতে বলে ব্রডকাস্ট’। রেডিও টেলিভিশন তার সবচেয়ে সহজ উদাহরণ- যেখানে রেডিও বা টিভি স্টেশন থেকে সবার জন্য অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। যাদের জন্য অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়, তারা কিন্তু পাল্টা যােগাযােগ করতে পারে না।

যােগাযােগের একমুখী ব্রডকাস্ট পদ্ধতির সম্পূরক রূপটি হচ্ছে দ্বিমুখী যােগাযােগ পদ্ধতি। যখন একাধিক ব্যক্তি একই সময়ে একে অপরের সাথে যােগাযােগ করতে পারে তখন তাকে দ্বিমুখী যােগাযােগ পদ্ধতি

বলে। যেমন- মােবাইল ফোন, টেলিফোন। টেলিফোনে দুজন একই সাথে পরস্পরের সাথে যােগাযােগ করতে পারে।

 

প্রশ্ন-১৫।ব্রডকাস্ট পদ্ধতি বলতে কী বুঝ? 

উত্তর: ব্রডকাস্ট হলাে যােগাযােগ করার একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। যখন একজন বা একটি প্রতিষ্ঠান ‘একমুখী’ পদ্ধতিতে অনেকের সাথে যােগাযােগ করে, সেটাকে ইংরেজিতে বলে ব্রডকাস্ট’। রেডিও , টেলিভিশন তার সবচেয়ে সহজ উদাহরণ- যেখানে রেডিও বা টিভি স্টেশন থেকে সবার জন্য অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। যাদের জন্য অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়, তারা কিন্তু পাল্টা যােগাযােগ করতে পারে না। কোনাে কোনাে লাইভ অনুষ্ঠানে দর্শক বা শ্রোতাদের অবশ্য ফোন করে যােগাযােগের সুযােগ দেওয়া হয়। যেখানে লক্ষ লক্ষ শ্রোতাদের মধ্যে থেকে এক-দুজন যােগাযােগ করতে পারে, কাজেই এটি আসলে একমুখী ব্রডকাস্টই থেকে যায়। ব্রডকাস্ট পদ্ধতির যােগাযােগের আরাে উদাহরণ হচ্ছে খবরের কাগজ ও ম্যাগাজিন এবং নিউজ চ্যানেল। এরূপ কয়েকটি নিউজ চ্যানেল হচ্ছে- এটিএন নিউজ, একাত্তর টিভি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি, সময় টিভি, নিউজ 24 টিভি ইত্যাদি।

 

প্রশ্ন-১৬। দ্বিমুখী যােগাযােগ পদ্ধতি কী?

উত্তর: যােগাযােগের একমুখী ব্রডকাস্ট পদ্ধতির সম্পূরক রূপটি হচ্ছে দ্বিমুখী যােগাযােগ পদ্ধতি। যখন একাধিক ব্যক্তি একই সময়ে একে অপরের সাথে যােগাযােগ করতে পারে তখন তাকে দ্বিমুখী যােগাযােগ পদ্ধতি বলে। যেমন—মােবাইল ফোন, টেলিফোন। টেলিফোনে দুজন একই সাথে পরস্পরের সাথে যােগাযােগ করতে পারে। মাত্র একযুগ আগেও বাংলাদেশে শুধু সচ্ছল ও ক্ষমতাবান মানুষদের কাছে টেলিফোন ছিল। এখন এদেশে যেকোনাে মানুষ মােইল টেলিফোনে একে অন্যের সাথে যােগাযােগ করতে পারে এবং এটি সম্ভব হয়েছে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়নের জন্য।

 

প্রশ্ন১৭। সামাজিক নেটওয়ার্ক কী? ব্যাখ্যা করাে।

উত্তর: সামাজিক নেটওয়ার্ক হলাে একই সাথে একমুখী ব্রডকাস্ট এবং দ্বিমুখী ব্যক্তিগত যােগাযােগ। সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে পৃথিবীর অন্যান্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সাথে যােগাযােগ করতে পারি। নিজেদের মধ্যে ছবি, ভিডিও, গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ও বিভিন্ন লিংকসহ আরও অনেক কিছু শেয়ার করতে পারি। এই কমিউনিটি নেটওয়ার্কগুলাে পুরােপুরি ফ্রি, কিন্তু সেগুলাে ব্যবহার করার আগে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। বর্তমান বিশ্বে সামাজিক নেটওয়ার্কের প্রভাব অত্যন্ত বেশি। এখানে সমমনা লােকজন অনেকের সাথে বিভিন্ন লিংক ও নানান তথ্য শেয়ারের মাধ্যমে সচেতনা বৃদ্ধি ও একত্রিত হতে পারে। এমনকি এই ধরনের নেটওয়ার্ক দ্বারা সংঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলন পর্যন্ত শুরু করে দেয়া যেতে পারে।

 

প্রশ্ন-১৮। ভার্চুয়াল জগত বলতে কী বুঝ?

উত্তর: ভার্চুয়াল জগত হচ্ছে অনলাইন নির্ভর জগত।’যে জগতে সবাই বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কিন্তু ইন্টারনেটের মাধ্যমে এমন একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে যেখানে সবাই সবার সাথে যােগাযােগ করতে পারে। শুধুমাত্র যােগাযােগ নয় একে অপরের সাথে মনের ভাব বিনিময় করে, ছবি শেয়ার করে, ভিডিও দেখে এবং শেয়ার করে, নিজেরা মিলে একটা গ্রুপ গঠন করতে পারে এমনকি সামাজিক আন্দোলন পর্যন্ত সংগঠিত করতে পারে। সকল প্রক্রিয়া কেবল মাত্র অনলাইনেই সংগঠিত হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবার সাথে যােগাযােগ রক্ষা করে। মনে হয় যেন ভার্চুয়াল এই জগতে সবাই সবার পাশেই আছে।

 

প্রশ্ন-১৯। মহান মুক্তিযুদ্ধে কোন আইসিটি যন্ত্রটি স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে? ব্যাখ্যা করাে। 

অথবা, ICT এর পূর্ণরূপ কী? মহান মুক্তিযুদ্ধে আইসিটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: ICT -এর পূর্ণরূপ হলাে— Information and Communication Technology.

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযােদ্ধাদেরকে সংকেত দেওয়ার জন্য রেডিও যন্ত্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কেননা সেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মুক্তিযােদ্ধাদের প্রকাশ্যে বা সরাসরি কোনাে ধরনের শত্রুবাহিনীর গােপন কৌশলের তথ্য দেওয়া যেতাে না। ফলে যােগাযোগের কোনাে উপায়ই ছিল না, তাই মুক্তিযােদ্ধাদের অনুরােধে আকাশবানী রেডিও থেকে ১৩ই আগস্ট বেজে উঠে বিখ্যাত গায়ক পঙ্কজ মল্লিকের গাওয়া একটি গান “আমি তােমায় যত শুনিয়েছিলাম গান”। সেই গানটি একটি ছিল একটি সংকেত, সেটি শুনে নৌ কমান্ডােরা বুঝতে পেরেছিল তাদের এখন আঘাত হানার সময় এসেছে। এভাবেই আইসিটি যন্ত্র রেডিওটি মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

 

প্রশ্ন-২০। যােগাযােগের ক্ষেত্রে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর: যােগাযােগের ক্ষেত্রে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি বর্তমানে অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নয়নের ফলে বদলে গেছে যােগাযােগের ধরণ। ব্রডকাস্ট পদ্ধতির সাহায্যে রেডিও বা টেলিভিশন যােগাযােগের অন্যতম প্রযুক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইন্টারনেট ভিত্তিক কাগজ ও ম্যাগাজিন ব্রডকাস্ট যােগাযােগের উদাহরণ। দ্বিমুখী যােগাযােগের ক্ষেত্রে টেলিফোন, মােবাইল ও ইন্টারনেট বর্তমানে বহুল প্রচলিত। তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের নতুন একটি পরিচয় হলাে ইমেইল এড্রেস। কয়েকটি অক্ষর দিয়ে একটি ই-মেইল এড্রেস তৈরি হয় এবং এটি দিয়ে পৃথিবীর যেকোনাে জায়গা থেকে যােগাযােগ করা যায়। পৃথিবীর মানুষের ভেতর এখন যােগাযােগের বেশির ভাগই হয়ে থাকে ইমেইলের সাহায্যে। আজকাল সামাজিক যােগাযােগের নতুন একটি বিষয় শুরু হয়েছে। এটি একই সাথে একমুখী ব্রডকাস্ট এবং দুইমুখী ব্যক্তিগত যােগাযােগ। এই সামাজিক নেটওয়ার্ক করে আজকাল একজন একসাথে অনেকের সাথে যােগাযােগ করতে পারে, সংগঠিত হতে পারে। কাজেই তথ্যপ্রযুক্তি সারা পৃথিবীর সকল মানুষের ভেতর যােগাযােগটা বাড়িয়ে দিয়ে একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম দিতে শুরু করেছে। যেখানে ভার্চুয়াল (Virtual) জগতে সবাই সবার পাশে দাঁড়িয়ে আছে।

 

প্রশ্ন-২১।  ইন্ট্রানেট কী? EPOS কী?

উত্তর: ইন্ট্রানেট : অভ্যন্তরীণ যােগাযােগ করার জন্য যে নেটওয়ার্ক তৈরি হয় তাকে ইন্ট্রানেট বলে। বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দপ্তর ভৌগােলিকভাবে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে সংস্থাপিত ইন্ট্রানেট ব্যবহৃত হয়। এটি শুধুমাত্র তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি কর্মকর্তা ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে এটি বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে।

EPOS: ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অব সেল এর সংক্ষিপ্তরূপ হলাে— EPOS। এটি এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে বিক্রয়ের সকল তথ্য সংরক্ষণ করা যায়। এতে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের সুযােগ থাকে।

 

প্রশ্ন-২২। উন্নত যােগাযােগ ব্যবস্থার প্রধান প্রধান উপকরণগুলাে সংক্ষেপে লেখাে।

অথবা, ব্যবসায়ে উন্নত যােগাযােগ স্থাপনের জন্য প্রধান প্রধান উপকরণগুলাে লেখাে।

উত্তর: বর্তমান ব্যবসা বাণিজ্যে উন্নত যােগাযােগ স্থাপন করতে যে প্রধান উপকরণসমূহ ব্যবহার হয় নিম্নে তা সংক্ষেপে লেখা হলাে:

১. মােবাইল : বর্তমানে সব থেকে বেশি ও কম খরচে যােগাযােগের মাধ্যম হচ্ছে মােবাইল ফোন। এটির মাধ্যমে যেকোনাে স্থানে যােগাযােগ করা সম্ভব। এমনকি ইমেইল ও ছবি আদান-প্রদান করা যায়।

২. ফ্যাক্স : ফ্যাক্সের মাধ্যমে জরুরি লিখিত তথ্য ও ছবি তাৎক্ষণিকভাবে প্রেরণ করা যায়। ফলে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়।

৩. ই-মেইল : ই-মেইল ব্যবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে লিখিত চুক্তিপত্র বা পণ্যের ছবি ক্রেতার মছে পাঠানাে যায়।

৪. ইন্টারনেট : ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্যসেবার খবর সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া যায়।

৫. ইন্ট্রানেট: অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ইন্টারনাল নেটওয়ার্ক স্থাপন করেন। একেই ইন্ট্রানেট বলে।

 

প্রশ্ন-২৩। আইসিটি ব্যবহার করে ব্যবসাক্ষেত্রে খরচ কমানাের উপায়সমূহ লিখ।

উত্তর: আইসিটি প্রয়ােগের ফলে ব্যবসাক্ষেত্রে নানাবিধ সুবিধা অর্জিত হয়। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কম সময়ে অধিক কাজ করা যায়, ফলে ব্যবসার খরচ কম হয়। আইসিটি প্রয়ােগের মাধ্যমে খরচ কমানাের অনেকগুলাে উপায় আছে। উপায়গুলাে হলােঃ

১. বিশেষায়িত সফটওয়্যার ব্যবহার করে পণ্যের মজুদ নিয়ন্ত্রণ।

২. উৎপাদন ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়করণ

৩. উন্নত যােগাযােগ ব্যবস্থা

৪. সঠিক হিসাব সংরক্ষণ পণ্য বা সেবার বিপণন বা প্রচার

৬. বিক্রয় ব্যবস্থাপনা ও হিসাব

৭. মূল্য সংগ্রহ।

 

প্রশ্ন-২৪। ব্যবসা-বাণিজ্যে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির প্রভাব উল্লেখ করাে।

অথবা, ব্যবসায়ে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির গুরুত্ব বর্ণনা কর।

উত্তর: জীবনের অন্য সকল ক্ষেত্রের মতাে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি বা আইসিটির প্রয়ােগ ব্যবসা-বাণিজ্যে আমূল পরিবর্তনের সূচনা করেছে। যেকোনাে ব্যবসার মূল উদ্দেশ্য থাকে কম সময়ে এবং কম খরচে পণ্য বা সেবা উৎপাদন করা এবং দ্রুততম সময়ে তা ভােক্তার কাছে পৌছে দেওয়া। পণ্যের জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে উৎপাদনের কাজে নিয়ােজিত কর্মীদের ব্যবস্থাপনা, তাদের দক্ষতার মান উন্নয়ন, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, বিপণন এবং সবশেষে পণ্য বা সেবার বিনিময় মূল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আইসিটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যারের সমন্বিত এবং উদ্ভাবনী প্রয়ােগের মাধ্যমে ব্যবসায়ীগণ তাদের ব্যবসার উন্নয়নের পাশাপাশি মুনাফাও বাড়াতে পারে। তাই বলা যায় ব্যবসা-বাণিজ্যে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির

 

প্রশ্ন-২৫। ব্যবসা-বাণিজ্যে বিপণন ও প্রচারে আইসিটির প্রয়ােগ আলােচনা করাে। 

অথবা, পণ্য বিপণন ও বিক্রয় ব্যবস্থাপনায় তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির গুরুত্ব বর্ণনা কর।

উত্তর: ব্যবসা করতে হলে পণ্য বা বিপণন এবং প্রচারে আইসিটি প্রয়ােগের ফলে বিপণনেও নতুন মাত্রা যােগ করা সম্ভব হয়েছে। উক্ত ক্ষেত্রগুলাে হলাে—

১. বাজার বিশ্লেষণ: যেকোনাে নতুন পণ্য বা সেবা বাজারে চালু করার পূর্বে এ বিষয়ে বর্তমান বাজার সম্পর্ক জানার প্রয়ােজন। আইসিটির মাধ্যমে এই সকল কাজ দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব।

২. প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ: প্রতিদ্বন্দ্বী পণ্য ও সেবা সম্পর্কে সহজে তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

৩. সরবরাহ: জিপিএস বা অনুরূপ ব্যবস্থাদির মাধ্যমে কম খরচে পণ্য সরবরাহের পরিকল্পনা করা যায়।

৪. প্রচার: ওয়েবসাইট, ব্লগ কিংবা সামাজিক যােগাযােগের সাইটের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে এবং কখনাে কখনাে বিনামূল্যে পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন প্রচার করা যায়।

 

প্রশ্ন-২৬। সরকারি কর্মকাণ্ডে আইসিটির কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করাে।

অথবা, বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সেবার বর্ণনা দাও।

অথবা, আইসিটি বিকাশে নাগরিকগণ কী কী সেরা ভােগ করতে পারে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় আঁফিস আদালতে আইসিটি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরােপ করেছেন। যাতে করে দেশের নাগরিক সেবা স্বচ্ছ ও সহজতর হয়। নিম্নে বিভিন্ন ধরনের সরকারি নাগরিক সেবার বর্ণনা দেওয়া হলাে :

ক. জাতীয় ওয়েব পাের্টাল : সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক তথ্য ও দিক নির্দেশনা এবং চাকুরির খবর জাতীয় ওয়েব পাের্টালে পাবলিশ করে থাকে। যা সহজেই জনগণের কাছে তথ্য পৌছে যায়। এরুপ ওয়েব পাের্টালের নাম হচ্ছে www.bangladesh.gov.bd.

খ. ই-পর্চা : জমি-জমা সংক্রান্ত বিভিন্ন দলিল এর সমস্যা ও দূর্নীতির রােধ করার জন্য সরকার ই-পৰ্চা সেবা চালু করেছেন। বর্তমানে দেশের ৩৪টি জেলায় ই-সেবা কেন্দ্র থেকে জমির প্রয়ােজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারে।

গ. ই-বুক : স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার সকল পাঠ্যপুস্তক অনলাইনে সহজে প্রাপ্তির জন্য সরকারিভাবে একটি ই-বুক প্লাটফর্ম তৈরি করেছেন। যেমন— www.ebook.gov.bd.

ঘ. ই-পুর্জি ; আখ চাষিদের জন্য চিনিকলের পুর্জি (ইক্ষু সরবরাহের অনুমতিপত্র) স্বয়ংক্রিয়করণ করার লক্ষ্যে ই-পুজি সেবা চালু করা হয়েছে।

ঙ. ই-স্বাস্থ্যসেবা ; প্রত্যন্ত গ্রামালে যেখানে কোনাে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র নেই, সেখানে জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেওয়ার জন্য টেলিমেডিসিন সেবা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। সরাসরি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে।

 

প্রশ্ন-২৭। সরকারি কর্মকাণ্ডে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির গুরুত্ব সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর: রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলাে সরকার। যেকোনাে দেশের সরকার জনগণের জন্য নিরাপদ, সজনশীল উদ্ভাবনের বিকাশ হয় এমন কর্মসংস্থান এবং সর্বোপরি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করার জন্য নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। সরকারের সাধারণ কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে আইন ও নীতি প্রণয়ন এবং তার বাস্তবায়ন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংস্থার মাধ্যমে কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং সর্বোপরি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজ দেশকে সঠিকভাবে উপস্থাপন। এই সকল কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের জন্য সরকার দেশের মধ্যে কর ও শুদ্ধ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এবং বিদেশ থেকে অনুদান ও ঋণের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে এবং বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়ন করে। প্রয়ােজনে বেসরকারি সংস্থা বা ব্যক্তিকে নিয়ােগ দেওয়া হয়। আর প্রতিটি কাজই করা হচ্ছে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির সাহায্যে। সরকারি সকল কাজেই তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ প্রয়ােগ রয়েছে।

 

প্রশ্ন-২৮. “দোরগােড়ায় সরকারি সেবা।” বুঝিয়ে লেখ। 

উত্তর: দোরগোড়ায় সরকারি সেবা: সরকারি কর্মকাণ্ডে আইসিটির সবচেয়ে উদ্ভাবনী ও কুশলী প্রয়ােগ হলাে জনগণের কাছে নাগরিক সেবা পৌছে দেওয়াকে দোরগােড়ায় সরকারি সেবা বলে। উল্লেখযােগ্য দোরগােড়ায় সরকারি সেবা হলাে—

ই-পর্চাঃ জমি-জমার বিভিন্ন রেকর্ড সংগ্রহের জন্য পূর্বে অনেক হয়রানি হতাে, বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলায় ই-সেবা কেন্দ্র থেকে তা সহজে সংগ্রহ করা যায়।

ই-বুক: সকল পাঠ্যপুস্তক অনলাইনে সহজে প্রাপ্তির জন্য সরকারিভাবে একটি ই-বুক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে (www.ebook.gov.bd)

ই-পুর্জি : চিনিকলের পুর্জি (ইক্ষু সরবরাহের অনুমতিপত্র) স্বয়ংক্রিয়করণ করা হয়েছে এবং বর্তমানে মােবাইল ফোনে কৃষকরা তাদের পূর্তি পাচ্ছে। ফলে এ সংক্রান্ত হয়রানির অবসান হওয়ার পাশাপাশি কৃষকও তাদের ইক্ষু সরবরাহ উন্নত করতে পেরেছেন।

পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ : বর্তমানে দেশের সকল পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল অনলাইনে এবং মােবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে।

ই-স্বাস্থ্যসেবা ; জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেওয়ার জন্য দেশের অনেক স্থানে টেলিমিডিসিন সেবা কেন্দ্র গড়ে তােলা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালসমূহের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে মােবাইল ফোনে বা এসএমএসে অভিযােগ পাঠানাের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতকরণ : ঘরে বসেই এখন আয়করদাতারা তাদের আয়করের হিসাব করতে পারেন এবং রিটার্ন তৈরি ও দাখিল করতে পারেন।

টাকা স্থানান্তর : পােস্টাল ক্যাশ কার্ড, মােবাইল ব্যাংকিং, ইলেক্ট্রনিক মানি ট্রান্সফার সিস্টেম ইত্যাদির মাধ্যমে বর্তমানে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অর্থ প্রেরণ সহজ ও দুত হয়েছে। এছাড়া ইন্টারনেট ও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সহজে টাকা স্থানান্তরিত করা যায়।

পরিসেবার বিল পরিশােধ : নাগরিক সুবিধার একটি বড় অংশ হলাে বিদ্যুৎ পানি কিংবা গ্যাস সরবরাহ।

 

প্রশ্ন-২৯। ই-পর্চা বলতে কী বুঝ?

উত্তর: ই-পর্চা একটি সেবা প্রক্রিয়া যেখানে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণকে জমি-জমা সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হয়। দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে ই-সেবা কেন্দ্র স্থাপন করে এ সেবা দেয়া হয়। জমিজমার রেকর্ড সংগ্রহের জন্য পূর্বে অনেক হয়রানি হতাে, বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলায় ই-সেবা কেন্দ্র থেকে এই দলিল সহজে সংগ্রহ করা যায়। এ জন্য অনলাইনে আবেদন করে আবেদনকারী জমিজমা সংক্রান্ত বিভিন্ন দলিল যেমন-এসএ, সিএস, বিএস, বিআরএস-এর নকল/পর্চা/খতিয়ান কিংবা সত্যায়িত অনুলিপি সংগ্রহ করতে পারে। এর ফলে জনগণ খুব সহজে সেবা পাচ্ছেন। অন্যদিকে সেবা প্রদানের সময় তথ্যাদিসমূহ ডিজিটালকৃত হয়ে যাচ্ছে ফলে ভবিষ্যতে তথ্য প্রাপ্তির পথ সহজ হচ্ছে।

 

প্রশ্ন-৩০। ই-বুক বলতে কী বুঝ?

উত্তর: ই-বুক-এর পূর্ণনাম হলাে ইলেকট্রনিক বুক। অর্থাৎ কাগজে প্রিন্ট করা বই-এর ডিজিটাল ভার্সন হলাে ই-বুক। কম্পিউটার ই-বুকরিডারের মাধ্যমে ই-বুক ব্যবহার করা হয়। এটি অত্যন্ত সুবিধাজনক

এবং ঝামেলামুক্ত। বাইরের দেশে এটি ব্যাপক আকারে প্রচলিত, থাকলেও আমাদের দেশে এর ব্যবহার সর্ব সাধারণ পর্যায়ে পৌছায় নি। এর ব্যাপক প্রসারের উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে ব্যাপক কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। আমাদের দেশে সকল পাঠ্যপুস্তক অনলাইনে সহজে প্রাপ্তির জন্য সরকারিভাবে একটি ই-বুক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে (www.ebook.gov.bd)। এতে ৩০০টি পাঠ্যপুস্তক ও ১c০টি সহায়ক পুস্তক রয়েছে।

 

প্রশ্ন-৩১। ই-স্বাস্থ্যসেবা বলতে কী বুঝ?

উত্তর: ই-স্বাস্থ্যসেবা হচ্ছে অনলাইন নির্ভব স্বাস্থ্যসেবা যেখানে মােবাইল ফোন বা এসএমএস এর মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। জনগণের দোরগােড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেওয়ার জন্য দেশের অনেক স্থানে

টেলিমেডিসিন সেবা কেন্দ্র গড়ে তােলা হয়েছে। যেখানে কোনাে রােগী ফোন করে মৌখিক বা এসএমএস এর মাধ্যমে লিখিত আনে করতে পারে। ফলে রােগীরা তাৎক্ষণিক যেকোনাে রােগের প্রাথমিক সেবা পাচ্ছে। বিশেষ করে গ্রাম্য অঞ্চলের মানুষদের জন্য এই পদ্ধতি অত্যন্ত উপকারী। তাছাড়া বিভিন্ন রােগের কারণ ও সতর্কতা এবং বিভিন্ন রােগের চিকিৎসা কেন্দ্রের তথ্য ও ঠিকানা সম্বন্ধে ‘জনগণের নিকট বার্তা পৌঁছে। দিতে পারে টেলিমেডিসিন সেবা কেন্দ্র। বর্তমানে ই-সেবাকেন্দ্র সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং দিন দিন এর পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

প্রশ্ন-৩২। ই-পুর্জি বলতে কী বুঝ? 

উত্তর: তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির নাগরিক সেবা সমূহের অন্যতম একটি সেবা হচ্ছে ই-পুর্জি। পুর্জি হচ্ছে চিনিকলসমূহে কখন আখ সরবরাহ করতে হবে সে জন্য আওতাধীন আখচাষিদের দেওয়া একটি অনুমতিপত্র। এসএমএসের মাধ্যমে আখচাষিরা তাৎক্ষণিকভাবে পৃর্জির তথ্য পাচ্ছে বলে এখন তাদের হয়রানি ও বিড়ম্বনার অবসান হয়েছে। পাশাপাশি সময়মতাে আখের সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় চিনিকলের উৎপাদন ও বেড়েছে।

 

প্রশ্ন-৩৩। চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির অবদান ব্যাখ্যা কর। 

অথবা, চিকিৎসা বিজ্ঞানে আইসিটির গুরুত্ব বর্ণনা করাে। 

উত্তর: চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কম্পিউটারের দ্বারা রােগ নির্ণয় ও ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণের কাজ করা হয়। ফলে ভুল হবার সম্ভাবনা কম থাকে। রােগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার পাওয়া যায়। রােগীর সব লক্ষণ ও রক্ত, মূত্র ইত্যাদি পরীক্ষার ফল কম্পিউটারে ইনপুট দিলে কম্পিউটার উভয়ের তুলনা করে সম্ভাব্য লােগ বলে দেয়। এছাড়া কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত স্ক্যানার মস্তিষ্ক ও শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট সূক্ষ্মভাবে বিচার করে কোথাও কোনাে অস্বাভাবিকতা আছে কিনা বা থাকলে কী ধরনের অস্বাভাবিকতা আছে তা বলে দিতে পারে। চিকিৎসা ছাড়াও হাসপাতাল ও ক্লিনিকের প্রশাসনিক দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য কম্পিউটার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে ক্যান্সার রােগের চিকিৎসা ও টিউমারের গঠন প্রকৃতি সম্পর্কে কম্পিউটারের সাহায্যে গবেষণা কাজ করা হয়। এছাড়া চোখের ক্ষমতা নির্ণয়, এক্সরে ইত্যাদি অনেক পরীক্ষায় কাজ কম্পিউটর নিয়ন্ত্রিত, যন্ত্রের সাহায্যে করা হয়। সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সিং, ইন্টারনেট ইত্যাদি প্রযুক্তির সাহায্যে বহু দূরবর্তী স্থান থেকেও চিকিৎসা সুযােগ প্রদান ও গ্রহণ করা শুরু হয়েছে।

 

প্রশ্ন-৩৪। টেলিমেডিসিন কী? ব্যাখ্যা করো।

অথবা, টেলিমেডিসিন কিভাবে চিকিৎসা জগতে বিপ্লব ঘটাতে পারে ব্যাখ্যা করাে।

উত্তর: টেলিমেডিসিন হচ্ছে টেলিফোন বা মােবাইল ফোনের সাহায্যে চিকিৎসা সেবা নেওয়া। নানা কারণে এই ডাক্তারদের অনেকেই বড় শহরে থাকতে পছন্দ করেন, তাই অনেক সময়েই দেখা যায় ছােট শহরে বা গ্রামে অভিজ্ঞ ডাক্তারদের অভাব। অর্থাৎ দূর থেকে টেলিফোন বা মােবাইল প্রযুক্তির সাহায্যে স্বাস্থ্যবিষয়ক টিপস নেওয়াকে টেলিমেডিসিন বলা হয়। আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান টেলিমেডিসিন সাহায্য নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে টেলিভিশন চ্যানেলগুলাে নিয়মিত স্বাস্থবিষয়ক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিনা খরচে সম্প্রচার করে থাকে। যখন হাতের কাছে কোনাে ডাক্তারকে জরুরি কিছু জিজ্ঞেস করার উপায় নেই, তখন টেলিমেডিসিন ব্যবহার করে ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া যায়। এভাবেই চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে এক নতুন বিপ্লব ঘটাতে পারে।

 

প্রশ্ন-৩৫। গবেষণা কী? কত প্রকার কী কী ? তথ্য প্রযুক্তিতে গবেষণার ধাপ গুলাে বিশ্লেষণ করাে।

উত্তর: বুদ্ধিভিত্তিক ও ব্যবহারিক তথ্য অনুসন্ধানকে গবেষণা বলে।

গবেষণার প্রকারভেদ: গবেষণা প্রধানত দুইভাগে বিভক্ত। যথা: (ক) তাত্ত্বিক গবেষণা (খ) ব্যবহারিক গবেষণা।

তথ্য প্রযুক্তিতে গবেষণার ধাপগুলাে বিশ্লেষণ; গবেষণা করতে হলে নানা ধরনের তথ্য নিয়ে কাজ করতে হয় । কাজগুলাে চারটি ধাপে বিভক্ত থাকে সেগুলাে হলাে:

(ক) তথ্য সংগ্রহ গবেষণার প্রথম কাজ হলাে তথ্য সংগ্রহ করা । গবেষণা বিষয়ের উপর নানা ধরনের তথ্য ও উপাত্ত বিভিন্ন সাের্স থেকে সংগ্রহ করতে হয়।

(খ) তথ্য প্রক্রিয়াকরণ: সংগৃহিত তথ্যকে প্রক্রিয়াকরণ করা জন্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র ব্যবহৃত। যেমন- কম্পিউটার মতাে কাজ করে এরূপ যন্ত্র হলাে মাইকো কন্ট্রোলার। এ সকল যন্ত্রে সাহায্যে প্রয়ােজনীয় ও অপ্রয়ােজনীয় তথ্য যাচাই করা যায়।

(গ) তথ্য বিশ্লেষণ: গবেষণার এ ধাপে গবেষকগণ প্রয়ােজনীয় তথ্য নিয়ে চিন্তা-ভাবনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। যেমন-কোন রােগের জন্য কোন মেডিসিনটি প্রয়ােজন ইত্যাদি। এরূপ সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে তথ্য বিশ্লেষণ।

(ঘ) তথ্য প্রদর্শন; এটি গবেষষার শেষ ধাপ। তথ্য বিশ্লেষণের প্রাপ্ত ফলাফল অর্থাৎ গবেষণার বিস্তারিত বিভিন্ন বিষয়-বস্তুকে সুন্দরভাবে উপাস্থাপন করা বােঝায়।

 

প্রশ্ন-৩৬। গবেষণায় তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ব্যবহার লেখ।

অথবা, গবেষণার ক্ষেত্রে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ভূমিকা ব্যাখ্যা করাে।

অথবা, তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি ব্যবহারে গবেষণা কাজ সহজতর হয়েছে- ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর: তথ্য প্রযুক্তির কারণে গবেষণার জগতে শুধু যে একটা বিশাল উন্নতি হয়েছে তা নয় বলা যেতে পারে এখানে সম্পূর্ণ নতুন একটা মাত্রা যােগ হয়েছে। মানুষ এখন সাহিত্য, শিল্প বা সমাজবিজ্ঞান অথবা গণিত, প্রযুক্তি আর বিজ্ঞান, যা নিয়েই গবেষণা করুক না কেন তারা কম্পিউটার এবং তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া সেই গবেষণার কথা চিন্তাও করতে পারে না। বর্তমানে সকল বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ড কম্পিউটারের ওপর নির্ভরশীল। পদার্থের অণু-পরমাণুর গঠন প্রকৃতি, রাসায়নিক দ্রব্যের বিচার বিশ্লেষণে, জটিল গাণিতিক হিসাব-নিকাশে, প্রাণিকোষের গঠন প্রকৃতি বিশ্লেষণে, ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণে, সূর্যের আলােকমণ্ডল ও বর্ণমণ্ডলের মৌলিক পদার্থের অবস্থান নির্ণয়ে কম্পিউটার একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। মহাকাশযান ডিজাইন, পাঠানাের পরিকল্পনা ও বাস্তাবয়ন কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত সমাধান করা হয়। এছাড়াও গবেষণার কাজে বিভিন্ন ধরনের তথ্য উপাত্তের প্রয়ােজন হয়। যা ইন্টারনেট ব্যবহার করে দ্রুত পাওয়া যায়। ফলে গবেষণার কাজ আরাে দ্রুত তরান্বিত করে।

 

প্রশ্ন-৩৭। FPGA ও বলতে কী বুঝ?

উত্তর: FPGA হলাে এক ধরনের প্রােগ্রামযােগ্য লজিক চিপ। যার পূর্ণ রূপ হলাে— Field Programmable Array। কম্পিউটার বলতেই আমাদের চোখের সামনে যে ছবিটি ভেসে উঠে, আজকাল তার চাইতে অনেক ছােট কম্পিউটার তৈরি হয়েছে। কম্পিউটারের মতাে কাজ করতে পারে সেরকম ছােট ছােট মাইক্রোকন্ট্রোলার, FPGA, PLA ইত্যাদি তৈরি হয়েছে। যন্ত্রের ভিতর সেগুলাে বসিয়ে দিয়ে যন্ত্রগুলােকে অনেক স্বয়ংক্রিয় করে দিয়ে গবেষণার পুরাে কাজটি অনেক সহজ করে দেওয়া হয়।       

Leave a Comment