ঝর্ণার গান কবিতার জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

ঝর্ণার গান কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

প্রশ্ন ১। ‘ঝর্ণা’ কিসের গান গায়?

উত্তর : ঝরনা পরির গান গায়।

প্রশ্ন ২। তরল শ্লোক কী?

উত্তর : তরল শ্লোক হচ্ছে- লঘু বা হালকা চালের কবিতা।

প্রশ্ন ৩। ঝর্ণা কার বােল সাধে?

উত্তর : ঝরনা বুলবুলির বােল সাধে।

প্রশ্ন ৪। ‘আংরাখা’ অর্থ কী?

উত্তর : আংরাখা অর্থ লম্বা ও ঢিলা পােশাকবিশেষ।

প্রশ্ন ৫। সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর : সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। 

প্রশ্ন ৬। ‘বেণু ও বীণা’ কী?

উত্তর : বেণু ও বীণা’ কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত রচিত একটি মৌলিক কাব্যগ্রন্থ।

প্রশ্ন ৭। ‘বিভােল’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : বিভোল’ শব্দের অর্থ অচেতন বা বিবশ ।

প্রশ্ন ৮। কবি-কল্পনা অনুযায়ী কোন পাখি চাঁদের আলাে পান করে?

উত্তর : কবি-কল্পনা অনুযায়ী চকোর পাখি চাদের আলাে পান করে।

প্রশ্ন ৯। নিমতা গ্রামটি কিসের কাছাকাছি অবস্থিত?

উত্তর : নিমতা গ্রামটি কলকাতার কাছাকাছি অবস্থিত।

প্রশ্ন ১০। সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত কোন সময় থেকে কাব্যচর্চা করেন?

উত্তর : সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ছাত্রজীবন থেকে কাব্যচর্চা করেন।

প্রশ্ন ১১। কোন ক্ষেত্রে কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত অসাধারণ নৈপুণ্যের পরিচয় দিয়েছেন?

উত্তর : কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ছন্দ নির্মাণে অসামান্য নৈপুণ্য দেখিয়েছেন।

প্রশ্ন ১২। ছন্দ নির্মাণে অসাধারণ নৈপুণ্যের জন্য সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত কী বলে পরিচিত হন?

উত্তর : ছন্দ নির্মাণে অসামান্য নৈপুণ্যের জন্য সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ছন্দের জাদুকর বলে পরিচিত হন।

প্রশ্ন ১৩। ঝর্ণার গান কবিতায় কবি কীভাবে ধেয়ে যায়?

উত্তর : ঝর্ণার গান’ কবিতায় কবি চপল পায়ে ধেয়ে যায়।

প্রশ্ন ১৪। ঝুম পাহাড়’ অর্থ কী?

উত্তর : ‘ঝুম পাহাড়’ অর্থ নির্জন পাহাড়।

প্রশ্ন ১৫। কোথায় ঝরনার পুলক লাগে?

উত্তর : সারা গায় ঝরনার পুলক লাগে।

প্রশ্ন ১৬। ঝরনা কিসের উপর চরণ রাখে?

উত্তর : ঝরনা শিলার উপর চরণ রাখে।

প্রশ্ন ১৭। ঝরনা কেমন মনে চরণ রাখে?

উত্তর : ঝরনা দোদুল মনে চরণ রাখে। .

প্রশ্ন ১৮। দুপুর-ভাের কী ডাকে?

উত্তর : দুপুর-ভাের ঝিঝি ডাকে।

প্রশ্ন ১৯। ঝর্ণার গান কবিতায় কী ঝিমায়?

উত্তর : ঝর্ণার গান’ কবিতায় পথ ঝিমায়।

প্রশ্ন ২০। বিজন অর্থ কী?

উত্তর : বিজন অর্থ জনশূন্য, নির্জন।

প্রশ্ন ২১। কূজন মানে কী?

উত্তর : কূজন মানে পাখির ডাক।

প্রশ্ন ২২। শিলার গায় কিসের রং ধরে?

উত্তর : শিলার গায় ডালচিনির রং ধরে।

 

ঝর্ণার গান কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন   

প্রশ্ন ১। ‘শঙ্কা নাই, সমান যাই’ পঙক্তি দ্বারা কী বােঝানাে হয়েছে?

উত্তর : ‘শঙ্কা নাই, সমান যাই’ পঙক্তি দ্বারা ভয়হীন সাহসী মনােভাবকে বােঝানাে হয়েছে।

ঝরনা পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যায়। মনের আনন্দে বর তার এ ছুটে চলার পথে শিথিল শিলার ওপর পা ফেলে এগিয়ে যায়। গান ছড়ি গাইতে গাইতে শুরু হয় তার পথচলা। ঝুম পাহাড় বা নীরব পাহাড় ঘাড় ঘুরিয়ে ঝরনাকে ভয় দেখালেও ঝরনা সমান তালে এগিয়ে যায়। কারণ তার শঙ্কা নেই। যেহেতু কারও ক্ষতি না করে আপন ইচ্ছায় সে চলে। তাই তার কাউকে ভয় পাওয়ার কথা নয়। এ কারণে তার শঙ্কা নেই। 

প্রশ্ন ২। “কাতেই তৃষ্ণা যার/নিক না সেই পাঁক হেঁকে”- বলতে  কবি কী বুঝিয়েছেন? 

উত্তর : “কাতেই তৃষ্ণা যার নিক না সেই পাক ঘেঁকে”- বলতে কবি প্রয়ােজনের বিষয়টিকে তুলে ধরেছেন।

ঝরনা একই সঙ্গে সৌন্দর্য ও প্রয়ােজনের উৎস। সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ ঝরনার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়। আর যার কাছে জলের প্রয়ােজনীয়তা বেশি সে সৌন্দর্য উপভােগ থেকে বঞ্ছিত হয়। কেবল তৃষ্ণা মেটানাের জন্য ইচ্ছে থাকে বলে তার কাছে সৌন্দর্য উপেক্ষিত হয়। কবি সৌন্দর্য পিয়াসী, তাই ঝরনার সৌন্দর্যই তার কাছে মুখ্য, এর জলের প্রয়ােজনটা তার কাছে গৌণ। এ কারণে তিনি বলেছেন, যার জলের তৃষ্ণা তার জন্য ঝরনা নয়, সে যেন কাদা ঘেঁকে তার তৃষ্ণা মিটায়। 

প্রশ্ন ৩। পুলক মাের সকল গায়,

বিডােল মাের সকল প্রাণ – ব্যাখ্যা কর?

উত্তর : পুলক মাের সকল গায়/ বিভােল মাের সকল প্রাণ এর মাধ্যমে ঝরনার ছন্দময় গতি ও আনন্দধারাকে বােঝানাে হয়েছে।

ঝরনা পাহাড়িকন্যা। দূর, পাহাড়ের সুউচ্চ শিখরে তার জন্ম। ঝর্ণার গান’ কবিতায় ঝরনার গতিময়তা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকটি প্রতিফলিত। ঝরনা মনের আনন্দে পাহাড় থেকে নেমে আসে। তার বুকে খুশির জোয়ার। সে পরির গান গায়, স্বৰ্গারণ্যে আনন্দ-গানে পরিদের মেতে ওঠার আনন্দ ঝরনার মনে। অসম্ভব খুশিতে ঝরনা আত্মভােলা হয়ে ছুটে বেড়ায়।

প্রশ্ন ৪। ঝর্ণার গান’ কবিতায় সৌন্দর্যপিপাসুদের প্রতি কেন ঝরনার  অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে? 

উত্তর : ঝরনা নিজে সুন্দর তাই ‘ঝর্ণার গান’ কবিতায় সৌন্দর্যপিপাসুদের প্রতি ঝরনার অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে।

নির্জন অরণ্যময় নিস্তব্দ পরিবেশে ঝরনা, মনের আনন্দে পাহাড় থেকে নেমে আসে। এই জলধারার যে সৌন্দর্য তা তুলনারহিত। ঝরনা তার আশাতেই ছুটে চলে, যার রয়েছে সুন্দরের প্রতি তৃষ্ণা । কারণ ঝরনা নিজে অতুলনীয় সৌন্দর্যের অধিকারী। এজন্য সৌন্দর্যপিপাসুদের প্রতি ঝরনার অনুরাগ প্রকাশ পেয়েছে।

প্রশ্ন ৫। ঝুম-পাহাড় ভয় দেখালেও ঝরনা কেন সামনে এগিয়ে যায়?

উত্তর : ঝরনা আপন ছন্দে গতিশীল বলে ঝুম পাহাড় ভয়  দেখালেও সে নির্ভয়ে সামনে এগিয়ে যায়।

পাহাড় থেকে ঝরনা সৃষ্টি হয়ে কেবল সামনের দিকেই ধাবিত হয়। পাহাড়ের পাদদেশে আছড়ে পড়া ঝরনাকে ঝুম-পাহাড় ঘাড় ঝুঁকিয়ে ভয় দেখায়, চোখ পাকায় । কিন্তু ঝরনা তার ভয়ে ভীত না হয়ে কেবলই সামনে এগিয়ে চলে। এভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কারণ ঝরনার নির্ভীক গতিশীলতা।

প্রশ্ন ৬। ঝরনাকে ঝুম-পাহাড় ভয় দেখায় কেন?

উত্তর : ঝরনাকে ঝুম-পাহাড় ভয় দেখানাের কারণ হলাে, ঝরনার উচ্ছ্বাস আর মাতামাতিতে পাহাড়ের স্তব্ধতা নষ্ট হয়।   

পাহাড় মানে পাষাণ খণ্ড । স্তব্ধ হয়ে যুগের পর যুগ কাটিয়ে দেয় । দারুণ গাম্ভীর্য নিয়ে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে। কিন্তু ঝরনার উচ্ছল গান, নৃত্য-উদ্যমে ছুটে চলা কোলাহল সৃষ্টি করে। পাহাড় এতে বিরক্ত হয়ে ঝরনাকে ভয় দেখায়। কিন্তু ঝরনা ভয় পায় না, দুরন্ত গতিতে ছুটতেই থাকে। অর্থাৎ ঝরনার চপলতার কারণেই ঝুম-পাহাড় ঝরনাকে ভয় দেখায়।

প্রশ্ন ৭। ঝর্ণার গান’ কবিতার ঝরনা চপল পায় ধেয়ে বেড়ায় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ‘ঝর্ণার গান কবিতায় কবি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অফুরন্ত সভার নিয়ে চপল পায় ঝরনার খেয়ে বেড়ানাের কথা বলেছেন।

ঝরনা নিজে প্রকৃতির রূপ-লাবণ্যের শান্তশীতল পরশ পাওয়ার জন্য ব্যাকুল চল পায়ে সৌন্দর্যময় প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়ায়। স্বৰ্গারণ্যে আনন্দ গানে মেতে বেড়ানাে পরিদের মতাে ঝরনাও পরির গান গেয়ে জনশূন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় স্থানে গিয়ে প্রকৃতির অনুপম সৌন্দর্যরস ছড়িয়ে দেয় ।

প্রশ্ন ৮। ঝরনার বৈশিষ্ট্য কী?

উত্তর : ঝরনার নানা রকম বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

ছুটে চলাই ঝরনার প্রধান বৈশিষ্ট্য। ঝরনা চপল পায়ে ধায়। অবিরাম ছুটে চলে। চারদিকে নিস্তব্ধ প্রকৃতি, তার মধ্যেও ঝরনা ছুটে চলে। সমান গতিতে বয়ে চলে। পর্বত থেকে নেমে আসে ঝরনার সাদা জলরাশি। পাথরের বুকে আঘাত হেনে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে।     

Leave a Comment