নবম দশম শ্রেণির জীববিজ্ঞানের জীবের বংশগতি ও বিবর্তন অধ্যায়ের জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ১। CysE কী?

উত্তর : CysE হলাে একটি ব্যাকটেরিয়াল জিন যা ভেড়ার পশমের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য ভেড়ার জিনােমে স্থানান্তর করা হয়।

প্রশ্ন ২। জিন কী?

উত্তর : জিন হলাে জীবের সকল দৃশ্য ও অদৃশ্যমান লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী একক।

প্রশ্ন ৩। কালার ব্লাইন্ড কী?

উত্তর : কালার ব্লাইন্ড বর্ণান্ধতা এমন এক অবস্থা যখন কেউ কোনাে রং সঠিকভাবে চিনতে পারে না।

প্রশ্ন ৪। প্রকট বৈশিষ্ট্য কী?

উত্তর : মাতাপিতা থেকে প্রথম বংশধরে জীবের যে বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় তাকে প্রকট বৈশিষ্ট বলে।

প্রশ্ন ৫। লােকাস কী?

উত্তর : ক্রোমােজোমের যে স্থানে জিন অবস্থান করে তাই লােকাস।

প্রশ্ন ৬। বিবর্তন কী?

উত্তর : সময়ের সাথে সাথে কম বৈচিত্র্যপূর্ণ পূর্বের জীব থেকে সুশৃঙ্খল ও অনুক্রমিক পদ্ধতিতে পর্যায়ক্রমিকভাবে বৈচিত্র্যময় জীবের বিকাশকে বিবর্তন বলে।

প্রশ্ন ৭। DNA-এর পূর্ণরূপ লিখ।

উত্তর : DNA এর পূর্ণরূপ হলাে Deoxy Ribonucleic Acid.

প্রশ্ন ৮। RNA এর পূর্ণরূপ কী?

উত্তর : RNA -এর পূর্ণরূপ হলাে— Ribonucleic Acid.

প্রশ্ন ৯। অটোসােম কী?

উত্তর : মানবদেহকোষে ২৩ জোড়া ক্রোমোেসােমর মধ্যে ২২ জোড়া ক্রোমােসােমই হচ্ছে অটোসােম ।

প্রশ্ন ১০। নিউক্লিওটাইড কী?

উত্তর : পাঁচ কার্বনযুক্ত শর্করা, নাইট্রোজেনঘটি বেস বা ক্ষার ও অজৈব ফসফেট এই তিনটি উপাদান একত্রে হলাে নিউক্লিওটাইড ।

প্রশ্ন ১১। জিনােটাইপ কাকে বলে?

উত্তর : কোনাে জীবের লক্ষণ নিয়ন্ত্রণকারী জীন যুগলের গঠনকে জিনােটাইপ বলে।

প্রশ্ন ১২। RNA এর সুগারের নাম লিখ ।

উত্তর : RNA এর সুগারের নাম হলাে রাইবােজ।

প্রশ্ন ১৩। PCR এর পূর্ণরূপ কী?

উত্তর : PCR এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Polymerase chain reaction.

প্রশ্ন ১৪। থ্যালাসেমিয়া কী?

উত্তর : থ্যালাসেমিয়া হলাে রক্তের লােহিত কণিকার এক অস্বাভাবিক অবস্থাজনিত রােগ। এ রােগে লােহিত রক্ত কণিকাগুলাে নষ্ট হয়ে যায়। 

প্রশ্ন ১৫। প্রচ্ছন্ন জিন কাকে বলে?

উত্তর : যে জিনের বৈশিষ্ট্য প্রথম বংশধরে প্রকাশ পায় না, তবে দ্বিতীয় বংশধরে এক-চতুর্থাংশ জীবে প্রকাশ পায় তাকে প্রচ্ছন্ন জিন বলে ।

প্রশ্ন ১৬। মেন্ডেল কে ছিলেন?

উত্তর : গ্রেগর জোহান মেন্ডেল বংশগতি বিদ্যার জনক। তিনি ১৮৮৪  সালে অস্ট্রিয়ার নােতে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন ১৭। লিথাল জিন কাকে বলে?

উত্তর : হােমােজাইগাস অবস্থার কোনাে জিন জীবের মৃত্যুর কারণ হলে সে জিনকে লিথাল জিন বলে।

প্রশ্ন ১৮। অন্তঃপ্রজাতিক প্রতিযােগিতা কী?

উত্তর : যখন একই প্রজাতির বিভিন্ন সদস্যদের পরস্পরের মধ্যে  প্রতিযােগিতা দেখা যায় তখন তাকে অন্তঃপ্রজাতিক প্রতিযােগিতা  বলে। যেমন- বানর-বানরে প্রতিযােগিতা।

প্রশ্ন ১৯। আন্তঃপ্রজাতিক প্রতিযােগিতা কাকে বলে?

উত্তর : যখন ভিন্ন দুটি প্রজাতির মধ্যে প্রতিযগিতা দেখা যায় তখন তাকে আন্তঃপ্রজাতিক প্রতিযােগিতা বলে। যেমন- সাপ-বেজীর প্রতিযােগিতা।

প্রশ্ন ২০। ক্রোমােজোমের প্রধান উপাদান কী?

উত্তর : ক্রোমােজোমের প্রধান উপাদান হলাে DNA।

প্রশ্ন ২১। বংশগতির প্রধান উপাদান কী?

উত্তর : বংশগতির প্রধান উপাদান হচ্ছে ক্রোমােজোম।

প্রশ্ন ২২। সর্বপ্রথম ক্রোমােজাম কে আবিষ্কার করেন?

উত্তর : বিজ্ঞানী Strasburger (১৮৭৫) সর্বপ্রথম ক্রোমােজোম আবিষ্কার করেন।

প্রশ্ন ২৩। নাইট্রোজেন ক্ষারক কয় ধরনের?

উত্তর : নাইট্রোজেন ক্ষারক দুই ধরনের। যথা- পিউরিন ও পাইরিমিডিন।

প্রশ্ন ২৪। DNA-এর পলিনিউক্লিওটাইড সূত্রদ্বয় কীভাবে অবস্থান করে?

উত্তর : DNA এর পলিনিউক্লিওটাইড সূত্রদ্বয় বিপরীতভাবে অবস্থান করে। 

 

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন 

 

প্রশ্ন ১। জৈব বিবর্তন বলতে কী বুঝায়?

উত্তর : কয়েক হাজার বছর সময়ের ব্যাপকতায় জীব প্রজাতির পৃথিবীতে আবির্ভাব ও টিকে থাকার জন্যে যে পরিবর্তন ও অভিযোজন প্রক্রিয়া তাকে জৈব বিবর্তন বলে। পৃথিবীতে বর্তমান যত জীব এসেছে। তারা অনেকেই সময়ের আবর্তে লুপ্ত হয়ে গেছে। যেমন : ডাইনােসর।

আবার কোনাে কোনাে জীব ধীর পরিবর্তন ঘটিয়ে এখনও টিকে আছে। এই টিকে থাকার জন্য জীবকে সংগ্রাম করতে হয়েছে, শারীরিক গঠন, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হয়েছে। বেঁচে থাকার জন্য এই যে পরিবর্তন, অভিযােজন একেই জৈব বিবর্তন বলে ।

প্রশ্ন ২। কালার ব্লাইন্ড কেন হয়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : চোখের স্নায়ুকোষে রং শনাক্তকারী পিগমেন্টের অনুপস্থিতির কারণে মানুষ কালার ব্লাইন্ড হয়। এমনকি বংশগতি কারণ ছাড়াও কোনাে কোনাে ঔষধ যেমন- বাত রােগের জন্য হাইড্রক্সিক্লোরােকুইনিন সেবনে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে চোখের রঙিন পিগমেন্ট নষ্ট হয়ে যায়। ফলে রােগী কালার রাইন্ড হতে পারে। কালার ব্লাইন্ড রােগী বা লাল আর সবুজ বর্ণের পার্থক্য করতে পারে না।

প্রশ্ন ৩। বিবর্তন বলতে কী বুঝায়?

উত্তরঃ সময়ের সাথে সাথে কম বৈচিত্র্যপূর্ণ পূর্বের জীব থেকে সুশৃঙ্খল ও অনুক্রমিক পদ্ধতিতে পর্যায়ক্রমিকভাবে বৈচিত্র্যময় জীবের বিকাশকে বিবর্তন বলে। পূর্বে পৃথিবীতে দেখা যেত এখন জীবিত নেই। এমনকি বর্তমানে পৃথিবীতে দেখা যায় এরূপ কোনাে জীবই এক সময়ে পৃথিবীতে ছিল না। এসবই বিবর্তনের কারণে ঘটছে।

প্রশ্ন ৪। ডি এন এ টেস্ট করা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : DNA টেস্টের মাধ্যমে সহজেই অপরাধী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা যায়। অপরাধের শিকার এমন কোন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রাপ্ত জৈবিক নমুনার DNA-র নকশাকে তুলনা করা হয় সন্দেহভাজনের কাছ থেকে নেওয়া রক্ত বা জৈবিক নমুনার DNA এর সাথে । যদি DNA নকশা মিলে যায় সহজেই বলা যায় যে, সন্দেহভাজন ব্যক্তিই অপরাধী। এছাড়াও সন্তানের জৈবিক পিতা-মাতা নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও ডিএনএ টেস্ট করা হয়।

প্রশ্ন ৫। কুলির থ্যালাসেমিয়া বলতে কী বােঝায়?

উত্তর : দেহ কোনাে কারণে B-গ্লোবিউলিন প্রােটিন উৎপাদনে অসমর্থতা দেখালে B-থ্যালাসেমিয়া রােগ দেখা যায়। একেই কুলির  থ্যালাসেমিয়া বলে। এ রােগটি বেশিরভাগ ভূ-মধ্যসাগরীয় অঞ্জলের লােকদের মধ্যে দেখা যায়।

প্রশ্ন ৬। জিনকে বংশগতির ধারক বলা হয় কেন?

উত্তর : জীবের সব দৃশ্য ও অদৃশ্যমান লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করে জিন। সাধারণত একটি বৈশিষ্ট্যের জন্য একটি নির্দিষ্ট জিন থাকে এবং কোনাে ক্ষেত্রে একটি বৈশিষ্ট্যের জন্য একাধিক জিনও থাকতে পারে। নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য ধারণকারী জিন পিতা-মাতা হতে বৈশিষ্ট্যসমূহ সন্তানসন্ততিতে স্থানান্তরিত করে। এজন্যই জিনকে বংশগতির ধারক বলা হয়।

প্রশ্ন ৭। RNA বলতে কী বােঝায়?

উত্তর : RNA হলাে রাইবােনিউক্লিক এসিড। অধিকাংশ RNA তে একটি পলিনিউক্লিওটাইডের সূত্র থাকে। এতে পাচ কার্বন বিশিষ্ট রাইবােজ শর্করা, অজৈব ফসফেট ও নাইট্রোজেন বেস থাকে।

প্রশ্ন ৮। Rh ফ্যাক্টর বলতে কী বুঝায়?

উত্তর : Rh ফ্যাক্টর রেসাস নামক বানরের লােহিত রক্তকণিকায় অবস্থিত। এক ধরনের অ্যাগ্লুটিনােজেন। রেসাস বানরের নামানুসারে এ অ্যান্টিজেনকে রেসাস ফ্যাক্টর সংক্ষেপে Rh ফ্যাক্টর বলে। এটি অধিকাংশ শ্বেতকায়। ব্যক্তির লােহিত কণিকাকে পিণ্ডে পরিণত করতে সক্ষম।

প্রশ্ন ৯। থ্যালাসেমিয়া কেন হয়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : থ্যালাসেমিয়া হয় লােহিত রক্ত কোষের দুটি প্রােটিনের জিন নষ্টের কারণে। থ্যালাসেমিয়া রক্তের লােহিত রক্ত কণিকার এক অস্বাভাবিক অবস্থাজনিত রােগের নাম। এ রােগী রক্তশূন্যতায় ভােগে। লােহিত রক্তকণিকা দুই ধরনের প্রােটিন দ্বারা তৈরি গ্লোবিউলিন্ট এবং বিটা গ্লোবিউলিন। লােহিত রক্ত কণিকার এ দুটি প্রােটিন জিন নষ্ট হলে ত্রুটিপূর্ণ লােহিত রক্ত কোষ উৎপাদিত হয়। ফলে দুধরনের থ্যালাসেমিয়া দেখা যায়।

প্রশ্ন ১০। বংশগতি বলতে কী বুঝায়?

উত্তর : জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী জিনসমূহ প্রজননের মাধ্যমে পিতামাতা থেকে বংশানুক্রমে সন্তান-সন্ততির দেহে সঞারিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বংশগতি বলে। এ প্রক্রিয়ায় পিতা-মাতার বিশেষ লক্ষণগুলাে নির্ভুলভাবে সন্তানসন্ততির মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বংশধরদের মধ্যে পিতা-মাতার লক্ষণগুলাের অবিকল প্রতিরূপ দৃষ্ট হয় না।

প্রশ্ন ১১। মেন্ডেলকে বংশগতি বিদ্যার জনক বলা হয় কেন?

উত্তর : জিনতত্ত্বে মেন্ডেলের অবদান অপরিসীম। অস্ট্রিয়াবাসী ধর্মযাজক গ্রেগর জোহান মেন্ডেল দীর্ঘ সাত বছর Pisum sativum নামক মটরশুটি গাছের উপর নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে বংশগতির উপর সতর্ক ও একনিষ্ঠ কাজের মাধ্যমে দুটি মৌলিক সিদ্ধান্তে উপনীত হন। মেন্ডেল প্রদত্ত্ব তত্ত্বগুলােকে বর্তমানে বংশগতিবিদ্যার ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। এসব কারণে মেন্ডেলকে জিনতত্ত্বের জনক বলা হয় ।

প্রশ্ন ১২। প্রজাতি টিকে থাকায় বিবর্তনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বিবর্তনের মাধ্যমে নতুন প্রজাতির উদ্ভবকালে দেখা যায় অনেক প্রজাতি কালের গর্ভে হারিয়ে যায়। উদাহরণ হিসেবে ডাইনােসরের কথা বলা যায়। দেখা গেছে যে, সময়ের সাথে যে প্রজাতিটির টিকে থাকার ক্ষমতা যত বেশি সে বিবর্তনের ধারায় তত বেশিদিন টিকে থাকতে পারে। অর্থাৎ যে পরিবেশ, জীবনপ্রবাহ ও মতে জনমিতির মানদন্ডে বিবর্তনে যে যত বেশি খাপ খাওয়াতে পারবে সেই  প্রজাতিটি টিকে থাকবে।

প্রশ্ন ১৩। DNA অনুলিপনকে অর্ধ-রক্ষণশীল অনুলিপন বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় একটি DNA অণু থেকে আর একটি নতুন DNA  অণু তৈরি হয় বা সংশ্লেষিত হয় তাকে DNA অনুলিপন বলে। এই পদ্ধতিতে DNA সূত্র দুটির হাইড্রোজেন বন্ধন ভেঙে গিয়ে আলাদা হয় এবং প্রতিটি সূত্র তার পরিপূরক নতুন সূত্র সৃষ্টি করে। এরপর একটি পুরাতন সূত্র ও একটি নতুন সূত্র সংযুক্ত হয়ে DNA অণুর সৃষ্টি হয়। একটি পুরাতন ও মাতৃসূত্রক ও একটি নতুন সৃষ্ট সূত্রকের সমন্বয়ে গঠিত বলে একে অর্ধ সংরক্ষণশীল পদ্ধতি বলা হয়।

প্রশ্ন ১৪। ছেলে সন্তান কিভাবে পিতার বৈশিষ্ট্য অর্জন করে? 

উত্তর : ছেলে সন্তান হওয়ার জন্য অবশ্যই পিতার Y-ক্রোমােজোম স্থানান্তরিত হতে হবে। পিতার Y-ক্রোমােজোম ও মাতার X ক্রোমােজোমবাহী জনন কোষ মিলনের মাধ্যমে জাইগােট গঠিত হয়। এ জাইগােটের মধ্যে পিতামাতার জিনগুলাে একত্রিত হয়ে সন্তান সন্ততিতে বৈশিষ্ট্য আকারে প্রকাশ পায়। এভাবে ছেলে সন্তান তার পিতার বৈশিষ্ট্য অর্জন করে।

Leave a Comment