প্রশ্ন ১। ব্লাস্টোসিস্ট কী?
উত্তর : কোষ বিভাজনের শেষ পর্যয়ে গঠন্মুখ ভ্রুণ ডিম্বনালি থেকে জরায়ুতে পৌঁছে। এ পর্যায়ে ভ্রুণকে ব্লাস্টোসিস্ট বলে।
প্রশ্ন ২। প্রচ্ছন্ন জিন কাকে বলে?
উত্তর : যে জিনের বৈশিষ্ট্যটি প্রথম বংশধরে প্রকাশ পায় না তবে দ্বিতীয় বংশধরে এক-চতুর্থাংশ জীবে প্রকাশ পায় তাকে প্রচ্ছন্ন জিন বলে।
প্রশ্ন ৩। প্রজনন কী?
উত্তর : প্রজনন হলাে এমন একটি শারীরতত্ত্বীয় কার্যক্রম যার মাধ্যমে জীব তার প্রতিরূপ সৃষ্টি করে ভবিষ্যৎ বংশধর রেখে যায়।
প্রশ্ন ৪। পুম্পাক্ষ কাকে বলে?
উত্তর : ফুলের বৃন্তশীর্ষে অবস্থিত গােলাকার অংশ যাতে বাকি চারটি স্তবক পরপর সাজানাে থাকে তাকে পুম্পাক্ষ বলে।
প্রশ্ন ৫। ফিটাস কী?
উত্তর : প্রায় ৮ সপ্তাহ বয়স্ক ভূণকে ফিটাস বলে।
প্রশ্ন ৬। ফুল কী?
উত্তর : প্রজননের জন্য রূপান্তরিত বিশেষ ধরনের বিটপই হচ্ছে ফুল ।
প্রশ্ন ৭। দ্বি-নিষেক কী?
উত্তর : একই সময়ে ডিম্বাণুর সাথে একটি পুংগ্যামেটের মিলন ও সেকেণ্ডারি নিউক্লিয়াসের সাথে অপর পুংগ্যামেটের মিলন প্রক্রিয়াই দ্বি-নিষেক।
প্রশ্ন ৮। বয়ঃসন্ধিকাল কী?
উত্তর : সেকেণ্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্যের উদ্ভবসহ জননাঙ্গের সক্রিয় পরিস্ফুটনকালকে বয়ঃপ্রাপ্তি বা বয়ঃসন্ধিকাল বলে। অথবা কৈশাের ও তারুণ্যের সন্ধিকালই হলাে বয়ঃসন্ধিকাল ।
প্রশ্ন ৯। জাইগােট কী?
উত্তর : শুক্রাণু সক্রিয়ভাবে ডিম্বাণুতে প্রবেশ করে এবং এদের নিউক্লিয়াস দুটি পরস্পর একীভূত হয়। একীভূত হয়ে যে কোষটি উৎপন্ন হয় তাই জাইগােট।
প্রশ্ন ১০। পর-পরাগায়ন কী?
উত্তর : একই প্রজাতির দুটি ভিন্ন উদ্ভিদের ফুলের মধ্যে যখন পরাগ সংযােগ ঘটে তাই পর-পরাগায়ন।
প্রশ্ন ১১। অন্তঃনিষেক কী?
উত্তর : স্ত্রীদেহের জননাঙ্গে সংঘটিত নিষেক প্রক্রিয়াই হলাে অন্তঃনিষেক।
প্রশ্ন ১২। প্রতিপাদ কোষ কী?
উত্তর : গর্ভর্যন্ত্রের বিপরীত দিকের কোষ তিনটি হলাে প্রতিপাদ কোষ ।
প্রশ্ন ১৩। ডিপ্লয়েড কী?
উত্তর : দুটি হ্যাপ্লয়েড কোষের মিলনে যে কোষ গঠিত হয় তাই ডিপ্লয়েড।
প্রশ্ন ১৪। আর্কিস্পােরিয়াম কী?
উত্তর : অপরিণত পরাগধানী ধীরে ধীরে ৪টি খণ্ড বিশিষ্ট একটি অঙ্গে পরিণত হয়। এ খণ্ডগুলাে প্রােটোপ্লাজম দ্বারা পূর্ণ থাকে। প্রতিটি খণ্ডই আর্কিম্পােরিয়াম।
প্রশ্ন ১৫। নালিকোষ কী?
উত্তর : পরাগরেণুর কেন্দ্রিকাটি মাইটোটিক পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে একটি বৃহৎ কোষ সৃষ্টি করে। এ কোষটিই নালিকোষ।
প্রশ্ন ১৬। নিষেক কাকে বলে?
উত্তর : যৌন প্রজননে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনকে নিষেক বলে।
প্রশ্ন ১৭। বহিঃনিষেক কী?
উত্তর : যে নিষেক ক্রিয়া প্রাণিদেহের বাইরে সংঘটিত হয় তাই বহিঃনিষেক নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ১৮। টেস্টোস্টেরন কোথা থেকে নিঃসৃত হয়?
উত্তর : শুক্রাশয় থেকে টেস্টোস্টেরন নিঃসৃত হয়।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
প্রশ্ন ১। মিউচুয়ালিজম বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি জীবের একটি অন্যটিকে সহায়তা করে তাকে ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলে। এক্ষেত্রে সহযােগীদ্বয়ের একটি বা উভয়ই উপকৃত হতে পারে। যে ক্ষেত্রে সহযােগীদ্বয়ের উভয় উপকৃত হয় তাকে মিউচুয়ালিজম বলে। যেমন- মৌমাছি কর্তৃক ফুলের মধু আহরণ।
প্রশ্ন ২। কমেনসেলিজম বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি জীবের একটি অন্যটিকে সহায়তা করে তাকে ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলে। আর এ ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়ার একটি অংশ হলাে কমেনসেলিজম। কমেনসেলিজমের ক্ষেত্রে সহযােগীদের মধ্যে মাত্র একজন উপকৃত হয়। অন্য সহযােগী উপকৃত না হলেও কখনও ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
প্রশ্ন ৩। প্লাঙ্কটন বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : পানিতে ভাসমান ক্ষুদ্র উদ্ভিদ বা প্রাণীকে প্লাঙ্কটন বলে। উদ্ভিদ প্লাঙ্কটনকে ফাইটোপ্লাঙ্কটন ও প্রাণী প্লাঙ্কটনকে জুয়ােপ্লাঙ্কটন বলে। ফাইটোপ্লাঙ্কটন উৎপাদক শ্রেণির এবং জুয়ােপ্লাঙ্কটন প্রথম শ্রেণির খাদকের অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন ৪। ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি জীবের একটি অন্যটিকে সহায়তা করে তাকে ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলে। এক্ষেত্রে সহযােগীদ্বয়ের একটি বা উভয়ই উপকৃত হতে পারে। লাভজনক এ আন্তঃক্রিয়াকে মিউচুয়ালিজম ও মেনসেলিজম নামে দু’ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রশ্ন ৫। খাদ্যজাল কী, বুঝিয়ে লিখ।
উত্তর : বাস্তুতন্ত্রের খাদ্যশিকলে একই খাদক বিভিন্ন স্তরে স্থান পেতে পারে। এভাবে বেশ কয়েকটি খাদ্যশিকল একত্রিত হয়ে একটি জালের মতাে গঠন তৈরি করে। একে খাদ্যজাল বলে।
প্রশ্ন ৬। পুস্পমঞ্জরি বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : গাছের ছােট একটি শাখায় ফুলগুলাে বিশেষ একটি নিয়মে সাজানাে থাকে। ফুলসহ এ শাখাকে পুষ্পমঞ্জরী বলে। যে শাখায় ফুলগুলাে সজ্জিত থাকে তাকে মঞ্জরীদণ্ড বলে। এ শাখার বৃদ্ধি অসীম হলে অনিয়ত পুষ্পমঞ্জরী ও পুষ্প উৎপাদনের ফলে বৃদ্ধি থেমে গেলে তাকে নিয়ত পুষ্পমঞ্জরী বলে ।
প্রশ্ন ৭। প্রজনন বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় কোনাে জীব তার বংশধর সৃষ্টি করে তাকেই প্রজনন বলে। প্রজনন এমন একটি শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম যার মাধ্যমে জীব তার প্রতিরূপ সৃষ্টি করে ভবিষ্যৎ বংশধর রেখে যায়। প্রজনন না হলে জীবের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যেত।
প্রশ্ন ৮। ফুলের অত্যাবশ্যকীয় স্তবক বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : ফুলের যে স্তবক উদ্ভিদের জনন কাজে সরাসরি অংশগ্রহণ করে তাকে ফুলের অত্যাবশ্যকীয় স্তবক বলা হয় ।
প্রশ্ন ৯। বহিঃনিষেক বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : যে নিষেক ক্রিয়া প্রাণিদেহের বাইরে সংঘটিত হয় তাকে বহিঃনিষেক বলে। এ ধরনের নিষেক সাধারণত পানিতে বাস করে এমন সব প্রাণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ। যেমন- মাছ।
প্রশ্ন ১০। বায়ুপরাগী ফুল বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : যেসব ফুলের পরাগ বায়ুর মাধ্যমে গর্ভমুণ্ড পর্যন্ত বাহিত হয় এবং পরাগায়ন সম্পন্ন করে তাদের বায়ুপরাগী ফুল বলে । বায়ু পরাগী ফুল হালকা ও মধুগ্রন্থিহীন। এসব ফুলে সুগন্ধ নেই। এরা সহজেই বাতাসে ভেসে যেতে পারে। যেমন- ধান।
প্রশ্ন ১১। মেনােপেজ বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : বয়ঃসন্ধিকাল থেকে মেয়েদের নির্দিষ্ট সময় পরপর রক্তস্রাব হয়। একে মাসিক বা ঋতুস্রাব বলে। সাধারণত ৪০ – ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত ঋতুস্রাব চক্রাকারে চলতে থাকে। এরপর ঋতুস্রাব চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, একে মেনােপেজ বলে।
প্রশ্ন ১২। নিষেকের মৌলিক তাৎপর্য কী?
উত্তর : নিষেকের ফলে পুষ্পের গর্ভাশয়ের অভ্যন্তরে ডিম্বক বীজে পরিণত হয় এবং গর্ভাশয় ফলে পরিণত হয়। কাজেই দেখা যায়, নিষেক ক্রিয়ার ফলেই বীজ এবং ফলের সৃষ্টি হয়। বীজ উদ্ভিদের বংশ রক্ষা করে। বীজের সৃষ্টি না হলে অধিকাংশ পুষ্পক উদ্ভিদই হয়তাে বিলুপ্ত হয়ে যেত। আবার উদ্ভিদের ফল ও বীজের উপরই খাদ্যের জন্য প্রাণিকূল, বিশেষ করে মানুষ সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। কাজেই।নিষেক ক্রিয়া যত না গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদকূলের জন্য, তার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ মানবজাতির জন্য। আমরা আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, বেল, পেঁপে, ধান, গম, বার্লি, ভুট্টা ইত্যাদি যা খেয়ে থাকি তা সবই নিষেক ক্রিয়ার ফলেই সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ১৪। পুষ্পক্ষ কি কাজ করে-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পুষ্পের স্তবক চারটি যে অক্ষের উপর সজ্জিত থাকে তাকে পুষ্পক্ষ বলে। পুষ্পক্ষ ফুলকে আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরে। এছাড়াও পুষ্পকে কাণ্ডের সাথে সংযুক্ত রাখা, পুষ্পপত্র ধারণ করা, পুষ্পপত্র ও কাণ্ডের মধ্যে খাদ্যের কাচামাল এবং খাদ্য দ্রব্য আদান-প্রদান করা ইত্যাদি কার্যাবলি পুম্পাক্ষ সম্পন্ন করে।
প্রশ্ন ১৫। জীবের অস্তিত্ব রক্ষায় প্রজনন প্রয়ােজনীয় কেন?
উত্তর : জীবের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রজনন প্রক্রিয়া অত্যাবশ্যকীয়। প্রজনন না হলে জীবের অস্তিত্ব বিলােপ হয়ে যেত। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে মানুষ পর্যন্ত সকল জীবে বংশধর সৃষ্টি হয় প্রজনন প্রক্রিয়ায়। এতে প্রজাতির অস্তিত্ব রক্ষা পায় ।
প্রশ্ন ১৬। বৃতি ফুলের জন্য প্রয়ােজনীয় কেন?
উত্তর : বৃতি ফুল ও উদ্ভিদের বিভিন্ন কাজে লাগে। বৃতি সবুজ হলে তা উদ্ভিদের খাদ্য প্রস্তুতে সাহায্য করে। বৃতি ফুলের ভিতরের অংশকে রােদ, ঝড় ও বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে। বৃতি রঙিন হলে পতঙ্গ আকৃষ্ট হয় ফলে পরাগায়ন ঘটে। এসব কারণে বৃতি ফুলের একটি প্রয়ােজনীয় অংশ।
প্রশ্ন ১৭। দলমণ্ডল ফুলের জন্য কীভাবে কাজ করে?
উত্তর : দুলদণ্ডল ফুলের বাইরের দিকের দ্বিতীয় স্তবক। দলের অংশ বা পাপড়ি ফুলের অভ্যন্তরীণ অংশকে রােদ, ঝড়, বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করে। দলমণ্ডল উজ্জ্বল ও সুগন্ধযুক্ত হলে তা দেখে মানুষ, পশু-পাখি, পােকামাকড় আকৃষ্ট হয়। ফলে ফুলের পরাগায়ন ঘটে।
অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১। মানুষকে এক লিঙ্গবিশিষ্ট প্রাণী বলা হয় কেন?
উত্তর : বংশবিস্তার এবং প্রজাতির সংরক্ষণের জন্য প্রজনন অত্যন্ত প্রয়ােজনীয় একটি প্রক্রিয়া। মানব প্রজননে মাতৃগর্ভে ভ্রুণের সৃষ্টি হয় এবং সন্তান জন্ম নেয়। মানুষের প্রজননের জন্য স্ত্রী ও পুরুষে পৃথক পৃথক জনন অঙ্গ বর্তমান। আর এ কারণেই মানুষকে এক লিঙ্গবিশিষ্ট প্রাণী বলা হয় ।
প্রশ্ন ২। জরায়ু কী? এর প্রয়ােজনীয়তা কী?
উত্তর : পেলভিস অঞলের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং মােটা প্রাচীরযুক্ত পেশিবহুল ফাঁপা অঙ্গটিই জরায়ু। এটি আকৃতিতে অনেকটা উল্টানাে নাশপাতির মতাে। জরায়ু ৩টি অংশে বিভক্ত। যথা- উপরের অংশ ফান্ডাস, মাঝের দেহ এবং নিচে নলাকৃতি সারভিক্স ।
প্রয়ােজনীয়তা: জরায়ুতে ভূণের বিকাশ ঘটে এবং প্লাসেন্টা তৈরিতে জরায়ু অংশগ্রহণ করে।
প্রশ্ন ৩। অমরা কী? অমরার কাজ কী?
উত্তর : যে বিশেষ অঙ্গের মাধ্যমে মাতৃ জরায়ুতে ক্রমবর্ধমান ভ্রুণ এবং মাতৃ জরায়ু টিস্যুর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হয় তাই অমরা বা গর্ভফুল।
অমরার কাজ :
১. ভূণের বৃদ্ধির জন্য প্রয়ােজনীয় খাদ্য অমরার মাধ্যমে মায়ের রক্ত থেকে দূণের রক্তে প্রবেশ করে।
২. অমরা ভূণের ফুসফুসের মতাে কাজ করে।
৩. বিপাকের ফলে যে বর্জ্য উৎপন্ন হয় তা অমরার সাহায্যে জুণের দেহ থেকে অপসারিত হয়।
প্রশ্ন ৪। এইডস রােধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?
উত্তর : এইডস একটি মরণঘাতী রােগ। এইডস রােগের কোনাে প্রতিষেধক নেই। এইডস রােগ প্রতিরােধে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলাে গ্রহণ করা উচিতঃ
১.মাদক গ্রহণ বা অন্য কোনাে প্রয়ােজনে ইনজেকশনের একই সুচ ও সিরিঞ্জ একাধিক ব্যক্তি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. অপরীক্ষিত রক্ত শরীরে গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. অপারেশনের সময় পরিশােধিত জীবাণুমুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে।
৪. অনিরাপদ দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. এইডস আক্রান্ত মায়ের সন্তানেরও এইডস হতে পারে। তাই এইডস আক্রান্ত মহিলার সন্তান জন্মদান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রশ্ন ৫। ফুলকে উদ্ভিদের প্রজনন অঙ্গ বলা হয় কেন? বর্ণনা কর।
উত্তর : প্রজননের জন্য রূপান্তরিত বিশেষ ধরনের বিটপই হলাে ফুল উচ্চশ্রেণির উদ্ভিদের প্রজনন অঙ্গ হলাে ফুল। একটি আদর্শ বা সম্পূর্ণ ফুল পাঁচটি অংশ নিয়ে গঠিত। এ পাঁচটি অংশই উদ্ভিদের প্রজননে ভূমিকা রাখে। যেমন
পুম্পাক্ষ : পুম্পাক্ষ ফুলের বৃন্তে অবস্থান করে। এটির উপর ফুলের বাকী চারটি স্তবক সাজানাে থাকে। ফলে অন্যান্য স্তবকগুলাে ঠিকভাবে কাজ করতে পারে।
বৃতি : বৃতি ফুলের ভিতরের অংশগুলােকে রােদ, বৃষ্টি ও পােকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। বৃতি রঙ বেরঙের হওয়ায় পশু, পাখি, পােকামাকড়কে আকর্ষণ করে ফলে পরাগায়ন ঘটে।
দলমণ্ডল : ফুলের দলমণ্ডল ফুলের ভেতরের অংশগুলােকে বাইরের রােদ, বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে। উজ্জ্বল ঝলমলে রঙের দলমণ্ডল পােকামাকড়, পশু ও পাখিকে আকর্ষণ করে ফলে পরাগায়ন সহজ হয়।
পুংস্তবক : পুংস্তবক ফুলের তৃতীয় স্তবক। এটি পরাগরেণু উৎপন্ন করে। পরাগরেণু অঙ্কুরিত হয়ে পােলেন টিউব গঠন করে। পােলেন টিউব বা পুংজনন কোষ সরাসরি জনন কাজে অংশ নেয়।
স্ত্রীস্তবক : স্ত্রী স্ত্রবক ফুলের কেন্দ্রে অবস্থান করে। এ স্তবক পরাগরেণু গ্রহণ করে। স্ত্রী স্তবকের ভেতরে অবস্থিত ডিম্বাণু পরাগরেণুর সাথে মিলিত হয়ে জাইগােট কোষ উৎপন্ন করে। এ জাইগােট কোষ পরবর্তীতে বীজে পরিণত হয়।
এভাবে ফুলের পাঁচটি অংশ কাজ করে এবং উদ্ভিদের প্রজনন ক্রিয়া চালু রাখে। এ কারণেই ফুলকে উদ্ভিদের প্রজনন অঙ্গ বলা হয় ।
প্রশ্ন ৬। এইডস রােগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার বর্ণনা কর।
উত্তর : এইডস একটি মরণঘাতী রােগ। HIV ভাইরাসের আক্রমণে এইডস রােগ হয়। নিচে এইডস রােগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার বর্ণনা করা হলাে :
কারণ : নিম্নলিখিত কারণে একজন সুস্থ ব্যক্তি এ ঘাতক রােগ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন। যেমন
১. এইডস আক্রান্ত পুরুষ ও মহিলার যৌন মিলনের মাধ্যমে এ রােগ হয়। দুর্ঘটনাজনিত রক্তক্ষরণ, প্রসবজনিত রক্তক্ষরণ, বড় অস্ত্রোপচার, রক্তশূন্যতা, থ্যালাসেমিয়া, ক্যান্সার ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেহে রক্ত সঞলন প্রয়ােজন হয়। এ অবস্থায় এইডস রােগে আক্রান্ত রােগীর রক্ত সুস্থ ব্যক্তির দেহে সঞ্চালন করলে এইডস রােগ হয়।
২. এইডস এ আক্রান্ত বাবা মায়ের সন্তান এইডস রােগে আক্রান্ত হয়। এ রােগে আক্রান্ত মায়ের দুধ শিশু পান করলে সে শিশুও এইডস এ আক্রান্ত হতে পারে।
৩। HIV জীবাণুযুক্ত ইনজেকশানের সিরিঞ্জ, সুঁচ, দন্ত চিকিৎসার যন্ত্রপাতি এবং অপারেশনের যন্ত্রপাতির ব্যবহারের মাধ্যমেও সুস্থ ব্যক্তি এ রােগে আক্রান্ত হতে পারে।
৪. আক্রান্ত ব্যক্তির কোনাে অঙ্গ অন্য ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপনকালে এ রােগ সংক্রমিত হয়।
লক্ষণ : রােগ জীবাণু সুস্থ দেহে প্রবেশ করার প্রায় ৬ মাস পরে এই রােগের লক্ষণগুলাে প্রকাশ পায়। এর আগে উক্ত ব্যক্তি যে এইডস রােগের বাহক তা বােঝা যায় না । লক্ষগুলাে হলাে—
১. অতি দ্রুত রােগীর ওজন কমতে থাকে।
২.এক মাসেরও বেশি সময়ব্যাপী একটানা জ্বর থাকে অথবা জ্বর জ্বর ভাব দেখা দেয়।
৩.একমাস বা তারও বেশি সময় ধরে পাতলা পায়খানা হয়।
৪. অনেকদিন ধরে শুকনাে কাশি হতে থাকে।
৫. ঘাড় ও বগলে ব্যথা অনুভব করা, মুখমণ্ডল খসখসে হয়ে যায়।
৬. সারা দেহে চুলকানি হওয়া।
প্রতিকার : এইডস রােগ হলে তা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনাে উপায় নেই। কারণ এইডস রােগের কোনাে ঔষধ বা প্রতিষেধক এখনাে আবিষ্কৃত হয় নি, শুধুমাত্র সচেতনতা এবং কিছু প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমরা এইডস রােগ থেকে মুক্ত থাকতে পারি। যথাঃ
১. মাদক গ্রহণ, রন্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সুঁচ, সিরিঞ্জ প্রভৃতি ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। একটি সুঁচ, সিরিঞ্জ একজনের বেশি ব্যবহার করা যাবে না।
২. অপরীক্ষিত রক্ত শরীরের গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩, অপারেশনের সময় অপরিশােধিত জীবাণুমুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে।
৪. অনিরাপদ দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. এইডস আক্রান্ত মহিলার সন্তানেরও এইডস হতে পারে। তাই এইডস আক্রান্ত মহিলাদের সন্তান গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।