প্রশ্ন ১। মৃতজীবী খাদ্যশৃঙ্খল কাকে বলে?
উত্তর : জীবের মৃতদেহ থেকে শুরু হয়ে যদি কোন খাদ্য শৃঙখল একাধিক খাদ্যন্তরে বিন্যস্ত হয়, তবে সেরূপ শিকলকে বলা হয় মৃতজীবী খাদ্য শৃঙ্খল।
প্রশ্ন ২। ট্রপিক লেভেল কাকে বলে?
উত্তর: খাদ্য শিকলের প্রতিটি স্তরকে ট্রপিক লেভেল বলে।
প্রশ্ন ৩। ধাঙর কী?
উত্তর : ধাঙর হলাে পরিবেশের আবর্জনাভুক প্রাণী।
প্রশ্ন ৪। খাদ্য শৃঙখল কী?
উত্তর : যখন খাদ্যশক্তি উৎপাদক থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের খাদকে প্রবাহিত হয়, তখন সেই প্রবাহকে একসাথে খাদ্য শৃঙ্খল বলে।
প্রশ্ন ৫। উৎপাদক কী?
উত্তর : উৎপাদক হলাে সবুজ উদ্ভিদ যা সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে।
প্রশ্ন ৬। খাদক কাকে বলে?
উত্তর : যেসব প্রাণী খাদ্য গ্রহণের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল তাদেরকে খাদক বলে।
প্রশ্ন ৭। ভিন্নবাসী উদ্ভিদ কী?
উত্তর : যখন দুই ধরনের জননকোষ আলাদা দেহে সৃষ্টি হয় সেই উদ্ভিদকে ভিন্নবাসী উদ্ভিদ বলে।
প্রশ্ন ৮। মৃতজীবী খাদ্য শিকল কাকে বলে?
উত্তর : জীবের মৃতদেহ থেকে শুরু হয়ে যদি কোনাে খাদ্যশৃঙ্খল একাধিক খাদ্যস্তরে বিন্যস্ত হয়, তবে সেরূপ শিকলকে মৃতজীবী খাদ্য শিকল বলে।
প্রশ্ন ৯। জীববৈচিত্র্য কাকে বলে?
উত্তর : পৃথিবীতে বিরাজমান জীবসমূহের প্রাচুর্য ও ভিন্নতাকে জীববৈচিত্র্য বলে।
প্রশ্ন ১০। বাস্তুসংস্থান কী?
উত্তর : বাস্তুসংস্থান হলাে এমন একটি একক যেখানে জড়বস্তু, খাদ্য উৎপাদক, খাদক এবং বিয়ােজক অবস্থান করে।
প্রশ্ন ১১। সিমবায়ােসিস কী?
উত্তর : জীবজগতে অবস্থানকারী বিভিন্ন প্রকার গাছপালা ও প্রাণীদের মধ্যে বিদ্যমান জৈবিক সম্পর্কগুলােই সহ-অবস্থান বা সিমবায়ােসিস।
প্রশ্ন ১২। প্রকৃতির ধাঙ্গর কী?
উত্তর : যে সকল খাদক জীবন্ত প্রাণীর চেয়ে মৃত প্রাণীর মাংস বা আবর্জনা খেতে বেশি পছন্দ করে, তারাই প্রকৃতির ধাঙ্গর। যেমন— কাক, শকুন, শিয়াল, হায়েনা ইত্যাদি।
প্রশ্ন ১৩। ট্রফিক লেভেল কী?
উত্তর : খাদ্য শিকলের প্রতিটি স্তরই ট্রফিক লেভেল।
প্রশ্ন ১৪। হস্টোরিয়া কী?
উত্তর : স্বর্ণলতা উদ্ভিদের চোষক অঙ্গের নাম হস্টোরিয়া।
প্রশ্ন ১৫। খাদ্যজাল কী?
উত্তর : কয়েকটি খাদ্য শিকল একত্রিত হয়ে একটি জাল ওয়েবের জালের মতাে গঠন করে একে খাদ্যজাল বলে।
প্রশ্ন ১৬। মিথস্ক্রিয়া কি?
উত্তর : প্রাকৃতিক পরিবেশে উদ্ভিদ ও প্রাণী এবং উভয় প্রকার জীব ও উত্তর জড় পদার্থের মধ্যে শক্তি ও বস্তুর আদান-প্রদানকে বলা হয় মিথস্ক্রিয়া।
প্রশ্ন ১৭। গ্রিন হাউজ ইফেক্ট কী?
উত্তর : গ্রিন হাউজ গ্যাস (CO2, CO, CH4, NO2 ইত্যাদি) বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াকে গ্রিন হাউজ ইফেক্ট বলে।
প্রশ্ন ১৮। সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ কী তৈরি করে?
উত্তর : সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ তাদের প্রধান খাদ্য শর্করা তৈরি করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে।
প্রশ্ন ১৯। জীববৈচিত্র্য কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর : জীববৈচিত্র্য তিন প্রকার। যথাঃ
১. প্রজাতিগত বৈচিত্রা, ২. বংশগতীয় বৈচিত্র্য, ৩. বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য।
প্রশ্ন ২০। জৈব বস্তু কী?
উত্তর : উদ্ভিদ ও প্রাণীর বর্জ্য পদার্থ এবং জীবের মৃত দেহ থেকে যেসব বস্তু বাস্তুতন্ত্র যােগ হয় তাদেরকে জৈব বস্তু বলে।
প্রশ্ন ২১। বাস্তুতন্ত্রের পুষ্টি প্রবাহ কী?
উত্তর : বাস্তুতন্ত্রে পুষ্টি দ্রব্যের চক্রাকারে প্রবাহিত হওয়ার প্রক্রিয়াটিকে পুষ্টি প্রবাহ বলে।
প্রশ্ন ২২। শক্তি পিরামিড কী?
উত্তর : খাদ্য শিকলে যুক্ত প্রতিটি পুষ্টিস্তরের শক্তি সঞ্চয় ও স্থানান্তরের বিন্যাস ছককে শক্তি পিরামিড বলে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১। গরু → মশা → ডেঙ্গু ভাইরাস কোন ধরনের খাদ্য-শৃঙ্খল – ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : গরু-মশা-ডেঙ্গু ভাইরাস শৃঙ্খলটি হলাে পরজীবী খাদ্য শিকল। এখানে পরজীবী জীব নিজেদের চেয়ে বড় আকারের পােষকদেহ থেকে খাদ্য গ্রহণ করেছে। ফলে একটি অসম্পূর্ণ খাদ্য শিকল গড়ে উঠেছে।
প্রশ্ন ২। মিউচুয়ালিজমু বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি জীবের একটি অন্যটিকে সহায়তা করে তাকে ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলে। এক্ষেত্রে সহযােগীদ্বয়ের একটি বা উভয়ই উপকৃত হতে পারে। যে ক্ষেত্রে সহযােগীদ্বয়ের উভয় উপকৃত হয় তাকে মিউচুয়ালিজম বলে। যেমন- মৌমাছি কর্তৃক ফুলের মধু আহরণ ।
প্রশ্ন ৩। প্লাঙ্কটন বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : পানিতে ভাসমান ক্ষুদ্র উদ্ভিদ বা প্রাণীকে প্লাঙ্কটন বলে। উদ্ভিদ প্লাঙ্কটনকে ফাইটোপ্লাঙ্কটন ও প্রাণী প্লাঙ্কটনকে জুয়ােপ্লাঙ্কটন বলে । ফাইটোপ্লাঙ্কটন উৎপাদক শ্রেণির এবং জুয়ােপ্লাঙ্কটন প্রথম শ্রেণির খাদকের অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন ৪। ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : যে আন্তঃসম্পর্কে দুটি জীবের একটি অন্যটিকে সহায়তা করে তাকে ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া বলে। এক্ষেত্রে সহযােগীদ্বয়ের একটি বা উভয়ই উপকৃত হতে পারে। লাভজনক এ আন্তঃক্রিয়াকে মিউচুয়ালিজম ও মেনসেলিজম নামে দু’ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রশ্ন ৫। প্রজাতিগত বৈচিত্র্য বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : প্রজাতিগত বৈচিত্র্য বলতে পৃথিবীতে বিরাজমান প্রজাতিসমূহের প্রাচুর্য ও ভিন্নতাকে বুঝায়। কারণ, পৃথকযােগ্য বৈশিষ্ট্যই এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতি ভিন্নতর। যেমন- বাঘের সাথে হরিণের আকার, স্বভাব, হিংস্রতা, সংখ্যা বৃদ্ধির ধরন ভিন্ন হয়ে থাকে।
প্রশ্ন ৬। খাদ্যজাল বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : একটি বাস্তুতন্ত্রের খাদ্য শিকলে একই খাদক বিভিন্ন স্তরে স্থান পেতে পারে। এভাবে বেশ কয়েকটি খাদ্য শিকল একত্রিত হয়ে একটি জালের মতাে গঠন তৈরি করে, একে খাদ্যজাল বলে। স্থলজ ও জলজ উভয় পরিবেশে খাদ্যজাল গঠিত হতে পারে।
প্রশ্ন ৭। জুয়ােপ্ল্যাঙ্কটন বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : পানিতে ভাসমান ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণীদেরকে জুয়ােপ্ল্যাঙ্কটন বলে। এরা নিজেরা নিজেদের খাদ্য প্রস্তুত করতে পারে না, সরাসরি উৎপাদক ভক্ষণ করে বেঁচে থাকে।
প্রশ্ন ৮। হায়েনাকে ধাঙর বলা হয় কেন?
উত্তর : ‘হায়না’ জীবন্ত প্রাণীর চেয়ে মৃত প্রাণীর মাংস বা আবর্জনা খেতে বেশি পছন্দ করে। এরা মৃতদেহ বা আবর্জনা খেয়ে পরিবেশ পরিষ্কার রাখে। এজন্য হায়নাকে ধাঙর বলা হয়।
প্রশ্ন ৯। বাস্তুতন্ত্রে বিয়ােজক গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : বাস্তুতন্ত্রের অন্যতম উপাদান হলাে বিয়ােজক। এ বিয়ােজকগুলাে বাস্তুতন্ত্রে অবস্থিত বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যু হলে তাকে পচিয়ে ফেলে। এ পচনের ফলে মৃতদেহগুলাে মাটির সাথে সহজে মিশে যায়। এতে পরিবেশ সুন্দর থাকে। তাই বিয়ােজক বাস্তুতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন ১০। বাস্তুতন্ত্রে শক্তিপ্রবাহ একমুখী কেন?
উত্তর : শক্তিপ্রবাহকে কখনও বিপরীতমুখী করা যায় না। শক্তির প্রবাহের ৯০ ভাগ শক্তি কমে যায়। শক্তির এ ক্রমবর্ধমান ক্ষয় খাদ্য শিকলের আকারকে ৪ বা ৫টি ধাপের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে। খাদ্য শিকল যত দীর্ঘ হবে উর্ধ্বতম ট্রফিক লেভেলে শক্তির পরিমাণ ততই কমতে থাকবে এবং এক পর্যায়ে এসে কোনাে শক্তিই অবশিষ্ট থাকবে না। এ জন্য বাস্তুতন্ত্রে শক্তিপ্রবাহ একমুখী।
প্রশ্ন ১১। লাইকেন বলতে কি বুঝায়?
উত্তর : মিউচুয়ালিজম ও প্রকৃতিতে সহঅবস্থানের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত লাইকেন। একটি শৈবাল ও একটি ছত্রাক সহাবস্থান করে লাইকেন গঠন করে। ছত্রাক পরিবেশ থেকে পনি, খনিজ লবণ, ইত্যাদি শােষণ করে শৈবালকে প্রদান করে এবং শৈবাল তা দিয়ে তার ক্লোরােফিলের মাধ্যমে নিজের জন্য ও ছত্রাকের জন্য খাদ্য প্রস্তুত করে।
প্রশ্ন ১২। গ্রিন হাউজ ইফেক্টের কারণে কী ঘটবে?
উত্তর : গ্রিন হাউজ ইফেক্টের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাবে ও উপকূল অঞ্চল তলিয়ে যাবে, আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে, বনাঞ্চল ধ্বংস হবে, বিভিন্ন রােগ বালাই এর প্রভাবে ফসলের ক্ষতি হবে এবং ঝড় জলােচ্ছ্বাস এর তীব্রতা বেড়ে যাবে।
প্রশ্ন ১৩। বাস্তুতন্ত্রে শক্তি প্রবাহ কীভাবে কাজ করে?
উত্তর : বাস্তুতন্ত্রে সূর্য থেকে শক্তি গ্রহণ করে উৎপাদক শ্রেণি অর্থাৎ সবুজ উদ্ভিদ। এসব সবুজ উদ্ভিদ থেকে শক্তি ধীরে ধীরে বিভিন্ন খাদকে চলে যায়। আবার সর্বোচ্চ খাদকের মৃত্যু হলে বিয়ােজকের মাধ্যমে এটা পরিবেশে ফিরে আসে। এভাবে শক্তির প্রবাহ চলতে থাকে।
প্রশ্ন ১৪। বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য কীভাবে কাজ করে?
উত্তর : একটি বাস্তুতন্ত্রের ভৌত উপাদান, রাসায়নিক উপাদান ও জৈবিক উপাদানগুলাের মধ্যে কোনাে প্রকার পরিবর্তন দেখা দিলে সেখানকার বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটে। এসব পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানাের জন্য সেখানে বসবাসরত জীবের মধ্যেও পরিবর্তন সাধিত হয়। ফলে যে জীববৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয় তাই হলাে বাস্তুতান্ত্রিক বৈচিত্র্য।
প্রশ্ন ১৫। বিয়ােজক কীভাবে পুষ্টি পায়?
উত্তর : ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, নেমাটোড প্রভৃতি হলাে বিয়ােজক। এরা মৃত জীবের দেহকে বিশ্লিষ্ট করে সরল শর্করায় পরিণত করে এবং পুষ্টি সংগ্রহ করে জীবন ধারণ করে থাকে।
প্রশ্ন ১৬। মৃতদেহ → ছত্রাক → কেঁচো এ শিকলটি মৃতজীবী খাদ্য শিকল কেন?
উত্তর : জীবের মৃতদেহ থেকে শুরু হয়ে যদি কোনাে খাদ্য শৃঙ্খল একাধিক খাদ্যন্তরে বিন্যস্ত হয় তবে সেরূপ শিকলকে মৃতজীবী খাদ্য শিকল বলে। প্রবাহচিত্রে আমরা লক্ষ করছি যে, মানুষের মৃতদেহকে ছত্রাক আক্রমণ করে পচিয়ে ফেলে। আর ছত্রাক খেয়ে বেঁচে থাকে কেঁচো। তাই এ শৃঙ্খলটি একটি মৃতজীবী খাদ্যশৃঙ্খল ।