নবম দশম শ্রেণির “জীবন পাঠ” অধ্যায়ের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ০১।
চিত্র – ০১ঃ মাশরুম
চিত্র – ২ঃ দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ
ক. শ্রেণিবিন্যাসের একক কী?
খ. বংশগতিবিদ্যাকে জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখা বলা হয় কেন?
গ. চিত্র-২ এর উদ্ভিদটির নামকরণের ক্ষেত্রে কীভাবে তুমি ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্র-১ এবং চিত্র-২ এর মধ্যে কোন জীবটি অধিক উন্নত, কারণসহ বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক। শ্রেণিবিন্যাসের প্রতিটি ধাপই শ্রেণিবিন্যাসের একক।
খ জীববিজ্ঞানের যে শাখায় তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলােচনা করা হয় তাকে ভৌত জীববিজ্ঞান বলে। বংশগতিবিদ্যায় জীবের বংশগত গুণাবলি কীভাবে এক বংশ থেকে অন্য বংশে সারিত হয় তার রীতিনীতি, সংকর প্রজনন, পরিব্যক্তি, প্রকরণ সৃষ্টির কারণ ইত্যাদি প্রক্রিয়াগুলাে আলােচিত হয়। এ প্রক্রিয়াগুলাে প্রতিটি জীবের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলাে সবই বংশগতিবিদ্যার তত্ত্বীয় বিষয়াবলি। এ কারণে বংশগতিবিদ্যাকে জীববিজ্ঞানের ভৌত শাখা বলা হয়।
গ। চিত্র-২ এর উদ্ভিদটির নামকরণের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আমি নিচের বিষয়গুলাে অনুসরণ করব
১. উদ্ভিদের নামটি হবে দ্বিপদী। প্রথম পদে থাকবে গণ এর নাম এবং দ্বিতীয় পদে থাকবে প্ৰজাতিক নাম।
২. নামকরণে অবশ্যই ল্যাটিন শব্দ ব্যবহার করব।
৩. গণ নামের প্রথম অক্ষর বড় হাতের এবং প্রজাতিক নামের সব অক্ষরই ছােট হাতের ব্যবহার করব।
৪. নামটি ছাপা অক্ষরে লিখলে ইটালিক (ডানদিকে একটু বাঁকা) হরফে এবং হাতে লিখলে ইংরেজি অক্ষর ব্যবহার করে অংশ দুটির নিচে আলাদা আলাদাভাবে দাগ টানব।
৫. বৈজ্ঞানিক নামের শেষে সর্বপ্রথম বিজ্ঞানসম্মত নাম প্রদানকারীর নাম ও প্রকাশের সনসহ সংক্ষেপে লিখব।
ঘ। উদ্দীপকে উপস্থাপিত চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি হলাে মাশরুম যা একটি মৃতজীবী এবং চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি সপুষ্পক গুপ্তবীজী এবং দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ। উদ্ভিদ দুটির মধ্যে চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি অধিক উন্নত। এর কারণ নিচে বিশ্লেষণ করা হলােঃ
১. চিত্র-১ এর মাশরুম অপুষ্পক, অর্থাৎ এদের ফুল, ফল কিছু হয়। কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি সপুষ্পক অর্থাৎ এদের ফুল, ফল হয়। সপুষ্পক উদ্ভিদকেই উন্নত হিসেবে ধরা হয় ।
২. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে না, খাদ্যের জন্য এরা অন্যের ওপর নির্ভরশীল। পক্ষান্তরে চিত্র-২ এর উদ্ভিদটির পাতায় সালােকসংশ্লেষণকারী সবুজ বর্ণকণিকা ক্লোরােফিল থাকে। এ ক্লোরােফিলের সহায়তায় সূর্যের আলাে ও পানির সাহায্যে সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে।
৩. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি স্পােরের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটায়। কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটায় যা উন্নত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য।
৪. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটিকে মূল, কাণ্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায় না, কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটিকে মূল, কাণ্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায়।
৫. পরিবহন কলাগুচ্ছ চিত্র-১ এর উদ্ভিদে অনুপস্থিত, কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদে উপস্থিত পরিবহন কলাগুচ্ছ উন্নত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য বহন করে।
৬, চিত্র-১ এর উদ্ভিদের দেহ নরম, কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদের দেহ বেশ শক্ত। শক্ত উদ্ভিদদেহ উন্নত উদ্ভিদেরই বৈশিষ্ট্য বহন করে।
উপরের বর্ণনার আলােকে স্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয়, চিত্র-২ এর উদ্ভিদটিই অধিক উন্নত।
প্রশ্ন ২ঃ নিচের চিত্র দুটি লক্ষ কর
চিত্র-১ – মাশরুম
চিত্র-২ – শাপলা
ক. জীববিজ্ঞানের জনক কে?
খ. প্রকৃত কোষ বলতে কী বােঝায়?
গ. চিত্র-২ এ প্রদত্ত জীবের ICBN কর্তৃক স্বীকৃত নামকরণ প্রক্রিয়া বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দু’টি জীবের মধ্যে কোনটি বৈশিষ্ট্যগত
দিক থেকে উন্নত বিশ্লেষণ কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল হলাে জীববিজ্ঞানের জনক।
খ. যেসব কোষের নিউক্লিয়াস সুগঠিত অর্থাৎ নিউক্লিয়ার ঝিল্লী দ্বারা নিউক্লিও বস্তু সুগঠিত ও সুসংগঠিত তাদেরকে প্রকৃত কোষ বলে। প্রকৃত কোষের ক্রোমােজোমে DNA, প্রােটিন, হিস্টোন ও অন্যান্য উপাদান থাকে। অধিকাংশ উচ্চ শ্রেণির জীবকোষ এ ধরনের হয়।
গ। উদ্দীপকে চিত্র-২ এ প্রদত্ত জীবটি হলাে শাপলা যা একটি উদ্ভিদ।
ICBN কর্তৃক স্বীকৃত শাপলার দ্বিপদ নামকরণ প্রক্রিয়া নিম্নে বর্ণনা করা হলাে
১. শাপলার নামকরণে অবশ্যই ল্যাটিন শব্দ ব্যবহার করতে হবে।
২. শাপলার বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে, প্রথম অংশ গণ নাম এবং দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতি নাম। যেমন– Nymphaea nouchali,
এটি শাপলার বৈজ্ঞানিক নাম, এখানে Nymphaea গণ এবং nouchali প্রজাতিক পদ।
৩. শাপলার বৈজ্ঞানিক নামকে অনন্য হতে হবে। কারণ একই নাম দুটি পৃথক জীবের জন্য ব্যবহারের অনুমতি নেই।
৪. শাপলার বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের প্রথম অক্ষর বড় অক্ষর
হবে বাকি অক্ষরগুলাে ছােট অক্ষর এবং দ্বিতীয় অংশটির নাম ছােট অক্ষর দিয়ে লিখতে হবে।
৫. শাপলার বৈজ্ঞানিক নাম মুদ্রণের সময় সর্বদা ইটালিক অক্ষরে লিখতে হবে। যেমন- Nymphaea nouchali,
৬. শাপলার বৈজ্ঞানিক নাম হাতে লিখার সময় গণ ও প্রজাতিক নামের নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিতে হবে। যেমনঃ Nymphaca nouchali
৭. বৈজ্ঞানিক নামের শেষে নামদানকারীর নাম (সাধারণত সংক্ষিপ্ত) লিখতে হয়। Nymphaea nouchati L. (এখানে Lলিনিয়াসের সংক্ষিপ্ত রূপ)
৮. যদি কয়েকজন বিজ্ঞানী শাপলা উদ্ভিদকে বিভিন্ন বিজ্ঞানসম্মত নামকরণ করেন তবে অগ্রাধিকার আইন অনুসারে প্রথম বিজ্ঞানী কর্তৃক প্রদত্ত নামটি গৃহীত হবে।
ঘ। উদ্দীপকে চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি হলাে মাশরুম যা একটি মৃতজীবী এবং চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি হলাে শাপলা যা একটি সপুষ্পক গুপ্তবীজী এবং একবীজপত্রী উদ্ভিদ। উদ্ভিদ দুটির মধ্যে চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে উন্নত। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলােঃ
১. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি অপুষ্পক অর্থাৎ এদের ফুল, ফল হয় না। কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি সপুষ্পক অর্থাৎ এদের ফুল, ফল হয়। সপুষ্পক উদ্ভিদ সর্বদাই অপুষ্পক উদ্ভিদ অপেক্ষা উন্নত।
২. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে না। কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটির পাতায় সালােকসংশ্লেষণকারী বর্ণকণিকা ক্লোরােফিল থাকায় সূর্যের আলাে ও পানির সাহায্যে সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে।
৩. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটি স্পােরের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটায় । কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটায় যা উন্নত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য।
৪. চিত্র-১ এর উদ্ভিদটিকে মূল, কাণ্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায় না। কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদটিকে মূল, কাণ্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায়।
৫. পরিবহন কলাগুচ্ছ উন্নত উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য। এই পরিবহন কলাগুচ্ছ চিত্র-১ এর উদ্ভিদে অনুপস্থিত। কিন্তু চিত্র-২ এর উদ্ভিদে উপস্থিত ।
সুতরাং উপরে বর্ণনার আলােকে একথা স্পষ্ট যে, চিত্র-২ এর উদ্ভিদটি বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে অধিক উন্নত।
প্রশ্ন ৩। নিচের চিত্র দুটি লক্ষ কর :
চিত্র P – Nastoc
চিত্র Q – Mashroom
ক. দোয়েল পাখির বৈজ্ঞানিক নাম লিখ।
খ. অ্যামিবা কোন রাজ্যের অন্তর্গত? কেন?
গ. মারগুলিসের শ্রেণিবিন্যাস অনুসারে চিত্র-P এর
অবস্থানগত বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।
ঘ. মানবজীবনে চিত্র-Q এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব উল্লেখ কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক। দোয়েল পাখির বৈজ্ঞানিক নাম হলাে Copsychus saularis.
খ। প্রােটিস্টা রাজ্যের কিছু বৈশিষ্ট্য ধারণ করায় অ্যামিবা প্রােটিস্ট। রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত জীব। কারণ-
১. অ্যামিবা এককোষী, কিন্তু সুগঠিত নিউক্লিয়াসবিশিষ্ট।
২. খাদ্য গ্রহণ শােষণ, গ্রহণ বা ফটোসিনথেটিক পদ্ধতি ঘটে।
৩. কোনাে ভূণ গঠিত হয় না।
গ। উদ্দীপকের চিত্র-P হলাে Nostoc। মারগুলিসের শ্রেণিবিন্যাস অনুসারে Nostoc সুপার কিংডম-প্রােক্যারিওটার অন্তর্ভুক্ত মনেরা রাজ্যের অন্তর্গত। নিচে মনেরা রাজ্যের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হলােঃ
১. এরা এককোষী, ফিলামেন্টাস, কলােনিয়াল বা মাইসেলিয়াল।
২. কোষে ক্রোমাটিন বস্তু থাকে কিন্তু নিউক্লিয়াস ও নিউক্লিয়ার পর্দা থাকে না।
৩. এদের কোষ বিভাজন দ্বিবিভাজক প্রক্রিয়ায় হয়।
৪. এ রাজ্যের প্রাণীরা শােষণ পদ্ধতিতে খাদ্য গ্রহণ করে।
৫. এদের কোষে প্লাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া, এন্ডােপ্লাজমিক জালিকা নেই।
ঘ। উদ্দীপকে প্রদর্শিত চিত্র-Q হলে Agaricus বা মাশরুম । এটি এমন একটি ছত্রাক যা অর্থনৈতিকভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ। মানবজীবনে মাশরুম এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব নিচে উল্লেখ করা হলােঃ
১. মাশরুম বিভিন্ন শিল্পে, খাদ্যে, ওষুধে এমনকি জেনেটিক মেটেরিয়াল হিসেবে গবেষণায় স্থান দখল করে আছে।
২. মাশরুম মৃতজীবী, তাই বিভিন্ন ধরনের জটিল দ্রব্যকে ভেঙে মৃত্তিকার পুষ্টি সাধন করে থাকে।
৩. মাশরুম বিভিন্ন ভিটামিন সমৃদ্ধ হওয়ায় পৃথিবীর বহুদেশে একটি সুপ্রিয় খাদ্য হিসেবে পরিচিত। পৃথিবীর বহুদেশে এর চাষ হয়। ফলে বেকারদের কর্মসংস্থান হয়েছে।
৪. মাশরুম টাটকা ও সংরক্ষিত উভয় অবস্থায় বাজারে বিক্রি হয়। বাংলাদেশের বড় বড় হােটেলগুলােতে খাদ্য হিসেবে বিশেষ করে স্যুপ তৈরিতে মাশরুম ব্যবহৃত হয়।
৫. বর্তমানে মাশরুম এর চাষ বেশ লাভজনক কুটির শিল্পে পরিণত হয়েছে।
সুতরাং উপযুক্ত তথ্যাবলির আলােকে একথা বলা যায় যে, জনপ্রিয় খাদ্য ও পুষ্টি উপাদান হিসেবে Agaricus বা মাশরুম অর্থনৈতিক দিক দিয়ে মানবজীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন ৪ঃ নীলু একটি টিভি চ্যানেলে বিভিন্ন উন্নত উদ্ভিদ এবং বাঘসহ এ জাতীয় প্রাণী দেখছিল। সে একজন অলস ও আয়েশী তরুণ। সে সর্বদা বিরিয়ানী, বার্গার ইত্যাদি খেতে পছন্দ করে। তার। রক্তে LDL এর পরিমাণ ৫,৬৮ গ্রাম/ ডেসিলিটার।
ক. ধমনি কী?
খ. নিষ্ক্রিয় ও সক্রিয় শশাষণ বলতে কী বােঝায়?
গ. নীলু সম্ভাব্য যে রােগে আক্রান্ত হতে পারে তার লক্ষণ বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের উদ্ভিদ ও প্রাণীগুলাে একই সুপার কিংডমের অন্তর্ভুক্ত হলেও এদের রাজ্য আলাদা – বিশ্লেষণ কর।
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক। অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে সারা দেহে বহনকারি রক্তনালিই হলাে ধমনি।
খ। যে শােষণ প্রক্রিয়ায় আয়ন শােষণের জন্য কোনাে বিপাকীয় শক্তির প্রত্যক্ষ প্রয়ােগের প্রয়ােজন হয় না তাকে নিষ্ক্রিয় শােষণ বলে।
উদ্ভিদ এ প্রক্রিয়ায় মূলরােম ইমবাইবিশন ও অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় লবণ শােষণ করে । আবার, যে শোষণ প্রক্রিয়ায় খনিজ লবণ পরিবহনের জন্য কোষে উৎপন্ন বিপাকীয় শক্তির প্রয়ােজন হয় তাকে সক্রিয় শোষণ।
গ। উদ্দীপকে উল্লেখিত বর্ণনা অনুসারে নীলু হার্ট অ্যাটাক রােগে আক্রান্ত হতে পারে। কারণ অধিক তেলযুক্ত খাবার (বিরানী, তেহারি ইত্যাদি), ফাস্টফুড (বার্গার, বিফ বা চিকেন প্যাটিস ইত্যাদি) খাওয়া অলস জীবনযাপন এবং শারীরিক পরিশ্রম না করার ফলে এই রোগ দেখা যায়। নিচে হার্ট অ্যাটাক রােগের লক্ষণ বর্ণনা করা হলােঃ
হার্ট অ্যাটাক হলে বুকে অসহনীয় ব্যথা অনুভূত হয়। বিশেষ করে বুকের মাঝখানে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব হয় যা প্রাথমিকভাবে এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেলেও কমবে না। বাথা বাঁ দিকে বা সাৱা বুকে ছড়িয়ে যেতে পারে। ব্যথা অনেক সময় গলা ও বাম হাতে ছড়িয়ে যায়। রোগী প্রচণ্ডভাবে ঘামতে থাকে ও বুকে ভারি চাপ অনুভব করছে বলে মত প্রকাশ করে।
ঘ। উদ্দীপকে উল্লেখিত উদ্ভিদগুলাে প্লানটি এবং প্রাণীগুলাে অ্যানিমেলিয়া রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। প্লানটি ও অ্যানিমেলিয়া উভয় রাজ্য সুপার কিংডম ইউক্যারিওটার অন্তর্গত । অর্থাৎ উদ্দীপকের উদ্ভিদ এবং প্রাণীগুলাে একই সুপার কিংডমের অন্তর্ভুক্ত হলেও এদের রাজ্য আলাদা। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলােঃ
উন্নত উদ্ভিদ সালােকসংশ্লেষণকারী, প্রকৃত নিউক্লিয়াসযুক্ত, স্বভােজী উদ্ভিদ। এদের উন্নত টিস্যুতন্ত্র বিদ্যমান। এদের ভূণ সৃষ্টি হয় এবং তা থেকে ডিপ্লয়েড পর্যায় শুরু হয়। এদের যৌন জনন অ্যানাইসােগ্যামাস, অর্থাৎ আকার, আকৃতি অথবা শারীরবৃত্তীয় পার্থক্য বিশিষ্ট ভিন্নধর্মী ২টি গ্যামেটের মিলনের মাধ্যমে যৌন জনন সম্পন্ন হয়। এসব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় উদ্দীপকের উন্নত উদ্ভিদগুলাে সুপার কিংডম ইউক্যারিওটার প্লানটি রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত।
আবার, বাঘসহ সকল মেরুদণ্ডী ও অমেরুদণ্ডী প্রাণী (প্রােটোজোয়া ব্যতীত) নিউক্লিয়াসবিশিষ্ট বহুকোষী প্রাণী। এদের কোষে কোনাে জড় কোষপ্রাচীর, প্লাস্টিড, কোষগহ্বর নেই। প্লাস্টিড না থাকায় এরা পরভােজী এবং খাদ্য গলাধঃকরণ ও হজম করে। দেহে জটিল টিস্যুতন্ত্র বিদ্যমান। এরা প্রধানত যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে। অ্যানিমেলিয়া রাজ্যের এসব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় বাঘসহ এ জাতীয় প্রাণী সুপার কিংডম ইউক্যারিওটার অ্যানিমেলিয়া রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত।
অতএব, উপযুক্ত আলােচনা থেকে একথা স্পষ্টভাবে বলা যায় যে, উদ্দীপকের উদ্ভিদ ও প্রাণীগুলাের সুপার কিংডম অভিন্ন কিন্তু রাজ্য ভিন্ন ভিন্ন।
প্রশ্ন ৫ | শিক্ষক জীববিজ্ঞান ক্লাসে কিছু ছবি প্রদর্শন করেন যা নিম্নরূপপরে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন জীবজগতের সকল প্রাণী একে অন্যের উপর নির্ভরশীল।
ক. প্লাঙ্কটন কী?
খ. কমেনসেলিজম বলতে কী বােঝায়?
গ. উদ্দীপকের B কোন রাজ্যের সদস্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. A ও C এর সম্পর্কটি জীবজগতের জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ উদ্দীপকের শেষ লাইনের আলােকে মূল্যায়ন কর।
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক। পানিতে ভাসমান ক্ষুদ্র জীবদের গ্ল্যাংকটন বলে।
খ। কমেনসেলিজম এক ধরনের ধনাত্মক আন্তঃক্রিয়া। এ ক্ষেত্রে সহযােগীদের মধ্যে একজন মাত্র উপকৃত হয়। অন্য সহযােগী সদস্য উপকৃত না হলেও কখনও ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। যেমন- রােহিনী উদ্ভিদ মূলের সাহায্যে নিজেকে মাটিতে আবদ্ধ করে এবং অন্য বড় উদ্ভিদকে আরােহণ করে উপরে উঠে। এরূপে অন্য বৃক্ষের উপর প্রসারিত হয়ে বেশি পরিমাণে আলাে গ্রহণ করে। কাষ্ঠল লতা খাদ্যের জন্য আশ্রয়দানকারী উদ্ভিদের উপর নির্ভর করে না এবং তার কোনাে ক্ষতিও করে না। পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ বায়ু থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে। কিন্তু আশ্রয়দাতার কোনাে ক্ষতি করে না। কিছু শৈবাল অন্য উদ্ভিদদেহের মধ্যে আশ্রয় নিয়ে বসবাস করে। কিন্তু আশ্রয়দাতার কোনাে ক্ষতি করে। সহযােগীদের মধ্যে এ ধরনের আন্তঃক্রিয়াই হচ্ছে কমেনসেলিজম।
গ। উদ্দীপকের চিত্রে B হলাে ডায়াটম নামক এককোষী শৈবাল। এটি প্রােটিস্টা রাজ্যের সদস্য। কারণ এর বৈশিষ্ট্যগুলাে প্রােটিস্টা রাজ্যের বৈশিষ্ট্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। নিচে ডায়াটমের বৈশিষ্ট্যগুলাে ব্যাখ্যা করা হলাে—
ডায়াটম এককোষী বা বহুকোষী, একক বা কলােনিয়াল (দলবদ্ধ) বা ফিলামেন্টাস এবং সুগঠিত নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট। কোষে ক্রোমাটিন বস্তু। নিউক্লিয়ার পর্দা দ্বারা পরিবৃত্ত থাকে। ক্রোমাটিন বস্তুতে DNA, RNA ও প্রােটিন থাকে। কোষে সকল ধরনের অঙ্গাণু থাকে। এদের খাদ্য গ্রহণ শােষণ, গ্রহণ বা ফটোসিনথেটিক পদ্ধতিতে ঘটে। মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে অযৌন প্রজনন ঘটে এবং কনজুগেশনের মাধ্যমে।
অর্থাৎ জৈবনিকভাবে ভিন্ন কিন্তু গঠনগতভাবে এক, এরূপ দুটি গ্যামেটের মিলনের মাধ্যমে যৌন প্রজনন ঘটে। তবে কোনাে সৃণ গঠিত হয় না।
উপযুক্ত ব্যাখ্যায় দেখা যায় ডায়াটমের সকল বৈশিষ্ট্য প্রােটিস্টা, রাজ্যের বৈশিষ্ট্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এ কারণে উদ্দীপকের চিত্র-B অর্থাৎ ডায়াটম প্রােটিস্টা রাজ্যের সদস্য।
ঘ। উদ্দীপকের চিত্রে A হলাে দ্বিতীয় স্তরের খাদক ব্যাঙ। আর c হলাে তৃতীয় স্তরের খাদক সাপ। বাস্তুতন্ত্রে এরা মূলত খাদ্য-খাদক সম্পর্কে আবদ্ধ। তাই খাদ্য-খাদক সম্পর্কটি জীবজগতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । নিচে তা উদ্দীপকের আলােকে মূল্যায়ন করা হলাে—
খাদ্য-খাদক সম্পর্কের মাধ্যমেই জীবজগৎ টিকে আছে। তাই জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বাস্তুতন্ত্রের সবগুলাে প্রজাতির স্বাভাবিক অবস্থায় থাকা জরুরি। জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থেই প্রতিটি জীব একে অপরের উপর নির্ভরশীল। বিপুল সংখ্যক জীবের পারস্পরিক নির্ভরশীলতার উপর ভিত্তি করেই পরিবেশে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। যেমন উদ্দীপকের ব্যাঙ তার নিষ্ঠের স্তরের পােকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। এসব পােকা মাকড় উৎপাদকের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। তাই উৎপাদক যদি পােকামাকড়ের আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে পুরাে বাস্তুতন্তে দেখা দিবে হাহাকার। আবার ব্যাঙ তার পরবর্তী স্তরের খাদক অর্থাৎ সাপের খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এভাবে সাপ আবার তার পরবর্তী স্তরের খাদকের জন্য খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু কোনাে কারণে যদি ব্যাঙ মারা যায়, তাহলে তার পূর্ববর্তী স্তরের কীটপতঙ্গ বেড়ে উৎপাদককে নষ্ট করে দিবে।
অন্যদিকে পরবর্তী স্তরের খাদক সাপ খাদ্যাভাবে মারা যাবে বা সংখ্যা হাস পাবে এবং এক সময় হারিয়ে যাবে। ফলে সাপের উপর নির্ভরশীল পরবর্তী প্রাণীকুলেও দেখা দিবে সংকট।
উপর্যন্ত মূল্যায়ন থেকে দেখা যায় যে, জীবজগতের প্রতিটি জীব একে অপরের উপর নির্ভরশীল। যা সাপ ও ব্যাঙের ক্ষেত্রে দেখানাে হয়েছে।