বাংলাদেশের কোনাে একটি গ্রাম। এই গ্রামেরই এক কিশাের বুধা। এক চাচি আর চাচাতাে ভাই-বােন ছাড়া তিন কুলে আপন বলতে কেউ নেই। তবে আজ না থাকলেও একদিন ছিল। সেটা বছর দুয়েক আগের কথা। বাবা-মা ছাড়াও ছিল দুই বােন আর দুই ভাই। সবচেয়ে ছােট বােন তিনুর বয়স ছিল দেড় বছর। বিনু ছিল ওর পিঠাপিঠি বােন। তালেব আর শিলু ছিল পিঠাপিঠি ভাই-বােন। বাবা-মা, ভাই-বােনদের নিয়ে ভালােই কাটছিল তার দিন। কিন্তু এক রাতে কলেরায় মারা গেল সবাই। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেল বুধা। চাচির বাড়িতে প্রথমে আশ্রয় মিলেছিল। কিন্তু দারিদ্র্যের কথা তুললে বুধা সেই বাড়ি ত্যাগ করে। সেই থেকে বুধা একা। রাত-পােহালে দিনের আলাে, সূয্যি ডুবলে আঁধার। ওর কাছে দুটোই সমান। হাটে-মাঠে ঘুরে বেড়ায়। ঘুরতে ঘুরতে যে কোথায় যায় সে হিসাব সে রাখে না। ওর কাছে পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ সব সমান।
ঘুমানাের জায়গা নিয়ে ওর মাথাব্যথা নেই। দোকানের বারান্দা আছে, গাছতলা আছে, হাটের চালা আছে, ঘাটে বাঁধা নৌকা আছে; আছে গৃহস্থ বাড়ির কাছারির বারান্দা, টেকিঘর বা খড়ের গাদা। খাওয়া নিয়েও বুধা খুব একটা চিন্তা করে না। কারণ বন-বাদাড়ে ফলপাকুড় আছে, নদীর পানি আছে, মােলক বুয়ার মুড়িভাজা আছে। চায়ের দোকানে কাজ করে দিলে চা-বিস্কুট জোটে। কখনাে-সখনাে গৃহস্থ বাড়িতে ছােটখাটো কাজের বিনিময়ে অড়হর ডালের সঙ্গে ভাত জোটে।
বুধা কোনােকিছুতেই ভয় পায় না। আসলে ভয় কী তা ও জানেই না। ও ছােটবেলায় ভূতের গল্প শােনেনি। কেউ ওকে জুজুর ভয় দেখায়নি। নিজের নিয়মে বড় হয়েছে। যে ছেলে নিজের নিয়মে বড় হয় ভয়ের সঙ্গে তার দেখা হয় না। তাই ভীষণ সাহস ওর। বুধার সবচেয়ে প্রিয় খেলা ও কাজ হচ্ছে মাঠের, পথের, ঘাটের মাঝখানে দাঁড়িয়ে দুই হাত দুই পাশে সােজা করে জামাটা মাথায় বেঁধে কাকতাড়ুয়ার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা এমন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থেকেই ও মানুষের আদর পেতে চায়। এই খেলা খেলতে খেলতেই ও বড় হতে চায়। বুধা দেখে কাঠফাটা রােদে দাড়িয়ে থাকলে এক সময় ওর মাথার উপর শকুনের ছায়া নেমে আসে। ওকে দেখলে শকুনের মনে হয়, ও বুঝি মরা মানুষ। আসলে কাকতাড়ুয়ার ভেতরে বুধা গ্রামের বেশিরভাগ মানুষকে দেখতে পায়। ওরা এমনই কাকতাড়ুয়া, ছন্নছাড়া। বাড়ি নেই। পেটভরা ভাত নেই। গাঁয়ের গুটিকতক মানুষ অবশ্য শকুনের মতাে। কাকতাড়ুয়া ওদের ভয়ে তটস্থ থাকে। গাঁয়ের লােকেরা বুধার নাম দিয়েছে কাকতাড়ুয়া। নােলক বুয়া আদর করে ডাকে ছন্নছাড়া। হরিকাকু মানিকরতন, জয়নাল চাচা সােনাবাবা, হাশেম মিয়া খােকন বাবু, গােবরকুড়ানি বুড়ি বলে গােবররাজা। বুধার মনে হয় ভালােই তাে। একজনের অনেক রকম নাম থাকলে সেসব নামের ভেতর দিয়ে অনেক রকম মানুষ হওয়া যায়। ও অনেক রকম মানুষ হতে চায়। ও ভাবতে ভাবতে ছুটে চলে। মাঠ পেরিয়ে, ঘাট পেরিয়ে, নদী পেরিয়ে ছুটতে থাকে। ওর কল্পনায় ভেসে ওঠে তেপান্তরের মাঠ, পঙ্খিরাজ ঘােড়া, সাত সমুদ্র তেরাে নদী। এভাবে ওর দিন ভালােই কাটছিল। একদিন ঐ গ্রামে মিলিটারি ঢুকে পড়ল। ওরা এসেছিল জিপে করে, গুলি ছুড়তে ছুড়তে। বুটের শব্দ যেন চড়চড় শব্দে ফুটছিল। বড় সড়কের মাঝ বরাবর মিলিটারি জিপ থেকে ওরা ঝপঝপিয়ে নামে। একটু পর বাজারের চালাগুলাে দাউদাউ পুড়তে থাকে।
গুলি। মুখ থুবড়ে পড়ে গেল সালাম চাচা।
গুলি। পড়ে গেল রবিদা।
গুলি। পড়ে যায় একসঙ্গে অনেকে।
ধানগাছের আড়ালে উবু হয়ে বসে থাকতে পারে না বুধা। ওর শরীর কাঁপে থরথর করে। হাজার হাজার বােলতা ওর কানের চারপাশে উড়তে থাকে। একটা কেয়ামত ঘটিয়ে মিলিটারি চলে গেলে সেদিন বিকেলে গায়ের বেঁচে যাওয়া লােকেরা শহিদদের কাফন ছাড়া গণকবরে দাফন করে।
বুধা অস্ফুট স্বরে বিড়বিড় করে বলে, প্রতিশােধ! এ ঘটনার পর বেঁচে থাকা মানুষদের মধ্যে প্রাণ বাঁচানাের, সম্পদ ও সম্মান রক্ষা করার তাগিদে ভিটেমাটি ছেড়ে অজানার পথে পা বাড়ানাের হিড়িক পড়ে যায়। নােলক বুয়া, হরিকাকু, কাকিমা, রানি- এমনই শত শত লােক গা ছেড়ে পথে নামে। বুধাকেও ডাকে, তাদের সঙ্গে যেতে বলে। বুধা বলে, সে গেলে গায়ে থাকবে কে? হানাদারের সাথে, শত্রুর সাথে লড়াই করবে কে? মিলিটারির আক্রমণের পর দুমাস পেরিয়ে যায়। আস্তে আস্তে গ্রামের মানুষের দিন সহজ হয়ে আসে। যারা এদিক-ওদিক পালিয়ে গিয়েছিল একে দুয়ে তারা অনেকে অভিটায় ফিরে আসে। অনেকে আবার ইন্ডিয়ায় চলে যায়। এর মধ্যে গাঁয়ে আবার মিলিটারি ক্যাম্প বানায়। রাইফেল হাতে সেই ক্যাম্পের পাহারায় থাকে ওদের কেউ কেউ। ওরা যে ভাষায় কথা বলে বুধা সেই ভাষাটা বুঝতে পারে না। বুধা সহজেই বুঝে যায়, ওরা ভিনদেশি হানাদার। ভীষণ ভাবনায় বুধা গম্ভীর হয়ে যায়। ভাবে, ওদেরকে তাে একদিন এই গা থেকে চলে যেতে হবে। ওরা যেভাবে এসেছিল সেভাবেই একদিন ফিরে যাবে। ওদেরকে যেতেই হবে। তবে ওদেরকে কি জ্যান্ত ফিরে যেতে দেওয়া উচিত? কিছু একটা করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে বুধা বাজারে ফিরে আসে। আলির পুড়ে যাওয়া দোকানঘরের ছাই-কয়লা সরিয়ে অর্ধদগ্ধ একটুকরাে চালার নিচে জায়গা করে নেয়। অনেক রাতে কখনাে কখনাে গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় বুধার। ভাবে, ওরা কি কাউকে মেরে ফেলল? বুধা বিড়বিড় করে বলে,
“তােমরা যারা আমাদের ঘর পােড়ালে, বাজার পােড়ালে, মানুষ মারলে, […] তােমরা কি এমনি এমনি চলে যাবে? একটা ঘুষিও কি তােমাদের পাওনা হয়নি? আমরা কি এতই দুর্বল?” বুধা ছাদের ফুটো দিয়ে তারা ভরা আকাশের দিকে তাকায়। ভাবে, তবে কি বঙ্গবন্ধু,এই মানুষগুলাের বিরুদ্ধে লড়ার কথা বলেছিলেন? হ্যা, এরাই তারা। কদিন ধরে বুধা খেয়াল করছে গাঁয়ের কয়েকজন টাকাঅলা যারা গা থেকে পালায়নি, তারা মিলিটারির সঙ্গে যােগাযােগ করছে। ওদের ক্যাম্পে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, মাছ, ডিম, দুধ, একে ওকে ধরে পাঠাচ্ছে। বিদেশি হানাদার এবং দেশীয় দালাল-রাজাকার সবার ওপর বুধার মৃণা বাড়তে থাকে। আলি বাজারে কড়ইগাছের নিচে বাঁশের বেঞি বানিয়ে চা বিক্রি করতে শুরু করে। সে বুধাকে বলে, ওই শত্রুদের না তাড়িয়ে সে আর চায়ের দোকান বানাবে না। বুধা যতদিন খুশি ওই পােড়ঘরে থাকতে পারে। গায়ের মানুষজন যেন দ্রুত পালটে যাচ্ছে। একে দুয়ে করে মানুষ সংগােপনে কী যেন বলে । গলায় কথা বলে না। চুপচাপ থাকে, দীর্ঘশ্বাস ফেলে, চোখ ভিজে ওঠে। কারও কারও চোখে আগুনের ফুলকি ছােটে। একদিন সবাই মিলে অবাক হয়ে শােনে গাঁয়ে শান্তি কমিটি হয়েছে। আহাদ মুন্সি চেয়ারম্যান। বুধা বুঝে যায় গাঁয়ের মানুষ দুভাগ হয়ে গেছে। আকস্মিকভাবে ও চেঁচিয়ে ওঠে ‘যুদ্ধ, যুদ্ধ! মানুষ যখন দুভাগ হয়ে যায় তখন তার মধ্য দিয়ে যুদ্ধ নামের নদী বইতে থাকে। একদিন বুধা বিনীত ভঙ্গিতে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আহাদ মুন্সির কাছে জানতে চায়, আহাদ মুন্সি শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান, কিন্তু সারাদেশে শান্তি কোথায়? আহাদ মুন্সি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বুধা কিন্তু নির্বিকার। একদিন আলি, মিঠু ও বুধা আশু করণীয় সম্পর্কে আলাপ করে। বুধা বলে, আমরা লড়াই না করলে গ্রামটা একদিন মানুষের প্রেতে ভরে যাবে। বুধা মিঠুর জিজ্ঞাসার জবাবে বলে, তিনজন ঐকমত্যে একজন হলে শক্তি বাড়ে। এক হলে লড়াইয়ে শত্রুরা হারে। সেই রাতে বুধা আলির কাছ থেকে কেরােসিন তেল চেয়ে নিয়ে, বাঁশের লাঠি আর শুকনাে পাট জড়িয়ে চারটা মশাল বানায়। তারপর রাতের আঁধারে প্রথমে পুড়িয়ে দিল শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আহাদ মুন্সির বাড়ি। তার পরদিন রাজাকার কমান্ডারের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল। বাপ-মা হারানাে কিশাের বলে কেউ তাকে তেমন একটা সন্দেহ করল না। মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল।
বুধা এর মধ্যে এক রাতে আলি ও মিঠু মুক্তিবাহিনীতে যােগ দিতে গ্রাম ত্যাগ করার পূর্বে বুধাকে ভবিষ্যৎ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে যায়। কয়েক মাস পর এক রাতে আর্ট কলেজের ছাত্র মুক্তিযােদ্ধা কমান্ডার শাহাবুদ্দিন এসে বুধাকে মিলিটারি ক্যাম্পটা উড়িয়ে দেওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ক্যাম্পটা রেকি করার দায়িত্ব দেন। নদীর ধারের গাছগুলাে থেকে কতকগুলাে ডাঁসা পেয়ারা সংগ্রহ করে নিয়ে মিলিটারি ক্যাম্পের হানাদার সেপাইদের সাথে সখ্য গড়ে তােলে বুধা। ওদের সাথে খােশগল্প করার ছলে ক্যাম্পের প্রতিটি জায়গা ও ক্ষিপ্র দৃষ্টিতে পরিমাপ করে নেয়। এমনই মুহূর্তে বুধা আহাদ মুন্সি ও তার সাঙ্গে-পাঙ্গদের সামনে পড়ে যায়। তারা তার প্রতি অমানুষিক নির্যাতন চালায়। মাঠের মাঝখানে একটি বাঁশ পুঁতে বাঁশের সঙ্গে বুধার শরীরটা বাঁধে। আড়াআড়ি করে স্থাপিত অন্য একটি বাঁশের সাথে ওর দুহাত বেঁধে রাখে। ওর গায়ের জামাটা বেঁধে দেয় মাথায়। তারপর রান্নাঘর থেকে হাঁড়ির নিচের কালি এনে মুখে লাগায়। বুক ও পিঠ আঁকাবাঁকা রেখায় ভরিয়ে দেয়। কাঠফাটা রােদের দারুণ গরমে ওকে সারাটি দিন অভুক্ত রেখে কাকতাড়ুয়া বানিয়ে রাখে। সন্ধ্যায় সেপাইদের করুণায় বুধা মুক্তি পায়। বুধা মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে, এখানে ওকে আবার ফিরে আসতে হবে। সেই রাতেই বুধা আহাদ মুন্সির নতুন তােলা ছনের ঘরে আগুন দেয়। ভালুক জ্বরে কাঁপতে থাকা বুধাকে তিনটি রাজাকার ধরতে এসে, ভয়ে পালিয়ে যায়। সেই রাতেই মুক্তিযােদ্ধা কমান্ডার শাহাবুদ্দিন তাকে শাবাশ জানিয়ে ক্যাম্পের চারদিকে আগামী দু-একদিনে তৈরি হতে যাওয়া বাঙ্কারে মাইন পোঁতার দায়িত্ব দেয়। পরদিন বুধা বাধ্যতামূলকভাবে বাঙ্কার খুঁড়তে যাওয়া গ্রামের লােকদের অপেক্ষায়।
সকাল-দুপুর কাটিয়ে দেয়। ফিরতি পথে দেখা হয় চাচাতাে বােন কুন্তির সাথে। কুন্তিই একমাত্র পুরাে পরিবারের মধ্যে বুধাকে বুঝতে পারে। সহানুভূতিশীল কুন্তির বুধার প্রতি রয়েছে এক সহজাত দুর্বলতা। দারিদ্র্যের কারণে চাচির সংসার ছেড়ে আসার সময় একমাত্র কুন্তিই সম্পর্কের দাবিতে বুধার পথ আগলে দাঁড়িয়েছিল। বলেছিল, “তুমি যেও না বুধা ভাই। … তুমি চলে গেলে আমার খুব খারাপ লাগবে।” কুন্তি একগাদা শাপলা তুলে বাড়ি যাচ্ছিল। বুধাকে দেখে চকচক করে ওঠে ওর দৃষ্টি। বলে, “কতদিন তুমি আমাদের বাড়িতে আস না, বুধা ভাই।” বুধা বলে তার অনেক কাজ। কুন্তি শক্ত কণ্ঠে বলে, তার অনেক কাজের কথা সে জানে। সেও বুধার সঙ্গে যুদ্ধ করতে চায়। তারপর কুন্তিকে সঙ্গে করে বুধা মৃত বাবা-মা, ভাই-বােনের কবর দেখতে যায়। দেখে যে, কুন্তি প্রতিটি কবর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রেখেছে। আর আকন্দ, ভাঁটফুল, ধুতরা এসব গাছ লাগিয়েছে কবরের মাথায়। কবর জিয়ারতের দোয়া চাইতে গিয়ে বুধা আবেগে দুর্বল হয়ে কেঁদে ফেললে কুন্তি তাকে সাহস জোগায়। বুধার কান্না থামলে কুন্তি চোখ গরম করে বলে, “তুমি যুদ্ধ করতে ভয় পাচ্ছ? […] মরণের কথা মনে করলে যুদ্ধ করা যায় না। যুদ্ধ করলে মরতে তাে হবেই।”
পরদিন মাটি কাটার দলের সঙ্গে ভিড়ে বুধা মিলিটারি ক্যাম্পের চারদিকে বাঙ্কার খোড়ার কাজে লেগে যায়। বাঙ্কার খোড়ার সময় কৌশলে সে তার ভেতর মাইন পুঁতে চলে আসে নদীর ধারে। এখানেই অপেক্ষা করছিলেন শাহাবুদ্দিন এবং তার সহযােদ্ধারা। অতঃপর এলাে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। পাকিস্তানি সেনারা বাঙ্কারে ঢুকতেই পুরাে ক্যাম্পটা মাইন বিস্ফোরণে উড়ে গেল। নদীতে নৌকায় বসে শাহাবুদ্দিন, বুধা শুনতে পেল সেই শব্দ। তাদের অভিযান সফল হলাে। নৌকা সরে গেল নিরাপদ দূরত্বে। বুধা নৌকার পাটাতনে পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়ে। দুহাত দুদিকে লম্বা করে মেলে দেয়। কখন যে গায়ের জামাটি খুলে মাথায় বেঁধেছে তা মুক্তিযােদ্ধা কমান্ডার শাহাবুদ্দিন খেয়াল করেননি। ঠিক কাকতাড়ুয়া সেজে থাকার ভঙ্গিতে শুয়ে আছে বুধা। ছেলেটির দিকে তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে যান শিল্পী শাহাবুদ্দিন। চোখের পলক পড়ে না। চারদিকের মাঠ, বাড়ি, ধানখেত, নদী, আকাশ, গাছগাছালিজুড়ে বুধা যেন এক আশ্চর্য বীর কাকতাড়ুয়া।