ওজন কমানোর কার্যকরী টিপস ২০২১

রিয়ার আজকে খুব মন খারাপ। তার বেস্ট ফ্রেন্ডের বার্থডে পার্টিতে যাওয়ার জন্য তার পছন্দের কাপড়টা পড়তে গিয়ে তার মনটা খারাপ হয়ে গেলো।

দেখতে দেখতে হুট করেই কখন যে তার শরীর মুটিয়ে গেলো, তা সে টেরই পেলো না।

আমাদের চারপাশে এমন অনেক গল্প পাওয়া যাবে। আমরা কখন মুটিয়ে যাচ্ছি, পেটে মেদ জমে যাচ্ছে আমরা টেরই পাচ্ছি না। 

আমাদের মধ্যে বেশির ভাগই বলে থাকেন যে, আমি হুট করেই মোটা হয়ে গেছি। কিন্তু ব্যাপারটা কি আসলেই তাই? হুট করে মোটা হওয়া সম্ভব?

রিয়াকে জিজ্ঞাসা করা হলো তার ড্রেসটি কখন সে গায়ে দিতো সাবলীলভাবে? 

তার উত্তর হবে, ৮/৯ মাস আগেও এই ড্রেসটি আমার হতো। কিন্তু এখন আর হচ্ছে না। কারণ আমি যে হুট করেই মোটা হয়ে গেলাম।

তার উত্তর খেয়াল করলে দেখা যাবে, সে মোটা হয়েছে বেশ সময় নিয়ে। 

মোটা কখনো হুট করে হওয়া যায় না। এটা বেশ সময়ের ব্যাপার। তাই ওজন কমানোর জন্য প্রথম যে কথাটি মাথায় রাখতে হবে তা হচ্ছে ওজন বাড়তে যেমন সময় লাগে, ঠিক তেমনি ওজন কমতেও সময় লাগবে।         

 

ওজন বাড়ার কারণঃ




বিভিন্ন কারণে ওজন বাড়তে পারে। আমরা বেশি পরিমাণে খাবার খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে, কম ঘুম হলে ওজন বেড়ে যেতে পারে, উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবার খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে ইত্যাদি। 

গ্রামের শ্রমিক মানুষেরা সকাল বিকেল তিন বেলায় বেশ পেট ভরে এবং উচ্চ ক্যালোরি সম্পন্ন খাবার খেয়ে থাকে। কিন্তু তাদের ওজনের দিকে তাকালে এবং দেহ কাঠামোর দিকে তাকালে অশ্চর্য না হয়ে পাড়বেন না। 

তাদের দেহে বিন্দুমাত্র মেদ বা চর্বি খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ তারা যেমন খাদ্য গ্রহণ করে, ঠিক তেমন পরিশ্রম করে। তাই আলসতাও আপনার ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে।

 

ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপসঃ

১। সুষম খাদ্য তালিকা মেনে চলুনঃ ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে প্রথমে আপনার খাদ্য তালিকা পরিবর্তন করতে হবে।

আপনি যদি সারাদিন উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার, চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে এইসব খাবার আপনাকে পরিহার করতে হবে।

আপনার খাদ্য তালিকায থেকে আপনি শর্করা জাতীয় খাদ্য পরিহার করুন এবং বেশি বেশি পরিমাণে ভিটামিন জাতীয় খাবার যেমন সবুজ শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি যুক্ত করুন। এসব খাবার ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

এর সাথে অবশ্যই মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে এবং আমিষ জাতীয় খাবার যেমন দেশি মুরগী, মাঠে চরানো গুরুর মাংশ খেতে পারেন।



২। অতিরিক্ত খাওয়া পরিহার করুনঃ আমাদের মধ্যে অনেকের শখই হচ্ছে শুধু খাওয়া। অনেকেই কোন বিয়ের অনুষ্ঠানে বা যেকেন অনুষ্ঠানে খেতে বসে পেট ভরে যাওয়ার পরও খাবারের লোভ সামলাতে না পেরে অতিরিক্ত খাওয়া শুরু করেন।

অতিরিক্ত খাবার হজম হতে অনেক সময় নেয় এবং পেটে মেদ ও ওজন বাড়াতে কার্যকারী মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

তাই অতিরিক্ত খাওয়া বন্ধ করে দিন। আপনার যেটুকু খেলে পেট ভরে যাবে ঠিক সেটুকুই খান। এতে করে আপনার ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং মানুষের পিছনে কথা বলা থেকেও রক্ষা পাবেন।  

 

৩। গ্রহণ করা খাবারের উপর ভিত্তি করে ব্যায়াম করুনঃ আমাদের খাবার গ্রহণ করতে ভালো লাগে! কিন্তু আমাদের সেই অনুযায়ী পরিশ্রম করতে ভালো লাগে না।

অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ক্যালোরি জমা হতে থাকে। সেই খাওয়ার অনুযায়ী যদি আমরা পরিশ্রম না করি তাহলে সেগুলো জমা হতেই থাকে। 

এবং এগুলোই শরীরের ওজন বাড়িয়ে দেয়। 

তাই আপনি যেটুকু খাবার গ্রহণ করতেছেন, সেই অনুপাতে ব্যায়াম করুন। এতে প্রতিদিনের অর্জিত ক্যালরি প্রতিদিন খরচ এবং আপনার ওজমও কমে আসবে।

 

৪। পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ খাবার হজম করতে পানি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই বেশি বেশি পরিমাণে পানি পান করুন।

পানি আপনার চর্বি গলাতে সাহায্য করে। আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করলে আপনার হজম প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে সম্পন্ন হবে না। এতে করে ওজন বেড়ে যাবে। 

তাই আপনার দৈনন্দিন জীবনে কৃত কাজের উপর ভিত্তি করে পানি পান করুন।



৫। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম পারুনঃ ওজন বৃদ্ধিতে ঘুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

আপনি যদি অতিরিক্ত ঘুম পারেন তাহলে আপনার ওজন বেড়ে যাবে, আবার যদি কম ঘুম পারেন তাহলেও ওজন বেড়ে যাবে।

অতিরিক্ত ঘুম পারলে আপনার শরীর কেন কাজ করবে না, ফলে কোন ক্যালরিও খরচ হবে না।

আবার কম ঘুম পারলে আপনার হজম সঠিক ভাবে হবে না। এতে করে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে। 

তাই সঠিক মাত্রায় ঘুম পাড়ুন। বয়স অনুযায়ী ঘুমের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। স্বাভাবিক ভাবে দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুম পাড়া উত্তম।

 

ওজন নিয়ন্ত্রণে না রাখার কুফলঃ অতিরিক্ত ওজন যেমন খারাপ ঠিক তেমনি কম ওজনও শরীরের পক্ষে খারাপ। তাই অবশ্যই আপনাকে আপনার ওজন BMI এর মান দেখে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এতে করে আপনি সুস্থ ও সুন্দর জীবন পার করতে পারবেন। 

 

পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন বন্ধুদের সাথে যাতে তারাও উপকৃত হয়।   

Leave a Comment