আমি কোন আগন্তুক নই কবিতার জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

আমি কোন আগন্তুক নই কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন   

প্রশ্ন ১। আহসান হাবীবের প্রথম কাব্যগ্রস্থের নাম কী?

উত্তর : আহসান হাবীবের প্রথম কাব্যগ্রন্মের নাম রাত্রিশেষ।

প্রশ্ন ২। কদম আলী কিসে নত?

উত্তর : কদম আলী অকাল বার্ধক্যে নত ।

প্রশ্ন ৩।  “তার ক্লান্ত চোখের আঁধার’- কার? 

উত্তর ; তার ক্লান্ত চোখের আঁধার’– এখানে তার হচ্ছে কদম আলীর ।

প্রশ্ন ৪। অকালবার্ধক্যে নত কে? 

উত্তর : অকাল বার্ধক্যে নত কবির পরিচিত কদম আলী।

প্রশ্ন ৫। কবি কোন দেশি পথিক নন?

উত্তর : কবি ভিনদেশি পথিক নন।

প্রশ্ন ৬। কবি আহসান হাবীব-এর হাতের স্পর্শ কোথায় লেগে আছে? 

উত্তর : কবি আহসান হাবীবের হাতের স্পর্শ লেগে আছে বৈঠায় ও  লাঙলে।

প্রশ্ন ৭। ধানের মঞ্জরি কী?

উত্তর : ধানের মঞ্জরি হলাে মুকুল বা শিষ ।

প্রশ্ন ৮। কোন পাখি কবিকে চেনে?

উত্তর : মাছরাঙা পাখি কবিকে চেনে।

প্রশ্ন ৯। কোন পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক থাকাকালে আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তর “দৈনিক বাংলা পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক থাকাকালে আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন।

প্রশ্ন ১০। আহসান হাবীব কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর : আহসান হাবীব ১৯১৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। 

প্রশ্ন ১১। আহসান হাবীব কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর : আহসান হাবীব পিরােজপুর জেলার শঙ্করপাশা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন ১২। আহসান হাবীব কোন পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন?

উত্তর : আহসান হাবীব ‘দৈনিক বাংলা পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন।

প্রশ্ন ১৩। কত সালে আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তর : ১৯৮৫ সালে আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন।

প্রশ্ন ১৪। আসমানের তারা কার সাক্ষী?

উত্তর : আসমানের তারা কবির সাক্ষী।

প্রশ্ন ১৫। ‘নিশিরাইত’ অর্থ কী?

উত্তর : ‘নিশিরাইত’ অর্থ গভীর রাত।

প্রশ্ন ১৬. কার দৃষ্টি স্থির?

উত্তর : মাছরাঙার দৃষ্টি স্থির।

প্রশ্ন ১৭। মাছরাঙা কাকে চেনে?

উত্তর : মাছরাঙা কবিকে চেনে।

প্রশ্ন ১৮। কে কোনাে অভ্যাগত নন?

উত্তর : কবি কোনাে অভ্যাগত নন।

প্রশ্ন ১৯। “আগন্তুক” অর্থ কী?

উত্তর : ‘আগন্তুক’ অর্থ আগমন করেছে এমন অপরিচিত কেউ।

প্রশ্ন ২০। কবি কার নামে শপথ নিয়েছেন?

উত্তর : কবি খােদার নামে শপথ নিয়েছেন।

প্রশ্ন ২১। এখানে থাকা মানে কোথায় থাকা?

উত্তর : এখানে থাকা মানে সারা দেশে থাকা।

প্রশ্ন ২২। জ্যোৎস্নার চাদরে কী ঢাকা?

উত্তর : জ্যোৎস্নার চাদরে নিশিন্দার ছায়া ঢাকা।

প্রশ্ন ২৩। কার চোখ ক্লান্ত?

উত্তর : কদম আলীর চোখ ক্লান্ত।

প্রশ্ন ২৪। মাটিতে কার গন্ধ পাওয়া যাবে?

উত্তর : মাটিতে কবির গন্ধ পাওয়া যাবে।

প্রশ্ন ২৫। কবি নদীকে কী নদী বলেছেন?

উত্তর : কবি নদীকে ‘উধাও নদী’ বলেছেন।

প্রশ্ন ২৬। কে মুগ্ধ এক অবােধ বালক?

উত্তর : কবি মুগ্ধ এক অবােধ বালক।

আমি কোন আগন্তুক নই কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন   

প্রশ্ন ১। আমার অস্তিত্বে গাথা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?  

উত্তর : আমার অস্তিত্বে গাঁথা বলতে কবির স্বদেশের গ্রামীণ প্রকৃতি কবির মনের ভিতর ও অস্থি-মজ্জায় গ্রথিত হয়ে থাকার কথা বােঝানাে হয়েছে।

‘আমি কোনাে আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি নিজের দেশের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ প্রকাশ করেছেন। জন্মভূমির মধ্যে শিকড় গেড়েই কবি সমগ্র দেশকে আপন করে পেয়েছেন। তার কাছে দেশ মানে শুধু চারপাশে প্রকৃতি নয়, তাকে আপন সত্তায় অনুভব করা। কবি গ্রামীণ জীবনেই বেড়ে উঠেছেন। গ্রামের মাঠ-ঘাট, পথ-প্রান্তরের মতাে খেতের সরু পথ, তার পাশে ধানখেত, নদীর কিনার, জনপদের মানুষজন- এ৷ সবকিছুই কবির অতি পরিচিত। এদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিবিড় ও গভীর। কবি নিজেও তাদের কাছে চিরচেনা একজন।

প্রশ্ন ৪। এখানে থাকার নাম সর্বত্রই থাকা- কীভাবে? 

উত্তর : ‘এখানে থাকার নাম সর্বত্রই থাকা’ বলতে কবি সমগ্র বাংলা  ভূখণ্ডে থাকার কথা বুঝিয়েছেন ।

কবি বাংলার সন্তান, বাংলা ভূখণ্ডের সবুজ শ্যামলিমায় তার জন্ম। এখানে তিনি শৈশব, কৈশাের আর যৌবন কাটিয়েছেন। এ মাটিতে কবির সত্তা মিশে আছে। প্রকৃতির গাছপালা কবিকে চেনে। মাছ  শিকারি মাছরাঙা কবিকে চেনে। কদম আলী আর জমিলার যা চেনে। উল্লিখিত চরণে কবি কোনাে নির্দিষ্ট স্থান বা গ্রামকে বােঝননি; বরং সমগ্র বাংলা অঞ্চলকে বুঝিয়েছেন। কারণ তিনি বাংলার সন্তান, তাই সমগ্র বাংলাই কবির অধিকারে।

প্রশ্ন ৫। “আমার শরীরে লেগে আছে এই স্নিগ্ধ মাটির সুবাস” ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর : “আমার শরীরে লেগে আছে এই স্নিগ্ধ মাটির সুবাস” বলতে কবি মায়াবী ও আকর্ষণীয় গ্রামবাংলার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার কথা বলেছেন।

‘আমি কোনাে আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি জন্মভূমির সঙ্গে তার নিজেকে সম্পৃক্ততার মাধ্যমে মানুষের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের দিকটি  তুলে ধরেছেন। এতে গ্রামীণ জনপদের সঙ্গে নিবিড় বাঁধনে বাঁধা। মানুষের জীবনাচরণ ফুটে উঠেছে। গ্রামের মাঠ-ঘাট-পথ-প্রান্তরের  মতাে খেতের সরু পথ, তার পাশে ধানের সমারােহ, একটু দূরে  বিশাল নদীর কিনার কবির মনের ভেতর, অস্থিমজ্জায় গ্রথিত হয়ে আছে। তার কাছে দেশ মানে তাকে আপন সত্তায় অনুভব করা।  আলােচ্য চরণটিতে এই বিশেষ বক্তব্যই প্রকাশ পেয়েছে। 

প্রশ্ন ৬। “আমি স্বাপ্নিক নিয়মে এখানেই থাকি।’— দ্বারা কী বুঝায়? 

উত্তর : আমি স্বাপ্নিক নিয়মে এখানে থাকি।- কথাটি দ্বারা কবি স্বপ্নময় স্বদেশের অনুভবে সর্বত্র বিরাজ করাকে বুঝিয়েছেন।

কবি যে দেশে জন্মেছেন সে দেশটি স্বপ্নময় । সেদেশের গ্রাম, গ্রাম্য প্রকৃতি ও জীবন প্রায় একই ধরনের স্বপ্নের স্পর্শ মাখা। কবিও সেই  স্বপ্নময়তাকে ধারণ করেই বেড়ে উঠেছেন । অবাধ অবারিত স্বপ্নের মতাে কবি সেখানে ছিলেন, এখনও তিনি সারা দেশের অস্তিত্বের  সঙ্গেই মিশে আছেন।

প্রশ্ন ৭। “তারা জানে আমি কোনাে আত্মীয় নই”- কবি এ কথা বলেছেন কেন?

উত্তর : তারা জানে আমি কোনাে আত্মীয় নই’– কবি একথা বলেছেন জন্মভূমির সঙ্গে তার বন্ধনের দৃঢ়তা বােঝাতে।

“আমি কোনাে আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি জন্মভূমির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার মাধ্যমে মানুষের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের দিকটি তুলে ধরেছেন। কবিতায় গ্রামীণ প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গে কবির প্রাত্যহিক  জীবনের সম্পৃক্ততার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে। কবির চিরচেনা জনপদের মানুষ কদম আলী, জমিলার মা সবাই তাঁকে স্বজন বলে জানে। তিনি আগন্তুক নন বলেই তারা সবাই তাকে আপনজন  হিসেবে মানে। তিনিও গ্রামীণ জনপদেই খুঁজে পেয়েছেন তার  আত্মার অস্তিত্ব।

প্রশ্ন ৮। ‘আমি তার চিরচেনা স্বজন একজন’- উক্তিটি ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর : আমি তার চিরচেনা স্বজন একজন’- কবির এ কথা বলার  কারণ জন্মভূমির সঙ্গে তার আজীবনের গভীর সম্পর্ক।

আমি কোনাে আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি জন্মভূমির সাথে তাঁর নিজের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে জন্মভূমির সঙ্গে মানুষের অবিচ্ছেদ্য। সম্পর্কের দিকটি তুলে ধরেছেন। জন্মভূমির মধ্যে শিকড় গেড়েই কবি সমগ্র বিশ্বকে অনুভব করেন। গ্রামের মাঠ-ঘাট, পথ-প্রান্তরের মতাে সরু পথ, ধানখেত, নদীর কিনার, সেখানকার মানুষ কদম আলী, জমিলার মা সবাই তার অত্যন্ত পরিচিত। তারাও কবিকে তাঁদের চিরচেনা একজন স্বজন হিসেবে জানে। আলােচ্য পঙক্তিতে কবি এভাবেই নিজেকে তার গ্রামের মানুষ অকাল বার্ধক্যে নত কদম আলীর একজন স্বজন হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

প্রশ্ন ৯। ‘জন্মভূমির মধ্যে শিকড় গেড়ে মানুষ সমগ্র দেশকে আপন করে পায়’- বিশ্লেষণ কর।

উত্তর : প্রশ্নোক্ত বাক্যটিতে জন্মভূমির সঙ্গে মানুষের আজীবনের সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে।

মা, মাতৃভাষার মতাে মাতৃভূমির সঙ্গেও মানুষের সম্পর্ক চিরন্তন। এর সবকিছু তার মনে হয় কত চেনা, কত জানা। এই অনুভূতি অতুলনীয়। দেশ মানেই শুধু তার চারপাশের প্রকৃতি নয়, একে আপন সত্তায় অনুভব করা। আর দেশকে মানুষ নিজের অস্তিত্বের সঙ্গে মেখে নিতে চায়। এই হচ্ছে মানবজীবন। জন্মভূমির সঙ্গে সে মানুষ গভীরভাবে সম্পর্কিত । তাইতাে জন্মভূমির মধ্যে শিকড় গেড়ে থেকেই মানুষ সমগ্র দেশকে আপন করে পায়।

প্রশ্ন ১০। মাছরাঙার দৃষ্টি স্থির থাকে কেন?

উত্তর : মাছরাঙার দৃষ্টি স্থির থাকার কারণ হলাে- মাছরাঙা পানিতে চলমান মাছ শিকার করে।

জলাশয়ের ধারে গাছের ডালে চুপ করে মাছরাঙা বসে থাকে। দৃষ্টি স্থির থাকে পানির দিকে। পানিতে ছােট ছােট মাছ সাধারণত পানির উপরে’ দল বেঁধে বা একা একা ঘুরে বেড়ায়। সুযােগ বুঝে চোখের পলকে মাছরাঙা পানিতে ঝাঁপ দিয়ে নিপুণভাবে ঠোটে মাছটি গাঁথে । ঐ মাছ শিকার করে মাছরাঙা আহার করে। এজন্যই মাছরাঙার দৃষ্টি স্থির থাকে।

প্রশ্ন ১১। জারুল, জামরুল, পুবের পুকুর- এসবকে কবি কেন সাক্ষী মেনেছেন?

উত্তর : জারুল, জামরুল, পুবের পুকুর- এসবকে কবির সাক্ষী মানার কারণ হলাে– তিনি এসবের মাঝেই বেড়ে উঠেছেন।

কবির বাড়িতে জারুল, জামরুল গাছ রয়েছে। শৈশব-কৈশাের কাটিয়েছেন পুবের পুকুরে সাঁতার কেটে। ফলে এ সবকিছু কবিকে খুব ভালােভাবে চেনে। তাই কবি যখন আত্মপরিচয়ের প্রসঙ্গে এসেছেন, তখন তিনি এসবকে সাক্ষী মেনেছেন। কারণ আর কেউ না জানলেও জারুল, জামরুল গাছ আর পুবের পুকুর কবির দুরন্ত শৈশব-কৈশাের প্রত্যক্ষ করেছে।

প্রশ্ন ১২। মাটিতে কবির গল্প কেন?

উত্তর : বাংলার মাটির সঙ্গে নিজের অস্তিত্বের চিরন্তন সম্পর্কের কারণেই মাটিতে কবির গন্ধ লেগে আছে।

কবি এই বাংলায় জন্মেছেন। বাংলা মায়ের কোলে কবির শৈশব, কৈশাের, যৌবন কেটেছে। কবির বার্ধক্যের সাক্ষীও এই মাটি। কবি দেশের প্রতি, দেশের প্রকৃতির প্রতি, কোমল মাটির প্রতি ভালােবাসা প্রকাশ

করেছেন। তাঁর দেহে এ মাটিরই গন্ধ লেগে আছে।

প্রশ্ন ১৩। মাছরাঙা কবিকে চেনে কীভাবে?

উত্তর : কবি বাংলার প্রকৃতিতেই বড় হয়েছেন। এদেশের ফুল, পাখি কবির স্বদেশ প্রকৃতির চিরচেনা অনুষঙ্গ বলে মাছরাঙা পাখি কবিকে চেনে। 

বাংলার চিরসবুজ প্রকৃতির মাঝে কবির আজন্ম বিচরণ। প্রকৃতির মাঝে থাকতে থাকতে কবি প্রকৃতিরই এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দীর্ঘ সময় এই জনপদে থাকার কারণে মাছরাঙা পাখির সঙ্গে তাঁর এক ধরনের আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তিনি যেমন তার প্রাত্যহিক জীবন-পরিবেশে মাছরাঙা পাখিকে দেখেন, তেমনি পাখিটিও কবিকে দেখে। এ কারণেই মাছরাঙা কবিকে চেনে।

Leave a Comment